বর্তমান আমাদের দেশে কম্পিউটার ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর শুধু আমাদের দেশেই নয় সারা বিশ্বে প্রায় এখন কম্পিউটারের মাধ্যমে তাদের বেশি ভাগ কাজ কর্ম প্রচলিত হয়ে থাকে। সারা বিশ্বে এর এখন প্রায় কম্পিউটারের রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। আমারা সাধারনত যে যুগে এসে পৌছিয়েছি সেটি হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির যুগ এ যুগে প্রযুক্তির এক বিশেষ ছোঁয়া আমাদের সাথে চলছে।
আর এই প্রযুক্তির এক বিশেষ আবিস্কার হচ্ছে অনলাইন। এখন সবদেশেই অনলাইন পদ্ধতির এক বিশেষ ব্যবহার করা হয়ে থাকে, আর এই অনলাইনকে চালিত করার প্রধান মাধ্যম হচ্ছে কম্পিউটার ও মোবাইল। যা আমাদের বর্তমান সময় সবচেয়ে বেশি কাজে লেগে থাকে। সমস্ত অনলাইনে জগতকে পরিচালিত করতে একটি কম্পিউটারই যথেষ্ট।
এখন আমরা এই আধুনিক যুগে আমাদেরকে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে কম্পিউটার ও মোবাইল ব্যবহার করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্কুল, কলেজ, বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ প্রায় অধিকাংশ জায়গাতে এখন কম্পিউটারে মাধ্যমে কাজ কর্ম পরিচালিত হচ্ছে। আমারা যদি কম্পিউটার ব্যবহার সম্পর্কে কোন রকম ধারনা না রাখি তাহলে আমাদেরকে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন চাকরি ক্ষেত্রে নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। আমাদের চাকরি না হওয়ার উপক্রম হয়ে থাকে।
আর এখন এর ব্যবহার অসংখ্যা হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ এখন এর প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরে এখন সাধারনত মানুষের ঘরে ঘরে কম্পিউটার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। আর এখন বেশিভাগ কাজ কর্ম কম্পিউটারের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। যেকোন অফিস আদালতে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ যেকোন প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারের মাধ্যমে কাজ করে চলছে। প্রায় বলা যায় বেশিভাগ ক্ষেত্রেই এখন মানুষ কম্পিউটারের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। কম্পিউটার ব্যবহার এখন বৃ্দ্ধি পাচ্ছে। মানুষ এখন দ্রুত ও নির্ভুল সঠিক কাজ কম্পিউটারের মাধ্যমে পেয়ে থাকে।
এটি না জানলে আমাদের বিভিন্ন চাকরি ক্ষেত্রে থেকে প্রায় বঞ্চিত হতে হয়। আপনাকে প্রায়ই ডকুমেন্ট তৈরি করতে হবে, ইমেল লিখতে হবে এবং এ জাতীয় আরও অনেক কাজ আপনাকে করতে হবে যেখানে টাইপিং যানা বিশেষ জরুরী। দ্রুত টাইপিং করা এক দিন দু্ই দিনের চার্চার মাধ্যমে হয় না, দিনের পর দিন চর্চার মাধ্যমে এটি করা সম্ভব। যার চর্চা যত বেশি সে তত বেশি দ্রুত গতিতে টাইপ করতে পারে। আমাদের বেশি ভাগ সময় অনুশীলনের মাধ্যমে আমরা এটির প্রতি দক্ষ হতে পারি।
কম্পিউটারের ভালো টাইপিং জানা আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়ে থাকে। আমরা সাধারণত বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলতে আমরা সবাই পছন্দ করে থাকি। আমাদের দেশে সাধারণত বাংলাকে সর্বপ্রথম গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে কম্পিউটারে ভালো মতন বাংলা টাইপিং জানা এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমান সময়ে আমাদের কম্পিউটারে ইংরেজি টাইপিং এর পাশাপাশি বাংলা টাইপিং এর গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই চলছে। আর এই বাংলা টাইপিং এ দেখা যাচ্ছে অসংখ্য জনপ্রিয়তা। অধিকাংশ মানুষই আমরা বাংলা টাইপিং করতে ভালোবেসে থাকি।
কম্পিউটারে বাংলা টাইপিং করতে গেলে হয়তো ইংরেজি টাইপিং এর মত সুবিধা আমরা এখানে সুবিধা পাই না। অধিকাংশ মানুষই আছে যারা কম্পিউটারে বাংলা টাইপিং করতে নানা ঝামেলায় পড়ে থাকে।আমরা যারা কম্পিউটারে বাংলা টাইপিং করে থাকি, এবং আমরা এই বাংলা টাইপিং করতে দুটো সফটওয়্যার কে খুব বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। সেই দুটি সফটওয়্যার হচ্ছে বিজয় কিবোর্ড অভ্র কিবোর্ড।
আমরা হয়তো অনেকেই জানি না এই দুইটি সফটওয়্যার এর মধ্যে কোনটি আমাদের কাছে সেরা হতে পারে।কিন্তু এই দুইটি সফটওয়্যার হয়তো কিছু না কিছু ঝামেলা থেকে থাকে। আমরা এই দুটি সফটওয়্যার কম্পিউটার ব্যবহার করে যখন বাংলা টাইপিং করতে চাই তখন হয়তো কোন না কোনভাবে কোন না কোন শব্দ নিয়ে আমাদেরকে কম বেশি ঝামেলায় পড়তে দেখা যায়।
এই দুইটি সফটওয়্যার সাধারণত আমাদের দেশে বহুদিন থেকেই প্রচলিত হয়ে আসছে। এই দুইটি সফটওয়ারের জনপ্রিয়তায় এখন অধিকাংশ পর্যায়ে চলে গিয়েছে। কেউ হয়তো পছন্দ করে অভ্র কিবোর্ড ব্যবহার করতে আবার কেউ হয়তো পছন্দ করে বিজয় কীবোর্ড ব্যাবহার করতে।
সাধারণত আপনি এই দুইটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে কম্পিউটারে বাংলা টাইপিং ভালোমতন করতে পারবেন। কিন্তু এই দুইটি সফটওয়্যারের ফাংশন পুরোপুরি আলাদা যা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না।আজকে আমরা আপনাদের কাছে অভ্র কিবোর্ড ও বিজয় কিবোর্ড সম্পর্কে আলোচনা করব।
সাধারণত অভ্র ও বিজয় কিবোর্ড দিয়ে আপনি কি ভালো মতন বাংলা লিখতে পারবেন। বাংলা লেখার জন্য কোন সফটওয়্যারটি আপনার কাছে সেরা হতে পারে তা নিয়ে আজকে আমাদের আলোচনা। বাংলা লেখার জন্য এই দুটি সফটওয়্যার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। তো চলুন আর দেরি না করে আমরা এখন জেনে নেই অভ্র ও বিজয় কিবোর্ড এর সম্পর্কে। নিচে এর বিস্তারিত আলোচনা করা হলো
অভ্র কিবোর্ড:
এটি একটি গ্রাফিক্যাল কীবোর্ড সফটওয়্যার এটি উইন্ডোজ এর প্রথম বিনামূল্যের ইউনিকোড এবং এ এন এস আই যুক্ত বাংলা কিবোর্ড এর ইন্টারফেস যা ২৬ শে মার্চ ২০০৩ সালে মুক্তি পায়। অভ্র কিবোর্ডে স্থির কিবোর্ড লেআউট এবং অভ্র ফোনেটিক নামের ফোনেটিক লে-আউট রয়েছে যা রমনীয় কৃত প্রতিবর্ণ করণ ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলা টাইপ করার সুবিধা প্রদান করে থাকে।
