আসসালামু আলাইকুম ’ আাশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি ও ভালো আছি ‘ আলহামদুলিল্লাহ ’।
আমার আগের পোস্টে আমি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিক্স নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আর সেই পোস্টে বলেছিলাম ভার্চুয়াল হোম রোবট আজুমা হিকারি নিয়ে লিখব। তাই আজকের আমার এই পোস্ট আজুমা হিকারি সম্পর্কে। আজ আমরা আজুমা হিকারি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানার চেষ্টা করব।
প্রথমে জেনে নেওয়া যাক আজুমা হিকারি কি বা কে?
আজুমা হিকারি হচ্ছে একটি ভার্চুয়াল হোম রোবট। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিক্স প্রযুক্তি একত্রে প্রয়োগ করে জাপানে একটি রোবট তৈরি করা হয়েছে। এই রোবটটির নামই হচ্ছে আজুমা হিকারি।
আমরা সকলেই জানি রোবট তৈরি করার আসল কারণ হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা। যে সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ মানুষ করতে পারে না বা যে সব কাজ করলে মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পরতে পারে সেই সকল কাজ গুলো বিভিন্ন রোবট তৈরি করে তাদের দিয়ে করানো হয়ে থাকে। কিন্তু হিকারিকে সেসব ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়নি।
আপনারা জানলে অবাক হবেন এই জাপানি ভার্চুয়াল হোম রোবটটি প্রস্তুত করা হয়েছে একটি সঙ্গী হিসেবে। মানুষের প্রয়োজনে ও একাকিত্ব দূর করার জন্য এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সহকারী তৈরি করা হয়েছে। তাই হিকারিকে ভার্চুয়াল স্ত্রী ও বলা হয়ে থাকে। আজুমা হিকারি হচ্ছে বিশ্বের সর্বপ্রথম ভার্চুয়াল স্ত্রী। জাপানি কোম্পানি ভিনক্লু এই রোবটি তৈরি করেছে। আর হিকারিকে দেখা যাবে হলোগ্রাফিক পর্দায়।
হিকারির ওজন ও উচ্চতা খুবই কম, তাই তাকে একটি ছোট্ট ডিভাইসের মধ্যে রাখা হয়েছে। ডিভাইসটি হচ্ছে গেইট বক্স। হিকারিকে নির্মাণকৃত কোম্পানি ভিনক্লু এর তৈরী গেইট বক্স ইলেকট্রনিক ডিভাইসের অভ্যন্তরে হিকারির বসবাস।
হিকারি যেভাবে কাজ করে বা এর ফাংশন সমূহ,
লেজার প্রযুক্তির ডিফিউস অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট প্রক্ষেপণের মাধ্যমে হিকারিকে গেইট বক্স এর অভ্যন্তরে উপস্থাপন করা হয়। যেখানে প্রজেক্টর হতে উৎসারিত আলো স্ক্রিনের উপর প্রদর্শিত হয় এবং হিকারিকে হলোগ্রাফিক মডেলের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।
গেইট বক্স এর বাইরের দিকে রয়েছে একাধিক মাইক্রোফোন, ক্যামেরা এবং সেন্সর। এগুলোর সাহায্যে হিকারি তার গৃহকর্তার স্মার্ট হোমের সকল যন্ত্রাংশ হোম নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম।
হিকারির পরিচিতি,
হিকারি ২০ বছরের তরুণী। যার উচ্চতা ১৫৮ সে.মি। সে এনিমি দেখতে পছন্দ করে। সে ডোনাট খেতে পছন্দ করে। তবে পোকামাকড় তার একেবারে অপছন্দ। তার ইচ্ছা যারা কঠোর পরিশ্রম করে তাদের জন্য সে যেকোন অবয়বে নায়িকা হতে চায়।
হিকারির নকশা প্রস্তুত করেছেন তারো মিনোবশি। হিকারি জাপানিজ ভাষায় কথা বলে। আর হিকারিকে কন্ঠ দিয়েছে জাপানের বিখ্যাত অভিনেত্রী ইউকা হায়ামিজু।
হিকারি যে সব কাজ গুলো করে থাকে,
হিকারি তার গৃহকর্তার সাথে কথোপকথন করে থাকে। হিকারি আপনাকে শুভেচ্ছা ও দৈনিক ছন্দ শুনাবে। দিনের কর্মসূচি জানাবে যেমন: আপনার জেগে ওঠার সময়, বাহিরে যাওয়ার সময়, আপনার ঘরে আসার সময় এবং ঘুমাতে যাওয়ার সময়।
অর্থাৎ আপনার দৈনিন্দন জীবনে সহায়তা করা তার কাজ।তার কাছ থেকে গান শুনতে পারবেন, আবহাওয়ার অবস্থা, দিনপঞ্জিকা এসব কিছু আপনি তার কাছ থেকে জানতে পারবেন। হিকারি জানবে যে আপনি বাসায় আছেন না বাহিরে আছেন। আপনি যদি বাসার বাহিরে থাকেন তখন সে টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে আপনার খোঁজ খবর নিবে এমনকি একটি নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম হওয়ার পর বাসায় ফিরার কথা ও সে জানিয়ে দিবে।
তাছাড়া সে আপনাকে বিভিন্ন কিছু মনে করিয়ে দিবে। এই সব কার্যক্রম সে ইন্টারনেট, ওয়াই ফাই, ব্লু টুথ, লোকাল নেট কিংবা ইনফ্রারেড মাধ্যম ব্যবহার করে সম্পন্ন করে থাকে। হিকারি আপনার সাথে কথোপকথনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে জিনিস গুলো শেখে। বর্তমানে হিকারি শুধু জাপানি ভাষা বলতে ও বুঝতে পারে। তবে ভবিষ্যৎে সে অন্যান্য ভাষা গুলো বুঝতে ও বলতে পারবে।
আশা করি সকলেই আজুমা হিকারি সম্পর্কে সামান্য পরিমাণ হলে ও জানতে পেরেছেন। আপনাদের কাছে কেমন লাগল জানাতে ভুলবেন না। আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তী পোস্টে আবার দেখা হবে।
আল্লাহ হাফেজ।
অসাধারন!
You must be logged in to post a comment.