জে আইটিতে আজ প্রথম লিখছি। দৈনন্দিন জীবনের কিছু প্রয়োজনীয় টিপস আপনাদের কাছে তুলে ধরছি। আশা করি এগুলো ফলো করলে একটু হলেও আপনাদের কিছু কাজ সহজ হবে। তো চলুন শুরু করা যাক-
1) কনডেন্সড মিল্ক এর কৌটা খোলার পর একদিন রাখলেই দেখা যায় পিঁপড়ে উঠে ভরে গেছে। একারণে অনেক সময় অনেক দুধ ফেলে দিতে হয়।
এ থেকে রেহাই পেতে কৌটা খুলে এমনি এমনি না রেখে একটা বাটিতে অল্প পরিমাণ পানি নিন। এরপর ঐ পানিতে কনডেন্সড মিল্কের কৌটা রেখে দিন। দেখবেন আর পিঁপড়া উঠবে না ইন শা আল্লাহ।
আর অবশ্যই কৌটা সবসময় ঢেকে রাখবেন।
2) অনেক সময় দেখা যায় নতুন কাপড় পড়ার পর অল্পদিনেই কাপড়ের সুতা উঠছে। এটা নিয়ে অনেক বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়।
এভাবে সুতা উঠলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। ভাল একটি রেজার দিয়ে কাপড়ে ওঠা সুতা তুলে ফেলুন। এভাবে যতবার উঠবে ততবার তুলে ফেলুন।
3) অনেক কাপড়ে বিশেষ করে সুতি কাপড়ে অন্য যেকোনো কিছুর লোম লেগে থাকে। যা দেখতে অনেক বিশ্রি লাগে। নতুন কাপড়ে লাগলে অনেক বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। বিশেষ করে শীতের দিনে লেপের নিচে ঘুমালে ঘুম হতে উঠলে দেখা যায় লেপের লোমে কাপড় সাদা হয়ে আছে।
এর সমাধান হিসেবে একটি রাবারের বলপেন নিন এবং সেটি দিয়ে কাপড় একদিকে ঘষতে থাকুন। লোম উঠে যাবে।
অথবা পেন্সিলের লেখা মিটানোর যেসব রাবার বা ইরেজার থাকে সেগুলো দিয়েও ঘষে ঘষে তুলতে পারবেন।
4) ঘরের মেঝে মোছার সময় ফ্যান ছেড়ে রাখুন তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।
5) যাদের ঘরে কার্পেট বিছানো থাকে, তাদের মেঝে মুছলে শুকাতে দেরি হয়।
তারা মেঝে মোছার পর ভিজা মেঝে শুকনো একটা কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
6) ভিজা মেঝেতে হাঁটবেন না এতে মেঝে নোংরা হয়।
7) বিস্কুটের প্যাকেট ছিড়ার পর প্যাকেটের সব বিস্কুট একটা কৌটায় ভরে ভাল করে মুখ বন্ধ করে রাখুন। না হলে বিস্কুট নষ্ট হয়ে যাবে অথবা পিঁপড়ে উঠে যাবে।
8) যারা আলু ভাজির জন্য সুন্দর করে ফলা ফলা করে কাটতে পারেন না। তারা গ্রেটার এর বড় সাইডে আলু অথবা অন্যান্য সবজি ঘষে নিন। দেখবেন সুন্দর ফলা ফলা হয়ে গেছে।
9) অল্প দিনেই চার্জার নষ্ট হয়ে যায়, এর সমাধান কী?
