ইউটিউবের কপিরাইট ক্লেইম ও কপিরাইট স্ট্রাইক কি? (এগুলো থেকে বাঁচার উপায় বিস্তারিত)

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। আমরা যারা ইউটিউবে নতুন কাজ শুরু করেছি,, তারা হয়তো অনেকেই কপিরাইট পলিসি সম্পর্কে ধারনা কম। একজন ইউটিউবার হওয়ার জন্য কপিরাইট পলিসি সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা খুবই জরুরী। যদি আপনার কপিরাইট পলিসি সম্পর্কে ধারনা কম থাকে তাহলে আপনি নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

ইউটিউব কপিরাইট পলিসি সম্পর্কে যদি আপনার নলেজ খুবই কম থাকে তাহলে আপনি ঠিক জায়গায় এসেছেন। এ আর্টিকেলে কপিরাইট পলিসি সম্পর্কে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ। হ্যাঁ অবশ্যই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনযোগ সহকারে পড়বেন,, এই আশা ব্যক্ত করে শুরু করব আর্টিকেলটি।

ইউটিউব কপিরাইট পলিসি কি?

  • ইউটিউবের কপিরাইট পলিসি হলো কারোর কন্টেন চুরি করা অথবা কপি করা। আপনি যদি একটি ভিডিও তৈরি করেন, এবং এই ভিডিওটা যদি অন্য কেউ কপি করে অথবা চুরি করে তারা নিজের চ্যানেলে আপলোড করে তাহলে, সেটা কপিরাইট পলিসি এর আন্ডারে পড়ে। অথবা আপনি অন্য কারোর ভিডিও নিজের চ্যানেলে আপলোড করা।এটাই হলো কপিরাইট পলিসি।
  • আশা করি বোঝাতে পেরেছি কপিরাইট পলিসি টা আসলে কি! আপনিও কপিরাইট পলিসি এর আন্ডারে পড়তে পারেন। অথবা অন্য কেউ কঁপিরাইট পলিসি এর আন্ডারে পড়তে পারে। 
  • কারণ হলো আপনি যদি কারোর ভিডিও নিজে ব্যবহার করেন তাহলে আপনি কপিরাইট আন্ডারে পড়বেন। আর যদি অন্য কেউ আপনার ভিডিও কপি করে ইউটিউবে আপলোড করে তাহলে সে কপিরাইট পলিসি এর আন্ডারে পড়বেন।

ইউটিউবের কপিরাইট পলিসি কত প্রকার ও কি কি?

ইউটিউবের কপিরাইট পলিসি সাধারণত দুই প্রকার।

  1. ১ ইউটিউব কপিরাইট ক্লেইম।
  2. ২ ইউটিউব কপিরাইট স্ট্রাইক।
  • ইউটিউব কপিরাইট ক্লেইম: আপনি যদি অন্য কারোর কন্টেন নিজে ব্যবহার করেন তাহলে, সে আপনাকে আপনার ভিডিওতে কপিরাইট ক্লেইম দিতে পারে। যদিও ক্লেইম ইউটিউব নিজে থেকেই দেয়। 
  • যার ভিডিও আপনি কপি করে আপনার চ্যানেলে আপলোড দিবেন তার কাছে একটি নোটিফিকেশন চলে যাবে। এবং ইউটিউব নিজেই কপিরাইট ক্লেইম আপনার ভিডিওতে দিয়ে দিবে।

ইউটিউব কপিরাইট ক্লেইম আসলে কি সমস্যা?এবং কিভাবে এর থেকে বাঁচতে পারি!

  • ইউটিউব কপিরাইট ক্লেইম আসলে খুব বেশি একটা সমস্যায় পড়তে হয় না। তবে আপনার চ্যানেল টি যদি মনিটাইজেশন হয়। তাহলে কপিকৃত ভিডিও এর জন্য আপনি কোন টাকা পাবেন না। কপিরাইট ক্লেইম ভিডিও গুলোতে বিজ্ঞাপন দেখায় না। 
  •  
  • আর যদি দেখাও তাহলে ভিডিওর জন্য আপনি কোন টাকা পাবেন না। কারণ প্রকৃত ভিডিওর মালিক তো আপনি নন। যিনি প্রকৃতপক্ষে ভিডিওর আসল মালিক তার অ্যাকাউন্টে অটোমেটিক্যালি ইনকাম কৃত টাকা চলে যাবে।
  •  
  • আপনার ভিডিওতে যদি কোন প্রকার কপিরাইট ক্লেইম আসে, তাহলে অবশ্যই তার থেকে বাঁচার উপায় রয়েছে। নিচে তার জন্য সাধারণ কিছু নিয়ম দাওয়া হল:
  •  
  • আপনি অন্য কারোর ভিডিওর এক সেকেন্ডও কপি করবেন না।
  •  
  • আপনি যদি অন্য কারোর ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ব্যবহার করেন, তাহলে ইউটিউব এর নিজস্ব এডিটর দিয়ে মিউজিক রিমুভ করে দিবেন।
  •  
  • অন্য কারোর ভিডিওর থামলেন, ফটো, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, টাইটেল, ডেসক্রিপশন এগুলো কখনো ব্যবহার করবেন না।
  •  

আশা করা যায় উপরের নিয়ম তিনটি মানলে আপনার ভিডিওতে কোন কঁপিরাইট ক্লাইম এর আন্ডারে পড়তে হবে না।

ইউটিউব কপিরাইট স্ট্রাইক: ইউটিউব কপিরাইট স্ট্রাইক খুবই মারাত্মক। কপিরাইট ক্লেইম খেলে যত সমস্যা হবেনা তার থেকে দ্বিগুন সমস্যা হবে কপিরাইট স্ট্রাইক খেলে। সাধারণত আপনি অন্য মানুষের কনটেন্ট ভিডিও অডিও এগুলো ব্যবহার করলেই কপিরাইট স্ট্রাইক আসতে পারে। 

 

এবং এই কপিরাইট স্ট্রাইক প্রকৃতি মালিক যিনি ওনার তিনি দেন। আমি আবারো বলছি ইউটিউব কপিরাইট ক্লেইম ইউটিউব নিজে দেয়।এবং ইউটিউব কপিরাইট স্ট্রাইক যার ভিডিও আপলোড করেছেন সে নিজে দেয়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন ইউটিউব স্ট্রাইক কি!

কপিরাইট স্ট্রাইক খেলে কি সমস্যা হবে? এবং এর থেকে বাঁচার উপায় কি?

  1. আমি আগেই বলেছি কপিরাইট স্ট্রাইক খুব মারাত্মক। কপিরাইট ক্লেইম খেলে এর থেকে আপনি বাঁচতে পারবেন।কিন্তু কপিরাইট স্ট্রাইক খেলে আপনার একাউন্ট সাসপেন্ড হয়ে যেতে পারে। গত তিন মাসের ভিতরে যদি আপনি পরপর তিনটা স্ট্রাইক খেয়ে যান।
  2.  তাহলে কোনো নোটিশ ব্যতীত আপনার অ্যাকাউন্ট ডিলিট হয়ে যাবে। সর্বপ্রথম কপিরাইট স্ট্রাইক আসলে প্রথম অরনিং হিসেবে চালু থাকে। দ্বিতীয়বার আবার স্ট্রাইক খেলে দ্বিতীয় অরনিং ইউটিউব থেকে দেয়। আর যদি আবারও আর একটা স্ট্রাইক আসে তাহলে কোন নোটিশ ব্যতীত আপনার একাউন্ট সম্পূর্ণ সাসপেন্ড হয়ে যাবে। 
  3. এবং ওই জিমেইলের যত ইউটিউব চ্যানেল থাকবে সব ডিলিট হয়ে যাবে। আপনি আর কখনোই জিমেইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করতে পারবেন না চিরদিনের জন্য। যাইহোক কপিরাইট স্ট্রাইক খেলে এর থেকে বাঁচার উপায় আছে কি? হ্যাঁ আছে তবে নির্ভর করবে সম্পূর্ণ আপনার নিজের উপর।

কপিরাইটস্ট্রাইক থেকে বাঁচার সাধারণ কিছু নিয়ম নিচে দেওয়া হল:

  • অন্য কারোর কন্টেন কখনোই কপি করবেন না।
  • আর যদি প্রথম স্ট্রাইক এসে যায় তাহলে, 90 দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কারণ 90 দিন পর কোন স্ট্রাইক থাকেনা। প্রথম স্ট্রাইক 90 দিন পর্যন্ত একটিভ থাকে।
  • দ্বিতীয়বার যদি কপিরাইট স্ট্রাইক আসে তাহলে, ছয় মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। দ্বিতীয় স্ট্রাইক টিও ছয় মাস পর্যন্ত একটিভ থাকবে। তারপর অটোমেটিক স্ট্রাইক চলে যাবে।
  • ইউটিউবে কাজ করার জন্য, সব সময় চেষ্টা করবেন নিজে কাজ করার জন্য। তবেই না আপনি ইউটিউব এ সাকসেস হবেন। তাই কখনো অন্য কারোর ভিডিও, অডিও, থামলেন সহ কোন কিছুই ব্যবহার করবেন না কখনোই।

আশাকরি উপরের নিয়ম গুলো মেনে কাজ করলে কখনোই কপিরাইট স্ট্রাইক আসবে না আপনার ভিডিওতে। এবং আসলেও তার নিয়ম গুলো উপরে উপস্থাপন করেছি। আশা করি অন্তত এই বিষয়ে ক্লিয়ার ধারণা পেয়েছেন।

  • কপিরাইট ক্লেইম এবং কপিরাইট স্ট্রাইক দুটোই কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন। এখন বর্তমানে আপনার ভিডিওতে কোন কপিরাইট ক্লেইম থাকলে, মনিটাইজেশন এর জন্য এপ্লাই করবেন না। তবে কপিরাইট ক্লেইম এর থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে আবেদন করতে পারেন। কারণ কোন ভিডিওতে কপিরাইট ক্লেইম থাকলে আপনার চ্যানেল টি মনিটাইজেশন এর জন্য এপ্রুভ করবে না।
  • আর যদি আপনার চ্যানেলে কোন স্ট্রাইক আসে তাহলে, বর্তমানে আপনি মনিটাইজেশন এর জন্য এপ্লাই করতে পারবেন না। অন্যান্য কন্ডিশন গুলো ফুলফিল করলেও, স্ট্রাইক এর কারণে এপ্লাই করতে পারবেন না। তবে স্ট্রাইক ইন্যাক্টিভ হয়ে গেলে অর্থাৎ 90 দিন পার হয়ে গেলে আপনি মনিটাইজেশন এর জন্য এপ্লাই করতে পারবেন।

অন্যান্য আর্টিকেলটি

১ ইউটুবে সাকসেস হওয়ার উপায়?

২ ইউটুবের টাকা হাতে পর্যন্ত কিভাবে পাবেন?

৩ ইউটিউবের কপিরাইট ফ্রি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, ভিডিও ক্লিপস কোথায় পাবেন?

পরিশেষে বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলটি এ পর্যন্ত।যদি আর্টিকেলটি ভালো লাগে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন কেমন লাগলো! এই আর্টিকেল থেকে যদি একটু হলেও উপকৃত হন তাহলে নিজেকে ধন্য মনে করব।সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এই আশা ব্যক্ত করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

অনলাইনে লেখালেখি করতে ভালোবাসি। অনলাইনে কিছু শিখতে ও জানতে ও জানাতে আরো বেশি ভালোবাসি।