প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক বিরাট পরিবর্তন এসেছে। যার ফলে চিকিৎসাব্যবস্থা এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সেই সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
ভুমিকা:
বর্তমান যুগকে বলা হয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। এই যুগে এসে মানুষের জীবনযাত্রা অনেক সহজ হয়েছে। মানুষ এখন ঘরে বসেই সারা পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে। যা চিকিৎসাশাস্ত্র কে করেছে আরো বেশি প্রাণবন্ত এবং আরো বেশি উন্নত। চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রযুক্তির ছোঁয়া নিয়ে আলোচনা করব।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার:
চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে এসেছে আমূল পরিবর্তন । যার ফলে মানুষ ভুল চিকিৎসার শিকার হচ্ছেন কম। যার ফলে ঘরে বসেই মানুষ বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।
এবং পছন্দসই ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ সেবা গ্রহণ করতে পারে। ফলে এখন আর ডাক্তাররা আন্দাজের ওপরে নির্ভরশীল নয়। এখন কোন রোগ নির্ণয় করতে হলে খুব যত্নে রোগীর শরীরের যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। যা সবই সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির ছোঁয়া।
আগেকার দিনের চিকিৎসা ক্ষেত্রে:
চিকিৎসা ক্ষেত্র ছিল অনেক ধীর গতিসম্পন্ন। চিকিৎসা ক্ষেত্রে এত বেশি উন্নয়ন হয়নি। আধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার যন্ত্রপাতি ও ছিলনা। যা রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ডাক্তারদের এবং রোগীকে ঝক্কি পোহাতে হতো। এর ফলে অনেক সময় ডাক্তাররা আন্দাজের ওপরে নির্ভর করে রোগীর চিকিৎসা করতে। যার ফলে রোগীরা ভুল চিকিৎসার শিকার হতো।
এবং রোগীদের জীবনকে করে তুলতে বিষাদময়। আগের সার্জারি করতে হলে ডাক্তারদের বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো কিন্তু এখন আর তা হয়না । রোগ নির্ণয় যন্ত্রপাতি ছিলনা। যার ফল চিকিৎসা ব্যয় হয়েছিল অধিক। ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে অনেকেই চিকিৎসার অভাবে মারা যেত।রোগ নির্ণয়ের জন্য ছিলনা আধুনিক যন্ত্রপাতি।
আগে ভাঙাচোরা জন্য ব্যবহার করা হতো শল্য চিকিৎসা। যা ছিল অনেক সময় সাপেক্ষ এবং যন্ত্রণাদায়ক। ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হতো বিভিন্ন ঔষধি গাছের লতাপাতা শিকর। আগেকার যুগে মানুষ ছিল প্রকৃতির কাছে অসহায়। খুব সামান্য কোন রোগ হলে ওপ্রকৃতির উপর নির্ভরশীল থাকত যা তাদের করুণ পরিণতি ডেকে আনতে। ফলে মানুষ কুসংস্কার এবং তাবিজ উপর নির্ভরশীল ছিল।
বিজ্ঞানের যাত্রা শুরু:
মূলত বিজ্ঞানের যাত্রা শুরু হয়েছে আদিম গুহামানব থেকে । মূলত গুহা মানবরা যখন প্রথম আগুন জ্বালাতে শেখে তখন বিজ্ঞানের যাত্রা শুরু হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন ভাবে মানুষের মেধা পরিশ্রম এর মাধ্যমেপ্রযুক্তি বর্তমান পর্যায়ে এসে পৌঁছেছেন।
প্রযুক্তি মানুষের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। এখন পুরো বিশ্বে মানুষের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। প্রযুক্তি মানুষের সকল সীমাবদ্ধতাকে জয় করেছে। সহস্রা পথ পাড়ি দিয়ে বর্তমান পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে।
আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা:
গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটিস কে চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক বলা হয়। তিনি প্রথম আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন । চিকিৎসাশাস্ত্র হল রোগ উপশমের কলা বা শৈলী। মানব স্বাস্থ্যের রোগ নির্ণয় করার জন্য চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যায়ন করা হয়।
আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে উপনীত হয়ে চিকিৎসা খাতে অনেক পরিবর্তন এনেছে। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় অনেক বড় বড় রোগ খুব কম খরচে সেরে ওঠছে। যা সবকিছু সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির কারণে। এখন শৈল্য চিকিৎসার বদলে হোমিওপ্যাথি এবং এলোপ্যাথিক চিকিৎসার উদ্বোধন হয়েছে।
