‘আসসালামু আলাইকুম’। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি ও ভালো আছি ‘আলহামদুলিল্লাহ’।
আজ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আংশিক কিছু অংশ নিয়ে আলোচনা করব।
বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। তথ্য প্রযুক্তি ছাড়া বর্তমান সময় কল্পনা ও করা যায় না। কেননা, আমরা এখন প্রযুক্তির উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। সকালবেলা জাগ্রত হওয়া থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় সকল ক্ষেত্রে আমরা প্রযুক্তির ব্যবহার করে থাকি। আর বিজ্ঞান আমাদেরকে উপহার হিসেবে দিয়েছে প্রযুক্তি । বিজ্ঞান আমাদের জীবনকে অনেকটা সহজ করে দিয়েছে।
প্রাচীন প্রস্তর যুগ বা প্যালিওলিথিক থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত অনেক পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানের কারণে।
পুরা প্রস্তর যুগ বা পাথর যুগের সময় প্রাচীন মানুষ পাথর ব্যবহার করে আগুন জালানো, পাথরের সাহায্যে অস্ত্র তৈরি করা,এছাড়া ও অন্যান্য কাজ গুলো করতো । প্রাচীন কালের মানুষ নিজেদের বুদ্ধি প্রয়োগ করে চাকা ঘোরানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রযুক্তি আবিষ্কার করে, বিভিন্ন কাজ সহজে করার জন্য। এভাবে মানুষ আস্তে আস্তে অনেক কিছু আবিষ্কার করে।
এসব আবিষ্কারের মাধ্যমেই মূলত বিজ্ঞানের যাত্রা শুরু। সেই তখন থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিজ্ঞান অনেক এগিয়েছে এবং আমাদেরকে অনেক প্রযুক্তি উপহার দিয়েছে। বিজ্ঞান যে সব প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছে সে সব প্রযুক্তি আমাদের দৈনিন্দন জীবনকে সহজ করে তুলেছে।
এমন অনেক কাজ আছে যেগুলো সময় সাপেক্ষ, কঠিন, ব্যয়বহুল, যা খুব সহজেই করা যাবে প্রযুক্তির ব্যবহারে। সব প্রযুক্তি বা আবিষ্কার নিয়ে আলোচনা করা এই একটি পোস্টে সম্ভব নয়। তাই আমি প্রথমেই বলে দিয়েছি আংশিক কিছু অংশ আলোচনা করব। তাই আজকে শুধু আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিক্স নিয়ে আলোচনা করবো।
প্রথমে জেনে নেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী জিনিস?
অনেক গুলো তথ্য বা বিষয়কে বিচার বিশ্লেষণ করে তাৎক্ষণিক কোন সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতাকে বুদ্ধি বলে। আর এই বুদ্ধিকে পোগ্রামিং করে বিভিন্ন যন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করানকেই কৃত্রিম বুদ্ধিমতা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বলে।অর্থাৎ মানুষের বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তিকে কৃত্রিম ভাবে প্রযুক্তি নির্ভর যন্ত্রের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়।
সবার সুবিদার্থে একটি উদাহরণ দিচ্ছি।
যেমন: আমি রাস্তা পার হচ্ছি। এসময় রাস্তার আরেক পাশ দিয়ে একটা দ্রুতগামী বাস আমার দিকে ছুটে আাসছে। এমতাবস্থায় আমি কোন রকম দেরি না করে হাঁটা বন্ধ করে দিব, যাতে করে বাসটি চলে যায়। বাসটি চলে যাওয়ার পর আমি আবার হাঁটা শুরু করব। এক্ষেত্রে আমাকে আমার অন্তরজ্ঞান জানান দিচ্ছে যে এখন রাস্তা পার হওয়াটা বিপদজনক। এমতাবস্থায় আমি আর এখন রাস্তা পার হব না।
আমি যদি বাসটি দেখার পরও হাঁটতেই থাকি তাহলে আমার অনেক বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটবে, আমার এক্সিডেন্ট হতে পারে। অথবা বাসটির চালক আমাকে দেখামাত্রই ব্রেক করলে বেলেন্স হারাতে পারে যার ফলেও অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।কিন্তু এরকম কিছুই ঘটিনি।
আসলে এখানে যে ঘটনাটি ঘটল তা হলো আমি অতিরিক্ত কোন রকম মানসিক চাপ ছাড়াই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হয়েছি।এটিকে বলে হিউরিস্টিক। এই হিউরিস্টিক ক্ষমতা কম্পিউটারকে প্রদান করার ফলে কম্পিউটার ও মানুষের মতো বিশ্লেষণ করতে সফল হয়েছে।
হিউরিস্টিক হচ্ছে এমন এক কৌশল যার মাধ্যমে কম্পিউটার দ্রুতসময়ের মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে। অথবা সমস্যা সমাধান করার প্রায় কাছাকাছি উপায় খুঁজে বের করতে পারে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তিটি কম্পিউটার গেমসে বেশি ব্যবহৃত হয়।তাছাড়া চিকিৎসা ক্ষেত্রে, স্টক মার্কেট,রোবটিক্স, খেলনা,বিমান চালনা,যুদ্ধ ক্ষেত্র ইত্যাদি ক্ষেত্রে এর ব্যাপক ব্যবহার বর্তমানে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
হিউরিস্টিক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একত্রে প্রয়োগ করে বিভিন্ন যন্ত্র আবিষ্কার করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সিরি।
সিরি সম্পর্কে আমরা প্রত্যেকেই জানি এটি একটি কম্পিউটার প্রোগরাম । যা ব্যবহারকারির নির্দেশ পালন সহ তাকে দেয়া পূর্ব নির্ধারিত কাজ করে থাকে। এটি নির্মানকারী প্রতিষ্ঠানটি হলো অ্যাপল ইনকর্পোরেশন।
তবে বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত চরিত্র হলো ভার্চুয়াল হোম রোবট আজুমা হিকারি। যার সম্পর্কে ধারণা পরের পোস্টে দিব।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের জনক হচ্ছে জন ম্যাকার্থি।
রোবটিক্স হচ্ছে বিজ্ঞানের একটি শাখা, যেখানে রোবট সম্পর্কিত ধারণা,নকশা, উৎপাদন, কার্যক্রম ইত্যাদি বিষয় নিয়ে গবেষণা করে এবং রোবট তৈরি করে।
আর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও রোবটিক্স প্রযুক্তি একত্রে ব্যবহার করে রোবট তৈরি করা হয়। যার একটি উদাহরণ হচ্ছে আজুমা হিকারি
আজ এ পর্যন্তই। আপনাদের মতামত জানাতে ভুলবেন না।
আল্লাহ হাফেস।
You must be logged in to post a comment.