ইউটিউবে সফলতা পাওয়ার সঠিক উপায় ২০২১

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা আশা করি আপনারা সকলেই ভালো আছেন। আমরা সকলেই কিন্তু কম বেশি ইউটিউব প্ল্যাটফর্মের কথা জানি। আবার এই ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে অনেকেই রয়েছেন অনেক বড়  ইউটিউবার, যারা মাসে  অনেক টাকা আয় করে শুধু মাত্র ইউটিউব থেকে। আবার অনেকেই ৬ মাস কিংবা ১ বছর ইউটিউবে কাজ করে সফলতা না পেয়ে রাগে, খোবে ইউটিউব ছেড়ে দিয়েছে।

আবার  এখন ও আমাদের মাঝে অনেকেই বুকের ভিতর আশা জমিয়ে রাখছেন বড় ইউটিউবার হবেন। বন্ধুরা বর্তমানে কিন্তু ইউটিউবে সাফল্য অর্জন করা খুবই কঠিন। কেনই বা বর্তমানে ইউটিউবে সাফল্য পাওয়া খুবই কঠিন এবং কি করলে খুব সহজেই আপনি ইউটিউব থেকে সাফল্য পেতে পারেন? এই সকলৈ বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য জানতে  আমার সম্পূর্ণ  আর্টিকেল টি পড়ুন। আশা করি আপনারা সমাধান পেয়ে যাবেন।

বন্ধুরা আজ থেকে ২-৩ বছর আগে যারা বাংলা কনটেন্ট নিয়ে ইউটিউবে কাজ করার জন্য এসেছিলেন। তখন কিন্তু বাংলা কনটেন্ট ক্রিয়েটর খুবই কম ছিল। এখন সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন নতুন অনেক ইউটিউবার এসেছে পাশাপাশি নতুন নতুন কিছু অডিয়েন্স ও এসেছে।

এখন এই অডিয়েন্স এবং ইউটিউবার যখন ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে তখন কিন্তু কম্পিটিশন একটা বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমান ইউটিউবে দিকে লক্ষ করুন ইউটিউব কিন্তু একটা মানুষের কর্মস্থল হয়ে গেছে। ইউটিউব থেকে বর্তমানে এত পরিমান ইনকাম আসে এতে করে  অনেক মানুষই  ইউটিউব কে নিজের কর্মস্থল হিসেবে বেছে নিয়েছে।

যেখান থেকে মানুষ একদম ফ্রিতে ইনকাম করতে পারতেছে। কোন ঝামেলা নেই, কোন ইনভেস্ট নেই শুধু ঘরে বসে নিশ্চিন্তে কাজ করতেছে, আর টাকা কামাচ্ছে।

ফ্রিতে বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

যেমন ধরেন, আপনি যদি ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে কিন্তু আপনার কোন কোয়ালিফিকেশন এর দরকার হচ্ছে না। তেমন বড় কিছুই দরকার পড়ছে না। আপনি শুধু আপনার ছোট একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল দিয়ে ভিডিও তৈরি করে ভিডিও ইউটিউবে আপলোড দিতে পারতেছেন।

এতে করে আপনি ফ্রিতে টাকা ইনকাম করতে পারতেছেন। তবে এখানে আপনাদের ট্যালেন্ট দরকার হবে। আপনার ট্যালেন্ট থাকার কারণে আপনি মোবাইল দিয়ে ভিডিও করে, ভিডিও এডিটিং করে ইউটিউবে আপলোড করতেছেন মানুষ দেখতেছে মানুষের ভালো লাগতেছে  পরবর্তীতে আপনি কিন্তু ইউটিউব থেকে বিপুল পরিমান পয়সা ও ইনকাম করতে পারতেছেন।

২০২১ সালে এসে কম্পিটিশন কেন বেড়ে গেল?

