কয়েকটি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপস যা ছাড়া আমরা অচল

প্রযুক্তি আমাদের জীবনে এনেছে বৈজ্ঞানিক পরিবর্তন। আধুনিক বিশ্বে দাঁড়িয়ে আমরা আমাদের প্রতি দিনকার প্রত্যেকটা কাজে প্রযুক্তি ব্যবহার করছি।  প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে করে তুলেছে  সহজ।আদিম যুগে যখন মানুষের প্রযুক্তি সম্পর্কে কোনো জ্ঞান ছিলনা তখনকার মানুষের জীবন-যাপন অনেক কঠিন ছিল।তাদের সময় দেখার জন্য ঘড়ি ছিলনা। সূর্যের অবস্থান দেখে তাদের সময় হিসাব করতে হতো।একজনের কাছ থেকে আরেকজনের কাছে কোনো বার্তা পাঠাতে হলে সেই ব্যক্তির কাছে গিয়ে তারপর বার্তা দিতে হতো।

জীবিকা নির্বাহের জন্য তাদের করতে হতো শিকার।কতো দূর্বিষহ ছিল সেই সময়কার জীবন।দিন বদলেছে। আদিম যুগের বর্বর জাতি থেকে পরিবর্তিত হতে হতে মানুষ বর্তমান সভ্য জাতিতে পরিণত হয়েছে। এখন আর মানুষের জীবন আগেকার দিনের মতো নাই।এখন মানুষ আরামে জীবন-যাপন করে।আর এ সব কিছুই সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির কল্যাণে।যখন থেকে মানুষ তাদের বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে কাজকে সহজ করে সমাধান করার কৌশল বের করতে পেরেছে তখন  থেকেই এসেছে পরিবর্তনের জোয়ার।

আর সেই জোয়ার এসে পৌঁছেছে এখনকার এই আধুনিক বিশ্বে।এখন আর মানুষকে সূর্য্যের অবস্থান দেখে সময় হিসেব করতে হয়না। ঘড়ি দেখে সময় নিমেষেই বোঝা যায়। যোগাযোগ ব্যবস্হার উন্নতির ফলে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে থেকে অপর প্রান্তের কারও সাথে নিমেষেই যোগাযোগ করা যায়,কথা বলা যায় এমনকি ভিডিও দেখে কথা বলা যায়।

প্রযুক্তির এক অনবদ্য আবিস্কারের নাম হলো ইন্টারনেট। ইন্টারনেটের আবিষ্কার আমূল পরিবর্তন এনেছে যোগাযোগ ব্যবস্হা সহ সব রকম কাজকর্মে।ইন্টারনেটের পর এসেছে একের পর এক সফটওয়্যার।একেক সফটওয়্যারের কাজও ভিন্ন ভিন্ন।

বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয় একটি যোগাযোগ মাধ্যম হলো সোশ্যাল মিডিয়া চ্যাটিং।

আজকাল প্রায় সবাই অবসর সময়ে বন্ধু -বান্ধবদের সাথে চ্যাটিং করে সময় কাটায়।

আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো কিছু সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ সম্পর্কে যেগুলো ব্যবহার করে আমরা চ্যাটিং করতে পারি। 

১.Messenger :

বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া হিসেবে পরিচিত অ্যাপ হচ্ছে Messenger. ছোট-বড়, যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা পর্যন্ত সবাই মেসেঞ্জারের সাথে পরিচিত।তাই আমি লিষ্টের প্রথমেই মেসেঞ্জার রেখেছি। 

ভিডিও কল,অডিও কল করার সাথে সাথে মেসেঞ্জার সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় চ্যাটিং করার কাজে।বর্তমানে  মেসেঞ্জার ফেসবুকের  সাথে যুক্ত  হয়ে কাজ করছে।আপনি যদি মেসেঞ্জার ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনার যা যা প্রয়োজন হবে তা হলঃ

১. একটি কম্পিউটার /ল্যাপটপ বা স্মার্টফোন। 

২. ইন্টারনেট সংযোগ। 

৩. Messenger App. 

৪. একটি ফেসবুক অথবা মেসেন্জার অ্যাকাউন্ট।

ব্যস কেবল মাত্র এই কয়টি জিনিস থাকলেই আপনি মেসেঞ্জারে চ্যাটিং করতে পারবেন। 

প্রথমে কম্পিউটার বা স্মার্টফোনে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে গুগল প্লে-স্টোর থেকে Messenger অ্যাপ ইন্সটল করে নিতে হবে। এরপর ফার্স্ট নেম,লাস্ট নেম,ডেট অব বার্থ,মোবাইল নম্বর বা ইমেইল অ্যাড্রেস এবং একটা স্ট্রং পাসওয়ার্ড দিতে হবে।তারপর আপনার মোবাইল নম্বর /ইমেইলে একটা কনফার্মেশন কোড আসবে।সেই কোডটি  বসিয়ে সাইন আপ করে নিতে হবে। এরপর মোবাইল নম্বর / ইমেইল এড্রেস এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে নিতে হবে। তারপরে আপনি মেসেঞ্জার ব্যবহার করতে পারবেন।

তবে আপনার যদি অলরেডি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থাকে তাহলে নতুন করে মেসেঞ্জারে আর সাইন আপ করার কোন প্রয়োজন হবে না। ফেসবুক একাউন্টের মোবাইল নাম্বার ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে মেসেঞ্জারে লগইন করতে পারবেন। মেসেঞ্জারে আপনি ফেসবুকের ফ্রেন্ডলিস্টে  যেসব ফ্রেন্ড আছে  তাদের সাথে ভিডিও চ্যাটিং করতে পারবেন মেসেঞ্জারে  থাকা ভিডিও আইকনে ক্লিক করে। এছাড়াও কারো সাথে  মেসেজ  কনভারসেশন  করতে পারবেন। মেসেঞ্জারে শুধুমাত্র ফেসবুকে ফ্রেন্ডের সাথে  কনভারসেশন করা যাবে তা কিন্তু নয়ফ্রেন্ডলিস্টের বাইরেও মেসেঞ্জার ব্যবহারকারী যে কোন ব্যক্তির সাথে চ্যাটিং করা যাবে। তাছাড়া  মেসেঞ্জার গ্রুপে  একসাথে অনেক জন মিলে গ্রুপ চ্যাটিং করা যায়।

2. Whatsapp:

জনপ্রিয়তার শীর্ষস্থান দখল করে আরেকটি সোশ্যাল মিডিয়াসেটি হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ। হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে দ্রুত ভিডিও চ্যাটিং, মেসেজিং করা যায়। বর্তমানে হোয়াটসঅ্যাপ বেশিরভাগ লোকই ব্যবহার করছে চ্যাটিং করার জন্য। বিশেষ করে গ্রুপ চ্যাটিং করার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ খুবই ভালো।  এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপের  প্রাইভেসি সিস্টেম খুবই   সিকিরউড।

হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করার জন্য আপনাকে প্রথমে গুগল প্লে স্টোর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপটি স্মার্টফোনে ইনস্টল করে নিতে হবে। এরপর ইউজারনেম, মোবাইল নম্বর এবং  একটি পাসওয়ার্ড দিতে হবে।এরপর আপনার মোবাইলে  কনফার্মেশন কোড  দিয়ে একটি এসএমএস আসবে।   

সেই  কোড হোয়াটসঅ্যাপে দিয়ে কনফার্ম করে সাইন আপ করতে হবে।  তাহলেই আপনার একাউন্ট ক্রিয়েট হয়ে যাবে। তারপর আপনি অন্য হোয়াটসঅ্যাপে  ইউজারদের  অ্যাড করে চ্যাটিং করতে  পারবেন।3.Viber: এবার আসা যাক আরেকটি জনপ্রিয়  অ্যাপ Viber এ । ভাইবার ব্যবহার করার জন্য প্রথমে গুগল প্লে স্টোর থেকে  ভাইবার  অ্যাপটি মোবাইলে ইন্সটল করে নিতে হবে।

এরপর  নাম, মোবাইল নাম্বার, পাসওয়ার্ড এবং প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাইন আপ করে নিতে হবে। তারপর অন্যান্য সোশ্যাল কমিউনিকেশন  অ্যাপস গুলোর মত  ভাইবারেও   চ্যাটিং করতে পারবেন।

৪. Imo:

চ্যাটিংয়ের জন্য Imo অনেকেই ব্যবহার করে।তবে ভিডিও চ্যাটিংয়ের জন্য এটি সবচেয়ে বেশি গ্রহনীয়।তবে এখানে মেসেজিংও করা যায়।ইমো ব্যবহার করার জন্য প্লেস্টোর  থেকে ইমো ইনস্টল করতে হবে।এরপর কান্ট্রি কোড ও মোবাইল নাম্বার এবং ইউজার নেম দিয়ে ভেরিফিকেশন করে সাইন আপ করতে হবে।তারপর ইমো ব্যবহার করেও চ্যাটিং করা যাবে। 

এছাড়াও আরও অনেক অ্যাপ আছে যেগুলো দিয়ে ফ্রী চ্যাটিং করা যায়। অনেকে আছে ইন্ট্রোভার্ট টাইপের মানুষ। তারা সহজে সামনা সামনি কারও সাথে অতোটা মিশতে পারেনা।কথা বার্তাও বলেনা।বিশেষ করে এই ধরনের মানুষেরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেসেজিং করতেই বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করে।ইভেন আমি নিজেও ভিডিও বা অডিও কলে কথা বলার চেয়ে মেসেজিং করতে বেশি পছন্দ করি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো আমাদের প্রতিদিনকার জীবনের সাথে ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িয়ে গেছে। আমরা প্রতিনিয়ত গল্প, আড্ডা,ডিসকাশন, মিটিং, ইভেন্ট ইত্যাদি করার কাজে একজন আরেকজনের সাথে চ্যাটিং করছি। কারও কোনো প্রয়োজনে বিভিন্ন ইম্পরট্যান্ট ডকুমেন্টস, পিকচারস শেয়ার করতে পারি নিমেষেই।

সবশেষে বলতে হবে  প্রযুক্তি আমাদের জীবনে এত সুযোগ সুবিধা এনে দেওয়ার সত্বেও এর কিছু  অসুবিধা ও রয়েছে। আমাদেরকে সব সময় প্রযুক্তির অপব্যবহারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles