অনলাইনে আয়কৃত টাকা উত্তোলনের কয়েকটি জনপ্রিয় মাধ্যম?

অর্থ উত্তোলনের বিভিন্ন মাধ্যম: আমরা যারা সামান্য অভিজ্ঞতা নিয়ে অনলাইন ইনকামের কথা চিন্তা করছি,যারা সামান্য হলেও ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে জড়িত তাদের ক্ষেত্রে তাদের অনলাইনে আয়কৃত ডলার গুলোকে টাকাতে রূপান্তর করে নিজের পকেটে আনাটা অনেক কষ্টসাধ্য ।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

তাদের কথা চিন্তা করে আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে । আমরা অনলাইনে ডলার ইনকাম করি কিন্তু সেই ডলারটিকে হাতে পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে যায়।  আজকের এই আর্টিকেলে সেই ডলারটি কিভাবে আপনি উত্তোলন করবেন তার কয়েকটি উপায় বলে দেওয়া হবে। 

Snail Mail Check এ-পদ্ধতিতে খরচ তুলনামূলকভাবে কম কিন্তু এটি সময়সাপেক্ষ পদ্ধতি। মোট আয় যদি ১০০ ডলারের উপর হয় তাহলে চিঠির মাধ্যমে একটি চেক পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিবার টাকা উত্তোলনে খরচ পড়ে মাত্র ১০ ডলার। তবে চিঠি আসতে কয়েক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে। আর চেকটি আসবে ডলার-এ, তাই এটিকে টাকাতে রূপান্তর করতে হলে ব্যাংকের সাহায্য নিতে হবে।

ব্যাংক টু ব্যাংক ওয়্যার ট্রান্সফার প্রোভাইডারের ব্যাংক একাউন্ট নম্বর, ঠিকানা এবং ব্যাংকের Swift Code 

অর্থ তোলার একটি নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ উপায় হচ্ছে ওয়্যার ট্রান্সফার। এই পদ্ধতিতে মাস শেষে ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে টাকা বাংলাদেশে আপনার ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি এসে জমা হয়ে যাবে। তবে এই পদ্ধতিতে চার্জ একটু বেশি, প্রতিবার টাকা উত্তোলনে ৪৫ থেকে ৫৫ ডলার খরচ পড়বে। এই পদ্ধতিতে টাকা উত্তোলন করতে হলে আপনাকে নিম্নে উল্লেখিত তথ্যগুলো ফ্রিল্যান্সিং সাইটে প্রদান করতে হবে।

১. আপনার ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার, ব্যাংক-এর ঠিকানা, ব্যাংক-এর Swift Code I

২.ফ্রিল্যান্সিং সাইটি যে দেশে অবস্থিত সে-দেশের একটি ব্যাংক-এর নাম যা মধ্যবর্তী হিসেবে কাজ করবে। এজন্য আপনি আপনার ব্যাংক-এ গিয়ে জেনে নিন তারা ওই দেশের কোন কোন ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদান করে থাকে।

৩. এরপর মধ্যবর্তী ওই ব্যাংকের Routing নাম্বার আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে যা আপনি ব্যাংকটির ওয়েবসাইট-এ পেয়ে যেতে পারেন। ব্যাংক-এর সাইটে না পেলে Google-এ সার্চ করে পেয়ে যেতে পারেন অথবা আপনার ব্যাংক থেকেও সংগ্রহ করতে পারেন।

পাইওনিয়ার (payoneer)

উল্লিখিত দুটি পদ্ধতি থেকে সবচাইতে দ্রুত পদ্ধতি হচ্ছে Payoneer Debit Card। সম্প্রতি প্রায় সব ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলো এই Master Card সার্ভিসটি চালু করেছে। এ-পদ্ধতিতে মাস শেষে আপনি টাকা খুবই দ্রুত পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকে ATM-এর মাধ্যমে উত্তোলন করা যায়। এজন্য এককালীন খরচ পড়বে ২০ ডলার আর মাসিক খরচ পড়বে ১০ থেকে ১৫-এর মতো।

ATM থেকে প্রতিবার টাকা উত্তোলনের জন্য খরচ পড়বে ২ থেকে ৩ ডলার। এজন্য প্রথমে ফ্রিল্যান্সিং ওই সাইটের মাধ্যমে Payoneer সাইটে একটি একাউন্ট করতে হবে। তারপর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আপনার ঠিকানায় একটি Master Card পৌঁছে যাবে।

কার্ডটি হাতে পাবার পর নির্দেশনা অনুযায়ী কার্ডটি সচল করতে হবে এবং ৪ সংখ্যার একটি গোপন পিন নম্বর দিতে হবে। পরবর্তীকালে এই নাম্বারের মাধ্যমে যেকোনো ATM থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। বাংলাদেশে অনেক ব্যাংক-এর ATM এই কার্ড সাপোর্ট করে না। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ATM থেকে আপনি সহজেই টাকা উত্তোলন করতে পারেন।

পাইওনিয়ার-এর সুবিধাসমূহ : একটি বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য ফ্রি মাস্টার কার্ড পাবেন ও আমেরিকার একটি ভার্চুয়াল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পাবেন। পাইওনিয়ারের মাস্টার কার্ড দিয়ে পৃথিবীর যেকোনো দেশের মাস্টার কার্ড সাপোর্ট করে এরকম এটিএম বুথ থেকে ডলার উত্তোলন করা সম্ভব হয়। এমনকি বাংলাদেশ থেকেও সম্ভব হয়।

তবে প্রতিবার এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করতে ৩ ডলার খরচ করতে হয়।  পাইওনিয়ার এর আরেকটি সব থেকে বড় সুবিধা হচ্ছে এটি আপনি এখন বিকাশে পেয়ে যাবেন । আপনার পাইওনিয়ার এ যে ডলারগুলো থাকবে সেটি আপনি সরাসরি বিকাশ থেকে উত্তোলন করতে পারবেন। 

পাইওনিয়ারের লিংক : payoneer.com।

সব ফ্রিল্যান্সিংয়ের সাইটে হয়তো সবগুলোর মাধ্যমে ডলার গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। মার্কেট প্লেসগুলোর পেমেন্ট অপশনে গেলে জানা যায়, সেই সাইটগুলো কোন কোন পেমেন্ট মাধ্যম ব্যবহার করে।

আবার সব পেমেন্ট মাধ্যম সকব দেশে প্রচলিত নয়। এ পর্বে এসকল অনলাইন পেমেন্ট মাধ্যমগুলো নিয়ে আলোচিত হল :

পেপ্যাল (PayPal)

পেপ্যাল বিশ্বের সবচাইতে জনপ্রিয় এবং অনলাইনে লেনদেনের ক্ষেত্রে বিশ্বস্তএকটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। বিশ্বের প্রায় সব মার্কেট প্লেস, অনলাইন স্টোর কিংবা যেখানে অনলাইনে অর্থ লেনদেনের ব্যাপার আছে। সবজায়গাতেই পেপ্যাল একটি গ্রহণযোগ্য মাধ্যম। বাংলাদেশসহ আরো অনেক স্বল্পউন্নত দেশ এবং অনুন্নত দেশগুলোতে পেপ্যালের সার্ভিস নেই।

পেপ্যাল দিয়ে অনলাইনে যেকোনো কিছু কেনাকাটা করা যায়, যেকোনো সার্ভিসের জন্য পেমেন্টও করা যায়। যেকোনো জায়গার লেনদেনের বিনিময়ে পেপ্যাল একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ সার্ভিস চার্জ কেটে নেয়। কোন দেশের মুদ্রা ব্যবহার হচ্ছে, কীভাবে অর্থের লেনদেন হচ্ছে প্রেরক ও প্রাপকের দেশ, পাঠানো অর্থের পরিমাণ ও প্রাপকের একাউন্টের ধরনের ওপরে ফি বা খরচ নির্ভর করে।