২০২০ সালের পর ২০২১ সাল আসলো তবে ২০২০ সালেই কিন্তু মানুষ বেশ কিছুদিন গৃহবন্দি ছিল তারপর যখন দেখল ২০২১ সাল আসলো এখন ও কিন্তু মানুষ বেশিরভাগ সময়টাতেই গৃহবন্দি। মানুষগুলো গৃহবন্দি থাকার কারণে তাদের দিনের বেশিরভাগ সময় তারা ইন্টারনেটের খরচ করা শুরু করলো। এর ভেতর থেকে যারা ইউটিউব বেশি দেখে তারা ইউটিউব থেকেই বিভিন্ন জিনিস দেখা শুরু করল, কিভাবে কি করা যায়, বা কিভাবে বাড়িতে বসেই একটি কর্মস্থলের ব্যবস্থা করা যায় কি না।

তখন কেউ আগে থেকেই হয়তোবা লাইফ স্টাইল ভিডিও বেশি দেখত তখন সে ইউটিউব থেকে আর একটু ঘাটাঘাটি করে লাইফ স্টাইল ভিডিও নিয়ে কাজ করা শুরু করে দিল। এভাবে কেউ ব্লগ ভিডিও তৈরি করা শুরু করলো। কেউ টেকনোলজি নিয়ে ভিডিও করা শুরু করলো। মেয়েরা রান্না বান্না, বিউটি টিপস ইত্যাদি বিষয় নিয়ে মানুষ ইউটিউবে কাজ করতে নেমে পড়লো। এভাবে মানুষ ইউটিউবে আস্তে আস্তে লাগল, এসে  এখন ইউটিউবে প্রচুর পরিমাণ কম্পিটিশন হয়ে  দাঁড়িয়েছে।

সম্পূর্ণ ফ্রিতে কি ইউটিউবিং শুরু করা যায়?

একদম সম্পূর্ণ ফ্রিতে কিন্তু ইউটিউবে করা যাবে না। কিছু কিছু ভিডিও ক্ষেত্রে যেমন, আপনি সিদ্ধান্ত নিলেন ট্রাভেল ভিডিও তৈরি করবেন। সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনি ট্রাভেল করবেন এক্ষেত্রে টাকা খরচ হবে। আপনি যেখানে থাকবেন খাবেন এখানেও একটা খরচ রয়েছে। এভাবে যাবতীয় খরচ এরপর কিন্তু আপনি একটা ভিডিও তৈরি করতে পারতেছেন।

কিন্তু আপনি যদি এখানে ভালোবাসা নিয়ে ভিডিওটা তৈরি করেন,  যেমন আপনি ট্রাভেল করতে বেরিয়েছেন মনে একটা খুশি রয়েছে তাই একটা ভিডিও তৈরি করলেন সেটা ইউটিউবে আপলোড করলেন। এতে করে আপনার ইউটিউব ভিডিও ছাড়া হলো পাশাপাশি আপনার যে ট্রাভেল করার ইচ্ছা সেটা পূরণ হলো এবং পাশাপাশি কিছু টাকা পয়সাও ইনকাম হল।

ইউটিউব কে কর্মস্থল ভেবে কাজ করা শুরু করলে কি সফল হওয়া সম্ভব?

যেমন, আপনি যদি ইউটিউব ভিডিও করবেন এরকম উদ্দেশ্য নিয়ে আপনার টাকা, পয়সা ইনভেস্ট করেন তাহলে পরবর্তীতে আপনি যদি ইউটিউবে সফল হতে না পারেন তাহলে কিন্তু মনে ভীষণ রকমের কষ্ট পাবেন। তাই আমি মনে করি শখের বসে ইউটিউবে আসাই ভালো! এতে যদি সাফল্য আসে আসবে না আসলে ও আমার কোন সমস্যা নেই। একটা কথা মাথায় আসলো, বিগত দুই থেকে তিন বছর আগে যারা ইউটিউবে এসেছিলেন তখন কিন্তু কম্পিটিশন কম ছিল।

