ডিজিটাল মার্কেটিং কি? কি কি ভাবে এ থেকে ইনকাম করা যায়?

ডিজিটাল মার্কেটিং আমাদের কাছে নতুন কিছু নয়। আমরা প্রায় সবাই এ সম্পর্কে জানি। কিন্তু আমাদের মাঝে ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে অনেক ভুল ধারণা জমে পড়ে আছে যা আমরা জানিনা।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

আজকে আমি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব তাই মনোযোগ দিয়ে পুরো আর্টিকেলটি পড়বেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

বর্তমান যুগে আমাদের সকলের কাছেই ডিজিটাল মার্কেটিং একটি জনপ্রিয় শব্দ। ২০০০ সাল থেকে এর ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপ্তি অনেক। বলতে গেলে বলা যায় যে মার্কনি যখন রেডিও আবিষ্কার করেন তখন থেকেই ডিজিটাল মার্কেটিং প্রচলিত। কি অবাক হলেন?

প্রায় ১২০ বছর আগের কথা যখন আ্যনালগ  যুগ ছিল। যখন আবিষ্কার করা হয় রেডিও এবং তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌছোতে আরো দশ বছর সময় লেগে যায়।

কিন্তু এর নির্মাতা ঠিকই বুঝে ফেলেছিলো যে এটি মার্কেটিং জগতে এক বিশাল চমক আনতে চলেছে। কিন্তু কিভাবে?

রেডিওতে প্রথম যে অপেরা হয়েছিল তার নাম হচ্ছে "অপেরা পারফরমেন্স এট দা মিট"এবং এরপরে যা হয়েছিল তা মার্কেটিং জগতে এক বিশাল চমক এনে দেন। লোকেরা বেশি বেশি করে অপেরার টিকেট কিনতে থাকেন।

আর তখন থেকেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর উৎপত্তি শুরু হয়। অথচ আমরা শুধু ইন্টারনেটকেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ভেবে থাকে।

ডিজিটাল মার্কেটিং হল মূলত আপনার প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন ডিজিটাল চ্যানেলের মাধ্যমে প্রকাশ হওয়া।

সেটা হতে পারে ফেসবুক,ইউটিউব,বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি চ্যানেল বা বিভিন্ন মাধ্যম। সহজ ভাষায় বলতে গেলে ডিজিটাল মার্কেটিং হল ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। ডিজিটাল মার্কেটিং অফলাইন ও অনলাইন ভাবেই করা যায়।

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন প্রয়োজন?

আগের সময় আমরা রাস্তায় বিভিন্ন রকমের পোস্টার টাঙ্গানো দেখতাম। এবং সেই পোস্টার গুলো দেখে আমরা বিভিন্ন প্রোডাক্ট সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে পারতাম।

এবং ভালো লাগলে আমরা তার ক্রয় করতাম এবং কোম্পানির লাভ হতো। মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং এই একই কাজ করে থাকে কিন্তু সেইটা আরো উন্নতভাবে।

কিন্তু বর্তমান যুগে আমাদের চোখ আর রাস্তার কোন পোস্টার এর দিকে থাকে না। বর্তমানে আমরা সকলেই ব্যস্ত মোবাইল ও ইন্টারনেট নিয়ে। তাই কোম্পানিগুলো এখন তাদের প্রচারণা ইন্টারনেটের মাধ্যমেই করে থাকেন।

আর এই মাধ্যম কেই ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয়। বর্তমানে আমরা সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করি তাই ইন্টারনেটের মাধ্যমে সহজেই সকল কাস্টমারের কাছে প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন পৌঁছে দেওয়া খুবই সহজ হয়ে গেছে। আর এজন্যই ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমান যুগে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং জেনে থাকেন তাহলে বর্তমানে এক ধাপ এগিয়ে আছেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেকগুলো প্রকারভেদ রয়েছে। আপনি যদি অনলাইনে ইনকাম করতে চান তাহলে এর মধ্যে থেকে যে কোন একটিও বেছে নিয়ে ভালোভাবে ইনকাম করতে পারবেন।

  1. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
  2. কনটেন্ট মার্কেটিং।
  3. সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং।
  4. পে পার কিল্ক।
  5. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।
  6. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
  7. ইমেইল মার্কেটিং,ইত্যাদি।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হলো এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনের প্রথমে থাকে।

গুগলের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে ৮৫% ভিজিটরি সার্চ রেজাল্টের প্রথম রেজাল্ট টি ভিজিট করেন এবং ৫৫% ভিজিটরি তিনটি সার্চ রেজাল্ট এর বাহিরে কোথাও যায় না।

অন্য এক জরিপে দেখা গেছে যে প্রতি সেকেন্ডে একটি করে ব্লগ পাবলিশ হয়। তাহলে এবার ভাবুন?

আপনার ব্লগটি যদি ভালোভাবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করা না থাকে তাহলে গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের প্রথমে আসতে পারবেন কি? নিশ্চয়ই না।

এর ফলে আপনি একটি অর্গানিক ট্রাফিক পাবেন না যা একটি ওয়েবসাইটের জন্য খুবই প্রয়োজন।

আর যত বেশি ট্রাফিক তত বেশি সেল। তাই বেশি বেশি ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেল বাড়ানোর জন্য ভালো করে আপনার ওয়েবসাইটটি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করতে হবে।

কনটেন্ট মার্কেটিং?

কনটেন্ট মার্কেটিং হচ্ছে সেই জিনিস যার মাধ্যমে আমরা কনটেন্ট সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে পারি।

এবং কনটেন্ট টি কিনতে আগ্রহী হয়ে ওঠি। আমরা শুনে থাকি দূরে গেলেও কাছে থাকুন, এটি সিম কোম্পানির একটি কন্টেন্ট মার্কেটিং।

এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে যদি আমরা দূরে কোথাও থাকি তারপরেও মোবাইল দিয়ে খুব সহজেই কাছের মানুষজনের সাথে যোগাযোগ করতে পারি।

মূলত কনটেন্ট মার্কেটিং এইরকমই। কনটেন্ট মার্কেটিংকে সহজভাবে বুঝতে হলে আরো ভালোভাবে বলা যায় যে যেই কন্টেন্টের মাধ্যমে পন্যের সাথে ক্রেতার সম্পর্ক ভালোভাবেই গড়ে ওঠে সেটাই কনটেন্ট মার্কেটিং।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং

সহজ ভাষায় বলতে গেলে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং হল টাকা দিয়ে ভিজিটর কিনা। এর মাধ্যমে আপনারা google বা ফেসবুকে আপনাদের পণ্যের মার্কেটিং টাকা দিয়ে করাতে পারবেন।

আমরা ইউটিউবে যে বিজ্ঞাপন করে দেখি সেগুলোই মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং এর সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং।

আপনি টাকা দিয়ে সঠিক ক্রেতার কাছে পন্যটি পৌছাতে পারতেছেন কিনা সেটা জানার জন্য আপনাকে এটি শিখতে হবে। আপনাকে পিপিসি সিপিসি সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে।

পে পার কিল্ক

পেপার ক্লিক হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি বিজ্ঞাপন মডেল। যার মাধ্যমে আপনি প্রতি ক্লিকে টাকা দিয়ে থাকবেন।

যেমন আপনি গুগল ক্যাম্পিন টাকা দিয়ে চালু করলেন এখন google আপনার টিউনটি বা ওয়েবসাইট সার্চ সবার উপরে দেখাবে ফলে আপনি খুব সহজেই ভিজিটর পাবেন।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

নাম শুনেই হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মার্কেটিং করতে হবে।

যেমন: ফেসবুকে, টুইটার ইত্যাদি। সেটি আপনি ফ্রিতেও করতে পারেন আবার টাকা দিয়েও করতে পারেন।

বর্তমানে এর প্রসার বেড়েই চলেছে। ছোট বড় সব কোম্পানিই এটি ব্যবহার করছে।

বর্তমানে এর মাধ্যমে বাংলাদেশে মিলিয়ন টাকার ব্যবসা হচ্ছে। আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং জানেন তাহলে খুব সহজেই কাজ পেয়ে যাবেন। বা আপনার কোন পণ্য খুব সহজেই প্রচার করতে পারবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক বড় একটি শাখা হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই অনলাইনে বিজনেস করতে পারেন।

অন্য কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট যদি আপনার মাধ্যমে সেল হয় তাহলে অবশ্যই অনায়াসে তারা আপনাকে কমিশন দিবে। আপনিও একজন আ্যফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে কাজ শুরু করে দিতে পারেন।

ইমেইল মার্কেটিং

সাধারণত ক্রেতার কাছে ইমেইলের মাধ্যমে যে পণ্যটি প্রচার করা হয় তাকে ইমেইল মার্কেটিং বলা হয়।

আপনি দেখবেন যে আপনার মেল বক্সে অনেক কোম্পানির মেইল আসে। এর মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি ইনকাম করতে পারেন।

তো এই ছিল আজকের আর্টিকেলে। আশা করি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্বন্ধে একটা ভালো ধারণা দিতে পেরেছি।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

"ভালোবাসার বার্তাগুলো অনেক সময় খুব সংক্ষিপ্ত ও সহজ হতে পারে। কিন্তু এর প্রতিধ্বনী সুদূর প্রসারিত।"