চার্জার কখনো মুড়িয়ে রাখবেন না। সব সময় ছেড়ে রাখবেন। চার্জার মুড়ালে অল্প সময়ে চার্জার নষ্ট হয়ে যায়।
এছাড়া শিশুদেরকে চার্জার নিয়ে খেলতে দিবেন না।
10) হেডফোনে বারবার গিট্টু লেগে যায়। এটাও এড়ানো সম্ভব।
হেডফোনের কাজ শেষ হলে সেটা হাতের চার আঙুলে হালকাভাবে পেচান। শক্ত করে ভুলেও পেচাবেন না। এরপর পেচানোটা আঙুল থেকে খোলে কয়েলের মতো করে বিছানার তোষকের নিচে রেখে দিন। আবার প্রয়োজনের সময় বের করে কাজ শেষে পুনরায় এভাবে করে রাখুন। এভাবে করলে আশা করি হেডফোনের গিট্টু খুলতে খুলতে হয়রান হওয়ার পরিমাণ কমে যাবে।
11) ওয়ারড্রোব, আলমারি, ড্রয়ার ইত্যাদির চাবি খুঁজতে গিয়ে প্রায়ই অনেক সময় নষ্ট হয়।
এজন্য চাবি এবং তালার জন্য ছোট্ট কোনো চিহ্ন অথবা নাম্বার লিখে স্কচটেপ দিয়ে তালা এবং চাবিতে লাগিয়ে রাখুন; যেমন - কোনো একটা তালার উপর লাগালেন "1" অথবা "A" অথবা "ক", তাহলে সেই তালার চাবিতেও হুবহু সেটিই লাগান যেটি তালায় লাগিয়েছেন। তাহলে চাবি খোঁজাখুঁজি করে বেহুদা সময় নষ্ট করতে হবে না।
12) আলমারির একেক তাকে একেক ধরণের জিনিস রাখুন। এভাবে ড্রয়ারেও একেকটি ড্রয়ারে একেক ধরণের জিনিস রাখবেন, তাহলে খুঁজে পেতে সুবিধা হবে।
এরপরও যদি অসুবিধা হয় তাহলে শক্ত এক একটা কার্ড ড্রয়ারের এবং তাকের জিনিসের উপর রেখে দিন এবং সেসব কার্ড যে ড্রয়ারে এবং তাকে রেখেছেন সে তাক এবং ড্রয়ারের জিনিসের নাম লিখে রাখুন। যেন সেটা খোলা মাত্র চোখে পড়ে।
তাহলে অযথা খোঁজাখুজি করে সময় নষ্ট করতে হবে না।
মনে রাখবেন সব ধরণের জিনিস একসাথে রেখে দিবেন না। এতে প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে পেতে অনেক সমস্যা হয়।
13) মোবাইল, কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ যাই ব্যবহার করুন না কেন, সব সময় সঠিক ফাইল সঠিক নাম দিয়ে লিখে রাখবেন। আর প্রতিটি ফাইল গুগল ড্রাইভে সেভ করে রাখবেন। তাহলে ডিভাইস থেকে মুছে গেলেও সেগুলো পুনরায় ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে।
14) কনটাক্ট লিস্টে অন্যের নাম্বার সেভ করার সময় তার সঠিক নামটি লিখুন। অথবা আপনি তাকে সবসময় যে নামে ডাকেন হুবহু সেটি লিখুন। এতে প্রয়োজনের সময় নাম্বার বের করতে নাম টাইপ করার সাথে সাথে চলে আসবে। অন্যথায় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
15) জরুরি সকল কাগজপত্র এক জায়গায় রাখুন। সেখানে অন্য কোনো কিছু রাখবেন না। সম্ভব হলে সবগুলোর পিডিএফ বানিয়েও সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। এতে কোন কাগজ হারিয়ে গেলে কাজে আসতে পারে।
16) যেসব গুরুত্বপূর্ণ ফাইলের পিডিএফ আছে সেগুলো প্রিন্ট করেও রেখে দিতে পারেন। কোন কারণে পিডিএফ নষ্ট হয়ে গেলে অথবা মুছে গেলে প্রিন্ট কপি দিয়ে কাজ সারতে পারবেন।
17) যেসব ঘরে শিশু আছে তারা সব সময় বাথরুমের দরজা বন্ধ করে রাখবেন আর অবশ্যই বাথরুমের জন্য আলাদা স্যান্ডেল ব্যবহার করবেন।
18) ঘর্মাক্ত কাপড় খুলে বাথরুমে রাখবেন না। এতে বাথরুমে ঘামের গন্ধ আটকে থাকে, ফলে অন্য কেউ বাথরুমে গেলে তার কাছে কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
19) চিরুনি পরিস্কার করার জন্য আলাদা একটা টুথব্রাশ রেখে দিন এবং প্রত্যেকবার পরিস্কার করে ধুয়ে রেখে দিন।
20) কোথাও বেড়াতে গেলে সাথে করে পলিথিনের ব্যাগ নিয়ে যান। কোন কিছু খেয়ে প্যাকেট, কৌটা ইত্যাদি রাস্তায় না ফেলে ডাস্টবিনে ফেলুন। আশেপাশে ডাস্টবিন না পেলে পলিথিনে ভরে নিজের ব্যাগে অথবা গাড়িতে রেখে দিন। অতঃপর গন্তব্যে পৌঁছে ডাস্টবিনে ফেলুন।
21) ঘুম থেকে ঠিক সময়ে উঠার জন্য এলার্ম সেট করে মোবাইল অথবা ঘড়ি কখনো কাছে রাখবেন না। এমন দূরে রাখবেন যেন বিছানা থেকে নেমে গিয়ে বন্ধ করতে হয়।
দূরে না রাখলে কখনো সময়মত উঠতে পারবেন না, ঘুমের ঘোরে এলার্ম বন্ধ করে আবার ঘুমিয়ে পড়বেন, ফলে দেরি হয়ে যাবে।
22) প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে খালিপেটে এক গ্লাস পানি পান করুন। এতে কিডনি ভাল থাকবে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম হবে।
23) টুকটাক ছোটছোট জিনিসপত্রের জন্য আলাদা আলাদা কৌটা ব্যবহার করুন এবং প্রত্যেকটির উপর নাম লিখে রাখুন। কখনো এক কৌটার জিনিস অন্য কৌটায় রাখবেন না। এতে অগোছালো হয়ে যাবে।
24) পলিথিনের প্যাকেট যেখানে সেখানে না ফেলে ভালো করে টানান। এরপর সুন্দর করে ভাঁজ করে আলাদা একটা কৌটায় ভরে রাখুন। দেখবেন দেখতেও ভাল লাগবে আর হঠাৎ নিজের অথবা অন্য কারো দরকার পড়লে খুব সহজেই বের করে দিতে পারবেন।
25) যদি ঘরের একাধিক সদস্য ঔষধ সেবন করেন। তাহলে প্রত্যেকের ঔষধ আলাদা আলাদা কৌটায় ভরে রাখবেন এবং প্রত্যেকের নাম লিখে রাখবেন। সকলের ঔষধ কখনোই একসাথে মিশাবেন না।
26) গরমের সময় মহিলাদের নামাজের হিজাব ঘন ঘন ধুয়ে দিবেন। কারণ গরমের দিনে নামাজের হিজাব কয়েকদিন পর পর ধুলে ঘামের গন্ধ জমা হয়ে দুর্গন্ধময় হয়ে পড়ে। এজন্য সম্ভব হলে প্রতিদিন অথবা দুই তিনদিন পর পর ধুবেন।
আর নামাজের হিজাব ঘরের দেয়ালে এক কোণে অথবা রুমের ভিতরের দরজায় ভেতর দিকে হোক লাগিয়ে সেখানে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। এতে রাতে ঘুমানোর সময় দরজা লাগিয়ে ঘুমালে সারা রাত ফ্যানের বাতাস লাগবে, ফলে ঘামের গন্ধ দূর হবে।
27) রাতে ঘুমানোর সময় বিছানার কাছে একটা গ্লাস আর পানিভর্তি জগ রাখবেন। তাহলে রাতে পানির পিপাসা পেলে খেয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়তে পারবেন। না হলে উঠে গিয়ে খেতে গেলে অনেকেরই ঘুম চটে যায়। বাকি রাত আর ঘুম আসে না।
28) ঘরের সবার ময়লা কাপড় রাখার জন্য আলাদা বড় একটি বালতি বা ঝুড়ি বা বউল রাখতে পারেন। আর শিশুদেরকে অবশ্যই ময়লা কাপড় খুলে এখানে সেখানে না রাখার শিক্ষা দিতে হবে।
29) ঘরে কোন অবস্থায় যেন ধুলো ময়লা না জমে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের খেলনা সব সময় ধুলো ময়লা মুক্ত রাখতে হবে। প্রয়োজনে খেলনা ধুয়েও দিতে পারেন।
30) যারা ঘরে পাখি পুষেন, তাদের ঘরে শিশু থাকলে খেয়াল রাখতে হবে যেন পাখির বিষ্ঠার নাগাল না পায়।
31) বারান্দায় গাছ লাগালে শিশুরা যেন গাছের পাতা না ধরে অথবা মুখে না দেয়। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অনেক গাছের পাতা মুখে দিলে ক্ষতির সমূহ সম্ভাবনা থাকে।
32) বারান্দায় লাগানো গাছের টব এবং পুরো বারান্দা সবসময় পরিস্কার রাখতে হবে। না হলে মশার উপদ্রব অথবা পোকা মাঁকড়ের বাসস্থান হয়ে যাবে।
You must be logged in to post a comment.