মানুষ অনেক সময় নিজেকে কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে যেতে ভালোবাসে। মানুষের ইচ্ছে হয় বেশিরভাগ সময় কাটাবে সে কল্পনার জগতে। যেমন ,আমরা অনেক সময় ভাবি যে আমি যদি চাঁদের দেশে যেতে পারতাম ।আমি যদি অ্যামাজনের মতো বিশাল বড় জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে পারতাম ।
আবার অনেক সময় ভাবি আমি যদি স্টুডিওতে বসে ক্রিকেট বা ফুটবল খেলা খেলতে বা দেখতে পারতাম ইত্যাদি আরো অনেক কিছু। কিন্তু আপনার এই বিশাল বড় কল্পনাকে বাস্তবে পরিণত করতে এসেছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (virtual reality)।তাই আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি কেন ও কিভাবে কাজ করে?
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হচ্ছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত এমন একটি যন্ত্র যা মডেলিং ও অনুকরণ এর মাধ্যমে মানুষ তার কল্পনার রাজ্যে নিজেকে নিমজ্জিত ও উপলব্ধি করতে পারে । এ যন্ত্রের মাধ্যমে কল্পনার রাজ্য হুবহু বাস্তবে পরিণত হয় । ফলে অনেক সময় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।
তবে বর্তমানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার অনেক কম দেখা যাচ্ছে এর ব্যয়বহুলতার কারণে । ভবিষ্যতে যখন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অনেক সহজলভ্য হয়ে যাবে তখন বিনোদন থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্র পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এর ব্যবহার:-
বর্তমানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয় তবে তার তিনটি ব্যবহার নিচে দেওয়া হল:-
১• বিনোদন:- বিনোদনের জন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। সেটি হতে পারে গেম শিল্প ,সিনেমা কিংবা কল্পনার জগতে ভ্রমণ । বিভিন্ন প্রকার আধুনিক আকর্ষণীয় গেম তৈরিতে, সিনেমা তৈরীর জন্য বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থান তুলে ধরতে এবং প্রয়োজনীয় এনিমেশন তৈরি করার জন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হয়।
২• শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ:- শিক্ষা ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার এর ফলে অনেক অজানা বিষয় খুব সহজে জানা যায় । নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর এর অভ্যন্তরীণ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অনুধাবন করতে পারে। প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে ধরুন, বাংলাদেশের কোন একজন ব্যক্তি মক্কায় যাচ্ছে হজ করতে ।
কিন্তু সে জানে না যে, কিভাবে হজ করতে হবে ?কোথায় যেতে হবে ?কোথায় শয়তানকে ঢিল মারতে হবে ইত্যাদি। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে ঘরে বসেই মডেলিং ও অনুকরণ প্রক্রিয়ায় হজ করার যাবতীয় প্রশিক্ষণ করতে পারবে। তাই শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার ব্যাপক।
৩• কল্পনার রাজ্যে বিচরণ:- ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে আপনি কল্পনার রাজ্যে বিচরণ করতে পারবেন । আপনার যদি ইচ্ছে হয় যে, আমি বাংলাদেশের সুন্দরবন দেখব। তাহলে আপনি খুব সহজে ঘরে বসে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি পোশাক পড়ে সুন্দরবনের পরিবেশ উপলব্ধি করতে পারবেন এবং দেখতে পারবেন ।
কিংবা আপনার যদি ঢাকা মিরপুর স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলা ও দেখার ইচ্ছা হয় তাহলে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে ঘরে বসে খেলতে পারবেন। মনে হবে যে আমি স্টুডিয়াম এ খেলছি । কিন্তু না আপনি আপনার নিজ ঘরে বসে আছেন।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত যন্ত্র:-
ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ব্যবহারকারী একজন ব্যক্তি সম্পূর্ণরূপে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে আবদ্ধ থাকে । অর্থাৎ তথ্য আদান-প্রদান কারী বিভিন্ন ধরনের চশমা ,হেডসেট বা মাথায় বসানোর ডিসপ্লে ,গ্লোভ, পোশাক ইত্যাদি পরিধান করার মাধ্যমে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে বাস্তবকে উপলব্ধি করা হয়।
পরিশেষে:- ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সম্পর্কে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।পরবর্তী আর্টিকেল না পাওয়া পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকেন ,সুস্থ থাকেন। আল্লাহ হাফেজ।
You must be logged in to post a comment.