ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে আপনি কতটুকু নিরাপদ ?

আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন। আজকে আমি আলোচনা করবো ইন্টারনেট বা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় নিরাপদ থাকার উপায় সম্পর্কে। তো কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করি আজকের টপিক।

দেখুন, যখনই কোনো কম্পিউটার বা মোবাইল ডিভাইস অনলাইনে যুক্ত থাকে তখনই এর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়। সর্তকতা সহ বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করে এই ঝুঁকি কমানো যায়।

একজন অনলাইন ব্যবহারকারী নানান কারণে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট ব্যবহার করেন । বিভিন্ন ওয়েবসাইট এ বিভিন্ন তথ্য ইনপুট দিতে হয়। নয়তো প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইটে এক্সেস নেওয়া যায় না।

আমি এখানে কয়েকটি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ও নিরাপদ থাকার বিষয়টি আলোচনা করলাম আশাকরি উপকৃত হবেন :-

সাধারণ সাইটে নিরাপত্তাঃ অনেকেই ইয়াহু, হটমেইল বা জিমেইল এর মতো সাধারণ এবং বিনামূল্যের ই-মেইল সেবা ব্যবহার করে থাকেন।

এগুলোর প্রতিটি সাইটের একাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না ।হ্যাক হলে আমাদের অনেক প্রয়োজনীয় মেইল হারিয়ে যেতে পারে।

আবার ওই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে প্রতারণা করার কাজও হতে পারে, যার দায়-দায়িত্ব ইমেইল এড্রেস এর মালিক এর উপর বর্তায়।
এসব ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত সাধারণ সতর্কতাগুলো মেনে চলা দরকার:

সহজ পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করাঃ

অনেকেই তাদের ইমেইল একাউন্টের পাসওয়ার্ড হিসেবে নিজের নাম, কি বোর্ডের সহজ কিছু বর্ন (যেমন qwerty বা asdfg বা ১২৩৪৫৬৯৭৮) ব্যবহার করে। এটি মোটেই সংগত নয়।

কারণ ই-মেইলের ক্ষেত্রে ই-মেইল একাউন্টই ব্যবহারকারীর নাম, যা প্রায় সবাই জানে।যে কারণে পাসওয়ার্ডটি যদি সহজ হয় তাহলে যে কেউ মাত্র কয়েকটা চেষ্টাতেই অ্যাকাউন্টটি হ্যাক করতে পারবে।

এজন্য একটি জটিল কিছু ব্যবহার করা উচিত পাসওয়ার্ড হিসেবে। এবং এতে অক্ষর,সংখ্যা বিশেষ চিহ্ন (যেমনঃ !@# ইত্যাদি) ব্যবহার করা উচিত।

নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করাঃ কিছুদিন পর পর ই-মেইলের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা প্রয়োজন।

যেসব ক্ষেত্রে দ্বিমুখী ভেরিফিকেশনের ব্যবস্থা রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করা। যেমন,মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জিমেইল অ্যাকাউন্টটির নিরাপত্তা আরো শক্তিশালী করা যায়। এ জন্য জিমেইলের 2 Step Verification অপশনটি ব্যবহার করতে হবে। 

  • প্রোফাইল থেকে অ্যাকাউন্ট সেটিংয়ে যেতে হবে।
  • 2-step verification এখানে এডিট অপশনে ক্লিক করতে হবে।
  • মোবাইলের নম্বরটি দিতে হবে এবং সেন্ড কোড বাটনে ক্লিক করতে হবে।
  • জিমেইল থেকে মোবাইলে একটি সিকিউরিটি কোড পাঠানো হবে। সেটি দিয়ে ভেরিফাই অপশনে ক্লিক করতে হবে।
  • এরপর 2-step verificationটি অন করতে হবে।

এখানে কেউ এই অ্যাকাউন্টে অনধিকার প্রবেশ করতে চাইলে তাকে মোবাইল কোডটি পেতে হবে এবং ব্যবহার করতে হবে।যেহেতু কোডটি একবার মাত্র ব্যবহার করা যাবে সুতরাং কেউ আগের কোডটি জানতে পারলেও একাউন্টটি থাকবে নিরাপদ।একইভাবে ইয়াহু! মেইলেও অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

সাইবার ক্যাফে বা অনেকেই ব্যবহার করে এমন কোনো কম্পিউটার থেকে ই-মেইল ব্যবহার করলে,ব্যবহার শেষে অবশ্যই অ্যাকাউন্ট থেকে লগ-আউট করতে হবে। এতে একাউন্ট নিরাপদ থাকবে

এছাড়া সাধারণ ওয়েবসাইট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কিছু বাড়তি সতর্কতা মেনে চললে নিরাপদ থাকা যায়।অনেক ওয়েবসাইটে বিশেষ ধরনের প্রোগ্রাম ইনস্টল করা থাকে।

ওয়েব ব্রাউজারে কুকিজ চালু থাকলে এসব সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর কম্পিউটার ও ব্রাউজার এর বিভিন্ন তথ্য অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়।এসব ওয়েবসাইট ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকা প্রয়োজন।আবার কোনো কোনো ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য চায়। বিশেষ প্রয়োজন না থাকলে এই সকল তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন নাই।

সামাজিক সাইটে নিরাপত্তাঃ বর্তমানে অনেক সামাজিক যোগাযোগ সাইটে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য রেখে দেন। ব্যক্তিগত ছবিও অনেকে শেয়ার করে থাকে।

ফলে ফেসবুক একাউন্টের পাসওয়ার্ড কেউ জেনে ফেললে তাতে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। এক্ষেত্রে ই-মেইল সাইটে যে সকল নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার মতো অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগের সাইট ব্যবহারের সময় নিম্নোক্ত সর্তকতা মেনে চলা প্রয়োজন।

  • কাউকে 'বন্ধু' বানানোর আগে তার সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া:বাস্তব জীবনে যে তোমার বন্ধু হওয়ার যোগ্য নয়, তাকে বন্ধ না করা l
  • অপরিচিত কাউকে বন্ধু বানানোর সময় তার পরিচয় সম্পর্কে সম্যকভাবে নিশ্চিত হওয়া, এজন্য তার প্রোফাইল দেখা, পারস্পরিক বন্ধুদের মধ্যে কেউ তোমার পরিচিত কি-না সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন l
  • খুবই ব্যক্তিগত ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা
  • মোবাইলে ফেসবুক/ই-মেইল ব্যবহার করার পর প্রতিবারই লগআউট করা;
  • স্কুল, সাইবার ক্যাফেতে ইন্টারনেট ব্যবহার করার পর সাইন আউট করা;
  • বন্ধুর বা পরিচিত কারো কম্পিউটার ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকা এবংকোনো অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো ফেসবুক অ্যাপ্লিকেশন (App) ব্যবহারের অনুরোধ এলে, নিশ্চিত না হয়ে তাতে ক্লিক না করা।

আরও পড়ুনঃ

বয়স উপযোগী সাইটে নিরাপত্তাঃ ওয়েবে অনেক সাইট রয়েছে যা কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। এই সকল সাইটে বয়সোপযোগী নানান বিষয় থাকে যা সবার জন্য উপযুক্ত নয়।

এ ধরনের ওয়েবসাইট ব্যবহারের ফলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত তথা ফোনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ওয়েবসাইটে দৃশ্যমান অনাকাঙ্ক্ষিত চিত্র বা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

আজ এপর্যন্তই। এতোক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। কোনো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

আপনি কি লেখালেখি করে ইনকাম করতে চান? বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments
MD Lavlu Mojumder - Feb 21, 2022, 11:43 PM - Add Reply

ভাই, আমরা একে অপরের পোস্টে ভিজিট করে সবাই সবাইকে ইনকাম বাড়াতে সাহায্য করি।আমি আপনার পোস্টে ভিজিট করেছি। এবার আপনি আমার পোস্টে ভিজিট করুন।

https://blog.jit.com.bd/freelancing-4066

You must be logged in to post a comment.
Md Munna - Feb 25, 2022, 8:13 AM - Add Reply

Okay

You must be logged in to post a comment.

You must be logged in to post a comment.

Related Articles