ফেসবুক আইডিতে একজন ব্যাক্তির এতো গুরুত্ব পূর্ণ তথ্য সে শেয়ার করে ফেলে নিজের অজান্তেই অথচ সে বুঝতেই পারেনা।
আর এই আইডি যদি হয় হ্যাক , যদি তার তথ্য হয় ফাস , যদি তার পারসোনাল ভিডিও বা ছবি অন্যের কাছে চলে যায় তখন ভাবুন তো সেই মানুষ টার কেমন অবস্থ্যা হতে পারে।
যদিও ফেসবুক কম্পানি বর্তমানে তাদের সিকিউরিটি অনেক বাড়িয়েছে তবুও মানুষ তার অজান্তেই হ্যাকারদের ফাদে পা দিয়ে ফেলে।
ফেসবুক কেনো কীভাবে হ্যাক করে এবং এর থেকে দূরে নিরাপদ থাকতে হলে কি করতে হবে সেটা নিয়েই আজকের টপিক।
ফেসবুকের বর্তমানে পূরো বিশ্বে প্রতিমাসে একটিভ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২.৮৫ বিলিয়নের বেশি । আর শুধু মাত্র বাংলাদেশে ৪৬ মিলিয়ন অর্থাৎ ৪৬০ লক্ষের বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে।
বোঝায় যাচ্ছে মানুষ ফেসবুকে কত টা গুরত্ব দিচ্ছে । অনেকে তো ফেসবুকে তাদের মার্কেটিং এর সাথে অন্যান্য কাজে ব্যবহার করে আসছে।
ফেসবুক থেকে কীভাবে বিভিন্ন্য ভাবে আয় করাযায় সেটা নিয়ে না হয় অন্য দিন বলি। ফেসবুক কেন ও কীভাবে হ্যাক হয় ,কারা করে, কেন করে ,এর জন্য কীভাবে প্রতিকার করবেন কীভাবে সতর্ক থাকবেন সব নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো আশা করি মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং অনুসরণ করে উপকারীত হবেন।
ফেসবুক কারা হ্যাক করে ?
ফেসবুক যারা হ্যাক করে তাদের চিনতে হলে জানতে হবে হ্যাকার কারা ।
হ্যাকার হলো| যারা অন্যের অনুমতি ছাড়াই অন্যের প্রোপার্টিতে হস্তক্ষেপ করে অর্থাৎ একজন ব্যাক্তির অনুমতি ছাড়া তার একাউন্ট,সাইট বা অন্য সকল ক্ষেত্রে প্রবেশ করে সেটা নিজের আয়ত্বে নিয়ে অনেক অকাজ করার ক্ষমতা রাখে।
হ্যাকার আবার সাধারণত ৩ ধরণের হয়ে থাকে ।
১। ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার
২। হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার
৩। গ্রে হ্যাট হ্যাকার
তো এদের মধ্যে ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকাররা সাধারণত খারাপ কাজ বেশী করে থাকে। হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার রা মানুষের ভালোর জন্য কাজ করে থাকে। আর গ্রে হ্যাট হ্যাকার দুই ধরনের মিশ্রণ হয়ে থাকে।
এজন্য সাধারণত ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার গুলো মানুষের ফেসবুক, ব্যাংক, ও অন্যান্য অনলাইন একাউন্ট হ্যাক করে অনেক ক্ষতি করে থাকে ।
ফেসবুক একাউন্ট ও এদের মত চিন্তাধারী হ্যাকার গুলা হ্যাক করে থাকে ।
কিভাবে হ্যাক করে ?
হ্যাক তো তাদের কাজ এই জন্য তারা বিভিন্ন পথ তারা বানিয়ে ফেলে।
তবে অধিকাংশ সময় বিভিন্ন লিংক এর মাধ্যমে আইডি হ্যাক করে থাকে। বিভিন্ন লোভোনিও চিত্রের সাহায্যে তারা লিংক ক্রেট করে (যেমনঃ ১৮+ কিছুর লোভ, সার্প্রাইজ মেসেজ)
বিভিন্ন সময় শেয়ার করে সেগুলাতে কেউ প্রবেশ করলে হ্যাকারের কাছে চলে যায় মেইল একাউন্ট ও পাসওয়ার্ড খুব সহজেই তারা আইডি নিজের আয়ত্বে নিয়ে থাকে ।
এছাড়াও স্প্যাম্প মেসেজ এর মত অনেক উপায় তারা বানিয়ে নেই।
গেমে ডাইমন্ড টপ আপ এর নাম করেও অনেকে ধোকা দেই এটা কে হ্যাকার বলে কিন্তু না এদের আপনারা নিজেরাই পাসওয়ার্ড দেন যা ঠিক না
হ্যাক করে কি করে ?
হ্যাক করে যে কি করে সেইটা যার আইডি হ্যাক হয়েছে সেই বুঝে। মাঝে মাঝে সোশ্যাল মিডীয়াতে দেখা যায় মেয়েদের স্ক্যান্ডাল ভাইরাল হয়।
এটা একটা মেয়ের জীবনের আত্মহত্যা পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে। এছাড়াও অনেক সময় এক জনের আইডি হ্যাক করে বিভিন্ন অন্যায় মূলক কাজ করে থাকে কিন্তু দোষ আসে যার আইডী তার নামে।
এছাড়াও টাকা আদায়, ব্ল্যাক মেইল, হুমকি ছাড়াও অনেক বড় বড় ক্রাইম করে থাকে। সব সময় সাবধান থাকা জরুরী।
হ্যাক হলে কি করতে হবে?
সর্ব প্রথম আপনার উচিৎ হবে আইনের ব্যবস্থা । অথবা আপনি পরিচিত ইথিক্যাল হ্যাকারের সাহায্য নিতে পারেন তবে সেটা অর্থের ব্যাপার থাকবে।
আর পুলিশের সাহায্য নিলে আপনার আইডি থেকে কিছু হলেও আপনার দায়ভার থাকবেনা । এজন্য সর্ব প্রথম পুলিশ বা আইনের আওতায় ব্যবস্থা নেবেন।
হ্যাক যেন না হয় সেজন্য করণীয় কি?
এইবার আসা যাক আসল কাহিনীতে । আমি আজ যে যে বিষয় গুলা বলবো অত্যান্ত মনোযোগ সহ কারে পড়ুন।
ফেসবুক একাউন্ট কীভাবে সিকিউর রাখবেন সেটাই কয়েকটা পয়েন্ট আকারে আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
১। একাউন্ট খোলার সময় করণীয় :
কাউন্ট যখন খুলবেন অবশ্যই আপনার এন আইডি কার্ড বা সার্টি ফিকেট এর নাম অনুসারে নাম দেবেন। কেননা আপনার আইডির কিছু হলে পুলিশ কেচ করতে হ্লে আপনার নিজের নাম হলে সুবিধা হবে। আর একটা ভেরিফাইড জি মেইল ব্যবহার করুন এবং নিজের পার্সোনাল নাম্বার ব্যবহার করুন। ( অবশ্যই সেটা অনলি মি করে রাখবেন ।)
২।প্রোফাইল সাজানোর ক্ষেত্রে :
প্রোফাইলে নিজের সুন্দর এবং মুখ বুঝা যায় এমন ছবি ব্যবহার করবেন ।নিজের পার্সোনাল তথ্য গুলা অনলি মি বা ফ্রেন্ড করে রাখবেন। অপ্রয়োজনে সকল তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩। প্রোফাইল লক :
একাউন্ট খোলার পর প্রোফাইল টি লক করে ফেলুন । যদি না পারেন ইউটিউবে অনেক টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন । দেখে অবশ্যই প্রোফাইল লক করবেন । তাহলে আপনার ফ্রেন্ড ছাড়া কেউ আপনার প্রোফাইলে প্রবেষ করে কিছু দেখতে পারবেনা ।
৪। টু স্টেপ ভেরিফিকেশন :
এই সেটিংস টি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এইটা আপনার ফেসবুকের সেটিংস এ গিয়ে সিকিউরিটিতে গেলে পেয়ে যাবেন । যেটা করলে কেউ বা কারো ফোনে আপনার একাউন্ট লগ ইন করতে চাইলে বা করতে গেলে আপনার জি মেইল বা ফোন নাম্বার এ ৬ অক্ষরের কোড যাবে যা আপনি দেখতে পারবেন আপনি যদি তাকে না দেন কোড টি সে কখনো ঢুকতে পারবেনা।
আর আপনি নিজের ফোনে ফেসবুক থেকে নোটিফিকেশনে গিয়ে দেখে নিতে পারবেন কোং ডিভাইসে আপনার একাউন্ট লগ ইন এর চেষ্টা করা হচ্ছে ।
৫। স্ট্রং পাসওয়ার্ড সেট :
ফেসবুকে এমন একটী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন যা স্ট্রং হবে । যেমন- Md6578R@!$
অর্থাৎ এমন একটা পাসওয়ার্ড যার মধ্যে স্পেশাল ক্যারেকটার (!@#) বড় হাতের অক্ষর ও ছোট হাতের অক্ষের সাথে অংক থাকবে। বর্তমানে পাসওয়ার্ড সেট করতে গেলে পাশে লেখা উঠে লো , মিডিয়াম , স্ট্রং যা আপনাকে হেল্প করবে যে স্ট্রং হইছে নাকি ।
৬। স্প্যাম :
কেউ যদি কোন ধরণের লিংক দেই সেখানে ঢুকবেন না । সার্প্রাইজ মেসেজ চ্যাক করুন বা দেখুন ভিডিও ট্টী বাচ্চা রা দুরে থাকুন এধরণের লিংকের ফাদে পা দিলেই সর্বনাশ ।
সব সময় এধরণের জিনিস হইতে বিরত থাকুন।
সব শেষে বলতে চাই সতর্ক থাকুন সুস্থ থাকুন। আর নিজের অপ্রয়োজনে গুরুত্ব পূর্ণ তথ্য ,ছবি ভিডিও কাউকে দেবেন না বা শেয়ার করবেন না। সব সময় খেয়াল রাখুন ।
ধ্যনবাদ
You must be logged in to post a comment.