আমাদের প্রতিদিনকার জীবনে স্মার্টফোন যেমন জরুরি, তেমনি হাতের মুঠোয় থাকা ডিভাইসটির ব্যাটারি ব্যাকআপ সবচেয়ে হতাশার বিষয়।
কারণ স্মার্টফোন যতই আকর্ষণীয় হোক বা তাতে যতই হাজার ফিচার থাক না কেন, ঠিকঠাক চার্জ না থাকলে সমস্তই বেকার! তাছাড়া চার্জিংয়ের জন্য বেশি সময় লাগলে, সে বিষয়টিও বিরক্তির উদ্রেক করে।
ফাস্ট চার্জিংয়ের যুগে বেশি মিলিঅ্যাম্পিয়ার-আওয়ার (mAh) ক্যাপাসিটির ব্যাটারিযুক্ত হ্যান্ডসেট কিনলেও, অনেকেই ব্যাটারি খরচ বা চার্জিং সম্পর্কে সচেতনতা অবলম্বন করেন না।
আবার স্মার্টফোনের ব্যাটারি নিয়ে অধিকাংশই কিছু মিথ বা চলতি ধারণায় বিশ্বাস করে থাকেন। সেক্ষেত্রে আজ আমরা ফোনের ব্যাটারি সম্পর্কিত এমন কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলব,
যেগুলি উপেক্ষা করলে ফোনের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিস্ফোরণের মত দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ঝামেলা ছাড়া স্মার্টফোন ব্যবহার করতে চাইলে, আর্টিকেলের পুরোটা পড়ুন।
স্মার্টফোন চার্জের ক্ষেত্রে ব্যাটারি ভালো রাখতে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখা জরুরী
১. পার্শিয়াল চার্জিং:
বেশির ভাগ স্মার্টফোন ইউজারই তাদের ডিভাইস ১০০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ করতে পছন্দ করেন। এমনিতে সারাদিন আপনার ফোন চালু রাখার জন্য সেটিকে ফুল চার্জ করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে চার্জিংয়ের এরকম ধরন অনেক সময় ব্যাটারির জন্য খারাপ হতে পারে।
আবার অনেক ইউজার ফোনের ব্যাটারি ০ শতাংশে (ব্যাটারি ডিসচার্জ করে) নেমে না যাওয়া পর্যন্ত চার্জ করেন না। কিন্তু এটিও উচিত নয়. ফোনের ব্যাটারি ঠিকঠাক রাখতে সেটি আংশিকভাবে (পার্শিয়াল) চার্জ করতে হবে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফোন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ করুন এবং ব্যাটারি লেভেল কমে ৩০ শতাংশে না পৌঁছানো পর্যন্ত সেটি ব্যবহার করতে থাকুন।
২. রাতভোর ফোন চার্জ:
অনেকে মনে করেন যে, ফোন রাতের বেলায় চার্জ করলে ব্যাটারির লেভেল উন্নত হয় বা ভালো ব্যাকআপ পাওয়া যায়। কিন্তু এটি একটি মিথ, রাতের বেলা ফোন চার্জ দিলে পর্যাপ্ত চার্জিংয়ের পর সেটিকে আনপ্লাগ (Unplug) করুন। সারারাত এটি চার্জে রেখে দিলে ফোনের ব্যাটারির ক্ষতি হতে পারে।
৩. চার্জ চলাকালীন সময়ে ফোন ব্যবহার:
প্রচলিত ধারণার বশবর্তী হয়ে এবং বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে মনে করা হয় চার্জ দেয়ার সময় ফোনটি ব্যবহার করা হলে চার্জ ফুরিয়ে যাবে না। এজন্য ফোন চার্জিংয়ে দিয়ে অনেকেই তা ব্যবহার করেন।
কিন্তু আপনাদের বলি, কখনোই ফোন চার্জ করার সময় সেটি ব্যবহার করবেন না। কারণ আপনি চার্জ করার সময় ফোন ব্যবহার করলে ডিসপ্লে, প্রসেসর, জিপিইউ (GPU) এবং অন্যান্য অ্যাপ ক্রমাগত ব্যবহৃত হয়; ফলে ফোনের ব্যাটারি লাইফ এবং চার্জিংয়ে দীর্ঘমেয়াদী একটা প্রভাব পড়ে।
৪. ফোন অতিরিক্ত গরম হওয়া:
কেউ কেউ মনে করেন ফোন একটু আধটু গরম হয়ে গেলেও সমস্যা নেই। তবে, এটি আদতে সঠিক নয়। চার্জ করার সময় বা গেমিংয়ের দরুন কিংবা স্বাভাবিক কাজ করার সময় ফোন গরম হয়ে গেলে সম্ভবত ব্যাটারিতে কোনো সমস্যা হয়েছে।
এক্ষেত্রে শুধু ব্যাটারির কার্যকারিতায় প্রভাব পড়বে তা নয়, বরঞ্চ দিনের পর দিন এমন হলে এটি ফুলে যেতে পারে – এমনকি বিস্ফোরিতও হতে পারে।
তাই যখনই ফোন চার্জ করবেন, খেয়াল রাখবেন যেন তা গরম না হয়। খুব গরম (বাহ্যিক) তাপমাত্রায় বা খুব ঠাণ্ডা পরিবেশে ফোন চার্জ দেবেন না।
৫. নকল চার্জার ব্যবহার:
অনেকেই আছেন যারা প্রয়োজনে বা অসাবধানতায় যেকোনো চার্জার দিয়ে ফোন চার্জ করেন। কিন্তু আপনি যদি নকল চার্জার বা অন্য ফোন চার্জ দিয়ে আপনার ফোন চার্জ করেন,
তাহলে আপনার ফোনের ব্যাটারির আয়ুষ্কাল ধীরে ধীরে কমতে পারে এবং এর ওপর আরো অন্যান্য নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
পরিশেষ
স্মার্টফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।কেনই বা উঠবে না,আমাদের দৈনন্দিন কাজ সহজভাবে সম্পাদনের জন্য স্মার্টফোন অনেক বেশি সাহায্য করে থাকে।
তাই দ্রুততর সময়ে ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে গেলে,সেটা আমাদের সবার জন্যই অনেক বিব্রতকর।তাই আশা করি,স্মার্টফোন চার্জ দেয়ার ক্ষেত্রে উপরিউক্ত বিষয় গুলো খেয়াল রাখলে ফোনের চার্জ দীর্ঘক্ষণ বজায় থাকবে।
You must be logged in to post a comment.