আপনি কি জানেন নিয়মিত হাঁটলে আমাদের শরীরে কত ধরনের উপকার হয়ে থাকে।

বর্তমান সময় আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কাজের চাপের উপরে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। আমরা অনেকেই আছি যারা জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজের প্রতি চলে যেতে হয়। তখন হয়তো আমাদের শরীরের উপরে খুব একটা খেয়াল রাখা হয় না। কিন্তু আপনারা হয়তো জানেন না যে  একটি মানুষ যদি নিয়মিত হাঁটতে পারে তাহলে তার শরীরে নানা ধরনের উপকার হয়ে থাকে। আমাদের না হাঁটার কারনে আমরা বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের মুখোমুখি হয়ে থাকি।

প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটলেও আমাদের শরীরে নানা উপকার হয়ে থাকে। আমরা যারা শহর অন্চলে বসবাস করে থাকি, আমাদের শহরে বিভিন্ন চাকরি করার কারনে আমরা প্রতিনিয়ত হাঁটার কথা ‍ভুলে যাই। যা আমাদের শরীরের জন্য মারাত্নক ক্ষতি সাধন করে থাকে। আমাদের শরীরে অনেক প্রকার সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।

আর তাছাড়া যারা গ্রামে বসবাস করে থাকে তাদের বেশিভাগ মানুষের হাঁটাহাাঁটি করার অভ্যাস থেকে থাকে। আমরা যখন সময় পাই তখনও যদি হাঁটাহাঁটির অভ্যাস করে থাকি তাহলে আমাদের জন্য তাও উপকার বয়ে আনে। কিন্তু আমরা অনেকেই আছি যারা কাজের চিন্তার ক্ষেত্রে হাঁটাহাাঁটি করার কথা একদম ভুলে যাই। সেটি আমদের ভুলে যাওয়া মোটেও উচিত হয় না। সাধারনত চিকিৎসকরাও মানুষকে প্রতিনিয়ত হাঁটার কথা বলে থাকে।

হাঁটলে শুধু আমাদের শরীর ভালো থাকে তাই না এটি আমাদের শরীরে নানা অসুখ বিসুখের বিরুদ্ধেও কাজ করে থাকে। চিকিৎসা বিঙ্গানিরা গবেষনা করে অনেক প্রমাণ পেয়েছে যে হাঁটার মাধ্যমে মানবদেহের শরীরে বিশেষ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তলে। প্রতিদিন হাঁটা আপনাকে যেমন সুস্থ ও সতেজ রাখবে তেমনি আপনাকে মানসিক ভাবেও ভালো রাখবে। আপনি প্রতিদিন কিছু সময় হাঁটার পিছনে ব্যয় করে নিজের ভিতরে একটি শক্ত অভ্যাস গড়ে তুলেন।

দেখবেন শারীরিক দিক দিয়ে আপনি অনেক সুস্থ থাকবেন। আজকে আমরা আমদের এই লিখা তে হাঁটার উপকারিতা গুলো কি কি তা আপনাদের অনেক ভালো ভাবে জানানো চেষ্ঠা করবো। হাঁটার উপকারিতা সমূহ নিচে আলোচনা করা হল: 

১. হৃদপিন্ড সুস্থ রাখে: 

নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করা হৃদপিন্ড সুস্থতার জন্য বিশেষভাবে উপকারী। যারা সপ্তাহে তিন ঘন্টা খুব দ্রুত গতিতে হাঁটতে পারেন, তাদের করোনারি তে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম। সেই সঙ্গে কমে যায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। হৃদপিন্ড থাকে সুস্থ সবল ও অধিকতর কার্যক্ষম। রক্তে কোলেস্টেরল মাত্রার তারতম্য করোনারি হৃদরোগের অন্যতম কারণ হয়ে থাকে।

হৃদপিন্ডের সুস্থতার জন্য ক্ষতিকর কোলোস্টেরল এল ডি এল এর পরিমাণ থাকা চাই পরিমিত আর উপকারী। কোলোস্টেরেল এইচডিএল এর পরিমাণ থাকা উচিত নির্দিষ্ট সীমার চেয়ে বেশি। নিয়মিত হাঁটলে এলডিএল এর পরিমাণ কমে আর রাড়ে এইচডিএল এর পরিমাণ। হৃদপিন্ডের সুস্থতার জন্য এটি জরুরী। 

২. ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখে: 

প্রতিদিন হাঁটলে শরীরে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমাদের অতিরিক্ত ওজন ও মেদ দুটোই অনেক বেশি ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেকেই নানা কাজ করে থাকে আবার অনেকই বিভিন্ন অর্থ ব্যয় করে থাকে। কিন্তু ভালো মতন ফল তারা পান না। তবে প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটলে শরীরে অতিরিক্ত ওজন দ্রুত কমতে শুরু করে।

যা আপনার দেহে থাকা অতিরিক্ত ক্যালরি এবং ফ্যাট ক্ষয় করে। এ জন্য আমাদের অতিরিক্ত ওজনের কমাতে প্রতিদিন হাঁটাহাঁটি করা বিশেষ গুরুত্বপুর্ণ। 

৩. হাঁটা ন্যাচারাল বাইপাস: 

যারা প্রতিদিন হাঁটেন তাদের হৃদপিন্ডের চারপাশে কোলেস্টারাল সারকুলেশন গড়ে ওঠে। হৃদপিন্ড ব্লকেজ আক্রান্ত ধমনীর চারপাশে কিছু পরিপূরক রক্ত নালী সচল হয়ে ওঠে। এটি সচল হওয়ায় হৃদপিন্ডের চারপাশে যথাযথ ভাবে রক্ত পৌছে যায়।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রক্ত নালীর সংখ্যা কারো কারো ক্ষেত্রে দুশো থেকে আড়াইশটি পর্যন্ত হতে পারে। চিকিৎসা বিঙ্গানের ভাষায় একে ন্যাচারাল বাইপাস বলা হয়ে থাকে। 

৪. উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস, ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়:

যাদের ডায়বেটিস আছে সপ্তাহে অন্তত চার থেকে পাঁচ দিন জোরে হাঁটুন। বিশেষঙ্গ চিকিৎসকরা বলেছেন, হাঁটা ডায়বেটিস রুগী দের জন্য বেশি কার্যকর। স্ট্রোকের ও ঝুঁকি কমিয়ে থাকে। নিয়মিত হাঁটার মাধ্যমে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখে স্ট্রোকের ঝুঁকি মুক্ত থাকুন। এবং উচ্চ রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে আসবে বলেছেন চিকিৎসকরা। 

৫. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়:

একাধিক গবেষণায় বিঙ্গানিরা নিশ্চিত হয়েছে যে, নিয়মিত হাঁটার ফলে মহিলাদের  কোলন ক্যান্সার এবং বিশেষত মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। এমনকি ক্যান্সর আক্রান্ত রুগিদের মধ্যে যারা নিয়মিত হাাঁটেন তাদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক কম। 

৬. বিষন্নতা দূর করে:

হাঁটাহাঁটি করলে সাধারনত বিষন্নতা প্রতিরোধ ও নিরাময় করে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, গুরুত্বর বিষন্নতায় যারা ভুগছিলেন এমন  রুগীদের মধ্যে একদলকে নিয়মিত হাঁটার পরামরর্শ দেওয়া হয়েছিল যে কোন সময় হাঁটতে। টানা ১২ সপ্তাহ দেখা গেছে যে, তাদের বিষন্নতায় হার কমেছে উল্ল্যেখযোগ্য মাত্রায়। 

৭. দীর্ঘায়ু করে:

চিকিৎসকরা বলেছেন যে, হাঁটা আপনার দীর্ঘায়ু সম্ভাবন বাড়ায়। আপনাকে সুস্থ রাখে তাই নিয়মিত হাঁটুন। সকালে বিকালে বা রাতে আপনি যখন সময় পান আপনার সুবিধা মতন হাঁটুন। একে সাধারনত আপনার দৈনন্দিন রুটিনে তালিকায় যুক্ত করুন। দেহ মনের সুস্থতার জন্য জোর কদমে হাঁটা উচিত। ঘন্টায় ৪ মাইল বেগে হাঁটতে পারাটা অনেক উপকারের। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন যত বেশি হাঁটতে পারবেন আপনা আয়ু তত বেশি বাড়বে। 

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

নাম: বাধন কুন্ডু । একজন আর্টিকেল রাইটার । ১০০% ইউনিক ও কপি মুক্ত আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।