পৃথিবী সৃষ্টির রহস্যে কুরআন vs বিজ্ঞান

বন্ধুরা আপনি যদি মহাবিশ্ব সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে বিজ্ঞান কি বলে ও ১৪০০ বছর আগে কুরআন কি বলেছে তা জানতে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আশা করি সৃষ্টি সম্পর্কে অনেক অজানা তত্ত্ব জানতে পারবেন।

পৃথিবী কি?

পৃথিবী হলো সূর্যের চারদিকে ঘূর্ণায়মান একটি গ্রহ।

পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য সম্পর্কে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা:

বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের এর বিখ্যাত বিগব্যাং থিওরি আজ সর্বময় স্বীকৃত। এ থিওরি অনুযায়ী মহাবিশ্বের সকল দৃশ্য অদৃশ্য গ্রহ নক্ষত্র সৃষ্টির শুরুতে একটি বিন্দুতে পুঞ্জিভূত ছিল।

একটা বিশাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে এরা চারদিকে ছড়িয়ে যেতে থাকে।

বিশ্বের সৃষ্টি সম্পর্কে জৌর্তিবিদ ভন কর্তৃক প্রদত্ত একটি ব্যাখ্যা হল বিগব্যাঙ থিওরী। যা ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যুগ যুগ ধরে তথ্য ও পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে এই থিওরি সর্বময় সমর্থিত হয়েছে।

বিগব্যাং থিওরি অনুসারে মহাবিশ্ব প্রাথমিকভাবে একটি নীহারিকা ছিল। সেখানে একটি মহাবিস্ফোরণ ঘটে ফলে ছায়াপথ তৈরি হয়।পরবর্তীতে এগুলো তারা, গ্রহ,সূর্য, চন্দ্র ও বিভিন্ন গ্রহতে রূপান্তরিত হয়।

পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য  সম্পর্কে কুরআনের ব্যাখ্যা:

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন সত্য প্রত্যাখ্যানকারীরা কি ভেবে দেখে না যে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী মিশেছিল ওতোপ্রোতোভাবে।অতএব আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম। ( সূরা আম্বিয়া - আয়াত ৩০)

আল্লাহ তায়ালা এখানে পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন যে,আকাশ মন্ডল ও গ্রহ নক্ষত্র একত্রে ছিল বা একটি পুঞ্জীভূত এলাকায় এক বিন্দুতে মিলিত ছিল।এরপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম।

বিগব্যাং থিওরির অর্থ কী :

বিগব্যাং থিওরির অর্থ হচ্ছে মহাবিস্ফোরণ তথ্য মানে একটি পুঞ্জিভূত নীহারিকা বলা একটি পুঞ্জীভূত বিন্দুতে পৃথিবী সহজ চন্দ্র, সূর্য আলাদা যত গ্রহ রয়েছে তার একটি নীহারিকা রূপে একটি বিন্দুতে মিলিত ছিল সেখানে বিস্ফোরণের মাধ্যমে এগুলো আলাদা হয়।

বিগব্যাং থিওরির কয়েকটি বাস্তবধর্মী উদাহরণ নিম্নরূপ :

বন্ধুরা চলুন একটি উদাহরণ দেই ধরুন একটি বিল্ডিং বিস্ফোরিত হল,বিল্ডিং বলা ভবন থেকে এটা আশা করতে পারেন যে একটা ছয়তলা ভবন বিস্ফোরণের মাধ্যমে আমাদের ছোট ছোট পাঁচ বা ছয়টি ঘরে হয়ে যাবে।

ধরুন, একটি কাচের জগতে আপনার হাত থেকে পড়ে গেল বা এটা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে ছোট ৬-৭ টাকা গ্লাস হয়ে যাবে। এটা কখনোই সম্ভব না। কারণ বিস্ফোরণ কোনদিনই লাভজনক হয়না।যদি না সেটা কন্ট্রোলে করা হয়।

যেমন: ধরুন গাড়ির ইঞ্জিন, সেখানে কিন্তু বিস্ফোরণের মাধ্যমে গাড়ির ইঞ্জিন থেকে শক্তি উৎপন্ন হয়।সেটা দিয়েই গাড়ি চলে।এখানে সেই বিস্ফোরণের ফলে প্রচুর কন্ট্রোল করা হয়।

গাড়ির ইঞ্জিনের মধ্যে যদি বিস্ফোরণটা কন্ট্রোলের বাহিরে হতে তাহলে কিন্তু গাড়ির ইঞ্জিনটাই ব্লাষ্ট হয়ে যেত।

তো বন্ধুরা এখানে লক্ষ্য করুন এখানে বিস্ফোরণ যদি কন্ট্রোলে না হতে তাহলে এটা লাভজনক হতনা, এতে ক্ষতিকারক কারণই দাড়াত ।

মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের হয়রানি:

মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে একটা বিস্ফোরণের মাধ্যমে। বিজ্ঞানীরা এখানে হয়রান হয়ে গেছে যে নিশ্চয়ই মহাবিশ্বের মধ্যে কেউ একজন এই বিস্ফোরণটা ঘঠিয়ে ছিল।

কারণ এই বিস্ফোরণটা অনেক কন্ট্রোলের মধ্যে করা হয়েছিল।

স্টিফেন হকিংয়ের বিগব্যাং থিওরির অনুযায়ী মিলিয়ন অফ মিলিয়ন সেকেন্ড যদি বেশি হতে এই মহাবিশ্বের বিস্ফোরণটা তাহলে এই গ্রহ নক্ষত্র সৃষ্টি হতে পারতনা এবং মিলিয়ন অফ মিলিয়ন সেকেন্ড যদি কম হতে তাহলে এগুলো সৃষ্টি হতো না।

তাহলে কতোটা কন্ট্রোলে এই মহাবিশ্বের বিস্ফোরণ বা বিগব্যাংটা হয়েছে এখান থেকে।

বিঞ্জানীরা হয়রান হয়ে গেছে যে কেউ নিশ্চয়ই বিস্ফোরণ হলে এতোটা কন্ট্রোলে করিয়েছে কারণ আপনা আপনি বিস্ফোরণ হলে এতো কন্ট্রোলে বিস্ফোরণ হওয়ার কথা ছিলনা

তো বন্ধুরা এখানে মিলিয়ন অফ মিলিয়ন এর অর্থ হচ্ছে ১ সেকেন্ডকে ভাগ করলে সেটা দাড়ায় সেখান থেকে ১ভাগ করলে সেটাকে আবার ১০ লক্ষ ভাগ করলে সে পরিমাণ ক্ষুদ্রতম অংশ দাড়ায়,

সেই ক্ষুদ্রতম অংশ যদি বেশি হতে,তাহলে এই গ্রহ নক্ষত্র সৃষ্টি হতনা বা কক্ষপথে আসতে পারতো না।

এর জন্য বিজ্ঞানীরা এটা মানতে বাধ্য হয়েছে যে,এই বিস্ফোরণটা কেউ একজন করিয়েছিল। এটার  পেছনে কোনে একজন সৃষ্টিকর্তা রয়েছে।

ডা. মিলার বলেছেন এই আয়াতটি নিয়ে চিন্তা ও গবেষণার পর কুরআন যে ঐশিক গ্রন্থ তার মেনে নিতে বাধ্য হয়। তিনি বলেন যারা প্রচার চালাচ্ছে কুরআন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নিজস্ব বক্তব্য তাদের দাবি নাকচ করার জন্য এই আয়াতটি যথেষ্ট।

মহাবিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে কুরআনের স্পষ্ট বাণী:

আল্লাহ তায়ালা এই পৃথিবী সৃষ্টির এই বিষয়টাকে কুরআনে ১৪০০ বছর আগে কত সংক্ষেপে বলে দিয়েছেন। "সত্য প্রত্যাখ্যানকারীরা কি ভেবে দেখে না যে আকাশ মন্ডল ও পৃথিবী মিশেছিল ওতোপ্রোতোভাবে, অতপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম।

(সূরা আম্বিয়া  আয়াত- ৩০)কত সংক্ষেপে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছিলেন।

বিজ্ঞানীরা বলেছে যে মহাবিশ্ব ছায়াপথ গঠিত হওয়ার পূর্বে সব পদার্থ প্রাথমিকভাবে গ্যাসীয় অবস্থায় ছিল।সংক্ষেপে বলা যায়,ছায়াপথ হওয়ার আগে বিপুল পরিমাণ পদার্থ গ্যাসীয় বা মেঘলা অবস্থায় বিদ্যমান ছিল।

অতএব  বন্ধুরা বিগব্যাং বলা বিস্ফোরণের ফলে কিছু ছড়িয়ে গিয়েছিল এবং এটা ছিল একটা ধোয়া বা গ্যাসীয় অবস্থায় এটা বিজ্ঞানীরা বলেছে।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন " অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ডুমরিকুন্জ,অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন "তোমরা উভয়ই আসো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়।

আমরা সেচছায় আসলাম। (হামীম- আয়াত-১১)

বন্ধুরা এখানে কুরআন বলছে ধূমরিকূন্জ ছিল। এটা কুরআন বলছে দেড় হাজার বছর আগে।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, তিনিই একজন দিন ও রাত সৃষ্টি করেছেন। সূর্য ও চন্দ্র সৃষ্টি করেছেন। প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমন করছে।( সূরা আম্বিয়া - ৩৩)

পৃথিবী সৃষ্টি সম্পর্কে টলেমির থিওরি অফ জিওসেন্টিওম:

টলেমি বিশ্বাস করতেন থিওরি অফ জিওসেন্টিওম এর মতবাদটি হলো পৃথিবী একদম স্থির। সূর্যসহ সব গ্রহ নক্ষত্র ঘুরছে পৃথিবীর চারদিকে।

এ মতবাদটি ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত ঠিকেছিল। এরপর পপার্স বললেন যে,পৃথিবী সহজ অন্য গ্রহ নক্ষত্র সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ করছে।

মাত্র ২৫ বছর আগে ও বিজ্ঞান মানুষকে জানাচ্ছিল সূর্য স্থির থাকে,এটি তার নিজ কক্ষের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে কিন্তু আজ এটা প্রমাণিত যে পৃথিবী ও সূর্য দুটোই গতিশীল।

তাই বলে দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা ১৪০০ বছর আগে।

শেষকথা: সৃষ্টির দিকে তাকালে স্রষ্টাকে চেনা যায়। মানুষের জ্ঞান হল সসীম আর আল্লাহর জ্ঞান অসীম। অসীম জ্ঞানের সাথে সসীম জ্ঞানের  কোনো তুলনা হতে পারে না।

আমার আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারবেন ভুলবেন না।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles