বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ তাই প্রযুক্তি সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এর মধ্যে অন্যতম তাই এ সম্পর্কে জানাটাও প্রয়োজন।
যেকোনো বিষয়ে একবারে সবকিছু বিস্তারিত আলোচনা করা সম্ভব নয়। তাই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সম্পর্ক শুধু মৌলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
( Virtual Reality) ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি?
আমরা জানি যে, ভার্চুয়াল অর্থ হচ্ছে "ভাসমান" আর রিয়েলিটি অর্থ হচ্ছে "বাস্তবতা" স্বাভাবিকভাবেই উভয় সংজ্ঞা থেকে আসে "ভাসমান বাস্তবতা" বা কল্পনায় বাস্তবতা বা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি' শব্দটির মূল অর্থ 'নিকট-বাস্তবতা'।
আর একটু ভাল করে বোঝানোর জন্য বলি।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এমন একটি যন্ত্র যেটি ব্যবহার এর সময় আমরা যদি কল্পনা করে কোনো কিছু ভাবি সেটা ছবির মত আমদের চোখের সামনে ভাসে অর্থাৎ আমরা যে বিষয় টা ভাবি সেটা বাস্তবে ত্রি-মাত্রিক বা ছবি মত রুপ দেয় এই যন্ত্র।
আরেকটু পরিস্কার করে বলি।
ঘুমের মধ্যে যখন আমরা স্বপ্ন দেখি তখন মনে হয় আমরা যেন ওই জায়গায় আছি হারিয়ে যাই ওই জগতে। সবকিছু বাস্তবই মনে হয় , মানুষের কথাও শুনতে পারি, দেখতেও পারি। অর্থাৎ সবকিছুই কাছে মনে হয়, কিন্তু যখন আমাদের ঘুম ভেঙে যায় তখন দেখি "না আমরা অন্য জায়গায় আছি "। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিও ঠিক ওই রকম। এটা ব্যবহার করে আমরা যা ভাবি তাই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে, তফাতটা ওই খানে যে, কল্পনায় যা আমরা দেখি সেটা আমরা আমাদের মাথার মেমোরিতে সেট করতে পারি। আর ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে যা দেখি সেটা আমরা ডিভাইস মেমোরিতে সেট করতে পারি। বিষয়টা অদ্ভুত মনে হচ্ছে না?
আপনি কি জানেন আজকাল বিভিন্ন সেনেমা, কার্টুন, গেইম কিংবা বিভিন্ন অবকাঠামোর ত্রি-মাত্রিক ডিজাইনগুলো এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি দিয়েই বানানো হয়?
আমরা আমাদের জ্ঞান এবং উপলব্ধির মাধ্যমে বিশ্বকে জানি। স্কুলে আমরা সকলেই শিখেছি যে আমাদের পাঁচটি ইন্দ্রিয় রয়েছে: যেমন ; স্বাদ, স্পর্শ, গন্ধ, দর্শন এবং শ্রবণ। এগুলি কেবল আমাদের সর্বাধিক সুস্পষ্ট জ্ঞানের অঙ্গ। আমরা অসম্ভব অনেক কিছুই ভাবতে পারি, কিন্তু মনের চোখ চাড়া আমরা এইগুলো দেখতে পারি না। কিন্তু ভার্চুয়াল রিয়েলিটি দ্বারা আমরা যেসব ভাবি তা দেখতেও পারি। এটি আমাদের ভাবনাকে বাস্তবে ভাসমান রুপ দেয়।
প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি..
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি মানুষের মস্তিষ্কের ভাবনাকে তাদের অ্যালগরিদম দ্বারা একটি ত্রি-মাত্রিক দৃশ্য তৈরী করে এবং এইটা মানুষ দেখতে পারে এবং স্পর্শ করতে পারে নিজেকে একটি ভার্চুয়াল জগতে নিয়ে জায় এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা কল্পনায় বাস্তবতা কীভাবে অর্জিত হয়?
আজ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সাধারণত কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রয়োগ করা হয়। এটি পুরোপুরি ব্যবহার করতে অনেকগুলি সিস্টেম রয়েছে, যেমন;
হেডসেটস, ওমনি-ডিরেকশ্নাল ট্রেডমিলস এবং বিশেষ গ্লোভস তাছাড়া এর আর উপকরণ রয়েছে । এগুলি বাস্তবতার চিত্র তৈরি করতে প্রকৃতপক্ষে আমাদের ইন্দ্রিয়কে একত্রিত করতে ব্যবহৃত হয়।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি রয়েছে এগুলো হল।
▪️ শব্দঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে এিমাএিক সব্দ যোগ করা যায়। এতে মনে হয় কোনো বিশেষ স্তান থেকে সব্দ উৎসরিত হচ্ছে।
▪️দৃষ্টিঃ এই পদ্ধতিতে বহুমাএিক ডিসপ্লে ব্যবহিত হয়। এতে ছোট আকারের পর্দা থাকে যা গগলস বা হেলমেট এর মধ্যে রাখা সম্ভব।
▪️মস্তিষ্কঃ মানুষের মস্তিষ্ক এবং আচরণের উপরে গবেষনা কম্পিউটার জেনারেটড ওয়ার্ল্ডকে নতুন উপহার দিয়েছে। আর ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রধান ধারণারগুলো অন্যতম হলো পাঠ্যপুস্তক পড়ার থেকে মস্তিষ্ক এইসব তথ্যকে ভালোভাবে বিশ্লেষন করতে পারে। যা দেখা যায়, শুনা যায়, এবং স্পর্শ করা যায়।
▪️স্পর্শঃ গ্লোভস কিংবা সংবেদনশীল ব্যবস্তা সংবলিত পুরো শরিরের পোশাক ভার্চুয়াল রিয়েলিটি জগতের একজন ব্যক্তিকে প্রকৃত অবস্থার কাছাকাছি যেতে সাহায্য করে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কেন এবং কি কি কাজে ব্যবহার করা হয় ?
প্রতিটি ক্ষেত্রেই এখন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হয়।
আজকাল আমরা যেসব ভিডিও গেইম কিংবা অন্যান্য গেইম খেলি তাও কিন্তু ভার্চুয়াল রিয়েলিটি দ্বারা ব্যবহার করা। বা আমরা যেসব মোভি দেখি তাও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি দ্বারা যেসব বাস্তবে সম্ভব নয় তা ধারণ করা হয়। এমনকি কিভাবে চিকিৎসা করবে তাও এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি দ্বারা ধারণা দেওয়া হয়।
বাস্তবে যেখানে কিছু করা খুব বিপজ্জনক, ব্যয়বহুল বা অযৌক্তিক সেখানেই এর ব্যবহার ।
ভার্চুয়াল রিয়ালিটি সিস্টেমগুলির বৈশিষ্ট্য
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বিভিন্ন ধরনের সিস্টেম আছে। কিন্তু তা সব ভাগ একই বৈশিষ্ট্য ব্যক্তিকে দেখার অনুমতি দেয়।
যেমন; একজন ব্যাক্তি ভার্চুয়াল রিয়ালিটি পরিধান করল সে এখন ভাবল সে ক্রিকেট খেলছে একজন বল করছে সে ব্যাট করছে এই
ত্রিমাত্রিক ছবি সে চোখের সামনে ওই যন্ত্রটি দ্বারা দেখতে পারেবে এই চিত্রগুলি ব্যক্তির কাছে জীবিত অর্থাৎ অ্যানিমেশন আকারের প্রদর্শিত হয়।
অর্থাৎ আপনি যেসব ভাববে তা সবকিছু হাটাচলা নড়াচড়া করবে যেমনটা আমরা ভিডিও গেইমে দেখে থাকি।
সারসংক্ষেপ
ভার্চুয়াল রিয়ালিটি হ'লঃ ভার্চুয়াল পরিবেশটি এমনভাবে তৈরি করা যা আমাদের জ্ঞানকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যাতে আমরা এটির অভিজ্ঞতা অনুভব করি যে আমরা সত্যই সেখানে আছি। এটি এই লক্ষ্য অর্জনে অনেকগুলি প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং এটি একটি প্রযুক্তিগত জটিল কীর্তি যা আমাদের উপলব্ধি এবং জ্ঞানের জন্য অ্যাকাউন্ট করতে হবে।
এটি বিনোদন এবং গুরুতর উভয় ব্যবহার রয়েছে। প্রযুক্তিটি সস্তা এবং আরও বিস্তৃত হচ্ছে। আমরা ভবিষ্যতে প্রযুক্তির জন্য আরও অনেক উদ্ভাবনী ব্যবহার করতে পারি।
You must be logged in to post a comment.