প্রিয় বন্ধুরা, আসসালামুআলাইকু।সবাই কেমন আছেন।
আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায় গুলো নিয়ে।
সূচনা:-
শিক্ষার্থীদের জন্য দুনিয়ার সব চেয়ে বড় ঝামেলার কাজ হলো পড়ালেখা করা। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব শিক্ষার্থীদের একটিই সমস্যা পড়ালেখায় মন বসে না।
পড়তে বসলে ঘুম চলে আসে, আর মাথায় এসে ভরকরে পৃথিবীর সমস্ত চিন্তা।তাই সারা দিন পড়ার টেবিলে বসে ও আর পড়া শেষ হয় না।
তাই ত এখন সবাই পাগলের মতো করে পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায় খুজছে।
সত্যি কথা বলতে কারোই পড়তে বসতে মন চায় না।কিন্তু চিন্তার কোন কারন নেই কিছু কৌশল আছে যে গুলো অনুসরণ করে আপনি ও পড়ালেখায় মনোযোগী হতে পারবেন।
কিছু সহজ এবং বিজ্ঞানসম্মত উপায় আছে যে গুলো অনুসরণ করে আপনিও পড়ালেখায় মনোযোগী হতে পারবেন।
ত চলুন দেখে নেই পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায় গুলো কিকি।
১/ জীবনের লক্ষ্য স্থির করা।
২/ রোটিন অনুযায়ী পড়া।
৩/ নিয়মিত নোট করা।
৪/ কাউকে শিখাতে যাওয়া।
৫/ নিজেকে পুরষ্কৃত করা।
৬/ টার্গেট সেট করা।
৭/ টেবিলে বসে পড়ার অভ্যাস করা।
৮/ সকালে পড়ার অভ্যাস করা।
৯/ পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমানো।
১০/ মনোযোগ নষ্ট হয় এমন জিনিস দূরে রাখা।
১/ জীবনের লক্ষ্য স্থির করা।পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়।
পড়ালেখায় মন না বসার প্রধান করান হলো জীবনের কোন লক্ষ্য স্থির না থাকা।শুধু পড়ালেখার জন্য নয় জীবনের যে কোন কাজে সফলতা লাভ করার জন্য প্রথমে লক্ষ্য স্থির করার প্রয়োজন।লক্ষ্য ছাড়া কোন কাজ করলে সে কাজে কোন দিন সফলতা লাভ করা সম্ভব নয়।
তাই পড়ালেখা করে আপনি জীবনে কি করতে চান তা আগে সুনির্দিষ্ট করোন।এবং নিজেকে লক্ষ্য পূরর্নের কথা প্রতিনিয়ত মনেকরান।
আপনার যদি লক্ষ্য থাকে শুধু ক্লাসের পরীক্ষায় পাশ করা তবে হবে।তাই পড়া শেষ করে আপনি কি হতে চান বা আপনি কেন পড়বেন তা ঠিক করোন।
২/ রোটিন অনুযায়ী পড়া।পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়।
পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার জন্য রোটিন অনুযায়ী পড়ার কোন বিকল্প নেই।রোটিন শব্দটা শুনলেই মনের মধ্যে কেমন যেন বিরক্তি কাজ করে।
কিন্তু প্রকৃত অর্থে সূর্যোদয় সূর্যাস্ত ও পৃথিবীর বাকি সব কাজ ও কিন্তু রোটিন মাফিক হয়ে থাকে।পৃথিবীর প্রায় প্রতিটা শিক্ষার্থী কয়েক দিন পর পর রোটিন তৈরি করে। কিন্ত দুদিন পড়ার পর আর ভালো লাগে না।
পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার জন্য কোন দিনই রোটিন তৈরি করে তা ফেলে রাখলে চলবে না।তবে অব্যশই রোটিনটি হতে হবে বিজ্ঞানসম্মত এবং কার্যকরী। একটি বিষয়ে আপনার কত টুকু সময় প্রয়োজন তা টিবেচনা করে সময় নির্ধারন করোন।
তবে প্রতিদিন যে আপনার সব বিষয় পড়তে হবে তা কিন্তু নয়।এতে দেখা যাবে আপনি একটি বিষয় ভালো ভাবে পড়ে শেষ করার আগে অন্য বিষয় পড়ার সময় হয়ে যায়।
পড়ার মাঝে বিরতি নিন এসময় হাটাহাটি করোন বা পানি পান করোন। কারন পানি মনোযোগ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
৩/ নিয়মিত নোট করা।পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়।
নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থাকুন এবং স্যারের লেকচার ভালো ভাবে শুনুন। স্যারের আলোচনা করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো নোট করোন। বা বাসায় যখন পড়তে বসবেন তখন পড়ার পাশাপাশি নিয়মিত পড়া নোট করবেন।এতে পড়ার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।
আপনি যদি কোন বিষয় বুঝতে না পারেন তবে তা নোট করে রাখুন পরে ক্লাসে স্যারের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করে সমাধান করতে পারবেন।
৪/ কাউকে শিখাতে যাওয়া।পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়।
পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে আর একটি কার্যকর উপায় হলো কাউকে শেখানু। ধরেন আপনি একটি বিষয় পড়ছেন এবার এই বিষয়টি আপনি অন্যদের শেখানুর চেষ্টা করুন।
দেখবেন অন্যদের শেখাতে গিয়ে আপনার যে বিষয় গুলো ভূল ছিল তা সহজে চিহ্নিত করে আপনি ভূল সংসুধন করে নিতে পারবেন।
এবং যখনই পড়তে বসবেন পড়া গুলো একটু গল্পের মতো করে পড়ার চেষ্টা করোন। দেখবেন গল্পের চলে পড়লে পড়া আপনি সহজে বুঝতে পারবেন এবং পড়াটি দীর্ঘদিন মনে থাকবে।
তাই পড়ার ফাকে ফাকে অন্যদের সাথে গল্পের চলে শিখানু চেষ্টা করলে সহজে পড়তে পারবেন এবং আপনার পড়ার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।
৫/ নিজেকে পুরষ্কৃত করা।পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়।
পুরষ্কার পেতে কার না ভালো লাগে। আর সেটা যদি হয় আপনার ভালো কাজের ফল তাহলে ত আর কথাই নেই।ধরে আপনি চকলেট খেতে পছন্দ করেন।
কিন্তু মোটা হওয়ার ভয়ে বা দাঁতে পোঁকা ধরার ভয়ে আপনি চকলেট খেতে পারছেন না কিন্তু আপনি চকলেট খেতে বেশ ভালোবাসেন।
তবে এবার একটি কাজ করোন আপনি আজ বইয়ে যতটুকু পড়বেন বলে ঠিক করেছেন তার শেষ পৃষ্টায় আপনার পুরষ্কারটি মানে চকলেটটি রাখুন।
এবার আপনি পুরষ্কার পাওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি দেখ সম্পূর্ণ পড়া ভালোভাবে শেষ করতে পারবেন।
তাই প্রতিবার পড়ার সময় নিজের প্রিয় জিনিসটি রাখুন আপনার পুরুষ্কার হিসাবে।এতে দেখবেন পুরষ্কার পাওয়ার জন্য হলেও আপনার পড়ার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।
৬/ টার্গেট সেট করা।পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়।
পড়ালেখায় মনোযোগ বাড়াতে পড়া শুরু করার আগে একটি টার্গেট করোন।যেমন আজ এই বিষয়ের কতটুকু পড়বেন, কত সময়ের মধ্যে শেষ করবেন।এবার নিজের করা টার্গেটে স্থির থাকুন এবং টার্গেট সম্পূর্ণ করোন।
ঠিক যেমন আমরা গেম খেলি একটি লেভেল শেষ করে আমরা পরের লেভেলে যাই কিন্ত্ যত খেলি আমাদের বিরক্তি আসে না বরং এক লেভেল থেকে অন্য লেভেলে যার জন্য আগ্রহ জন্মায়।
ঠিক একিভাবে পড়ার টার্গেট একেক করে শেষ করলে আপনার পড়ার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।আর আপনি পড়ালেখায় মনোযোগী হতে পারবেন।
৭/ টেবিলে বসে পড়ার অভ্যাস করা।পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়।
পড়ালেখায় অমনোযোগী হওয়ার একটি অন্যতম কারন হলো টেবিলি না বসে পড়া। পড়া হোক বা না হোক একটি নির্দিষ্ট সময়ে টেবিলে বসার অভ্যাস করা ভিষণ প্রয়োজন।
বিছানায় শুয়ে বসে পড়লে পড়ায় মনোযোগী হওয়াটা অনেক কষ্টের।বিছানায় শুয়ে বসে পড়লেতো পড়ায় বসলে ঘুম ঘুম ভাব করবে বা ঘুম চলে আসবে।
এজন্য পড়ার টেবিলে বসে পড়ার অভ্যাস করোন।এবং পড়া শুরু করার আগে টেবিল গুচিয়ে নিন এবং প্রয়োজনিয় সব জিনিস পত্র হাতের কাছে রাখুন যাতে বার বার পড়ার টেবিল ছাড়তে না হয়।
৮/ সকালে পড়ার অভ্যাস করা।পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়।
মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করার সব থেকে উপযুক্ত সময় হলো সকাল।সকালে ব্রেইনের কর্মক্ষমতা সব থেকে বেশি থাকে।রাতে একটি লম্বা ঘুম দেওয়ার পর সকালে পৃথিবী কর্মব্যাস্ত হয়ে উঠার আগেই আপনি বই খুলে বসুন।
সকালবেলা নিরিবিলি পরিবেশ মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়তা করে।সারা দিনের কর্মব্যস্ততা শেষ করে যখন আপনি পড়তে বসেন তখন দেহ, মন দুটই ক্লান্ত থাকে।
আর তখন সারা দিনের ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়।আর তাই এসময় যতটুকু মনোযোগ দিতে পারবেন তার থেকে সকালে আপনি পড়ায় বেশি মনোযোগ দিতে পারবেন।
তাই পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার জন্য সকাল ভেলা পড়তে বসার অভ্যাস করোন।
৯/ পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমানো।পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়।
ভালো পড়ালেখা করার জন্য আপনাকে অব্যশই সুস্থ থাকতে হবে। এরজন্য প্রতিদিন অন্তত কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমান।আপনি যদি ২৪ ঘন্টায় ভালো করে না ঘুমান তবে পড়তে বসলে ঘুম আসবে এটাই স্বাভাবিক।
স্বাভিক অবস্থায় একজন মানুষের দৈনিক ৬-৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন।কিন্তু আপনি যদি রাতে পর্যাপ্ত না ঘুমিয়ে টিভি দেখেন,গেম খেলেন,ফেসবুক ব্যবহার করেন তবে আপনার ব্রেইন ফ্রেশ হবেনা।
আর সারা দিন যেকোন কাজেই বিরক্তি কাজ করবে।তাই রাতে পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমান।রাতে ভালো ঘুম হলে দিনে ব্রেইন ফ্রেশ থাকবে আর আপনি সহজে পড়ায় মনোযোগ দিতে পারবেন।
১০/ মনোযোগ নষ্ট হয় এমন জিনিস দূরে রাখা।পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়।
পড়া শুরু করার আগে আপনার মোবাইল ফোন দূরে সরিয়ে রাখুন। কারন এতে আপনার পড়ালেখার মনোযোগ নষ্ট হতে পারে।
একটি কমন ঘটনা আমাদের সবার সাথেই ঘটে থেকে, ধরেন আপনি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ছেন হঠাৎ ফোনো নোটিফিকেশন বেজে উঠল। অনেক কম মানুষ আছেন যারা এই শব্দটি শুনেও নিজেকে কন্ট্রোল করে রাখতে পারে।
কারন বেশির ভাগ লোকই মেসেজ চ্যাক করে রেখেদেব বলে ফোন হাতে নিলেও পরে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা ফোন হাতেই রয়ে যায়।
তাই পড়তে বসার সময় যে জিনিস মনোযোগ নষ্ট করতে পারে তা দূরে রাখুন।এসময় কেবল দুটি সত্ত্বা আপনি এবং আপনার বই খাতা আর বাকি কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই পৃথিবীতে। এসময় গভির মনোযোগ দিয়ে পড়োন।
সুতরাং পড়ালেখায় মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য মনোযোগ নষ্টকরে এমন জিনিস অব্যশই দূরে সরিয়ে রাখুন।
উপসংহার:-
আমরা পড়ালেখা করি জীবনে সাফল্য লাভের জন্য।যাতে আমরা সুন্দর ভাবে জীবনযাপন করতে পারি।তাই আমাদের উচিত মনোযোগ সহকারে পড়ালেখা করা।
ত প্রিয় বন্ধুরা এই ছিল আমাদের আজকের পোস্ট পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার ১০টি উপায় নিয়ে আলোচনা।
ত পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়া উপায় নিয়ে আজ অনেক কিছুই আলোচনা করলাম।আপনার পড়ার সাথে আপনার বাব মায়ের স্বপ্ন জরিত। আপনার ভবিষ্যত জরিত তাই এগুলো চিন্তা করে নিজেকে পড়ালেখায় অনুপ্রাণিত করোন।
ত আসা করছি বন্ধুরা পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার এই ১০উপায় অবলম্ভন করলে আপনাদের পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।
আসা করছি আপনারা যদি এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো ভাবে মনোযোগ সহকারে পড়েন তবে ইনশাআল্লাহ আপনারা অনেক উপকৃত হবে।আর পোস্টটি বেশি বেশি করে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরও পড়ার সুযোগ করে দিন।
আর যদি এই পোস্ট সম্পকে আপনাদের কোন কিছু জানার থাকে তবে অব্যশই কমেন্ট করে জানাবেন।ইনশাআল্লাহ আমি আপনাদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
ত আজ এই পর্যন্তই সবাই খুব ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন,নিরাপদে থাকবেন। আর আমার জন্য দোয়া করবেন।
আল্লাহ হাফেজ।
You must be logged in to post a comment.