অশুভ প্রযুক্তির থাবায় কিশোর সমাজ। অনিশ্চয়তায় ভবিষ্যত

তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে আজকাল অনেক ধ্বংসাত্মক কাজও সম্ভব হচ্ছে। ইদানিং ইন্টারনেটের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ, পর্ণোছবি দেখা,জুয়া খেলা ইত্যাদির প্রবণতা বাড়ছে। ফলে ছাত্র/ছাত্রীসহ কিশোর, তরুন ও যুবসমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটছে। উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েদেরকে বিপথগামী করছে। ঠেলে দিচ্ছে অন্ধকার পৃথিবীর দিকে, যা দেশও জাতির জন্য মঙ্গলজনক নয়।

দেখা গেছে, একটি শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ পর্যন্ত যে কেউ প্রযুক্তির ফাঁদে আটকে যেতে পারে কোরিয়ার একজন মানুষ টানা ৫০ ঘন্টা কম্পিউটার গেম খেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল।চীনের এক দম্পতি কম্পিউটার গেম খেলার খরচ সামলাতে তাদের শিশু-সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছিল। এধরনের আরো অনেক উদাহরণ রয়েছে, যা থেকে আমরা প্রযুক্তির অশুভ করাল গ্রাসের কথা অবহিত হতে পারি।

তাই নিম্নে এ বিষয় সম্পর্কে কয়েকটি কথা তুলে ধরলাম।

১. প্রযুক্তি আজ কিশোর সমাজের জন্য বিষতুল্য

আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবস্থার উন্নতি এবং দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে পৃথিবী আজ মানুষের হাতের মুঠোয়। পরিবেশ, সমাজ-সংস্কৃতি রাজনৈতিক পদ্ধতি অর্থনৈতিক উন্নয়ন সামাজিক অগ্রগতি এবং শিক্ষা সহ সকল ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার লক্ষণীয়।

কিন্তু প্রত্যেক জিনিসেরই দুটি দিক থাকে বেড সাইড ও গুড সাইড। তেমনি প্রযুক্তিরও ভালো মন্দ দুটি দিক রয়েছে।

 বর্তমান কিশোর-কিশোরীরাই আগামী প্রজন্মের উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাদের মধ্যে রয়েছে জ্ঞান শক্তি। এটাই তাদের জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছতে সাহায্য করে। কিন্তু প্রযুক্তির অশুভ শক্তি তাদের মস্তিষ্ককে শয়তানি কাজে লিপ্ত করে দেয়। এতে তারা প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ঠিকই, তবে নিজেদের অজান্তে ঢুকে পড়ছে অনৈতিক ও অসামাজিক কাজে।

 ২.প্রযুক্তি কিশোর সমাজের জন্য হিংস্রতুল্য

প্রযুক্তির অগ্রগতি আমাদের জীবনকে যেমন সহজ করে দিয়েছে এবং উন্নত করেছে, তেমনি এর অপব্যবহার আমাদের নৈতিক চরিত্রকে মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন করে দিয়েছে।

 কিশোর বয়সে যৌবনের নতুন উন্মদনা সৃষ্টি হয়। তাই তারা বিভিন্ন নাটক, নগ্ন ছবি, ভিডিও এবং বিভিন্ন যৌন উন্মাদনা সৃষ্টি হয় এমন অশ্লীল কিছু দেখতে ও শুনতে পুলকবোধ করে। আর উন্নত প্রযুক্তি তাদের জন্য তা একেবারে সহজ করে দিয়েছে। এর মাধ্যমে ফেইসবুক, ইন্টারনেট ও বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি তাদের জীবনে অধঃপতন ঘটায়। এতে করে প্রযুক্তির ব্যবহার এখন কিশোর  সমাজের জন্য হিংস্র হয়ে দেখা দিয়েছে।

৩. প্রযুক্তির থাবায় কিশোর সমাজ আজ ধবংসের পথে

 বর্তমান সমাজে মডার্ন ফ্যামিলি থেকে শুরু করে দ্বীনদার  ফ্যামিলি পর্যন্ত সবাই প্রযুক্তির ভয়াল থাবায় আক্রান্ত। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আর দ্বীন থেকে সরে যাচ্ছে। অধিকন্তু কিশোর সমাজের উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে যার কারণে তারা ধ্বংসের পথে ঢাবিত হচ্ছে।

 তাই যারা দ্বীনদার ফ্যামিলি, তাঁদেরকে এ ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। নিজ সন্তানদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি দিতে হবে এবং তাদেরকে সাবধান করতে হবে।পাশাপাশি যারা আধুনিক ফ্যামিলি, তাদেরকে দ্বীন সম্পর্কে বুঝাতে হবে এবং প্রযুক্তির কালো থাবা সম্পর্কে হুশিয়ার করতে হবে।

সতর্কতা

প্রযুক্তির উন্নয়ন আমাদেরকে কতটুকু শান্তি অস্বস্তিতে থাকতে দিলো এবং আমাদের জন্য কি ফলাফল বয়ে আনল, তা ভেবে দেখার বিষয়! আমরা যদি চারিদিকে চোখ বুলাই, তাহলে দেখতে পাব যে, প্রযুক্তির এই উন্নয়ন আমাদের ভালোর চেয়ে ক্ষতিই বেশি করেছে। বিশেষ করে কিছু সমাজ আজ পড়ালেখা বাদ দিয়ে ব্যস্ত থাকে ফেসবুক, টুইটার আর চ্যাটিং নিয়ে। এভাবে তারা আজ ধবংসের পথে তাই আমাদের বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles