আসসালামু আলাইকুম ও রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। অনলাইনে ইনকাম করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে। তারমধ্যে ইউটিউব থেকে ইনকাম অন্যতম। ইউটিউব এর বেশ কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে যেগুলো না মেনে কাজ করলে ইউটিউব থেকে ইনকাম করা যায় না
বিশেষ করে ইউটিউব সবচেয়ে বেশি নজর দেয় কপিরাইট পলিসি এর দিকে। প্রত্যেকটি ইউটিউব এর কাছে কপিরাইট বলছি খুবই মারাত্মক অপরাধ। ইউটিউব এর ভিডিও কপি করে অন্য চ্যানেলে আপলোড করাই ইউটিউব এর কপিরাইট পলিসি।
আর্টিকেল এর সূচনা: আমরা সবাই জানি ইউটিউবে কাজ করতে হলে তাদের কিছু নিয়ম-নীতি আমাদের মেনে কাজ করতে হবে।তাছাড়া আমরা ইউটিউব থেকে ইনকাম করতে পারব না আমাদের ইনকাম হবে না।
ইউটিউব এর নিয়ম নীতির মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম নিয়ম হলো কপিরাইট পলিসি। ইউটিউব এর কাছে কঁপিরাইট পলিসি খুবই মারাত্মক একটি অপরাধ। আমরা অনেকেই কপিরাইট পলিসি সম্পর্কে গুলিয়ে ফেলি।
কপিরাইট পলিসি সম্পর্কে আমাদের সম্পূর্ণ ধারণা অনেকের খুবই কম।ইউটিউব এ কাজ করতে হলে আমাদের সবাইকে অবশ্যই কঁপিলেফট পলিসি সম্পর্কে ভালো নলেজ থাকতে হবে। তা না হলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন এই আমাদের পড়তে হবে।
আপনি যদি তাদের কঁপিরাইট পলিসি অমান্য করেন তাহলে, তারা চাইলে আপনার একাউন্ট যেকোনো সময় একাউন্ট সাসপেন্ড করে দিতে পারে। তাই আমাদের কপিরাইট পলিসি সম্পর্কে প্রকার নলেজ থাকা খুবই জরুরী।
বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ইউটিউবের কপিরাইট পলিসি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা কপি রাইট পলিসি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। এবং কপিরাইট পলিসি থেকে কিভাবে মুক্তি পাবে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
ইউটিউবের কপিরাইট পলিসি 2021
কপিরাইট পলিসি: ইউটিউব এর কপিরাইট সাধারনত দুই প্রকার। দুই প্রকার পলিসি খুব মারাত্মক অপরাধ ইউটিউব এর কাছে। ইউটিউব এর দুই প্রকার কপিরাইট পলিসি কে কিতা নিচে দেওয়া হল:
- কপিরাইট ক্লেইম
- কপিরাইট স্ট্রাইক
ইউটিউবের কপিরাইট ছাড়া তো এই দুই প্রকার। তবে দুই প্রকারের ভিন্ন ভিন্ন অপরাধ। তাই আমরা এই দুই প্রকারের সাথে আগেই পরিচিত হয়ে নিব। তার আগে আমাদের কাছে আরেকটা বিষয় স্পষ্ট থাকা খুবই জরুরী সেটা নিম্নে বিস্তারিত দেওয়া হল।
ইউটিউবের কপিরাইট পলিসি আপনাকে মানতে হবেই কেন?
মানার কারণ: আপনি ইউটিউবে এসেছেন টাকা ইনকাম করতে। তবে ইউটিউবে ইনকাম করার জন্য তাদের বেশকিছু গাইডলাইন রয়েছে ও নিয়ম-নীতি রয়েছে। তাদের নিয়ম নীতি ও গাইডলাইন না মেনে কাজ করলে আপনি ইনকাম করতে পারবেন না।
আপনি ইনকাম করতে চান কিংবা না চান ইউটিউব এ কাজ করতে হলে অবশ্যই তাদের নিয়ম নীতি ও গাইডলাইন মেনে আপনাকে কাজ করতে হবে। তা না হলে ভিডিও টিউবে আপনি বেশিদিন টিকে থাকতে পারবেন না।
সর্বোপরি আপনি কে ইউটিউব এর নিয়ম নীতি ও গাইডলাইন সর্ম্পকে বিস্তারিত জ্ঞান থাকতে হবে।এবং শুধু জ্ঞান থাকলেই হবে না সেগুলো নিয়ে আপনাকে ইউটিউব এ কাজ করতে হবে। তাদের ইউনিটির ভিতরে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় নিয়ম হলো কপিরাইট পলিসি।
এই কপিরাইট পলিসি ইউটিউব এর কাছে খুবই মারাত্মক অপরাধ। তাদের এই পলিসি মেনে যারা কাজ করবে না তাদের একাউন্ট ডিজেবল হয়ে যাবে। একারণেই যারা ইউটিউবে কাজ করতে চান তাদের জন্য কপিরাইট পলিসি কপিরাইট পলিসি মান খুবই জরুরী।
কপিরাইট ক্লেইম: ইউটিউবের কপিরাইট ক্লেইম কপিরাইট পলিসির একটি প্রকার। আপনি যদি অন্য কারোর ভিডিও যেকোনো কিছু ব্যবহার করেন তাহলে ইউটিউব আপনাকে কপিরাইট ক্লেইম দিবে। মনে রাখবেন ইউটিউব কপিরাইট ক্লেইম নিজেই দেয়।
কপিরাইট ক্লেইম মাত্র এক সেকেন্ড অন্যের ভিডিও কপি করলেও দেওয়া হয়। আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে কপিরাইট ক্লেইম আসলো আমার চ্যানেলে কি কোন সমস্যা হবে? হ্যাঁ ভাই অবশ্যই আপনার চ্যানেলের বেশ কিছু সমস্যা হবে। কি কি সমস্যা হবে তা নিচে দেওয়া হল:
- এক নম্বর আপনার চ্যানেল মনিটাইজেশন হলে এক টাকাও আপনার একাউন্টে জমা হবে না।
ইউটিউবের কপিরাইট ক্লেইম সাধারণত একটি সমস্যা হয়। যেটা আপনি কখনোই পছন্দ করতে চাইবেন না। কেনই বা কেউ চাইবে বলুন তো! কেউ কি চায় তার নিজের ভিডিওর ইনকাম অন্য কেউ নিয়ে নিবে এটা কেউই চাইবেনা।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন আমি ইউটিউব এর কপিরাইট ক্লেইম এর জন্য আপনার কি ক্ষতি হতে পারে। এবার আমরা জেনে নেব ইউটিউব এর প্লেন আসলে কিভাবে এর থেকে মুক্তি পাবেন?
কপিরাইট ক্লেইম থেকে মুক্তি: ইউটিউব এর আন্ডারে কপিরাইট ক্লেইম খুবই খারাপ একটি অপরাধ। যেটা সম্পূর্ণ আপনার নিজের ক্ষতি হয় সেটা কেউই চাইবেনা। আর যদি কোনভাবে আপনি কপিরাইট ক্লেইম খান তাহলে, তাহলে তার থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় রয়েছে।
ইউটিউব কঁপিরাইট ক্লাইম খেলে কিভাবে মুক্তি পাবেন। কপিরাইট ক্লেইম থেকে মুক্তি পাওয়ার বেশকিছু নিয়ম রয়েছে সেগুলো নিম্নে দেওয়া হল:
- কখনো অন্যের ভিডিওর অডিও ব্যবহার করবেন না।
- নিচের ক্রিটিভিটি থেকে ভিডিও তৈরি করুন সম্পূর্ণ।
- অন্যের দেস্ক্রিপশন টাইটেল ট্যাগ কখনো আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করবেন না।
- এক সেকেন্ডের জন্য যেহেতু কপিরাইট ক্লেইম আছে সেহেতু সম্পূর্ণ ভিডিও নিজে তৈরী করার চেষ্টা করুন।
- আপনার ভিডিওতে যদি অডিও এর জন্য কপিরাইট ক্লেইম আসে তাহলে, ইউটিউব স্টুডিও থেকে এডিট অপশনে ক্লিক করে অডিও রিমুভ করে দিন।
ইউটিউবের কপিরাইট স্ট্রাইক: ইউটিউব এর ভিতরে সবচেয়ে মারাত্মক অপরাধ হলো কপিরাইট পলিসি। তার ভিতরে সবচেয়ে বড় ধরনের অপরাধ কপিরাইট স্ট্রাইক।
আপনার ভিডিওতে যদি অন্য কারোর কন্টেন কোয়ালিটি বা কোন কিছু থাকে তাহলে আপনি কপিরাইট স্ট্রাইক এর আওতায় পড়বেন। যদি আপনার জন্য খুবই মারাত্মক একটি অপরাধ বলে ইউটিউব। এবার আমরা জানবো কি কি কারণে কপিরাইট স্ট্রাইক আসতে পারে।
- অন্যের ভিডিও ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ব্যবহার করলে।
- অন্যের ভিডিও থাম্বেল দেস্ক্রিপশন অথবা কন্টেন ব্যবহার করলে কপিরাইট স্ট্রাইক আসতে পারে।
- কোনোভাবেই অন্যের ভিডিও নিজের ভিডিওতে এক সেকেন্ডও ব্যবহার করলে।
- ইউটিউব এর অফিশিয়াল অ্যাপ্লিকেশন প্লে স্টোর এর মাধ্যমে না দেখিয়ে অন্য কোন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ডাউনলোড করা দেখালে।
- থার্ড পার্টি কোন ওয়েবসাইট থেকে YouTube এর কিছু ডাউনলোড করা শেখালে।
- ভিডিওতে অশ্লীলতা ও মানুষের ক্ষতি ভিডিও আপলোড করবেন।
- হ্যাক করা শেখালে ইত্যাদি।
সাধারণত উপরের নিয়মগুলো না মেনে কাজ করলে আপনি কপিরাইট স্ট্রাইক পাবেন আপনার ইউটিউব চ্যানেলে। তবে কপিরাইট স্ট্রাইক ইউটিউবে আসলে খুব মারাত্মক ক্ষতি আপনার হবে। তাই এই সম্পর্কে আপনার জানা খুবই জরুরী। এ বিষয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ইউটিউব এর কপিরাইট স্ট্রাইক কি কি ক্ষতি হবে আপনার চ্যানেলে?