ক্রেতা ও বিক্রেতা ভিন্ন মুদ্রা ব্যবহার করেও পেপ্যাল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা করলে পেপ্যাল আলাদা অর্থ গ্রহণ করতে পারে।

পেপ্যাল-এর প্রকারভেদ : প্যেপালে রয়েছে দুই ধরনের অ্যাকাউন্ট। ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট এবং বিজনেস অ্যাকাউন্ট। ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে মাসিক অনেক কম পরিমাণ অর্থ লেনদেন করা যায় কিন্তু ব্যবসায়িক কাজে বিশাল বড় কোনো পরিমাণ অর্থ লেনদেনের জন্য অবশ্যই ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট থাকতে হয়।

পেপ্যাল নিজে কোনো ব্যাংক না কিন্তু এটাকে ভার্চুয়াল ব্যাংক চলে। পেপ্যাল যে দেশ থেকে খোলা হয়েছে, সে দেশের যেকোনো ব্যাংকের মাধ্যমে পেপ্যালের ডলার উত্তোলন করা যায়।  পেপালের ওয়েবসাইট লিংক www.paypal.com

তবে পেপাল এখনো বাংলাদেশে চালু হয়নি এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত একাউন্টে বাংলাদেশে চালু হয়েছে

নেটলার

নেটলার মাস্টার কার্ডকে পাইওনিয়ারের ভালো বিকল্প হিসেবে ধরা যায়। পাইওনিয়ারের মতো আপনি সবকিছুই নেটলার দিয়ে সম্পন্ন করতে পারেন। ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ডে এর সুবিধা হল এতে আপনার কোনো মাসিক কিংবা বার্ষিক ফি নেই। তবে ভেরিফাইড করতে ১০-২০ ডলার কার্ডে আপলোড করতে হয়। প্রথমে www.neteller.com-এ গিয়ে একটি ফ্রি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন (অতিরিক্ত FX Fee পরিহার করার জন্য অ্যাকাউন্ট কারেন্সি USD কিংবা এইচ সিলেক্ট করুন)।

অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সময় যত্ন করে ইমেইল, পাসওয়ার্ড, সিকিউরিটি কোয়েশ্চন এবং উত্তরসমূহ, নেটলার সিকিউর আইডি এবং অন্যান্য তথ্য নিরাপদ স্থানে নোট রাখুন। অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে এবার Login করুন এবং Login করার পর স্ক্রিনের বাম পাশের Net+ Cards সেকশনে ক্লিক করুন, একটি পেজ ওপেন হবে যেখান থেকে আপনি Net+Master Card-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই ধাপে আপনি দুটি অপশন পাবেন। একটি হলো Net+ Plastic এবং অন্যটি Net+ Virtual |

Net+Virtual. কার্ডটি ফ্রি এবং Add a card বাটনে ক্লিক করে সঙ্গে সঙ্গেই তৈরি করে নিতে পারবেন। কিন্তু প্লাস্টিক কার্ডটির জন্য আপনার অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে ১৩ ডলার ব্যালান্স থাকতে হবে। আর সব ঠিক থাকলে তিন দিনের ভেতর আপনার আপ্লিকেশন এপ্রুভ হবে।

এপ্রুভড মেসেজ আপনার মেইল-এ পাবেন। নেটলার মাস্টার কার্ড আসতে যতদিন লাগবে ততদিন আপনি আপনার প্রয়োজনীয় কাজ চালাতে পারবেন নেটলার ভার্চুয়াল কার্ডের মাধ্যমে। এটা কোনো প্লাস্টিক কার্ড না। যেসব ওয়েবসাইটে মাস্টার কার্ডের সুবিধা আছে সেসব সাইটে আপনি এটা  দিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। ভার্চুয়াল কার্ডের নম্বর পেতে আপনার সিকিউরড আইডি লাগবে।

স্ক্রিল(Skrill)

