আমরা অনেকেই সেরা কিছু ফটো- এডিটর অ্যাপসের সন্ধান করি যেগুলো দিয়ে ফ্রীতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন দিয়ে এডিট করা যায়।আজকে আমি সেরকমই ৩টি অ্যাপস সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
প্রযুক্তির উন্নয়নের কল্যাণে বর্তমানে প্রায় সবার হাতেই স্মার্টফোন আছে। প্রযুক্তির এক অনবদ্য আবিষ্কার হল স্মার্টফোন। বর্তমানে যার কাছে একটি স্মার্টফোন আছে তার হাতে রয়েছে পুরো বিশ্ব। কারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করে এক নিমিষেই যোগাযোগ করা যায়।
শুধুমাত্র কথা বলায় নয় ভিডিও কল করে ছবি দেখা যায় ,ইমেইল করা যায়, মেসেজিং করা যায়। এছাড়াও অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন দিয়ে ছবি তোলা যায়, ভিডিও করা যায়, বিভিন্ন সফটওয়্যারের সাহায্যে ফটো এডিটিং, ভিডিও এডিটিং, গেমস খেলা ইত্যাদি আরো অনেক কিছু করা যায় যা বলে শেষ করা যাবে না।
আজকের আলোচনার বিষয়ঃ ছবি এডিটিং সফটওয়্যার ডাউনলোড
আজকে আমি আলোচনা করব এমন কিছু অ্যান্ড্রয়েড সফটওয়্যার নিয়ে যেগুলো ব্যবহার করে খুব সহজেই প্রফেশনাল ফটো এডিট করা যায়।
ফটো এডিটিং কি ?
ফটো এডিটিং বলতে বুঝায় নির্দিষ্ট একটি সফটওয়ারের বিভিন্ন টুলস এর মাধ্যমে একটি ছবিকে বিভিন্নভাবে নতুন করে সজ্জিত করার টেকনিককে।
কি কি লাগবে ?
ফটো এডিটিং করার জন্য আগে কম্পিউটার বা ল্যাপটপের প্রয়োজন হতো কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে নতুন নতুন অনেক সফটওয়্যার আবিষ্কৃত হয়েছে যেগুলো স্মার্টফোনের ব্যবহার করা যায়। আমরা প্রতিনিয়ত সবাই কমবেশি নিজেদের স্মার্টফোন ব্যবহার করে ফটো এডিট করে থাকি।
ফটো এডিটর অ্যাপের প্রয়োজনীয়তা ঃ
ফটো এডিটিং সফটওয়্যার আমাদের অনেক উপকার করে। যেমন: একটি ছবিতে অনেক মানুষ রয়েছে, ফটো এডিটর এর সাহায্যে এই ছবিটির মধ্য থেকে এক্সট্রা মানুষ গুলোকে মুছে ফেলে সিঙ্গেল একজন মানুষের ছবি তৈরি করা যায়।
তারপর এক্সট্রা ফিল্টার অ্যাড করা যায় যা ছবিতে বৈচিত্র নিয়ে আসে। এখনকার ফোনগুলো ক্যামেরা কোয়ালিটি খুবই ভালো যার কারণে ছবি তোলার জন্য এখন আর ডিএসএলআর দরকার হয় না। নিজেদের ফোন গুলো দিয়েই হাই কোয়ালিটির ছবি তোলা যায়।
কয়েকটি ফটো এডিটিং অ্যাপস সম্পর্কে:
ফটো এডিটিং করার জন্য প্লে স্টোরে অসংখ্য অ্যাপস রয়েছে। তবে সব অ্যাপস ভালো না। পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে সবসময় একরকম না। ফিচার, টুলস এসবের ভিত্তিতে এক একটি অ্যাপ এর জনপ্রিয়তা নির্ভর করে। বিশ্বব্যাপী ফটো এডিটিং অ্যাপস এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিনই প্লে স্টোর থেকে অসংখ্য ফটো এডিটিং অ্যাপস ডাউনলোড হচ্ছে।