কপিরাইট স্ট্রাইক আসলে ক্ষতি: ইউটিউব এর কাছে খুবই মারাত্মক একটি অপরাধ ইউটিউবের কপিরাইট স্ট্রাইক আসলে।প্রথমে অর্থাৎ সর্বপ্রথম যখন আপনার চ্যানেলে কপিরাইট স্ট্রাইক আসবে তখন ইউটিউব সেটা ফাস্ট ওয়ার্নিং হিসেবে ধরবে।
দ্বিতীয়বার যদি আবার কপিরাইট স্ট্রাইক আপনার চ্যানেলে আসে তাহলে দ্বিতীয় ওয়ার্নিং হিসেবে ইউটিউব দেখবে। আর যদি তৃতীয়বার কপিরাইট স্ট্রাইক আসে তাহলে কোন নোটিশ ভিতরে আপনার একাউন্ট সাসপেন্ড হয়ে যাবে।
কপিরাইট স্ট্রাইক থেকে মুক্তি: কখনোই আপনি অন্যের ভিডিওর কোন অংশ নিয়েছে ভিডিওতে ব্যবহার করবেন না। যদি প্রথম স্ট্রাইক আসে তাহলে সেই প্রথম স্ট্রাইক 90 দিন একটিভ থাকে।তাই 90 দিন পর আবার কাজ শুরু করতে পারবেন সমস্যা ছাড়াই।
তিন মাসের ভিতরে যদি আবার দ্বিতীয় স্ট্রাইক আসি তাহলে 6 মাস ভিডিও আপলোড থেকে বিরত থাকবেন। কারণ 6 মাস পর কোন স্ট্রাইক আপনার চ্যানেল থাকবে না। কিন্তু তৃতীয় স্ট্রাইক কোন নোটিশ ব্যতীত আপনার একাউন্ট সাসপেন্ড হয়ে যাবে।
তাই কখনো আপনার ইউটিউব চ্যানেলের অন্য কারোর ভিডিও কনটেন্ট কোয়ালিটি অথবা যেকোনো কিছু কখনোই ব্যবহার করবেন না। সব সময় চেষ্টা করবেন নিজের ভিডিও সম্পূর্ণ তৈরি করার জন্য । অশ্লীল খারাপ অথবা মানুষের ক্ষতি হবে এ ধরনের ভিডিও কখনোই আপলোড করবেন না আপনার ইউটিউব চ্যানেলে।
মনে রাখবেন youtube-এর স্ট্রাইক ইউটিউব নিজের থেকে দেয় না। যার ভিডিও কপি করেছেন সরাসরি তার কাছে একটি মেইল পাঠায়। সে ইচ্ছা করলে আপনাকে সরাসরি কপিরাইট স্ট্রাইক দিতে পারে।আবার বলছি ইউটিউব এর কপিরাইট ক্লেইম ইউটিউব নিজে থেকে দেয়। কিন্তু ইউটিউবের কপিরাইট স্ট্রাইক ইউটিউব নিজে থেকে দেয় না।
ভিডিও আসল মালিক যিনি সরাসরি তার কাছে ইউটিউব একটি মেইল পাঠান। সেখান থেকে আসল মালিক চাইলে আপনার ভিডিওতে কপিরাইট স্ট্রাইপ দিতে পারে। এই কখনোই নিয়মগুলি ভঙ্গ করে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করবেন না।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ
- ইউটিউব এ কাজ করতে হলে অবশ্যই তাদের নিয়মগুলো মেনে আপনাকে কাজ করতে হবে।
- কখনোই নিজের ইউটিউব চ্যানেলে অন্য কোন চ্যানেলের ভিডিও আপলোড করা যাবেনা।
- অশ্লীল খারাপ দোয়া মানুষের ক্ষতি হবে এই ধরনের ভিডিও কখনো চ্যানেলে আপলোড করা যাবেনা।
- মানুষকে হেকিং সংক্রান্ত কোন কিছু শেখানো যাবে না।
- যদি এগুলো মানতে আমাদের কষ্ট হবে অনেক তবে পরিশ্রমই হয়ে কাজ করার চেষ্টা করুন।
- অন্যের ভিডিও কনটেন্ট কোয়ালিটি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এগুলো কখনোই আপনার চ্যানেলে আপলোড করবেন না।
- পরিশেষে নিজের সততার ধৈর্য এবং পরিশ্রম নিয়ে ইউটিউবে কাজ করবেন।
আর্টিকেল এর শেষ কথা
পরিশেষে বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলটি এ পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আর্টিকেলটি ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।আর্টিকেল সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করবেন আমি রিপ্লাই দেবো ইনশাল্লাহ।
আজকের মত আর্টিকেল এখানেই শেষ করছি সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন। দেখা হবে অন্য কোন আর্টিকেলে এই আশা ব্যক্ত করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
You must be logged in to post a comment.