রুট! রুট!রুট এই কথাটির সাথে সকল এন্ড্রয়েড ইউজার কম বেশি পরিচিত। আবার অনেকেই হয়তো রুট কথাটি কখনো শোনেন নি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে রুট কি?রুট একটি ইংরেজি শব্দ যার অর্থ হলো গাছের শেকড়। তবে এন্ড্রয়েডের দুনিয়ায় রুট বলতে বোঝায় এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম চালিত মোবাইল এর সকল ক্ষমতা আপনার হাতে থাকবে,গুগলের হাতে নয়।
তাই অনেকেই এন্ড্রয়েড মোবাইল রুট করে।আগে এন্ড্রয়েড রুট করা ছিল একটি কঠিন কাজ। তবে বর্তমানে যেকোনো এন্ড্রয়েড ফোন সহজেই রুট করা যায়। আজকের পোস্টে আমরা এন্ড্রয়েড রুট করার সুবিধা, অসুবিধা এবং পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব।
এই রুট দুইভাবে করা যায়। সফটওয়্যার ব্যবহার করে বা কমপিউটার ব্যবহার করে। সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করে আপনি নিজেই নিজের ফোন রুট করতে পারবেন। আর আপনার যদি কম্পিউটার থাকে তাহলে কম্পিউটার দিয়ে রুট করতে পারেন।
★সফটওয়্যার দিয়ে রুট করার পদ্ধতি:
বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় রুটিং সফটওয়্যার এর মধ্যে রয়েছে Kingroot,Kingoroot,farmaroot,iroot ইত্যাদি। নিচে এগুলো দিয়ে রুট করার পদ্ধতি বলা হলো:
★Kingroot দিয়ে রুট করার পদ্ধতি:
প্রথমে কিং রুট সফটওয়্যারটি ইনস্টল করে ফেলুল।এবার ইন্টারনেট অন করে এপটি প্রবেশ করুন।এবার আপনার ডিভাইস চেকিং হবে। এরপর root now লেখাতে ক্লিক করুন।১০০% হওয়া পড়যন্ত অপেক্ষা করুন।১০০ %হয়ে গেলে ফোনটি রিবুট করুন।তারপর রুট চেকার বেসিক এপটিতে দেখে নিন সফলভাবে রুট হয়েছে কিনা।
★Kingoroot দিয়ে রুট করার নিয়ম:
এটি আরেকটি রুটিং সফটওয়্যার।কম্পিউটার এর মাধ্যমে রুট করার সবচেয়ে ভালো সফটওয়্যার।এটি ফোনের সিকিউরিটি আনলক করতে পারে।ফোনের পার্ফমেন্স বৃদ্ধি করে। এজন্য এপটি ওপেন করে ওয়ান ক্লিক রুট লেখাতে ক্লিক করুন।সফলভাবে রুট হলে একটা নোটিফিকেশন দেখাবে।
★Farmaroot দিয়ে রুট করার নিয়ম:
এই এপসটি একটি জনপ্রিয় রুটিং সফটওয়্যার ছিল।তবে বর্তমানে এর চাহিদা কমে গেছে।কারন এটি দিয়ে শুধু এন্ড্রয়েড ২.১ থেকে এন্ড্রয়েড ৪.২.২ পর্যন্ত রুট করা যায়।এখানে রুট করার পদ্ধতি একটু কঠিন।প্রসেসর টাইপে ভুল করলে সমস্যা হতে পারে।তবে রুট করার পর সহজেই আনরুট করা যায়।
৪.iroot দিয়ে রুট করার নিয়ম
এটা আরেকটা মোবাইল রুট করার এপস। এটি খুব দ্রুত মোবাইল ফোন রুট করার সুবিধা দেয়। প্রথমে এটি চিনা ভাষায় হলেও বর্তমানে ইংলিশ ভার্সনও রিলিজ হয়েছে।কম্পিউটার ছাড়া রুট করার একটি আদর্শ সফটওয়্যার এটি।
★Z4root
এটি রুট করার সবচেয়ে প্রাচীন এপস তবে বিশ্বস্ত। এটি ফোনে আলাদা লোড তৈরি করে না।স্যামসাং গ্যালাক্সি এর প্রায় সকল মডেলই এটি দিয়ে রুট করা যায়।
৬.One cleak root
ওয়ান ক্লিক রুট বা এক ক্লিকে রুট বিশ্বের সবচেয়ে ভালো ও নিরাপদ ইংরেজি ভার্সনের রুটিং সফটওয়্যার। এটি হাজার হাজার মোবাইল মডেল সমর্থন করে।তবে এটি দিয়ে এইচ টি সি কোম্পানি এর মোবাইল রুট করা যায় না।
এটি আপনাকে মোবাইল এর অনেক লুকানো সেটিংস উপভোগ করতে দেবে।ফোনে হাই পার্ফমেন্স এনে দেবে। আজীবন ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ এ সহায়তা করবে।
★কম্পিউটার দিয়ে রুট
এখন আমি যে পদ্ধতির কথা বলব তার মাধ্যমে চইলে আপনি এন্ড্রয়েড ১০ ও রুট করতে পারবেন। কম্পিউটার দিয়ে মোবাইল রুট করতে চাইলে প্রথমেই আপনার একটি উইন্ডোজ কম্পিউটার লাগবে। এবার আপনার কম্পিউটার এ Kongo root সফটওয়্যারটি ডউনলোড করে ইনস্টল করে নিন।
আপনার সফটওয়ার টি চালু করুন।এরপর এই সফটওয়্যারটি নিজে থেকেই মোবাইল রুট করার জন্য প্রয়োজনীয় ড্রাইভার ইনস্টল করে নেবে। সেজন্য আপনার কম্পিউটার এ ইন্টার নেট কানেকশন থাকতে হবে।
তবে ইউ এস বি এর মাধ্যমে কম্পিউটার এর সাথে মোবাইল আগেই যুক্ত করতে হবে।প্রয়োজনীয় ড্রাইভার ডাউনলোড হলে মোবাইল টি কম্পিউটার হতে ৫ সেকেন্ড এর জন্য খুলুন।এরপর পুনরায় যুক্ত করুন।
এরপর আপনার মোবাইল এর সেটিংসে গিয়ে ডেভেলপার অপশন থেকে ইউ এস বি debugging টি enable করে দিন।সম্পূর্ণ ভাবে কানেক্ট হয়ে গেলে রুট লেখাতে ক্লিক করুন। আপনার মোবাইল রুট হতে শুরু করবে।রুট ১০০% দেখালে ফোনটি রিবুট করুন।
রুট করার সুবিধা:
১. ফোনের পার্ফমেন্স বাড়ানো।নিয়মিত টেমপরারি ফাইল মুছে ফোনের গতি ঠিক রাখা।
২. সিপিইউ স্বাভাবিক ভাবে যে স্পিডে কাজ করে প্রয়োজনীয় সময় তার চেয়ে বেশি স্পিডে কাজ করানো যায়।
৩. মোবাইল এর অনেক গোপন সেটিংস উপভোগ করা।
৪. কাস্টম রম ব্যবহার করে ফোনের ওএস, ভার্সন ইন্টারফেজ সবকিছু চেঞ্জ করা।
৫. যখন মোবাইল এমনিই পড়ে থাকে তখন সিপিইউ অফ করে ব্যাকআপ বাড়ানো।
★রুট করার অসুবিধা:
১. ফোন রুট করলে আপনার ফোনের ওয়ারেন্টি চলে যাবে।
২। ফোন ব্রিক করতে পারে।
৩. সিকিউরিটি আনলক হওয়ার কারনে ভাইরাস জালাতোন করবে।
রুট অবশ্যয় নিজ দ্বায়িত্বে করবেন। পোস্ট টি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
অর্পন কুমার, আটোয়ারী, পঞ্চগড়
You must be logged in to post a comment.