নিচে কয়েকটি সেরা ফটো এডিটিং অ্যাপস সম্পর্কে লিখছি-
1. PicsArt Studio:
লিষ্টের প্রথমে আমি এই অ্যাপটি রাখছিফটো এডিট করার জন্য Picsart studio অ্যাপটি অন্যতম সেরা অ্যাপ। এই অ্যাপে রয়েছে অসাধারণ কিছু ফিচার এবং টুলস। এই ফিচার এবং টুলসগুলো ব্যবহার করে একটি ছবিকে নিখুঁতভাবে কাস্টমাইজ করা যায়। পিক্স আর্ট স্টুডিওতে রয়েছে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি যা দিয়ে যেকোনো ছবিকে খুব সুন্দর ভাবে এডিট করা যায়।
এতে রয়েছে one-touch ইফেক্ট, কোলাজ, অটোফিক্সিং, ক্রপ,ফ্রেম, স্টিকার , built-in ক্যামেরা এবং সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ারিং টুলস। এছাড়াও রয়েছে ড্রয়িং টুলস যেকোনো ছবির উপরে ড্রইং করে সেটি এডিট করা যায়। অনেক অনেক ইউনিক ফিল্টার আছে এখানে সেগুলো ব্যবহার করে যেকোনো ছবিকে অনেক বেশি সুন্দর করে তোলা যায়। অ্যাপ এর ফিল্টার কালেকশনগুলো ইউনিক হওয়ার কারণে এর গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি।
তাছাড়া এতে কিছু স্পেশাল ফিচার রয়েছে। যেমন:ব্রাশ মোড, ইন্টেলিজেন্ট ইফেক্ট ইত্যাদি। আপনি যদি এই অ্যাপটি ডাউনলোড করতে চান তাহলে গুগল প্লে স্টোর থেকে স্মার্টফোনে ইনস্টল করবেন। তারপর ইন্টারনেট কানেকশন দিয়ে ব্যবহার করবেন। পিকস আর্ট স্টুডিও অনেক ভালো পারফর্মেন্স দিলেও এতে ad-free ইউজার ইন্টারফেস নেই ফলে আপনাকে একটু পর পর আসা এড দেখতে হবে।
সবকিছুই ঠিকঠাক অনেক বেশি ভালো এই অ্যাপটি। প্লে স্টোরে এই অ্যাপ এর রেটিং খুব ভালো। প্লে স্টোর থেকে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করা হয়েছে 500 মিলিয়নেরও বেশি বার।
2. Youcam perfect :
Youcam perfect সবচেয়ে জনপ্রিয় ফটো এডিটিং টুলস। এছাড়া এর সেলফি অন অব দ্য বেস্ট সেলফি ক্যাম হিসেবে পরিচিত।
এন্ড্রয়েড ফোনের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ফটো এডিটর হিসেবে ইউ কাম পার্ফেক্ট পরিচিত। গুগল প্লে স্টোরে ইউ কাম পার্ফেক্টপ্রায় 100 বিলিয়ন এর অধিক বার ডাউনলোড করা হয়েছে। এন্ড্রয়েড ফোনের ইউ কাম পার্ফেক্ট ব্যবহার করে খুব সহজেই ফটো এডিট করা যায়। মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই ইন্সট্যান্টলি ফটোতে ইউনিক টাচ দেয়া যায়।
এই অ্যাপে রয়েছে অনেকগুলো অসাধারণ ফিচার, ফিল্টার্স, ইফেক্ট, ব্রাশ, ক্রপ ইত্যাদি। এই অ্যাপটি ব্যবহার করার জন্য প্রথমে আপনাকে গুগল প্লে স্টোর থেকে ইউ কাম পার্ফেক্ট ডাউনলোড ইনস্টল করে নিতে হবে। এরপর অ্যাপের ভিতরে প্রবেশ করে যে ছবিটি এডিট করতে চান সেই ছবিতে ক্লিক করে সিলেক্ট করে নিতে হবে। তারপর আপনার ইচ্ছামত এডিট করতে পারবেন।
আপনি যদি কোনো ছবিতে মেকআপ করতে চান তাহলে সেটাও সম্ভব। এখানে আপনি মেকাপের একটা টোটাল প্যাকেজ পাবেন এবং ইচ্ছামতো পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিতে পারবেন। তারপর ইন্সট্যান্টলি ছবিতে মেকআপ করে নিতে পারেন। এছাড়াও কোন ছবি চিকন বা মোটা করার টুলস রয়েছে। অপ্রয়োজনীয়' কোন কিছু ছবি থেকে বাদ দেয়ার জন্য রয়েছে রিমুভার ব্রাশ।
তাছাড়া আপনি যদি চান তাহলে এই অ্যাপ দিয়ে ভিডিও করতে পারেন। কিংবা সেলফি ক্যামেরা ব্যবহার করে ইন্সট্যান্টলি মেকআপ ওয়ালা ছবি তুলতে পারবেন। আপনি যদি গ্রুপ ফটো তুলতে চান তাহলে এই অ্যাপটি আপনার জন্য খুবই ভালো হবে কারণ এতে রয়েছে স্পেশাল মাল্টিপল ফেস ডিটেকশন ফিচার এবং কাটআউট। বর্তমানে এই অ্যাপটি স্মার্টফোনে ফটো এডিটর হিসেবে বিপুল সমাদৃত এবং প্লে স্টোরে এর রেটিং খুব ভালো।
3. Photo Lab :
আজকে আমি লিষ্টের তিন নম্বরে অ্যাপটি রেখেছি সেটি হচ্ছে Photo Lab. আমরা যে কম বেশি সবাই এই ফটো ল্যাব একটি সাথে পরিচিত সেটা আর বলার অবকাশ রাখে না। ছবিকে ইউনিক টাচ দিতে ফটো ল্যাব অনায়াসে ব্যবহার করা যায়।
গুগোল প্লে স্টোরে এই অ্যাপের ডাউনলোড সংখ্যা প্রচুর এবং এর রেটিং ও খুব ভালো। এন্ড্রয়েড ফোনের ফটো এডিটিং করার জন্য অন্যতম সেরা অ্যাপ হচ্ছে ফটো ল্যাব। এতে রয়েছে 900 প্লাস ইফেক্ট অসংখ্য ফিচার এবং টুলস। ক্রপিং, রোটেটিং, হিলিং সহ অসাধারণ কিছু টুলসের সমারোহ এখানে আছে।
আপনি যদি এই অ্যাপের মাধ্যমে কোন ছবি এডিট করতে চান তাহলে প্লে স্টোর থেকে অ্যাপসটি ইন্সটল করে নির্দিষ্ট ছবি সিলেক্ট করে করতে পারেন। আপনার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো ইফেক্ট দিয়ে এডিট করতে পারবেন ফ্রিতেই।
এই ছিল আজকের বেস্ট তিনটে ফটো এডিটর সম্পর্কে পর্যালোচনা । যে অ্যাপ গুলো দিয়ে স্মার্টফোনেই খুব সহজেই ফ্রিতে যেকোনো ছবিকে ইউনিক টাচ দেয়া যায়। আশা করি সবাই উপকৃত হবেন এগুলো ব্যবহার করে।
সবশেষে, প্রযুক্তির উন্নয়ন যেহেতু চলমান রয়েছে সেহেতু আশা করা যায় ভবিষ্যতে এই অ্যাপগুলোর আরো অনেক বেশি ডেভলপ হবে এবং এগুলোতে আরও অনেক ফিচার যুক্ত করা হবে। আর তখন এই অ্যাপস গুলো আমাদের জন্য আরো বেশি সুবিধাজনক হবে। ছবি এডিটিং সফটওয়্যার ডাউনলোড
You must be logged in to post a comment.