এটার সাহায্যে বাংলা লিপি ব্যবহার করে এমন সব ভাষাতেই টাইপ করা যায় এই ধরনের ভাষাগুলোর মধ্যে অসমীয়া ভাষা অন্যতম।মেহেদী হাসান খান নামে একজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্র থাকাকালীন ২০০৩ সালে অভ্র কিবোর্ড তৈরির কাজ শুরু করেন, তবে তিনি সর্বপ্রথম এটিকে তৈরি করেছিলেন ভিজুয়াল বেসিক প্রোগ্রামিং ভাষা দিয়ে।
2007 সালে অভ্র কিবোর্ড পোর্টেবল এডিশন বিনামূল্যে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।এই অভ্র সফট্ওয়ারে আপনি বাংলা লেখার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু ইচ্ছা মত সাজিয়ে নিতে পারবেন। এতে বাংলা লেখার জনপ্রিয় সকল পদ্ধতি যুক্ত করা হয়েছে।
এখানে উচ্চারণভিত্তিক ফনেটিক বাংলা টাইপিং করার ব্যবস্থা এখানে লিখতে হয় ইংরেজিতে এবং সেটি বাংলায় প্রকাশিত হয়ে থাকে। যেমন Ami banglai gaan gai এখানে টাইপ করা হলে লেখাটি হবে আমি বাংলায় গান গাই।
তবে এখানে আরেকটি সুবিধা রয়েছে সেটি হল বানান শুদ্ধ করার জন্য অভ্র সাথের্ Avro spell checker নামে একটি স্বতন্ত্র প্রোগ্রাম রয়েছে যার মাধ্যমে এমএস ওয়ার্ডে আপনি ভালো মতন বানান যাচাই করতে পারবেন।
বিজয় কিবোর্ড:
এটির প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়ে থাকে ১৬ ডিসেম্বর হাজার ১৯৮৮ সালে। ইউনিকোড পরিপূর্ণভাবে প্রচলনের স্বার্থে বিজয়ের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় ২০১১ সালে। প্রথম সংস্করণের সকল বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে দ্বিতীয় সংস্করণে এমন কিছু নতুন বর্ণ যুক্ত করা হয় যা ইউনিকোড ভিত্তিক বাংলা লেখার প্রয়োজন হয়।
এটির বর্তমানে অনেকগুলো ভার্সন রয়েছে। যা বাংলাভাষাকে খুব ভালোভাবে কম্পিউটারের বাংলা লেখায় রূপান্তরিত করে থাকে। এই সফটওয়্যার টাইপের মাধ্যমে আপনি আপনার কিবোর্ডে যে অক্ষরের চিহ্ন ব্যবহার করা রয়েছে আপনি সেই অক্ষর টাইপ করার মাধ্যমে এখানে কে অক্ষর কে লেখায় রূপান্তরিত করতে পারবেন।
এটির বর্তমানে এক বিশেষ জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা গিয়েছে আমাদের বাংলাদেশে। এটিতে অধিকাংশ মানুষই কম্পিউটারে বাংলা লেখার জন্য এই সফটওয়্যারটি কে ব্যবহার করে থাকে।
অভ্র ও বিজয় কিবোর্ড:
বাংলা টাইপিং এর জন্য বাংলাদেশের বিজয় এবং অভ্র কিবোর্ড দুটি আমাদের হাতে সহজলভ্য। আমরা চাইলেই যেকোনো একটিকে নিয়ে কম্পিউটারে বাংলা লেখা শুরু করতে পারি।
সাধারণত কম্পিউটারে লেখার সময় আমরা বিজয় লিখব নাকি অভ্রতে লিখব তা নিয়ে প্রায়ই দিদ্ধার ভিতরে পড়ে যাই। তবে অভ্র ও বিজয় কিবোর্ড নিয়ে বলতে গেলে প্রথমে যেটা বলতে হয় সেটা হচ্ছে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য পুরো বাংলাদেশে প্রায় বেশিরভাগ মানুষই অভ্র ব্যবহার করে থাকেন। তবে আপনাকে প্রফেশনাল কাজের জন্য অবশ্যই বিজয় কিবোর্ড ব্যবহার করতে হয়।
তবে ব্যক্তিগত ভাবে মানুষের অভ্র ব্যবহারের কারণ হচ্ছে সহজ সুবিধাজনক লেআউট। এখানে ইংরেজিতে লিখলে বাংলা হচ্ছে এমন একটা ব্যবস্থাকে অধিকাংশ মানুষ সুবিধাজনক মনে করে থাকে। তবে আপনি যদি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড মাইক্রোসফট এক্সেল মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট ফটোশপ ইত্যাদি সফট্ওয়ারে বাংলা লেখার সময় বাংলা লিখে ডিজাইন করার সময় বিভিন্ন স্টাইল ফন্ট ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে আর এই স্টাইল ও ফন্টগুলো সাধারণত বিজয় কিবোর্ডে পাওয়া যায়। এগুলো অভ্রতে পাওয়া যায় না।
আবার দেখা যায় অনেক কমেন্ট বা ওয়েবসাইটের লেখার জন্য অভ্র কীবোর্ডের সব অক্ষর সাপোর্ট করে না মানে কিছু যুক্ত বর্ণ বা চন্দ্রবিন্দু লিখতে অনেক ঝামেলায় পড়তে হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে মেইল পাঠানোর সময় অসুবিধায় পড়তে হতে পারে।
তবে অফিসিয়াল ডকুমেন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে অবরোধ দিয়ে যদি টাইপ করেন তাহলে সেটা ডিফল্ট হিসেবে Nirmala ফন্ট ব্যবহার করা হয়। আর বিজয়ের ক্ষেত্রে ডিফল্ট হিসেবে Suttony MJ ফন্ট ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
হয়তো আপনি ভাবতে পারেন অভ্র দিয়ে টাইপ করে পুরো লেখাটা সিলেক্ট করে ফন্ট পরিবর্তন করে দেবেন কিন্তু সেক্ষেত্রে যুক্তবর্ণ গুলো ভেঙ্গে যাবে এবং অনেক বানান পাল্টে যাবে। অধিকাংশ শব্দের মাঝে স্পেস নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আপনি সেটি করতে পারবেন না। এজন্য আপনাকে অফিশিয়াল ডকুমেন্ট এর জন্য বিজয় ব্যবহার করতে হয় এটি ব্যবহার করাও আপনার জন্য ভালো হয়ে থাকবে।
ইংরেজি টাইপ করে যদি সেটাকে বাংলা করার প্রয়োজন মনে করেন তাহলে অভ্র কিবোর্ড ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি সঠিক বাংলা টাইপিং শিখতে চান এবং তা যদি অফিশিয়াল কাজের জন্য বা আপনার কিবোর্ডে অক্ষরের চিহ্ন প্রকাশ করা আছে আপনি যদি সেটিকেই কম্পিউটারে লিখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার জন্য বিজয় কিবোর্ড ব্যবহার করা হবে সেরা উপায়।
আপনি সাধারণত বিজয় কিবোর্ড ব্যবহার করে অনেক ভালো বাংলা টাইপিং শিখতে পারেন। যা আপনার বাংলা টাইপিং এর দক্ষতা অতি দ্রুত বাড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে। আপনি যদি বিজয় কিবোর্ড দিয়ে বাংলা টাইপিং এর অনুশীলন করে যান তাহলে আপনার চাকরি-বাকরির ক্ষেত্রেও অনেক সুবিধা বয়ে আনবে।
এক্ষেত্রে আপনি আপনার কম্পিউটারে বিজয় কিবোর্ড এর যে কোন ভার্সন ইনস্টল করে নিতে পারেন। আপনি আপনার ইচ্ছামত যেকোনো লেখা এই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে লিখতে পারবেন। এবং বাংলা লেখা টাইপিং করার ক্ষেত্রে আপনি অনেক দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।
যদি আমাদের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে দয়া করে আপনার ইচ্ছামতো যেকোনো একটি সাইটে একবার শেয়ার করবেন। আপনাদের করা একটি শেয়ার হয়তো আমাদেরকে আরো নতুন আর্টিকেল লিখতে উৎসাহিত করবে।
You must be logged in to post a comment.