সঠিক নিয়মে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম - কিভাবে টাকা হাতে পাবেন? (এক আর্টিকেল এই বিস্তারিত)

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। সম্মানিত পাঠক গণেরা আশা করি আপনারা ভালো আছেন! আজকেরে আর্টিকেলে আমরা শিখব, কিভাবে ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে হয়? বা ইউটিউব থেকে কিভাবে ইনকাম আপনি করতে পারবেন? এবং ইউটিউব থেকে যে ইনকাম করবেন সেটা কিভাবে আপনার হাতে পর্যন্ত পৌঁছাবে? এই বিষয়ে যদি আপনার কোন জ্ঞান না থাকে। তাহলে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন । আশা করি এ টু জেট বুঝতে পারবেন!

ইউটিউব থেকে কিভাবে ইনকাম হয়? কিভাবে আপনি ইউটিউব থেকে ইনকাম শুরু করবেন? এবং শেষ পর্যন্ত হাতে পর্যন্ত টাকা কিভাবে পাবেন? এই প্রশ্নগুলো আজকের আর্টিকেলের টপিক! তাই অবশ্যই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন আশা করি!সর্বপ্রথমে আমরা শিখতে চলেছি, ইউটিউব থেকে কিভাবে ইনকাম হয়? বা কিভাবে আপনি ইউটিউবে ইনকাম সঠিক ভাবে করবেন শুরু?

১ ইউটিউব থেকে কিভাবে ইনকাম করতে হয়?

আপনি যদি ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে চান, তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে ইউটিউবে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে অবশ্যই একটি জিমেইল একাউন্টে প্রয়োজন হবে। মনে রাখবেন কোন ইমেইল এর কথা আমি বলি নাই। ইউটিউব এ একাউন্ট তৈরি করতে হলে ,অবশ্যই জিমেইল দিয়ে শুধু একাউন্ট তৈরী করতে পারবেন।

আজকালকার সময়ে সকলেরই একটা জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকেই,আর যদি নাই থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে পারবেন, জিমেইল এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে। হয়ে গেল আপনার একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট।এবার সর্বপ্রথমে ইউটিউব এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে চলে যান। আপনার জিমেইল দিয়ে একাউন্ট লগইন করুন। লগইন হয়ে গেলে আপনাকে এখানে সুন্দরভাবে একটি চ্যানেল তৈরি করে নিতে হবে। 

তারপর চ্যানেলটি কাস্টোমাইজ করে নিতে হবে। চ্যানেলের সব সেটিং গুলো সেটাপ করার পর, আপনাকে অবশ্যই চ্যানেলটি ভেরিফাই করতে হবে। ভয় পাবেন না ভেরিফাই করতে, কোন কিছুই লাগবেনা। শুধু আপনার একটি বাংলাদেশি বাজে কোন দেশের মোবাইল নম্বর দিয়ে খুব সহজেই ভেরিফাই করা যায়। তবে যেই নাম্বারটি দিয়ে ভেরিফাই করতে চাচ্ছেন, সেই নাম্বারটি আপনার কাছে থাকতে অবশ্যই হবে।

কারণ ভেরিফাই করার সময় একটি কোড আসবে সেটা সাবমিট করলে আপনার চ্যানেল কি ভেরিফাই হয়ে যাবে। এবার কি করবেন ভাবছেন তো? এবার আপনাকে ভিডিও তৈরি করতে হবে এবং চ্যানেলে আপলোড করতে হবে। ভিডিও তৈরি করার আগে মাথায় রাখবেন, এমন ভিডিও তৈরি করতে যেটা মানুষ পছন্দ করে বা দেখতে আগ্রহী হবে।

আজেবাজে ভিডিও বা ইচ্ছামত ভিডিও আপলোড করলে আপনি এখান থেকে ইনকাম করতে পারবেন না। আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে! ভিডিও তৈরি করা এই আবার এমনকি কঠিন কাজ। আমি ভাইরাল ভিডিও গুলো ডাউনলোড করে আপলোড করে দিব!প্রশ্নটিই যদি আপনার মাথায় থাকে তাহলে এখনই মাথা থেকে ডিলিট করে দিন। ইউটিউব থেকে ইনকাম করা যতটা সহজ ভাবছেন ততটা কিন্তু সহজ নয়। ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে হলে অবশ্যই আপনার মধ্যে থাকতে হবে ধৈর্য।

অন্য কারোর ভিডিও চুরি করে বা কপি করে আপনি ইউটিউবে আয় করতে পারবেন না। অন্য কারোর ভিডিও যদি আপনার ভিডিওতে কপি থাকে, তাহলে আপনি কখনো ইনকাম করতে পারবেন না। সম্পূর্ণ ভিডিওটি আপনার নিজের হতে হবে। এবং ভিডিও গুলো মানুষের গ্রহণযোগ্য বা উপকারী হতে হবে। এবং আপনার মধ্যে যদি ধৈর্য থাকে তাহলে অবশ্যই ইউটিউব থেকে আপনি ইনকাম করতে পারবেন।

তাই, অন্য কারোর ভিডিও চুরি না করে বা কপি না করে নিজে ভিডিও তৈরি করুন। আপনি নিজের মন মত সুন্দর কোয়ালিটি ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতে হবে ইউটিউব এ। তাই বলে এটা ভাববেন না যে শুধু ভিডিও ছাড়লাম আর ইনকাম শুরু হয়ে গেল।

ইনকাম শুরু করার জন্য ইউটিউব এর পক্ষ থেকে কিছু শর্ত রয়েছে। সেই শর্তগুলো পূরণ করলেই ইউটিউব থেকে ইনকাম শুরু করতে পারবেন। শর্তগুলো ততটা কঠিন নয় আবার একেবারে সহজ তা কিন্তু নয়। এবার হয়তোবা আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে, ইউটিউব ইনকাম করার জন্য কি কি শর্ত পূরণ করতে হবে। সর্বপ্রথম আপনার ভিডিওগুলো পাবলিক দেখতে হবে। আপনার ইউটিউব চ্যানেলের যখন 1000 সাবস্ক্রাইব হবে। মোট ভিডিও গুলোতে 4000 ঘন্টা ওয়াচ টাইম হবে।

তখন আপনি ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম এর সাথে কাজ করতে পারবেন। আপনার চ্যানেলের যখন ইউটিউব অনুমোদন দেবে, তখনি আপনার ইনকাম হবে শুরু। অনুমোদন করার জন্য ইউটিউব এর যে শর্তটি রয়েছে, সেটা হল 12 মাসের ভিতরে, আপনার চ্যানেলে 1000 সাবস্ক্রাইবার এবং 4000 ঘন্টা ওয়াচ টাইম হতে হবে। এই সত্যটি পূরণ করলে তাদের কাছে এপ্লাই করতে পারবেন। আপনার আবেদনটি একসেপ্ট হলে আপনার ইনকাম হবে শুরু।

২ ইউটিউব এর ইনকাম কিভাবে শুরু হয়? বা কিভাবে টাকা জমা হয়? এবং এই টাকা কোথায় জমা হয়?

ইউটিউব এর শর্ত পূরণ করে, এপ্লাই করলে আপনার ইনকাম শুরু হবে না। মূলত ইনকাম শুরু করার জন্য, আপনাকে গুগলের একটি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। এডসেন্স একাউন্টে আপনার টাকা গুলো যোগ।কিন্তু তার জন্য তো আপনার আগে ইনকাম শুরু হতে হবে তাই না। এডসেন্স একাউন্ট প্রথমে আপনাকে তৈরি করতে হবে। তবে youtube-এর শর্ত পূরণ করে, তারপর এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করতে হবে পাপ আবেদন করতে হবে। তারপর ইউটিউব এর লিংকিং করে এডসেন্সের এড করতে হবে।

এবার আপনার প্রতিটা ভিডিও তে আপনি এডসেন্সের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখাতে পারবেন। মূলত ইউটিউব থেকে এডসেন্সের মাধ্যমে এড দেখে ইনকাম শুরু হয়। হ্যাঁ আপনি ঠিকই শুনেছেন, আপনার ইনকাম শুরু হবে adsense-এর মাধ্যমে আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে। এবং আপনার টাকা কি জমা হবে এই গুগল এডসেন্স একাউন্টে। আগেই বলে রাখি, ইউটিউবে বা অ্যাডসেন্সে টাকার হিসাব করা হয় না।

এই কোম্পানি গুলো তে ডলার এর হিসাব করা হয়। ব্যাস আপনার ইনকাম এভাবেই শুরু হবে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে। ইউটিউবে ভিডিও ছেড়ে এডসেন্সের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে, আপনার ইনকাম শুরু হবে। আশা করি বোঝাতে পেরেছি যে কিভাবে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম শুরু করবেন।

এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, ইনকাম তো ইউটিউব থেকে শুরু করলাম তবে, কিভাবে এখান থেকে অর্থাৎ ইউটিউব থেকে টাকা হাতে পাব। প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক আপনাদের কাছে, যারা ইনকাম এখান থেকে শুরু করে তাদের এই প্রশ্নটা সবারই এসেছে। তাই আপনার মনে এই প্রশ্নটিই আসা অস্বাভাবিকের কিছু নয়। আপনার ইনকাম হলে শুরু ইউটিউব থেকে। এবং আপনার টাকা ডলার জমা হচ্ছে এডসেন্স একাউন্টে।আপনি টাকাটা হাতে পাবেন এই এডসেন্স একাউন্ট থেকেই। তবে তার জন্য আপনাকে একটু ছোটাছুটি করতে হবে।

 

তবে কষ্টদায়ক কিছুই না। অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট টা আপনাকে ভেরিফাই করতে হবে। হ্যাঁ আপনি যে এডসেন্স একাউন্টে তৈরি করেছিলেন সেটা না এড্রেস ভেরিফাই করতে হবে। এড্রেস ভেরিফাই করতে হলে আপনার একাউন্টে 10 ডলার থাকতে হবে। 10 ডলার আপনার একাউন্টে থাকলে গুগল থেকে আপনার এড্রেসে একটি চিঠি পাঠাবে। এই চিঠিতে একটি কোড থাকবে এড্রেস ভেরিফাই করার জন্য।

এই কোডটি অ্যাডসেন্সে সাবমিট করলে আপনার একাউন্ট ভেরিফাইড। তবে আপনাকে ছোটাছুটি করতে হবে। এই কথাটি বলার কারণ হলো, অনেক সময় গুগল থেকে যে চিঠিটা আসে। সেটা আপনার এড্রেস এ আসতে নানা রকম সমস্যা হয়। এমনকি চিঠিটা আসতে ছয় মাস লেগে যেতে পারে।তাই অবশ্যই এখন তৈরি করার সময় এড্রেসটা সঠিকভাবে দিবেন। তাছাড়া অন্য আরেকটি মাধ্যমেও আপনার এড্রেস ভেরিফাই হবে সমস্যা নাই। আপনার একাউন্টে টাকা কখনোই লস হবে না।

৩ ইউটিউব থেকে টাকা সঠিকভাবে কিভাবে হাতে নিবেন?

ইউটিউব থেকে আপনার ইনকাম শুরু হয়ে গিয়েছে। এডসেন্স একাউন্টে ডলার জমা হচ্ছে। এডসেন্স একাউন্টে যখন আপনার 100 ডলার হবে। তখন এই একাউন্টে আপনার নিজের দেশের একটা ব্যাংক একাউন্ট এড করতে হবে। তবে 10 ডলার হওয়ার পর এড্রেস ভেরিফাই হয়ে গেলে।

তখনো আপনি চাইলে আপনার ব্যাংক একাউন্ট এড করতে পারেন। আপনার একাউন্টে 100 ডলার হলেই আপনার অ্যাড করা ব্যাংক একাউন্টে অটোমেটিক্যালি টাকা দিয়ে দিবে। তার জন্য আপনাকে কোন রিকোয়েস্ট করতে হবে না বা অনুরোধ করতে হবে না।

আপনি আপনার এডসেন্স একাউন্টে ব্যাঙ্ক এন্ড সঠিকভাবে করলেই। অটোমেটিক্যালি এডসেন্সের ডলার টা আপনার ব্যাংক একাউন্টে চলে আসবে। এডসেন্স একাউন্টের ডলারগুলো কনভার্ট হয়ে দেশি টাকায় পরিণত হয়ে ব্যাংকে জমা হয়। আপনি যদি বাংলাদেশী ব্যাংক একাউন্ট এড করেন তাহলে, বাংলাদেশি টাকা কনভার্ট হবে আপনার ব্যাংক একাউন্টে।

যখন অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট থেকে আপনার একাউন্টে টাকা কনভার্ট হয়ে যাবেন। এবং আপনার ব্যাংকে টাকা জমা হবে। তখন আপনি চাইলে খুব সহজেই সে টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নিয়ে নিতে পারেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে, ইউটিউব থেকে কিভাবে আপনি টাকা হাতে পর্যন্ত পাবেন।

তবুও যদি কোথাও সমস্যা বা কিছু জানার থাকে, তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে একদমই ভুলবেন না। যেকোনো সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।

আমার শেষ কথা::

সর্বোপরি, আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে, ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করতে পারেন? এবং কিভাবে ইনকাম শুরু করতে পারেন ইউটিউব? এবং ইউটিউব এর টাকা হাতে পর্যন্ত কিভাবে সঠিক ভাবে পাবেন? এই সমস্যার সমাধান সম্পূর্ণ step-by-step বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনার কাছে এই আর্টিকেলটি একটু হলেও উপকৃত হয়েছেন।

আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে একদমই ভুলবেন না কেমন লাগেছে, আমার আজকের এই আর্টিকেলটি। আমার আর্টিকেলটি সম্পন্ন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন। এই কামনা করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

অনলাইনে লেখালেখি করতে ভালোবাসি। অনলাইনে কিছু শিখতে ও জানতে ও জানাতে আরো বেশি ভালোবাসি।