ক্রিল হল লন্ডনভিত্তিক একটি কোম্পানি যা লেনদেনসংক্রান্ত যাবতীয় সেবা প্রদান করে থাকে। স্ক্রিল শতভাগ নিরাপদ একটি সিস্টেম তাই নিরাপত্তার কথা না ভাবলেও চলবে। স্ক্রিলে ভিআইপি অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। স্ক্রিল ভিআইপি অ্যাকাউন্টে যত ইচ্ছা তত ট্রানজেকশন করা যায় এবং ট্রানজেকশন ফি খুব অল্প এবং আরও অনেক সুবিধা পাওয়া যায়।

একজন ব্যক্তি কেবল একটা স্ক্রিল অ্যাকাউন্ট করতে পারবেন। সাইন আপ করার সময় সঠিক নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করতে হবে এবং সাইন আপ করার পর ইমেইল ভেরিফাই করতে হবে। ইমেইল ভেরিফাই করার পর কিছুদিনের মধ্যে স্ক্রিল থেকে গ্রাহকের ঠিকানা অনুযায়ী একটা চিঠি আসবে। এ

ই চিঠিতে একটা পিনকোড থাকবে ঐ কোডটি অ্যাকাউন্টে দিলে স্ক্রিল অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই হয়ে যাবে। এরপর স্ক্রিলে অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই হয়ে গেলে ‘স্ক্রিল প্রিপেইড মাস্টার কার্ড’-এর জন্য আবেদন করা যাবে। ‘স্ক্রিল প্রিপেইড মাস্টার কার্ড’-এর জন্য প্রতিবছর ১২.৮৫ ডলার চার্জ কাটা হবে এবং প্রতিবার এটিএম বুথ দিয়ে টাকা ওঠানোর জন্য ২.৩১ ডলার করে চার্জ কাটবে। স্ক্রিলের ওয়েবসাইট লিংক: www.skrill.com

পাইজা( Payza)

পাইজা আর্থিক লেনদেন (অনলাইনসংক্রান্ত) যাবতীয় সেবা দিয়ে থাকে। আগে এলার্টপে নামে পরিচিত ছিল। খুব সহজেই অনলাইন থেকে আয় করা অর্থ পাইজা কার্ড দিয়ে উত্তোলন করা যায়। পাইজাতে দুটি ক্যাটাগরি রয়েছে; প্রথমটি হচ্ছে পার্সোনাল এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে বিজনেস।

যেকোনো ক্যাটাগরিতে অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। পার্সোনাল অ্যাকাউন্টে কোনো খরচ নেই কিন্তু বিজনেস অ্যাকাউন্ট খোলা যেতে পারে যদিও একটু খরচ আছে এবং অ্যাকাউন্ট খোলার সময় সঠিক নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করতে হবে। সাইন আপ করার পর ইমেইল ভেরিফাই করতে হবে এবং অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই করার জন্য দুটি পরিচয়পত্রের প্রমাণ দিতে হবে।

প্রথমটি হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আপনার ঠিকানা প্রমাণের জন্য একটি গ্যাস/বিদ্যুৎ/টেলিফোন বিল-এর কপি। এই দুটি থেকে দুটি কপি স্কেন করে অ্যাকাউন্টে আপলোড করতে হবে তাতে অ্যাকাউন্ট সহজেই ভেরিফাই হয়ে যাবে।

আর অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই হয়ে গেলে কার্ডের জন্য আবেদন করা যাবে। পাইজা কার্ড দিয়ে ATM বুথ থেকে টাকা ওঠানো যায়। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফার করা যায়। পাইজার ওয়েবসাইট লিংক: www.payza.com

এছাড়াও আরো অনেক মাধ্যম আছে অনলাইন থেকে টাকা উত্তোলনের কিন্তু এই মাধ্যম গুলো হল সবথেকে বেশি জনপ্রিয়)

 

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ

Online marketing expert, data analyst specialist at fiver & freelancer, Usa gmail, voice mail,vpn creator Article writer notre dame college history club