প্রযুক্তি বিশ্বে এসব বিষয় প্রাধান্য পাবে ২০২৩ সালে, আপনি প্রস্তুত তো ?

প্রযুক্তি যাদের জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ, তাদের কাছে এই পোস্টটি বেশ পছন্দ হবে। এই পোস্টে আমরা জানবো ২০২৩ সালে প্রযুক্তি বিশ্বে যেসব বিষয় প্রাধান্য পাবে সেসব বিষয় সম্পর্কে। অর্থাৎ ২০২৩ সালের টেক ট্রেন্ড সম্পর্কে জানবেন এই লেখায়।

এআই

২০২৩সালে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ এআই ব্যবহার বাড়বে বহুগুণে। ড্রাগ-এন্ড-ড্রপ ইন্টারফেস এর কোডবিহীন এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যবসাগুলো আরো অসাধারণ প্রোডাক্ট ও সেবা তৈরি করতে পারবে।

ইতিমধ্যে এই ধরনের এআই প্রযুক্তির ব্যবহার আমরা দেখতে পাচ্ছি। এআই এর ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইন শপিং এর মত বিষয় আরো সহজ হয়ে যাবে। এছাড়া অটোনমাস ডেলিভারি সিস্টেমেও এআই বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

মেটাভার্স

মেটাভার্স নিয়ে অধিকাংশ মানুষের মাথাব্যাথা না থাকলেও ইন্টারনেটের প্রসারের সাথে সাথে আসছে বছর এই প্রযুক্তির প্রসার চোখে পড়বে আরো বেশি।

এক্সপার্টদের মতে ২০৩০ সালের মধ্যে গ্লোবাল ইকোনমিতে ৫ট্রিলিয়ন ডলার যোগ করবে মেটাভার্স, ২০২৩সাল হতে পারে এই প্রযুক্তির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। ২০২৩সালে অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এআর) ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) প্রযুক্তি আরো উন্নত হবে, যার ফলশ্রুতিতে স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে যাবে মেটাভার্স। এডভান্সড এভাটার টেকনোলজিও চোখে পড়বে এই বছর।

ইতিমধ্যে অনেক কোম্পানি ট্রেনিং এর কাজে এআর ও ভিআরের মত মেটাভার্স প্রযুক্তি ব্যবহার করছে যার ব্যবহার পরেরবছর আরো বৃদ্ধি পাবে। ২০২৩সালে ঘর থেকে অফিস করার ট্রেন্ড এর প্রসার দেখা যাবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

ওয়েব থ্রি

২০২৩ সালে ব্লকচেইন প্রযুক্তি আরো এডভান্স হয়ে যাবে, যার ফলে ডিসেন্ট্রালাইজড প্রোডাক্ট ও সেবার প্রসার ঘটবে। বর্তমানে আমরা ক্লাউডে সবকিছু জমা রাখি, ডিসেন্ট্রালাইজ ডাটা স্টোরেজ ব্যবহার করলে সেক্ষেত্রে আমাদের ডাটা নিরাপদ থাকার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত উন্নতি সাধিত হবে।

নতুনবছরে এনএফটি এর ব্যবহার ও গ্রহণযোগ্যতা আরো বৃদ্ধি পাবে। যেমনঃ এনএফটি টিকেট ব্যবহার করে ব্যাকস্টেজ এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া যাবে। এছাড়া বিভিন্ন ডিজিটাল সার্ভিস ও প্রোডাক্ট অ্যাকসেস করার কি (key) হিসেবে কাজ করতে পারে এনএফটি।

ভার্চুয়ালাইজেশন

ইতিমধ্যে ডিজিটাল ও বাস্তব বিশ্বের মধ্যে একটি সমন্বয় দেখা যাচ্ছে যা ২০২৩ সালে আরো ত্বরান্বিত হবে। ভার্চুয়াল সিমুলেশনকে বাস্তব বিশ্বের সাথে যুক্ত করে তৈরি হবে একটি বিশ্ব যা সিমলেস (seamless) অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।

