লোগো ডিজাইন কি? বা লোগো ডিজাইনে এক্সপার্ট হতে হলে যে বিষয়টি আপনার জানা দরকার। বিস্তারিত এ বিষয়ে!

লোগো ডিজাইন কি? বা  লোগো ডিজাইনে এক্সপার্ট হতে হলে যে বিষয়টি আপনার জানা দরকার। বিস্তারিত এ বিষয়ে! 

আজকাল প্রতিটি ক্ষেত্রেই লগোর ব্যবহার হয়। শিল্প, শিক্ষা, ব্যবসা, মিডিয়া, ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান,  টিভি চ্যানেল, অনলাইন মার্কেটিং, ফ্রিলান্সার আরো ইত্যাদি ক্ষেত্রে লগোর ব্যবহার করা হয়।  যাইহোক তার আগে আমাদের জানা দরকার আসলে এই লোগো কি? তাহলে চলুন জেনে নেই  লোগো কি? কিভাবে লগো ডিজাইন করা হয়? লোগো ডিজাইন করতে হলে কি কি লাগে? লোগো ডিজাইন করে আয় করা যায় কিনা?  এইসব সম্পর্কে জানি। 

লোগো ডিজাইন কি?

লোগো মূলত একটি চিত্র,  ছবি বা চিহ্ন।    কিন্তু এই ছবিতে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন বর্ন, সব্দ, পশুপাখির ছবি, অর্থাৎ পৃথিবীতে যত ধরনের উপকরণ রয়েছে সবই লোগোতে ব্যবহার করা হয়।  একটি লোগোর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় একটি দেশ, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা ব্যক্তিত্ব সহ আরোও অনেক কিছু।

যাইহোক আরেকটু পরিস্কার করে বুঝানোর চেষ্টা করছি। দেখবেন বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল বা টেলিভিশন চ্যানেলের ডান দিকের বা বাম দিকের কোনায় বিভিন্ন বর্ন সহ আর অনেক কিছুর চবি থাকে এটাই হচ্ছে লোগো। 

যেমন,  মাছরাঙা টিভি চ্যানেলের লোগো বানানো হয়েছে মাছরাঙা পাখির চবি দিয়ে,  এই ছবি মানুষ দেখলেই বুঝবে যে এটি মাছরাঙা টিভি। তাই এই লোগো দ্বারাই কোনো কোম্পানি, দেশ, প্রতিষ্ঠান, শিল্প প্রতিষ্ঠান,  বা অন্যান্য যে মাধ্যম রয়েছে তার নাম ফুটিয়ে তুলে। লোগো দেখেই মানুষ বুঝতে পারে যে এটি কোন প্রতিষ্ঠান। আশা করি এবার সবাই বুঝতে পেরেছেন।  চলুন এবার অন্য বিষয় জানি!

লোগো ডিজাইন করতে কি কি লাগে? বা  কোন অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। 

হাতে কলমে  ডিজাইন করতে হলে তো পেন্সিল, খাতা -কলম, রঙ, তুলি, এগুলাই লাগে।  কিন্তু আপনি যদি কম্পিউটারে বা ল্যাপটপে লোগো ডিজাইন করতে চান তাহলে আপনাকে কোনো টুলস বা অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে।

লোগো ডিজাইন করার জন্য কিছু টূলস এবং অ্যাপ!

১. (Adobe Illustrator) এডোবি ইলাস্ট্রেটর খুবই জনপ্রিয় একটি লোগো ডিজাইন করার টুলস।

২. Adobe photostats বা Photoshop. 

৩. Wix logo maker.

৪. Logaster.

৫. Looka (formerly LogoJoy)

৬. Tailor brands

৭. Logomaker

৮. Laughingbird

৯. Logo Design Studio Pro

১০. LogoYes.

ফ্রী কিছু লোগো ডিজাইন অ্যাপ যেগুলো চাইলে মোবাইল দিয়ে ও করতে পারবেন। যেমনঃ Canva, logo maker, Tailor brands, free logo Design. Graphics springs. ইত্যাদি। 

লোগো ডিজাইন করে কি আয় করা যায়?

হ্যাঁ,  অবশ্যই আপনি  লোগো ডিজাইন করে আয় করতে পারবেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সহ বাংলাদেশ ও হাজার হাজার লোকজন শুধু লোগো ডিজাইন করেই বিদেশি কোম্পানি বা মার্কেটপ্লেস থেকে হাজার হাজার ডলার আয় করছে যেমনঃ ফাইভার ডটকম , ফ্রিল্যান্সার ডটকম, আপওয়ার্ক ডটকম, ইত্যাদি।  তার জন্য আপনাকে শুধু গ্রাফিক্স ডিজাইনে একটু এক্সপার্ট হতে হবে। এই বিষয়টি সম্পর্কেই আমি আলোচনা করতে যাচ্ছি।

ভালো মানের লোগো ডিজাইন করতে বা এক্সপার্ট হতে হলে যেটি করতে হবে! 

ভালো মানের লোগো ডিজাইন করে আয় করতে হলে অবশ্য কিছু বুদ্ধি  খাটানোর প্রয়োজন হয়। 

এমন লোগো ডিজাইন করুন যেটি ব্র্যান্ড কিংবা প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে  মিলে :

এটা অবশ্য একটা সঠিক উপায় যে, আপনাকে এমন লোগো ডিজাইন করতে হবে যেটি  তার  ব্র্যান্ড কিংবা প্রতিষ্ঠান,  মিডিয়া, ওয়েবসাইট,  অ্যাপ, টিভি চ্যানেল,  যেটাই হোক না কেন, যেন তার কাজের সাথে এবং নামের সাথে মেলে। যেমন: ধরুন আমি একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলেছি এবং তার নাম দিলাম শাপলা মিডিয়া। 

কিন্তু তার লোগো এখনো তৈরি করিনি তার জন্য আপনাকে বললাম একটা লোগো তৈরি করতে।  সেটা আপনি কিভাবে তৈরী করবে যেটি নামের সাথে মেলে ? আপনাকে লাগবেনা আমি ঐ বলছি। এমনভাবে তৈরী করতে পারেন একটা শাপলা এঁকে যেইরকম শাপলা আমরা এক টাকা অথবা পাঁচ টাকায় দেখতে পাই। 

এইরকম শাপলা এঁকে তার নিচে SM ইংরেজি বর্ণ  সুন্দর করে ডিজাইন করে বসিয়ে দিতে পারেন। তাহলে নামের সাথে এবং লোগোর সাথে অনেকটাই মিল থাকবে।

লোগো ডিজাইন করার আগে আপনার ক্লায়েন্ট এর কাছ থেকে নাম , ধরন, বিষয়, সবকিছু ভালোভাবে জেনে নিন:

এটা গুরুত্বপূর্ণ যে কোনো লোগো ডিজাইন করার আগে আপনার উচিত আপনার ক্লায়েন্ট কাছ থেকে এগুলো জেনে নেওয়া, যে তিনি কি রকম লোগো চান,  তার ব্র্যান্ড,  কোম্পানি, বা প্রতিষ্ঠান এর নাম কি দেবেন। এগুলো জানলে আপনার পরবর্তীতে লোগো ডিজাইন করতে সুবিধা হবে।

ল্যাপটপ / কম্পিউটারে লোগো ডিজাইন করার আগে খাতায় সাধারণত ভাবে ডিজাইন করে রাখুন:

লোগো ডিজাইন করার আগে সবাইকেই ভাবতে হয় যে কিভাবে লগো ডিজাইন করব, ভাবনার পর অনেকেই আইডিয়াটা পেয়ে যায়। কিন্তু ল্যাপটপ / কম্পিউটারে লোগো ডিজাইন করার সময় তা ভুলে যায়।  তাই যখন আমরা কোনো ডিজাইন আগে চিন্তা করে রাখব তখন এটি আগে খাতায় সাধারণভাবে এঁকে রাখা ভালো।  তাহলে পরবর্তীতে আর এ বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে না। 

সুন্দর লোগোর জন্য বিভিন্ন পশুপাখি, গাছপালা, লাতাপাতা, আসবাবপত্র,  চিহ্ন, প্রতিক, ইত্যাদির ব্যবহার করতে পারেন :

লোগো তো শুধু এক বিষয়ে না,  বিভিন্ন প্রকারের, বিভিন্ন ধরনের লোগো মানুষ ব্যবহার করে থাকেন।  তাই নাম ও কাজের সাথে মিল রেখে বিভিন্ন পশুপাখি, গাছপালা, লাতাপাতা, আসবাবপত্র,  চিহ্ন, প্রতিক, ইত্যাদির ব্যবহার করতে পারেন এতে লোগোটা খুববেশি আকর্ষণীয় হবে। এবং ক্লায়েন্টের ও পছন্দ হবে।

রং, আকার-আকৃতি, সঠিকভাবে ব্যবহার করুন:

এটাও একটা কার্যকরী পদ্ধতি।  আপনি এত কস্ট করে লোগো তৈরী করলেন কিন্তু সঠিকভাবে রং না দেওয়ায় যদি আপনার এই লোগোটি কেন্সেল হয়ে যায় তাহলে কিন্তু আপনার এই কস্টের মূল্য থাকল না।

তাই সবসময় এটা বুঝে কাজ করবেন, কোন জায়গায় কোন রঙ বসাতে হবে,  বা এতে ম্যাচ হবে কিনা। এগুলো মাথায় রাখতে হবে। 

লোগোর বৈচিত্র্যময়তা, স্টাইল ফুটিয়ে তুলুন :

স্টাইল কেনা পছন্দ করে, মানুষের ব্যবহার বা পোশাক-আশাকের মতো মধ্যে যেমন স্টাইল,  লোগোর মধ্যে ও ঠিক স্টাইল রাখা প্রয়োজন। লগোর স্টাইল এর মধ্যেই ক্লায়েন্টকে আকর্ষণ করা যায়। 

বর্ণ, সব্দ, ছবি, চিহ্ন, এগুলো সঠিকভাবে স্টাইল আকারে সাজাতে হবে। লোগোর বিজনেস কার্ড, ব্রশিওর, ব্যানার, ফ্লায়ার,ফেস্টুন, পোস্টার, বিলবোর্ড ইত্যাদি  এই রকম সৌন্দর্য বজায় রাখতে হবে। 

অর্ডার কম্পিলিট না হয়া পর্যন্ত লোগো রিইডিট পর্যায়ে রাখুন:

অনেক সময় আমরা লোগো ডিজাইন  করা শেষ হয়ে গেলে এটি অ্যাপ বা টুলস থেকে সরিয়ে ফেলি।  তখন দেখা যায় যে ক্লায়েন্ট রিভিশন চাচ্ছে, কিন্তু এমন অবস্থাতে তো এটি পূনরায় তৈরী করা না ছাড়া আর উপায় থাকে না। সেজন্য আপনাকে এটি রিইডিট পর্যায়ে রাখতে হবে। যেন পরবর্তীতে আর সমস্যা না হয়।

যাইহোক আশাকরি আপনাদের এসব বিষয়গুলো  ভালো লেগেছে। 

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles