ফেসবুক এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে ক্রিয়েটিভিটি আর মার্কেটিং স্কিলকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে প্রকাশ করা সম্ভব। আমরা অনেকেই বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এক্সপার্ট।
তন্মধ্যে কেউ মিম বানাতে পছন্দ করে, কেউ ভিডিও, কেউ ফেসবুকে ছবিও আঁকাতে এক্সপার্ট থাকে। এসব করে আমরা যেমন ফেসবুক আইডিতে ফলোয়ার বাড়াতে সক্ষম হই, তেমনি ফেসবুক পেইজ বা গ্রুপেও।
আজ আমাদের অজানা নয় যে, ফলোয়ার অর্জনের মধ্য দিয়ে ফেসবুক পেইজে মনিটাইজেশন অন করেও আর্ন করা সম্ভব। এসবের জন্য প্রয়োজন উত্তম প্রেজেন্টেশন।
হ্যা, প্রেজেন্টেশন ভালো করতে চাইলে আপনি যাবতীয় তথ্য লিখে প্রকাশ করুন। লেখার বিকল্প এখানে নেই। কারণ ফেসবুক অ্যালগরিদম লেখার মাঝ থেকে কিওয়ার্ড কাউন্ট করে আপনার রীচ বাড়াতে সক্ষম হবে।
একটা ব্যাপার লক্ষ্য করুন, আপনি যে কাজেই এক্সপার্ট হোন না কেন দিনশেষে আপনাকে লিখতে কিন্তু হবেই। সেটা মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির ক্ষেত্রে যেমন..
প্রযোজ্য তেমনি আপনি আপনার লেখার আকর্ষণীয় স্কিল দিয়ে টার্গেটেড অডিয়েন্স কালেক্ট করবার ক্ষেত্রেও সমান প্রযোজ্য। আর হ্যা, লেখার ধরনটা হতে হবে নিজস্ব এবং অপ্টিমাইজড ভিত্তিক।
এখন প্রশ্ন হল কিভাবে আপনি অপ্টিমাইজড লেখা লিখবেন। আর এই অপ্টিমাইজডই বা কী। অপ্টিমাইজড হল আপনার লেখার মাঝে সর্বোচ্চকরণ চেষ্টা, যেখানে আপনার অডিয়েন্স আপনাকে আরও উন্নত রূপে খুঁজে পাবে।
চলুন এবার দেখে নেয়া যাক অপ্টিমাইজড লেখা লিখবার ধরনটা কেমন।
ফেসবুকে অপ্টিমাইজড লেখা লিখবার উপায়
আপনি হয়তো জেনে থাকবেন সার্চ ইঞ্জিনের কথা। বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন আমাদের ব্যবহার্য। দৈনন্দিন জীবনে আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করি কিন্তু সার্চ ইঞ্জিন ছাড়া ব্যবহার করি তা হবে না।
কারণ সবসময় সার্চ ইঞ্জিন ব্যতীত ব্রাউজারে ইউআরএল ব্যবহার করলে আপনি নিজের মত করে সার্চ করবার সুবিধা পাবেন না। আমরা আজ তাই গুগল সার্চ ইঞ্জিনের সাথে এত পরিচিত। গুগল ছাড়াও আরও কিছু সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে, যেমন..
- মাইক্রোসফট বিং (Microsoft bing)
- ইয়াহু (Yahoo)
- বাইডু (Baidu)
- ইয়ানডেক্স (Yandex)
- ডাকডাকগো (DuckDuckGo)
- আস্ক ডট কম (Ask.com)
- আরকাইভ ডট অর্গ (Archive.org)
এখন কথা হচ্ছে, ফেসবুক সার্চ ইঞ্জিনে আপনার লেখা ইন্ডেক্স করাতে চাইলে জরুরী অপ্টিমাইজেশন, যাকে SEO বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বলা হয়ে থাকে। ফেসবুকের সার্চ ইঞ্জিনে লেখা ইন্ডেক্স করাতে তাই এই এসইও জরুরি।
ফেসবুকের নিজস্ব অ্যালগরিদম এই অপ্টিমাইজেশন এর কাজ করে থাকে, যা আসলে কিওয়ার্ড ভিত্তিক। এই কিওয়ার্ড পেতে চাইলে আপনি বিভিন্ন টুলস ব্যবহার করতে পারেন যার মধ্যে ahrefs টুলটি বেশ কার্যকরী।
এখানে কাঙ্ক্ষিত ওয়ার্ড লিখে সার্চ করলে আপনি কিওয়ার্ড ডিফিকাল্টি (KD) উল্লেখসহ বিভিন্ন হাই সার্চ ভল্যুম ও লো সার্চ ভল্যুমের কিওয়ার্ড পেয়ে যাবেন।
ধরুন, আপনার লেখার বিষয় 'অনলাইন ইনকাম'। এখন ahrefs টুলসে ইনকাম বা অনলাইন ইনকাম লিখে ফেসবুক সিলেক্ট করে সার্চ করলে বিভিন্ন কিওয়ার্ড পেয়ে যাবেন।
তবে কিওয়ার্ডের সিপিসি রেটসহ আরও যাবতীয় তথ্য হাইড থাকবে। এরজন্য আপনাকে সাইন আপ করতে বলা হবে।
ফেসবুক ফলোয়ার বাড়ানোর পদ্ধতি
আপনার ফেসবুক আইডিই হোক বা ফেসবুক পেইজ, ফলোয়ার বাড়ানোর ক্ষেত্রে পদ্ধতি প্রায় একই। তার জন্য চাই কিছু নিয়ম শৃঙ্খলা ও ক্রিয়েটিভিটি।
আপনি যদি ফেসবুকে বেশি বেশি সময় দেন, নিয়মিত স্ট্যাটাস বা পোস্ট দিতে থাকেন তবে ফেসবুক কর্তৃকই আপনার আইডির রীচ বেড়ে যাবে।
হ্যা, এজন্য আপনি বেশি বেশি ফ্রেন্ড রিকুয়েস্টও পাবেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই অর্জনটাকে ধরে রাখা। আর তারজন্যই প্রয়োজন ক্রিয়েটিভিটি। ক্রিয়েটিভ ফিল্ডের লোক হয়ে থাকলে আপনি বিভিন্ন ক্যাটাগরির কাজ বেছে নিতে পারেন।
আর যে ক্যাটাগরিই বাছুন না কেন আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে অডিয়েন্স সাইকোলজির ওপর। অডিয়েন্স আপনার কোন পোস্টে কীরকম আচরণ করছে তা বুঝুন, রিসার্চ করুন।
যে পোস্টের আচরণ আপনার কাছে ইতিবাচক মনে হয় সেটাকে আরও বাড়িয়ে তুলুন।
যেমন, ইদানীং মানুষ শর্টস ভিডিও খুব পছন্দ করে। কারণ এখানে শুরু থেকে শেষ অবধিই অডিয়েন্স এর অ্যাটেনশন দাবি করা হয় এবং অডিয়েন্সও অ্যাটেনশন দিতে বাধ্য।
যার দরুন শর্টস ভিডিও খুব দ্রুত ইনক্রিস করে লং ভিডিওর তুলনায়। তাই রীচ বাড়াতে এর তুলনা নেই।
যদিও শর্টস ভিডিও ইউটিউবে বেশি প্রাধান্য পায়। তা সত্ত্বেও এখন ফেসবুকেও এর প্রচুর জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাই ফিল্ড যেটাই হোক, আপনার চেষ্টায় আপনাকে যেকোনো ফিল্ডে প্রকাশ করবে৷
কখন পোস্ট করা উচিত?
এই প্রশ্নটি যদি আপনার মাঝে থাকে তাহলে নিশ্চিত থাকুন আপনি প্রায় ফেসবুক ফলোয়ার ধরাশায়ী করে ফেলেছেন। কারণ বেশিরভাগ আইডি বা পেইজ রীচ পায় নিয়মিত পোস্ট আপলোড করবার মাধ্যমে এবং সেটা নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী।
আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে আপনি কখন পোস্ট করবেন তা নির্ভর করছে আপনার ফলোয়ারদের সময় নির্বাচনের ওপর। তারপরও সাধারণত প্রায় সকলেই একটি নির্দিষ্ট সময়ে ফেসবুকে হাজির হয় এবং সেটা হচ্ছে সন্ধ্যার মাঝামাঝি থেকে রাত অবধি।
এই সময়টার মাঝে চেষ্টা করুন ঘন ঘন পোস্ট করতে। তবে খেয়াল রাখুন, আপনার পোস্ট যেন অন্যের বিরক্তির কারণ হয়ে না দাঁড়ায়। কারণ আপনি যদি দু'মিনিট পর পর পোস্ট করেন তবে লোকে কনফিউজড হয়ে যাবে।
আর সেইসাথে আপনার ফলোয়ার আপনার প্রতি হবে বিরক্ত৷ তাই সবচেয়ে উত্তম হল কমপক্ষে পয়তাল্লিশ মিনিট পর পর পোস্ট দেয়া।
এছাড়া আপনি যদি ভেবে থাকেন এখন যে পোস্টটি দিতে চাচ্ছেন পরবর্তীতে তা হয়তো দিতে মনে থাকবে না তাহলে তৎক্ষণাৎ পোস্টটি লিখেই শিডিউল করে দিন। আপনার করা শিডিউল অনুযায়ী আপনি অনুপস্থিত থাকলেও পরবর্তী সময়েই পোস্ট আপলোড হবে।
টার্গেটেড অডিয়েন্স কারা?
ফেসবুকে প্রায় সবাই-ই আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স। কারণ ফেসবুকে ধরাবাধা এমন কোনো নিয়ম নেই যে, আপনি পোস্ট দিলে কিছু লোক সেটা দেখবে আর কিছু লোক সেটা দেখবে না।
রীচের ক্ষেত্রে আপনি সকলের কাছে পোস্ট নিয়ে পৌঁছাতে পারেন যদি আপনার ফলো সেটিংসের সব পাবলিক মুডে থাকে বা আপনার প্রোফাইল আনলক থাকে।
টার্গেটেড অডিয়েন্স নির্দিষ্ট হবে তখনই যখন আপনার ক্যাটাগরি নির্দিষ্ট টপিকের ওপর থাকবে। ধরে নিই, আপনি গল্প লেখালেখি করেন। এখন গল্পের জন্য আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স তারাই যারা গল্প পছন্দ করে।
নিশ্চয়ই একজন পণ্য কিনতে ফেসবুকে আসা লোক আপনার গল্প পড়তে চাইবে না। তাই বেছে বেছে তাদেরকেই ফলোয়ার বানান যারা আপনার গল্প পড়তে পছন্দ করে।
অডিয়েন্সদেরকে কনভিন্স করুন
ফেসবুকে আপনি ফলোয়ার বাড়ালেও লাভ হবে না যদি তারা অর্গানিকভাবে আপনাকে ফলো না করে। অর্থাৎ আপনি চাইছেন ঠিকই তারা আপনার অ্যাক্টিভিটি সম্পর্কে আগ্রহী হোক কিন্তু আপনার অ্যাক্টিভিটি সবসময় তাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু নাও হতে পারে।
সেজন্যই বলছি অডিয়েন্সকে কনভিন্স করতে শিখুন। তারমানে এই নয় যে, আপনি সরাসরি অডিয়েন্সকে নক করবেন। আপনার পোস্ট মেনশন করবেন না, এতে বরং তারা আরও বিরক্ত হবে।
আপনাকে যা করতে হবে তা প্রফেশনাল বিহেভিয়ারের সাথে করতে হবে। মনে রাখবেন, আপনার প্রফেশনাল স্ট্যাটাসই আপনাকে অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছে দিতে বাধ্য করবে।
অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছাতে অবশ্য করণীয় হল:
- নির্দিষ্ট সময় সামনে রেখে পোস্ট করুন
- পোস্টে সহজ ও সাবলীল বিষয় তুলে ধরুন
- সাংঘর্ষিক কিংবা চেতনায় আঘাতকারী মন্তব্য থেকে দূরে থাকুন
- অন্যের পোস্ট দেখুন, শিক্ষা নিন এবং পোস্ট অনুযায়ী কমেন্ট করে আপনার অনুভূতি জানান। এখান থেকে ফলোয়ারের সাথে পরিচিত হবার সুযোগ রয়েছে
- বিভিন্ন ইভেন্ট অ্যারেঞ্জ করুন
আপনার এরূপ অ্যাক্টিভিটির কারণে সবাই আপনার মধ্যে আপনাকে না দেখেও পার্সোনালিটি খুঁজে পাবে, যা তাদেরকে আপনার কাজকর্ম ফলো করতে বাধ্য করবে।
ফেসবুক অ্যাক্টিভিটি বাড়ান
শুধু ফেসবুকে বেশি বেশি সময় দিলেই হবে না, অ্যাক্টিভিটিও বাড়াতে হবে। আপনার অ্যাক্টিভিটি হতে হবে কার্য কারণ ভিত্তিক। কারণ আপনার অ্যাক্টিভিটিগুলো ফলোয়ারদের চোখে পড়বে।
আর তারা যদি বুঝে যায় আপনি কেবল অ্যাটেনশন পাবার আশায় ফেসবুকে সময় দেন তবে তারা আর ফলোয়ার হিসেবে থাকবে না। থাকলেও আগের মত অ্যাক্টিভিটি দেখা যাবে না।
হ্যা, ফেসবুকে আপনি অ্যাক্টিভিটি বাড়ান এবং সেটা সত্যি সত্যিই কাজে লাগান।
অ্যাটেনশন পাবার আশায় প্রকৃতপক্ষেই কিছু করবেন না। এজন্য হাই প্রোফাইলদের ফলো করুন, বেশি বেশি কারেন্ট নিউজ পেইজ ফলো করুন এবং অনেক জানুন এসব সম্পর্কে।
আপনি যত বেশি জানবেন তত গবেষণা করতে সক্ষম হবেন। এই গবেষণার মধ্য দিয়েই আপনার পোস্টে আপনার ক্রিয়েটিভিটির প্রকাশ ঘটবে।
পরিশেষে, আপনি ফলোয়ার বাড়াতে সক্ষম হলেও ফেসবুকে অতিরঞ্জিত কিছু করবেন না। কারণ এটি এমন একটা প্ল্যাটফর্ম যেখানে রেস্ট্রিকশন খুব কড়া।
সুতরাং সমস্ত রেস্ট্রিকশন মেনে আপনাকে কাজ করতে হবে। এরজন্য বেশি বেশি জানুন, ফেসবুকে সময় দিন আর রিসার্চ করুন।
San polok bogger group থেকে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন।সেই সাথে আপনাকে কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তাই নিচের এই লিংকে ক্লিক করে গ্রুপে জয়েন হন:-
https://www.facebook.com/groups/4923657331062352/?ref=share
কিভাবে?
You must be logged in to post a comment.