আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন। আজকে আমি আলোচনা করবো কম্পিউটার ভাইরাস সম্পর্কে। তো কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করি আজকের টপিক।
কম্পিউটার ভাইরাস সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে অনেক কিছু জেনে ফেলেছি। তবুও আমাদের আইসিটি জননিরাপত্তার কথাটি মাথায় রেখে এ বিষয়ে আরো জানা প্রয়োজন।
আমরা অনেকসময় দেখি বিভিন্ন প্রানিদের মধ্যে ভাইরাস ছড়ায়। তেমনি প্রাণীদেহে ভাইরাস আক্রমণের মতোই এ ভাইরাস গুলো আমাদের ব্যবহার করা আইসিটির যন্ত্রের ক্ষতি করে থাকে। ভাইরাস (Virus) শব্দের পূর্ণরূপ হল Vital information resources under Siege. যার অর্থ দাঁড়ায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সমূহ দখলে নেওয়া বা ক্ষতিসাধন করা।
এটি প্রথম নামকরন করা হয় ১৯২০ সালে এবং এর নামকরন করেছেন প্রখ্যাত গবেষক ইউনিভার্সিটি অফ নিউ হ্যাভেন( university of New haven) এর অধ্যাপক ফ্রেড কোহেন (Fread Cohen)।
ভাইরাস হলো এক ধরনের সফটওয়্যার যা কম্পিউটারে সংরক্ষিত তথ্য ও উপাত্ত কে আক্রমণ করে। আর এটাও জেনে রাখা দরকার যে এরা নিজেরাই সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে অর্থাৎ এদের সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষমতা রয়েছে।
ভাইরাস কম্পিউটারে প্রবেশ করলে সাধারণত এর সংখ্যা বৃদ্ধি হতে থাকে ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত কে আক্রমণ করে এবং একপর্যায়ে গোটা কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রকে সংক্রমিত করে অচল করে দেয়। যেমন "বুট ভাইরাস", ডিক্সের বুট সেক্টর কে আক্রমণ করে।
অতি পরিচিত কিছু ভাইরাস হলো স্টোন(stone), ভিয়েনা(Vienna), সিআইএইচ(CIH), ফোল্ডার(Folder), Trojan Horse ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ আপনি কি লেখালেখি করে ইনকাম করতে চান? বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন
কোনো ভাবে কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্র ভাইরাসে সংক্রামিত হলে তা ক্রমে ক্রমে বিস্তার ঘটে। সিডি, পেনড্রাইভ কিংবা অন্য যে কোন ভাবে ভাইরাসযুক্ত একটা ফাইল ভাইরাসযুক্ত কম্পিউটার বা কোন আইসিটি যন্ত্রে চালালে ফাইলের সংক্রামিত ভাইরাস কম্পিউটারের মেমোরিতে অবস্থান নেয়।
কাজ শেষ করে ফাইল বন্ধ করলেও সংক্রামিত ভাইরাসটি মেমোরিতে রয়েই যায়। ফলে ভাইরাসমুক্ত কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্র ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।
একই অবস্থা ঘটে কোনো ভাইরাস সংক্রামিত হওয়া প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার চালালেও। এভাবে মেমোরিতে স্থান দখল করে ভাইরাস পরবর্তী অন্যান্য প্রোগ্রাম ও ফাইলকেও আক্রমণ করে।
কোনো কোনো ভাইরাস তাৎক্ষণিকভাবে সকল প্রোগ্রাম ও ফাইলকে গ্রাস করে, আবার কোন কোন ভাইরাস শুধু নতুন প্রোগ্রাম অফ ফাইলকে আক্রমণ করে।
প্রোগ্রামসমূহ গ্রাস করতে করতে ভাইরাস তার ইচ্ছামত কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ সার্বিক ক্ষতিসাধন শুরু করে। এভাবে একটা ভাইরাসমুক্ত কম্পিউটার ধীরে ধীরে ভাইরাসে সংক্রামিত হয় এবং উক্ত সংক্রামিত কম্পিউটারে ব্যবহৃত সিডি, হার্ডডিক্স, ইন্টারনেট ইত্যাদির মাধ্যমে ভাইরাসটি অন্যান্য কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে।
কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্র ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ সমূহঃ
- প্রোগ্রাম ও ফাইল open করতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি সময় লাগছে;
- মেমোরি কম দেখাচ্ছে ফলে গতি কমে গেছে;
- কম্পিউটার চালু অবস্থায় চলমান কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কিছু অপ্রত্যাশিত বার্তা প্রদর্শিত হচ্ছে;
- নতুন প্রোগ্রাম ইনস্টল এর ক্ষেত্রে বেশি সময় লাগছে;
- চলমান কাজের ফাইলগুলো বেশি জায়গা দখল করছে;
- যন্ত্র চালু করার সময় চালু হতে হতে বন্ধ বা শাটডাউন হয়ে যাচ্ছে কিংবা কাজ করতে করতে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বা রিস্টার্ট হচ্ছে;
- ফোল্ডারে বিদ্যমান ফাইল গুলোর নাম পরিবর্তন হয়ে গেছে, ইত্যাদি।
আরও দেখুনঃ
- কিভাবে ফেসবুক একাউন্টে Follow অপশন চালু করা যায়?
- ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে?
- আইপি এড্রেস আসলে কী?
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সম্পর্কে অজানা তথ্য!
- সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তি? মুক্ত থাকার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন!
ভাইরাস সাধারণত যা যা ক্ষতি করতে পারেঃ
- কম্পিউটারের সংরক্ষিত কোন ফাইল মুছে যেতে পারে;
- সংরক্ষিত তথ্য বিকৃত বা বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে;
- কম্পিউটারে কাজ করার সময় আচমকা অবাঞ্ছিত বার্তা বা এলার্ট প্রদর্শন করতে পারে;
- কম্পিউটার মনিটরের ডিসপ্লে কে বিকৃত করে দিতে পারে;
- সিস্টেমের কাজকে ধীরগতিসম্পন্ন করে দিতে পারে, ইত্যাদি।
তো প্রিয় পাঠক, আমি এতোক্ষণ আলোচনা করছিলাম কম্পিউটার ভাইরাস এর লক্ষন এবং ভাইরাসের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। আজ এপর্যন্তই। ভালো থাকবেন।
You must be logged in to post a comment.