লেবু একটি জনপ্রিয় ফল যা ব্যবহারে খাবারের সাথে ভিন্নতা অনুভব হয়। লেবু ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল, একটি ৫৪ গ্রামের লেবু ৩০ মিলিগ্রাম এর বেশি ভিটামিন সি সরবাহ করতে পারে। লেবুতে ভিটামিন সি এবং ফ্লোভোনয়েডর একটি দুর্দান্ত উৎস , যা অ্যান্টিঅক্মিডেন্টস সমৃদ্ধ।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি রেডিক্যাল সরিয়ে ফেলতে সহায়তা করে যা শরীলের কোষের ক্ষতি করতে পারে। এই পুষ্টি উপাদানটি বিশেষভাবে শরীলে রোগ প্রতিরোধে এবং সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। ভিটামিন সি সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য যার অভাবে শরীলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিঙ্গানিরা বলেছেন, লেবুর রস মিশ্রিত পানি পাকস্থলী ও অন্ত্রের অন্যান্য অংশ থেকে পাকরস তৈরি ত্বরান্বিত করে।
ভারী খাবারের সংগে লেবু পনি পান করলে গ্যাস কম হবে, পেঁট ফাঁপবে কম। এ ছাড়া এটি ডাইউরেটিক ও ল্যাক্সেটিভ হিসাবে কাজ করে। অর্থাৎ প্রসাব ও মল পরিস্কার রাখে। লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা শরীলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে একটি বিশেষ অংশ হিসাবে কাজ করে।
ভিটামিন সি সর্দি ও কাশির সমস্যা দূর করে । স্নায়ু ও মস্তিকের ক্ষমতা বাড়ায়। ফুসফুস পরিস্কার করে হাঁপানির সমস্যা উপশম করে। ভিটামিন সি এর সাথ লেবুও পটাসিয়াম, ম্যানেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদির সমৃ্দ্ধ উৎস।লেবু সেবন করার সম্ভাব্য কয়েকটি উপকারিতা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
১. স্টোকের ঝুঁকি হ্রাস করে
২০১২ সালের এক গবেষণা অনুসারে, সাইট্রাস ফলের ফ্লাভোনয়েডগুলি মহিলাদের মধ্যে ইস্টেমিক স্টোকের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে। ৭০০০০ মহিলাদের উপর ১৪ বছরের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা সবথেকে বেশি সাইট্রাস ফল খেয়েছেন তাদের মধ্যে ইস্কেমিক স্টোকের ঝুঁকি ১৯ শতাংশ কম ছিল, ইস্কেমিক স্ট্রোক সবচেয়ে সাধারন ধরনের স্ট্রোক।
যখন রক্ত জমাট বাঁধা মস্তিকে রক্ত প্রবাহকে বাঁধা দেয় তখন এটি হতে পারে। ২০১৯ সালে আরকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে দীর্ঘমেয়াদি, ফ্লেভোনয়েড যুক্ত খাবারের নিয়মিত ব্যবহারে ক্যান্সার এবং কার্ডিঅভাসকুলার রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারে। তবে সমীক্ষায় ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে যে ব্যক্তিরা প্রচুর ধূমপান করেন বা মদপান করেন তাদের উপকারের সম্ভাবনা কম।
২. রক্তচাপ
২০১৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে মহিলারা নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করেন এবং প্রতিদিন লেবু পানি পান করেন তাদের রক্তচাপ কম ছিল তাদের তুলনায় যারা নিয়মিত হাঁটেন না এবং নিয়মিত লেবু পানি পান করেন না। তবে রক্তচাপ কমাতে লেবুর যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
৩. সুস্বাস্থ্য এবং সুন্দর ত্বকের জন্য লেবু
ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন সিস্টেম গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পলন করে। সূর্যে এক্সপোজার, দূষণ, বয়স এবং অন্যান কারণে ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রাকৃতিক ভাবে ভিটামিন সি গ্রহন করা অথবা ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা এই ধরনের ক্ষতি রোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৩. হাঁপানি রোধে লেবু
যদি আপনি হাাঁপনি আক্রান্ত মানুষ হয়ে থাকেন এবং আপনি চাচ্ছেন বিষয়টা যতোটুকু সম্ভব নিয়ন্ত্রনে রাখতে তবে অবশ্যই আপনার বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি সেবন করা উচিত। যারা শ্বাসকষ্ট অথবা হাইপারসেনটিভিটিতে ভুগছেন তাদের জন্য ভিটামিন সি একটি কার্যকরী পু্ষ্টি উপাদান। আর লেবু্ হচ্ছে ভিটামিন সি যুক্ত একটি বিশেষ ফল।
৪.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃ্দ্ধি
লেবু ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅস্কিডেন্ট যু্ক্ত হওয়ায় সাধারণ জ্বর, সর্দির জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে বিশেষ সহায়তা করে। ভিটামিন সি গ্রহনের ক্ষেত্রে সবসময় প্রাকৃতিক উপাদানকে বেশি প্রাধান্য দেয় উচিত। প্রাকৃতিক উপাদান যতোটুকু সহোযোগিতা করে ভিটামিন সি পরিপূরক তা কোনভাবেই করতে পারে না। আর প্রাকৃতিক উপাদানের অন্যতম উৎস হচ্ছে লেবু।
৫. ওজন কমানো
২০০৮ সালে ২০ জন মানুষের উপর একটি গবেষণা পরিচালনা তাদের মধ্যে ১০ জনকে লেবু সহ খাবার দেয়া হয়েছিল েএবং ১০ জনকে লেবু ছাড়া খাবার দেয়া হয়েছিল। দেখা গিয়েছে যারা লেবুসহ খাবার খেয়েছিলেন তাদের তুলনায় জারা লেবু ছাড়া খাবার খেয়েছিলেন তাদের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তবে লেবু সেবনে ওজোন হ্রাস পায় কিনা এবিষয়ে বিশেঙ্গদের দ্বিমত রয়েছে, সম্ভবত ভবিষ্যতে কোনো ফলাফল আমাদেরকে এবিষয়ে নিশ্চিত করবে।
৬. হজম শক্তি বাড়ায়
লেবুর রস শরীর থেকে টক্সিন দূর করে। বদহজম বুক জ্বালার সমস্যাও সমাধান করে লেবু পানি এবং আমাদের পাকস্থলি ভালো রাখতে বিশেষ ভাবে কাজ করে। এবং লেবু সাধারনত পেট পরিস্কার রাখে। শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয়, ক্ষতিকারক পদার্থ বের করতে সাহায্য করে লেবু পানি। ফলে ইউরিনেশন ভালো হয়। লিভার ভালো থাকে।
৭. পিএইচ ব্যালান্স
শরীরে পিএইচ ব্যালান্স সঠিক রাখতে সহায়তা করে। লেবুর মধ্যে থাকে সাইট্রিক এসিড মোটাবলিজমের পর ক্ষার হিসাবে কাজ করে। ফলে রক্তের পিএইচ বালান্স সঠিক থাকে।
You must be logged in to post a comment.