হয়েছে বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতির উদ্বোধন। আধুনিক ওষুধপত্র মধ্যে পেনিসিলিয়াম যার ফলে মানুষের তাবিজ-কবজ এবং কবিরাজের উপরে আস্থা অনেকাংশে উঠে গেছে। এর ফলে মানুষ এখনও পূর্বের থেকে অনেকচিকিৎসাব্যবস্থা উপরে নির্ভরশীল। বিজ্ঞানের অবদান এর ফলে সঠিক রোগ নির্ণয় করে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারছে।
চিকিৎসা সরঞ্জাম:
আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার একটি আলাদা মাত্রা যোগ করেছে বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থা। সবকিছু সম্ভব হয়েছে আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম এর মাধ্যমে। বিভিন্ন ধরনের রোগ নির্ণয়ের জন্য যন্ত্রপাতি রয়েছে। যার সাজে খুব সহজে রান্না করা সম্ভব।
এক্সরে , আলট্রাসনোগ্রাফি , ব্লাড টেস্ট করে কোলেস্টেরল ,ডায়াবেটিস ,কিডনি রোগ নির্ণয়, ক্যান্সার নির্ণয়প্রযুক্তির ব্যবহারে খুব সহজে জটিল ও কঠিন রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে। যা মানুষের জীবনকে করেছে আরো বেশি প্রাণবন্ত। সকল সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে। প্রযুক্তির উন্নয়ন বিজ্ঞানের একটি বিস্ময়কর অবদান।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সুফল:
বহু বছর ধরে চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়ে আসছে । ফার্মাসিটিক্যাল এবং চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে। ভবিষ্যতে চিকিৎসাব্যবস্থার অগ্রগতি হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না ঘরে বসে চিকিৎসাসেবা দেয়া যায় এবং সহজে চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় এমন কিছু ডিজাইন সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
মোবাইল ফোন:
মোবাইল প্রযুক্তির উন্নয়নের একটি আধুনিক ও বিস্ময়কর আবিষ্কার। মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের সাহায্যে ঘরে বসেই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা যায় ।
ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে ডাক্তারের সাথে সরাসরি রোগী কথোপকথন করতে পারে । এর ফলে ভুল চিকিৎসায় কোন সম্ভাবনা নাই। এখানে ডাক্তার রিপোর্ট দেখতে পারে পেকসিসন করতে পারে এবং রোগীকে প্রয়োজনীয় ওষুধ মেডিসিন যেতে পারে।
যার ফলে সময় বাঁচে এবং কোথাও যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে যে অতিরিক্ত খরচ না। যার ফলে রোগী খুব সহজে চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকে।
রোবটিক সার্জারি:
রোবটিক সার্জারির মাধ্যমে খুব সহজে ডাক্তাররা অনেক জটিল অপারেশন করে থাকে। যে সকল সার্জারি আগেকরা সম্ভব ছিল না। কিন্তু রোবটিক সার্জারি আসার পরে ডাক্তাররা সফলতার সাথে জটিল সার্জারি সম্পন্ন করতে পারছে।
কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন:
চিকিৎসা ক্ষেত্রে আরেকটি বিস্ময়কর এর আবিষ্কারক একটি কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন । অঙ্গ প্রতিস্থাপন চিকিৎসা গ্রহণের ফলে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ প্রানে বেচে যাচ্ছি। যা তাদেরকে নতুন জীবন দান করছে। এর ফলে হাত পা কিডনি সহ আরো নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্থাপন করা যাচ্ছে।
ভার্চুয়াল বাস্তবতা:
ভার্চুয়াল বাস্তবতা কিছুসময়ের জন্য রয়েছে। বর্তমান সময়ে মেডিকেল শিক্ষার্থীরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল বাস্তবতার খুব কাছাকাছি আসতে সক্ষম হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি তাদের বাস্তবতাকে বুঝতে সাহায্য করছেন।
যথার্থ ওষুধ:
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় করে যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে রোগী খুব সহজে সুস্থ হচ্ছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে ক্যান্সার, এইচআইভি মত কঠিন রোগের ওষুধের মাধ্যমে ভালো হচ্ছে এবং কেমোথেরাপির মাধ্যমে ভালো হচ্ছে। একটা ভালো দিক।
চিকিৎসা দেয়ার পরে প্রয়োজন নথিপত্র ডাটাবেজ এর মাধ্যমে সংরক্ষণ করতে পারে। যা পরবর্তীকালে আবার রোগী আসলে পূর্বের ডাটাবেজ অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ করে রোগীকে সঠিক চিকিৎসা প্রদান করা যায়
ভবিষ্যৎকালে ডাক্তাররা হাজার হাজার মাইল দূরে থেকে রোগীর উপরে পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে।
উপসংহার:
পরিশেষে বলা যায় যে চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার করে উন্নত করেছে। যার ফলে মানুষ সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে।
ধন্যবাদ
You must be logged in to post a comment.