ন্যানোটেক

আমরা এমন এক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছি যেখানে যেকোনো ধরণের ম্যাটেরিয়াল, প্ল্যান্ট, এমনকি মানুষকেও এডিট করা যাবে। শুনতে অবাস্তব মনে হলেও ন্যানোটেকনোলজির কল্যাণে এই কল্পবিজ্ঞান বাস্তবে রুপান্তরিত হয়েছে। ন্যানোটেক এর মাধ্যমে যেকোনো ধরনের বস্তু বা প্রানীতে এক্সট্রা ক্ষমতা এড করা যাবে।

জিন এডিট করা অনেকটা ওয়ার্ড প্রসেসিং এর মতই – কিছু শব্দ বাদ দিয়ে তার পরিবর্তে অন্য শব্দ যোগ করার মত জিন এর ক্ষেত্রেও সম্ভব। ডিএনএ মিউটেশনস ঠিক করা, ফুড এলার্জির সমাধান করা, শস্যের হেলথ বাড়ানো, এমনকি মানুষের চুলের বা চোখের কালার পর্যন্ত পরিবর্তন সম্ভব জিন এডিটিং এর মাধ্যমে

কোয়ান্টাম কম্পিউটিং

কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ডেভলপমেন্টের এক অসাধারণ প্রতিযোগিতা চলছে বর্তমানে। মূলত সাবএটোমিক পার্টিকলস ব্যবহার করে তথ্য সংরক্ষণ ও প্রসেস করার এক নতুন প্রযুক্তি কোয়ান্টাম কম্পিউটিং। এই প্রযুক্তির সুবিধা হলো এটি সাধারন প্রসেসরের চেয়ে ট্রিলিয়ন টাইমস দ্রুত যেকোনো টাস্ক অপারেট করতে পারে। ২০২৩সালে কোয়ান্টাম কম্পিউটার বিশ্বে অভাবনীয় উন্নতি দেখা যেতে পারে।

গ্রিন টেকনোলজি

কার্বন নির্গমন বৃদ্ধির ফলে জলবায়ুতে বিরুপ প্রভাব পড়ছে। ২০২৩সালে গ্রিন হাইড্রোজেন এর মত নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার মাধ্যমে প্রায় জিরো গ্রিনহাউস গ্যাস এমিশন হবে। ডিসেন্ট্রালাইজড পাওয়ার গ্রিডের ক্ষেত্রেও বেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা যাবে।  

রোবট

২০২৩সালে রোবট প্রযুক্তির ক্ষমতা ও উপস্থিতি আরও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। রিয়েল ওয়ার্ল্ড এর বিভিন্ন কাজে রোবট এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। ওয়্যারহাউজ ও ফ্যাক্টরির বিভিন্ন জটিল কাজ থেকে শুরু করে ম্যানুফ্যাকচারিং ও লজিস্টিকস এর কাজে মানুষের পাশাপাশি রোবট কাজ করবে।

অটোনমাস সিস্টেম 

ডেলিভারি ও লজিস্টিকস এর ক্ষেত্রে অটোনমাস সিস্টেম এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে ২০২৩সালে। অনেক ফ্যাক্টরি ও ওয়্যারহাউজ ইতিমধ্যে কিছুটা আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে অটোনমাসে পরিণত হয়েছে। ২০২৩সালে সেলফ-ড্রাইভিং ট্রাক ও শিপ এর পাশাপাশি ডেলিভারি রোবটেরও দেখা মিলবে।

টেকসই প্রযুক্তি

সাসটেইনেবল টেকনোলজি বা টেকসই প্রযুক্তির গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে আসছে বছর। বর্তমানে মোবাইল, কম্পিউটার, ইত্যাদি আমাদের প্রিয় প্রযুক্তি  হলেও এগুলোর কম্পোনেন্ট ম্যানুফ্যাকচার কিভাবে হচ্ছে সে সম্পর্কে আমাদের সচেতনতা অনেক কম বলা চলে।

এইসব বিষয়ে আসছে বছর ব্যবহারকারীদের মনে অধিক সচেতনতার সৃষ্টি হবে। ২০২৩সালে সকল ডিজিটাল সার্ভিস ও প্রোডাক্ট এনার্জি-এফিসিয়েন্সির দিকে অধিক নজর দিবে।

২০২৩ সালে প্রযুক্তি বিশ্বে কি কি নতুনত্ব বা পরিবর্তন আসছে বলে আপনার মনে হয়? আমাদের জানাতে পারেন কমেন্ট সেকশনে ?

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles