হ্যালো! জে আইটি আর্নিং প্রোগ্রাম এ আপনাকে স্বাগতম। আশা করি ভালো আছেন । তো আজকে আমি যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো তার কিছুটা হয়তো টাইটেল দেখেই বুঝতে পেরেছেন ।
হ্যা, আপনি হয়তো জেনে থাকবেন যে কম্পিউটারের দুটি অংশ থাকে। হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার।
তবে মূল বিষয় শুরু করার আগে বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য দুইটি example বলে নিই।
Example ১ঃ মনে করুন, মেহেদী নামের একটি ছেলে কলেজে ভর্তি হওয়ার পর বাবার কাছে বায়না ধরেছিল একটা ল্যাপটপ কিনে দেওয়ার জন্য। তার বাবা প্রথম সাময়িক এর ফল ভালো হওয়ায় তাকে একটা ল্যাপটপ কিনে দিলেন। ল্যাপটপে এবং এর গতি দেখে সে মুগ্ধ। সে কিছুদিনের মধ্যেই অনেক সফটওয়্যার ইন্সটল করে ফেলল।
কিন্তু সে নজর করল তার ল্যাপটপ টি আস্তে আস্তে ধীরগতি হয়ে যাচ্ছে। এক বছরের মাথায় এসে মেহেদী দেখল তার ল্যাপটপটি এতটাই ধীর হয়ে গেছে যে কাজ করতে গিয়ে সে মহা বিরক্ত হয়। কিছুদিন পর সে বাবাকে আর একটা ল্যাপটপ কিনে দেবার জন্য আবদার করল।
Example ২ঃ মনে করুন, মিম তার কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন নিয়েছে। এখন সে অনায়াসে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে। এতে তার লেখাপড়ার অনেক উপকার হচ্ছে। লেখাপড়া ছাড়া ও সে বন্ধুদের ইমেইল করা গান শোনা ও ছবি দেখার কাজে ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
ইদানিং সে দেখছে কম্পিউটার টি কোন কারন ছাড়াই মাঝে মাঝে রিস্টার্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও মাঝে মাঝে মিমের ইচ্ছা ছাড়া বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঢুকে যাচ্ছে। একদিন ইউএসবি পোর্টে পেনড্রাইভ প্রবেশ করালে সে অবাক হয়ে দেখল তার সব ফাইল সর্টকাট হয়ে গেছে। মূল ফাইলগুলো কোথাও দেখা যাচ্ছে না।
গল্প শেষ হলো। এখন মূল কথায় আসি।
উপরের গল্প দুটো থেকে আপনি কি বুঝলেন? আপনার অভিজ্ঞতার সাথে মিলে যাচ্ছে?
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে এতদিনে আপনার অনেক কিছু জানা হয়ে গেছে।
আপনি নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রসেসর ও সফটওয়্যার নির্ভর যন্ত্র হলো মূল যন্ত্র। নতুন একটা কম্পিউটার তা ডেস্কটপ , ল্যাপট বা ট্যাবলেট যাই হোক না কেন দেখতে খুব ভালো বা দ্রুত গতিতে কাজ করছে। কিন্তু কিছুদিন ব্যবহার করার পর দেখবেন এটি ক্রমশ ধীর গতির হয়ে যাচ্ছে।
অর্থাৎ পুরনো হলে যন্ত্রটি কেমন যেন ধীর হয়ে যায়। অনেক সময় একটা কমান্ড দিলেই অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। মাঝে মাঝে পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে রাগান্বিত হয়ে আরেকটা নতুন কম্পিউটার কিনে ফেলতে ইচ্ছা করে।
এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় তাহলে কি?
হ্যা', এখানেই রয়েছে কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণের গুরুত্ব।
বেশিরভাগ মানুষেরই আইসিটি যন্ত্রপাতি বা অন্য কোন যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ এর কাজটা করতে ভালো লাগেনা। কিন্তু তারপরও এই কাজটা গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি যদি আপনার আইসিটি যন্ত্র বা কম্পিউটার টি সচল ও পূর্ণমাত্রায় সচল রাখতে চান তবে অবশ্যই এটি রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। এ কাজের জন্য আপনার যন্ত্রপাতি বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নাই। আসলে আমি এখানে আইসিটি যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে সফটওয়্যার ভিত্তিক রক্ষণাবেক্ষণের কথা বলছি।
আপনারে আইসিটি যন্ত্রটিতে যদি মাইক্রোসফট কোম্পানির উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে (বিশ্বের বেশিরভাগ কম্পিউটারে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহৃত হয়) থাকে তবে অপারেটিং সিস্টেমের সব সময় হালনাগাদ বা আপডেট করতে হবে। ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকলে এ আপডেট গুলো সাধারণত স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে থাকে ।
অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম ও প্রায় একই ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকে। তাছাড়া আপনাকে অবশ্যই মাঝে মাঝে রেজিস্ট্রি ক্লিনার সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে কম্পিউটার কে সচল ও গতিশীল রাখার জন্য। যদি রেজিস্ট্রি ক্লিনার ব্যবহার না করেন তবে আপনার কম্পিউটারটি ঠিকভাবে কাজ করবেনা এবং আপনার জন্য অনেক সময় বিরক্তিকর কারন হবে।
এছাড়াও প্রত্যেকবার কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় বেশ কিছু টেম্পোরারি ফাইল তৈরি হয়। অনেকদিন এই ফাইলগুলো না মুছে দিলে হার্ডডিক্সের অনেকটা জায়গা দখল করে রাখে এবং কম্পিউটারের গতিকে ধীর করে দেয়। সেজন্য আমাদের সবারই উচিত টেম্পোরারি ফাইল গুলো মুছে দেওয়া। এতে হার্ডডিক্সের বেশ খানিকটা জায়গা খালি হবে আবার কম্পিউটারের কাজ করার গতি ও বেড়ে যাবে অনেক।
ইদানিং ইন্টারনেট ব্যবহার করা ছাড়া আইসিটি যন্ত্রের ব্যবহার কল্পনা করা যায় না। ইন্টারনেট ব্যবহার করলে আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজার এ ক্যাশ মেমোরি তে অনেক কুকিজ ও টেম্পোরারি ফাইল জমা হয়।
এতে আইসিটি যন্ত্রটি ক্রমান্বয়ে ধীর হয়ে যায়। প্রতিদিন সম্ভব না হলেও কিছুদিন পরপর ক্যাশ মেমোরি পরিস্কার করা একান্ত প্রয়োজন। এই কাজটি করতে সফটওয়্যার আপনাকে সাহায্য করবে।
এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ও এন্টি-ম্যালওয়ার ছাড়া বর্তমানে আইসিটি ডিভাইস ব্যবহার করা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরনের সফটওয়্যার একটা গুরুত্বপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম যার মাধ্যমে আইসিটি যন্ত্র ব্যবহার করেন তাদের জন্য বারবার আক্রমণ থেকে রক্ষা পান। পাশাপাশি নির্বিঘ্নে তাদের যন্ত্র বা যন্ত্র গুলো ব্যবহার করতে পারেন।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার এখন অনেক এন্টিভাইরাস এবং অ্যান্টি ম্যালওয়ার বা এন্টি সফটওয়্যার বিনামূল্যে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়। এমনকি এই সফটওয়্যার গুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপডেট করা যায়। আপডেট এন্টিভাইরাস ছাড়া আইসিটি যন্ত্র ব্যবহার করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
কম্পিউটারে কাজ করার গতি বজায় রাখার জন্য প্রায় সবাই ডিস্ক ক্লিনআপ ও ডিস্ক ডিফ্রাগমেন্টার ব্যবহার করে থাকে। এই প্রোগ্রাম গুলো সাধারনত অপারেটিং সিস্টেমের সাথে যুক্ত থাকে। এই সফটওয়্যার দুটি হার্ডডিস্কের জায়গা খালি করে এবং ফাইলগুলো এমনভাবে সাজাতে কম্পিউটার গতি বজায় রেখে কাজ করতে পারে।
তো আজ এপর্যন্তই। একাবার না বুঝলে আবার মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। বন্ধুের সাথে ফেসবুকে শেয়ার করতে ভুলবেন না!
আরও পড়ুনঃ
You must be logged in to post a comment.