অনলাইন ইনকামের দুইটা দিক আছে।তার মধ্যে জনপ্রিয় একটা মাধ্যম হলো প্যাসিভ ইনকাম জেনারেট মাধ্যম।আর এই প্যাসিভ ইনকামের মধ্যে রয়েছে এফিলিয়েট মার্কেটিং।
এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে অনেকেরই ধারনা আছে,আবার অনেকেরই ধারনা নেই।তাই যাদের ধারনা নেই এবং যাদের কিছুটা কম ধারনা আছে তাদের জন্য আজ আমরা "এফিলিয়েট মার্কেটিং কি,এটা দিয়ে কিভাবে ইনকাম করা যায়,কিভাবে কাজ টা শুরু করা যায় ইত্যাদি সব বিষয়ে আলোচনা করব"।
প্রথমেই আসি এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
ইংরেজিতে Affiliate কথাটার অর্থ হলো শাখা বা শাখা যুক্ত সংগঠন।
কোনো কোম্পানি যেসব প্রোডাক্ট তৈরি করে বা সেল করে তাদের কয়েক জনের পক্ষে তো এতগুলো প্রোডাক্ট বিক্রি করা সম্ভব হয়না তাইনা?তাই তারা অনেক মানুষকে প্রোমোটার হিসেবে রাখে।
আর এই প্রোমোটার এর সংখ্যা অনেক বেশি।আপনি যদি একজন এফিলিয়েট হিসেবে কাজ করতে চান তাহলে আপনাকে কোনো কোম্পানির প্রোমোটার হিসেবেই কাজ করতে হবে।তো আশা করি বুঝতে পেরেছে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর বেসিক টা।এটা মূলত একটা কমিশন বেসড মার্কেটিং সেক্টর।
কিভাবে ইনকাম হয় এফিলিয়েট মার্কেটিং সেক্টরেঃ
আপনি যখন একজন এফিলিয়েট হিসেবে যোগদান করবেন তখন আপনাকে একটা লিংক দেওয়া হবে কোম্পানি হতে।
এখানে বলে রাখি প্রতিটা এফিলিয়েট এর ইউনিক বা আলাদা আলাদা লিংক দেওয়া হয়।তারপর আপনি নির্দিষ্ট টাইপের প্রোডাক্ট বেছে নিবেন। এবং সেটা যাতে অন্যরা কিনতে উদ্যত হয় সেটা দেখবেন।
তারপরে যারা আপনার লিংকে ঢুকে যেকোনো একটা প্রোডাক্ট কিনবে সেই প্রোডাক্ট বিক্রির একটা কমিশন আপনি পাবেন।মূলত এভাবেই হয় এফিলিয়েট মার্কেটার এর ইনকাম।
এবার অনেকের ই মনে প্রশ্ন আসতে পারে এখানে কি মাসিক স্যালারির কোনো ব্যাবস্থা নেই?উত্তর হচ্ছে হ্যা আছে,সেজন্য কোম্পানি আপনাকে মাসিক একটা সেলস টার্গেট দিবে।টার্গেট অনুযায়ি কাজ করতে পারলে মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমান টাকা পাবেন আপনি।
তবে এটার থেকে আপনার কমিশন বেসড ইনকামটা বেশি দেখা যায়।সেক্ষেত্রে আপনি প্রতিটা কপির জন্য আলাদা ভাবে কমিশন পাবেন।এখানে আপনি কোনো মাসিক বেতন পাবেন না।প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারলেই শুধু আপনি কমিশন পাবেন।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে প্রোডাক্ট টা কে বিক্রি করলো সেটা কোম্পানি বুঝবে কিভাবে?
এটা খুবই সহজ।আপনাকে কোম্পানি যেই লিংক টা দিয়েছিলো সেই লিংকের সাথে অন্য কারো লিংকের মিল নেই।তো যারা আপনার দেওয়া লিংক থেকে ঢুকে প্রোডাক্ট কিনবে কোম্পানি সেটা খুব সহজেই বুঝতে পারবে।
এখন এফিলিয়েট মার্কেটিং এর দুইটা ক্ষেত্র আছেঃ
১। এফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস
২। ইনডিভিজুয়াল কোম্পানি এফিলিয়েট প্রোগ্রাম
এফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস
বর্তমানে যেহেতু এফিলিয়েট মার্কেটিং এর অনেক চাহিদা তাই বিশ্বে অনেক গুলো মার্কেট প্লেস তৈরি হয়েছে।যারা তাদের প্রোডাক্ট লিস্ট করে থাকে এবং সারা বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়।এখানে যে কোনো দেশের মানুষ এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে কাজ করে নিজের লাইফ শাইন করতে পারে।
বিশ্বের জনপ্রিয় কিছু মার্কেটপ্লেস সমুহ নিচে দেওয়া হলোঃ
Clickbank Amazon AssociatesCJ.com JVZooImpact Radius ETC
এছাড়া বিশ্বে আরো বড় বড় মার্কেটিপ্লেস আছে যেগুলোতে আপনি জয়েন হয়ে কাজ করতে পারবেন।
ইনডিভিজুয়াল কোম্পানি এফিলিয়েট প্রোগ্রাম
বৈশ্বিক মার্কেট প্লেস ছাড়াও ইনডিভিজুয়াল কোম্পানি গুলো তাদের প্রোডাক্ট অফার করে তাদের ট্র্যাকিং সিস্টেমের মাধ্যমে।এখান থেকেও আপনি তাদের অফার ক্র্যাক করে ভালো এফিলিয়েট মার্কেটার হতে পারবেন।
এখন আসি কিভাবে আপনি আপনার লিংক টা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিবেন এবং আপনার লিংক থেকে মানুষকে প্রোডাক্ট কেনাবেন।অনেক জায়গায় দেখা যায় এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য অনেক কোর্স ও করায়।তো আপনি কোর্স না করেও কিভাবে আগাতে পারবেন সেটা বলি এখন।
এজন্য আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়াতে দক্ষ হতে হবে।আপনার যদি কোনো ইউটিউব চ্যানেল বা কোনো ওয়েবসাইট থাকে এবং এগুলো তে অনেক বেশি ভিউয়ার থাকে তাহলে কাজটা আপনার জন্য খুবই সহজ হয়ে যাবে।আপনি আপনার ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেলে আপনার লিংক পোস্ট করবেন।
তাদের প্রোডাক্ট গুলোর রিভিউ দিবেন।মাঝে মধ্যে আপনি নিজেও সেখান থেকে পন্য কিনে লাইভ রিভিউ দিলে আপনার ভিউয়ারস রা সেটা কেনার আগ্রহ দেখাবে।
এভাবে আপনি আপনার লিংক শেয়ার করবেন।
এই ধরনের কাজের জন্য ধৈর্য্য এবং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।তাই আপনি যদি একজন বিগিনার হোন তাহলে অবশ্যই আপনাকে ধৈর্য্যের সাথে কাজ করতে হবে।ধৈর্য্য ধরে কাজ করলে ইন শা আল্লাহ সফল হবেন।
এছাড়াও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো আপনি এখানে নিজে প্রোডাক্ট কিনলে সেটাও আপনার মার্কেটার এজিন্সির জন্য ভালো ফলাফল পাবেন।
প্রতিটা প্রোডাক্টে আলাদা আলাদা লভ্যাংশ থাকতে পারে।আবার একেকটা প্রোডাক্টের চাহিদা একেক রকম। তাই আপনার উচিত চাহিদাবান প্রোডাক্ট চয়েজ করা।
আপনার অনলাইন পথচলা সুন্দর হোক!!
You must be logged in to post a comment.