মানুষ তেমন বুঝত না ইউটিউব কি? ইউটিউব থেকে কিভাবে ইনকাম করা যায়? তারা শুধু ইউটিউব ভিডিও দেখতে এতোটুকু পর্যন্তই শেষ। তখন ইউটিউবে কনটেন্ট খুব কম ছিল। যেমন, তখন দুই বছর আগে ইউটিউবে কেউ সার্চ করল, কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল খোলা যায়? তখন কিন্তু সার্চ রিলেটেড দুই থেকে তিনটা ভিডিও আসত বা একটু বেশি এই রিলেটেড ভিডিও পাওয়া যেত এর বেশি কিন্তু  পাওয়া যেত না। এতে করে মানুষ বাছাই করে যেটা ভালো লাগত দেখত। এতে করে তাদের সফল হওয়ার রাস্তাটা অনেক সহজ থাকত।

কিন্তু, এখন ইউটিউবে একই ভিডিও প্রতিদিন হাজার হাজার আপলোড হচ্ছে। এতে করে কম্পেটিশন বেড়ে যাচ্ছে। কোন ভিডিও ভাইরাল হবে? কোনটা হবে না ইত্যাদি বিষয়। আবার এমনও দেখা যাচ্ছে একই গ্রামের অনেকেই ইউটিউবিং করতেছে তাদের ভিতর একটা কম্পিটিশন চলতেছে কে আগে মনিটাইজেশন পাবে।

আজ থেকে ২-৩ বছর আগে কিন্তু এই কম্পিটিশন টা ছিলনা। তাই বলে আমি কিন্তু বলছি না ইউটিউব এ আপনারা সাফল্য পাবেন না বা আপনার ইউটিউবিং করিয়েন না। (এরকম কথা বলে আপনাদের মন ভেঙে দেবো এটা কখনোই নয়)।

বর্তমানে ইউটিউবে কিভাবে সফল হওয়া যায়?

যেমন ধরুন, অনেক ভিড়ের মাঝখানে সফল হতে চাইলে আপনাকে কিছু ইউনিক বা একক কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। যা আপনি একাই করেছেন ইউটিউবে আর এরকম কনটেন্ট নেই বা থাকলেও খুব কম। এবং ভিডিও কোয়ালিটি সুন্দর করতে হবে। পাশাপাশি যেই জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আপনাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

ইউটিউবে এসে ধৈর্য না রাখতে পারলে কোন মতেই সফল হওয়া সম্ভব না। মনে রাখবেন, ইউটিউবে এসেই লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করা যায় না। যদি তাই হত! তাহলে সবাই ইউটিউবে আসতো প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করত। তাহলে আর মানুষ বিসিএস অফিসার, পাইলট, র‌্যাব ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ছুটে চলত না।

আর একটি বিষয় আপনাকে অবশ্যই রেগুলারেটি মেনে ইউটিউবে কাজ করতে হবে। তবে সব ধরনের চ্যানেল রেগুলার নিয়ম মেনে  ভিডিও আপলোড করতে পারবেন না। তবে যে চ্যানেলগুলো রেগুলারিটি মেনে ভিডিও  আপলোড করা যায়, আপনারা সেগুলোর রেগুলারিটি মেনে কাজ করুন। ইউটিউবিং করার জন্য সবচেয়ে বেশি আর একটা জিনিস খুবই প্রয়োজন সেটা হচ্ছে ভালোবাসা।

আপনি ভালোবাসা নিয়ে যদি ইউটিউবিং করেন তাহলে আপনি একশটা ভিডিও আপলোড করেও যদি একশটা ভিউজ পান, তাহলে কিন্তু আপনার কখনোই মন খারাপ হবে না।  এভাবে ভালোবাসা নিয়ে ইউটিউব ভিডিও করা, ভিডিও আপলোড করা শুরু করে দিন। আপনার প্রতিটা ভিডিও তে কিছু না কিছু একটা উন্নত করার চেষ্টা করুন।

যেমন ধরেন, প্রতিদিন  এডিটিং উন্নত করবেন বা সুটে করার সময় কিছুটা উন্নত করবেন কিংবা থামনিল কিছুটা উন্নতি করবেন। মোট কথা এভাবে যতদিন যাবে যত নতুন নতুন ভিডিও তৈরি করবেন সাথে কিছু না কিছু একটা উন্নতি করার চেষ্টা করবেন। এতে ইউটিউব থেকে নতুন কিছু শিখতে পারবেন পাশাপাশি আপনার চ্যানেল বড় করতে বা ভাইরাল করতে সাহায্য করবে।

ইউটিউবে নতুন আসলে অনেক ভুল কেন হয়?

বন্ধুরা ইউটিউবে নতুন আসলে অনেক ভুল হবে এটাই স্বাভাবিক। ভুলের উর্দ্ধে কিন্তু কেউ নয়। যেমন টা আমার কিংবা যারা বড় ইউটিউবার তাদের ও কিন্তু হয়েছিল। কিন্তু এই ভুলের মধ্যেই শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। আপনার কোথায় ভুল হয়েছে বা হচ্ছে সেই জায়গা গুলো খুজে বাহির করে সেই জায়গা গুলো উন্নত করতে হবে। তাহলেই কিন্তু খুব সহজেই সফল হওয়া সম্ভব।

ইউটিউবে নতুন নতুন কিছু আপলোড?

যেমন আপনি প্রথমে ইউটিউব যখন শুরু করছেন তখন মোবাইল টেকনোলজি নিয়ে আপনি ভিডিও করতেন। কিন্তু একটা সময় যখন দেখা গেল আপনার মোবাইল টেকনোলজির ভিডিওগুলো ইউটিউবে তেমন ভাল ভিউজ আসছে না। তখন আপনার কিছুটা আপডেট করতে হবে?  টেকনোলজির মধ্যেই অন্য টেকনোলজি নিয়ে কাজ করতে হবে যেমন, ইউটিউব টিপস নিয়ে কাজ করতে পারেন। মোবাইল রিভিউ ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করতে পারেন।

শুধু আপনি পেলে লিস্ট  চেঞ্জ করে নতুন নতুন প্লেলিস্ট এড করে নতুন নতুন ভিডিও আপলোড করুন কিন্তু ক্যাটাগরি একটাই থাকবে। তাহলে মানুষ নতুন নতুন কিছু শিখল এতে ভালো পরিমাণ ভিউজ পাবেন। তাছাড়া যদি শুধু মোবাইল টিপস বা রিভিউ নিয়ে বসে থাকেন তাহলে কিন্তু হবে না।

দর্শক কখন কোন বিষয়টা চায়, কোন ভিডিও আপলোড করলে ভালো ভিউজ পাওয়া যাবে  সকল কিছু মাথায় রেখে কিন্তু ভিডিও তৈরি করতে হবে।  তাহলে ইনআশাল্লাহ ইউটিউবে যে কেউ সফল হতে পারবেন ইনসাআল্লাহ। তবে মনে রাখবেন ব্যর্থতা আসতেই পারে তাই বলে লক্ষ ছেড়ে দিবেন না। বরং লক্ষে যাওয়ার জন্য রাস্তা চেঞ্জ করে কাজ করুন ইনশাআল্লাহ সফলতা নিশ্চিত।

বন্ধুরা এই ছিল আজকের বিষয়:-

আশা করি আপনারা ইতিমধ্যেই বুঝতে পেরেছেন কিভাবে ইউটিউবে কাজ করলে সফল হওয়া সম্ভব ইত্যাদি বিষয়। তবে এর মধ্যেও যদি আপনাদের কারো কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট করে প্রশ্ন করতে পারেন ইনশাল্লাহ আপনার মূল্যবান কমেন্ট পরে উত্তর দিব। সকলে ভাল থাকবেন, জাযাকাল্লাহ খাইরান।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles