বর্তমানে এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আমরা অনলাইনকে কাজের সাথে সাথে বিনোদনের একটা মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করে আসছি।
যদি অনলাইনে এই বিনোদনের মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে আয় করা যায় তাহলে কেমন হয়? নিশ্চয়ই খুব ভালো হয়। আর বর্তমানে বিনোদনের সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম হলো ইউটিউব। এই ইউটিউবই নাকি বিনোদনের সাথে সাথে আয়েরও উৎস। ভাবতে একটু অবাক লাগলেও এটাই সত্যি।
বর্তমানে ইউটিউব চেনে না এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আমরা সকলেই কিন্তু ইউটিউবকে কম-বেশি চিনি। আমরা অধিকাংশ ভিডিওই ইউটিউবে দেখি। সেটা যে ধরনের ভিডিওই হোক না কেন।
চলুন এবার জেনে নিই ইউটিউবে সত্যিই কিভাবে আয় করবেন :
সাধারণত ইউটিউবে আমরা অনেক ভিডিওই দেখে থাকি। সেইসব ভিডিও কেউ না কেউ তৈরি করে। আর সেই ভিডিওগুলোই ইউটিউবে আপলোড করে। সেই আপলোড করা ভিডিওতে ইউটিউব এড দেখায় দর্শকদের। আপনি কখনো না কখনো অবশ্যই ভিডিওতে এড চলতে দেখেছেন। এখন প্রশ্ন হলো এসব এড কারা দেয়? কোথা থেকে আসে? কেন আসে?
মনে করুন আপনার একটি কাপড় বিক্রির প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এখন আপনি আপনার কাপড়ের বিজ্ঞাপন দিতে চান। এখন আপনি ইউটিউবে বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী। আপনি তখন গুগল এডওয়ার্ড এর মাধ্যমে ইউটিউবকে আপনার তৈরি করা বিজ্ঞাপনটি ডলারের বিনিময়ে পাঠালেন। আপনার পাঠানো সম্পূর্ণ ডলার থেকে ইউটিউব ৪৫% ডলার নিজে রেখে দেয় আর ৫৫% ডলার বিজ্ঞাপনটির দ্বারা ভিডিও নির্মাতাদের মাঝে ভাগ করে দেয়।
যখন আপনি কোনো ভিডিও দেখেন সেই ভিডিওতে যদি কাপড়ের বিজ্ঞাপনটি দেখানো হয় আর যদি সেই বিজ্ঞাপন এর উপর ক্লিক হয় তাহলে প্রতিটি ক্লিকের জন্য ভিডিও নির্মাতা ডলার পায়। এবং সেই ডলার সরাসরি ভিডিও নির্মাতার গুগল এডসেন্স একাউন্ট এ জমা হয়। যা পরবর্তীতে ব্যাংক একাউন্ট এর মাধ্যমে ভিডিও নির্মাতা তুলে নেই। এভাবেই মূলত টাকা আয় করা যায় ইউটিউব থেকে।
এখন প্রশ্ন হলো আপনি ইউটিউবকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে আয় করবেন :
ইউটিউব থেকে আয় করতে হলে আপনাকে কিছু বিষয় মেনে কাজ করতে হবে। যেমন :
• প্রথমেই আপনাকে একটি চ্যানেল খুলতে হবে ইউটিউবে। সেটাকে সুন্দর করে সাজাতে হবে। এসইও করতে হবে। কিভাবে ইউটিউবে চ্যানেল খুলতে হয় সেটা ইউটিউবেই দেওয়া আছে। সেখান থেকে দেখে করতে পারেন
• নিজে ভিডিও তৈরি করতে হবে। অন্যের ভিডিও বা যেকোনো ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করা যাবে না। ইউটিউবে অন্যের ভিডিও গ্রহণযোগ্য নয়।
• ইউটিউব এর কমিউনিটি গাইডলাইন ও কপিরাইট নীতিমালা মেনে চলতে হবে।
• আপনি যে ধরনের ভিডিওই তৈরি করুন না কেন এর জন্য ইউটিউবে বিভিন্ন নীতিমালা রয়েছে। সেসব নীতিমালা আপনাকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
• আপনার যেই বিষয়টি ভালো লাগে অথবা আপনি যে বিষয়টি ভালো পারেন, সেই বিষয়ে ভিডিও তৈরি করতে হবে।
• গুগল এডসেন্স নিয়ে একটু ধারণা রাখতে হবে। গুগল এডসেন্স কিভাবে কাজ করে সেই সম্পর্কে ইউটিউবে ভিডিও দেওয়া আছে। সেখান থেকে দেখে নিতে পারেন।
• আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য ধরে কাজ করে যেতে হবে ইউটিউবে। এখানে একদিনে সফল হওয়া যায় না। অনেক পরিশ্রমের পর সফলতা আসে।
উক্ত বিষয়গুলো মেনে চললে, আমি শতভাগ নিশ্চিত যে আপনি ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন।
সত্যি বলতে ইউটিউবকে এখন মানুষ পেশা হিসেবেই নিচ্ছে। বর্তমানে অনেকেই ইউটিউব থেকে আয় করেই নিজের ক্যারিয়ার গড়ছে।ইউটিউব থেকে শুধু আয় করতে পারবেন এটা নয় বরং আপনি জনপ্রিয়তাও পাবেন। সমাজে যথেষ্ট পরিমাণ সম্মানও পাবেন। ইউটিউব থেকে আপনি ভালো পরিমাণ ইনকাম করতে পারবেন।
ইউটিউবে শুধু যে এডসেন্স এর মাধ্যমে আয় করা যায় তা কিন্তু নয়। এডসেন্স ছাড়াও ইউটিউব থেকে আয় করার অনেক পদ্ধতি রয়েছে। যেমন :
• স্পন্সরশিপ
• মার্চেনডাইস
• এ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং
• সিপিএ মার্কেটিং
• সুপার চ্যাট
• সুপার থ্যান্কস
• সুপার স্টিকার
এইসব উপায়ে আপনি ইউটিউব থেকে আরো অধিক পরিমাণে টাকা আয় করতে পারবেন। এসব বিষয়সমূহ কি এবং কিভাবে কাজ করে সেসব বিষয় নিয়েও পরবর্তী প্রতিবেদনে আলোচনা করব।
এই প্রতিবেদনে আমি মূলত ইউটিউব থেকে এডসেন্স এর মাধ্যমে আয় করার বিষয়টি আপনার সাথে শেয়ার করেছি। কারণ অনেকেই বিষয়টি জানেন না। আবার অনেকেই জানেন তবে পুরোপুরি জানেন না। অনেকের মনে আবার এটা নিয়ে অনেক প্রশ্ন অথবা কৌতুহল থাকে। অনেকই আবার ভুল জানেন।
মূলত এই কারণেই আমার আজকের প্রতিবেদনটি লেখা। আশা করি প্রতিবেদনটি আপনাদের ভালো লেগেছে। পুরো বিষয়টি হয়ত বোঝাতে পেরেছি। যাদের ইউটিউব সম্পর্কে ভুল ধারণা ছিল তাদের এবং অন্যদের হয়ত বিষয়টি বিস্তারিত বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। প্রতিবেদনটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের।
wow
Great idea
You must be logged in to post a comment.