ইউটিউবিং কিংবা ফটোগ্রাফি আমরা অনেকেই করে থাকি শখের বশে। কিন্তু এই শখটাকে কাজে লাগিয়ে আপনি যদি, ইনকাম করার একটি অন্যতম প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে পারেন। তাহলে এটা হবে আপনার জন্য বড় একটি এচিভমেন্ট। যেটা অনেকেই রপ্ত করতে পারে, আবার অনেকেই শুরু করার আগেই ভেঙে পড়ে।
এর অন্যতম কারণ হচ্ছে: সঠিক ভাবে সিদ্ধান্ত না নেওয়া, অর্থাৎ অনেকেই মনে করে আমি কোনটি করব? ইউটিউবিং নাকি ফটোগ্রাফি?
এই প্রশ্নটার উত্তর দেওয়ার জন্যই, সাজানো হয়েছে আজকের এই পোস্ট। যেটার মাধ্যমে আপনারা রিয়েলাইজ করতে পারবেন, আপনার জন্য ঠিক কোনটা বেটার অপশন? ইউটিউবিং নাকি ফটোগ্রাফি!
সাধারণত এই পোস্টের মাধ্যমে, আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরব ইউটিউবিং এবং ফটোগ্রাফির ভালো কয়েকটি দিক।
আমি কখনোই চাচ্ছি না, আপনারা আমার পোস্ট পড়ে যেন, ডি মটিভেট না হয়ে যান। এই কারণে আমি খারাপ দিকগুলো নিয়ে কথা বলবো না। তবে আপনারা সব সময় মাথায় রাখবেন। যে কাজটা যতই ভালো হোক না কেন, তার কিন্তু একটি খারাপ দিক অবশ্যই রয়েছে। কাজেই পেশাদার পরামর্শ নেওয়ার জোরদার দাবি জানাচ্ছি।
প্রথমেই কথা বলা যাক ইউটিউব কে ঘিরে। পৃথিবীর সবথেকে বড় ভিডিও দেখার প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব। এটিকে ব্যবহার করে বিশ্বের লাখ লাখ লোক আজ, মিলিয়নার থেকে বিলিয়নার। তবে, তারা কিন্তু সব সময় ভালো দিক নিয়ে সামনের দিকে আগানো চেষ্টা চালিয়েছে বলে, তারা আজ মিলিয়নার কিংবা বিলিয়নার। কাজেই আপনাকেও ভালো কিছু নিয়ে সামনের দিকে আগাতে হবে ইউটিউবিং এর ক্ষেত্রে অর্থাৎ আপনার কনটেন্ট চাই সবার থেকে মানসম্মত।
একটি ইউটিউব চ্যানেল পারে হতদরিদ্র থেকে বিলিয়নার তৈরি করতে। তবে মাথায় রাখবেন, ইউটিউবিং শুরু করার পূর্বে ইনকাম করার চিন্তা কোনভাবেই যেন আপনার মাথায় না চলে আসে। দেশের ৬৫% ইউটিউবার ইউটিউবিং শুরু করার পূর্বেই ঝরে পড়ে।
এর সবচেয়ে বড় কারণ: ধৈর্য অর্থাৎ ঝরে পড়া কাঙ্খিত ইউটিউবারদের মাঝে ছিলনা কোন ধৈর্য।
সব কথার শেষ কথা হচ্ছে: ধৈর্য ধরে আপনাকে সামনের দিনগুলোর সাথে লড়তে হবে। আর এরপরই আপনি পাবেন সফলতা অর্থাৎ সেটা হতে পারে টাকা কিংবা ভিন্ন কিছু এচিভমেন্ট।
আপনার নির্দিষ্ট চ্যানেলটি যখন বড় হয়ে যাবে। তখন আপনি আপনার চ্যানেলকে কেন্দ্র করে, একটা বড় অঙ্কের টাকা ইনকাম করতে পারবেন বিভিন্ন উপায়ে।
যেমন: আপনার নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট বিক্রি করে, লোকাল কিংবা WordWide স্পন্সর দিয়ে, ভিডিও মনেটিজেশন থেকে কিংবা অ্যাফিলিয়েট করে। এছাড়াও আপনি আপনার চ্যানেল থেকে, নিজেকে সাধারণ মানুষের থেকে কয়েকগুণ দূরে নিয়ে যেতে পারেন। অর্থাৎ বলছি আমি সেলিব্রেটির কথা।
তবে ইউটিউবিং শুরু করার পূর্বে অবশ্যই পেশাদার পরামর্শ নেবেন। কারণ, আপনার একটু ভুলের কারণে, শেষ হয়ে যেতে পারে অক্লান্ত পরিশ্রম। এবার চলুন আলোচনা করা যাক ফটোগ্রাফি নিয়ে।
নতুন একটি ক্যামেরা আর ভালো মন মানসিকতা, হতে পারে আপনার ফটোগ্রাফির প্রথম ধাপ। কারণ, ফটোগ্রাফি করার জন্য, সবার আগে চাই আপনার মন ভালো।
বলাবাহুল্য যে, শুধু একটি ব্র্যান্ড নিউ ক্যামেরা কিংবা ভালো মন মানসিকতা নিয়ে, একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হওয়া ইম্পসিবল। এর পাশাপাশি আপনার প্রয়োজন পরতে পারে, সঠিক গাইডলাইন বা এক্সেসরিজ।
ফটোগ্রাফি দিয়ে ইউটিউব এর মত, লাখো মানুষ মিলিয়নার কিংবা বিলিয়নার হওয়ার গল্প, একটু কমই রয়েছে। তবে এটা দিয়ে আপনি আপনার স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনযাপন দিব্যি চালিয়ে যেতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনার চাই সবার আগে, প্রফেশনাল ফটোগ্রাফির খেতাব।
ইউটিউব আর ফটোগ্রাফির মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ। তবে বর্তমানে এই দুটির প্রচলন খুব দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে অনেকেই চাকরি কিংবা নিজস্ব পেশা দূরে ঠেলে, ঝুঁকছে এই শখের জগতে।
এই শখের জগত, প্রথম অবস্থায় সবার কাছে ভালো লাগে। কিন্তু যখন আপনি আন-সাকসেসফুল হয়ে মুখ গুঁজে বসে থাকবেন। তখন সমস্যা হবে বিভিন্ন ধরনের। এর জন্য ইউটিউবিং কিংবা ফটোগ্রাফি শুরু করার পূর্বে। আমি অনুরোধ করবো পেশাদার পরামর্শ অবশ্যই নিবেন।
যদি আপনি চিন্তা করে থাকেন যে,আপনি ইউটিউবিং কিংবা ফটোগ্রাফি দিয়ে টাকা উপার্জন করবেন। আবার আলোচনা করা যাক, কি কি উপায়ে ফটোগ্রাফি থেকে আপনি ইনকাম করতে পারবেন। যেমন, অফলাইন কিংবা অনলাইনে আপনার নির্দিষ্ট ছবি বিক্রি করে।
অনলাইনে এমন হাজারো ওয়েবসাইট রয়েছে। যেখানে আপনার ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবিটি, বিক্রি করতে পারেন চড়া দামে। তবে এর জন্য আপনার ছবিটি চাই সবার থেকে ব্যতিক্রম অর্থাৎ ইউনিক এর পাশাপাশি কোয়ালিটি-ফুল।
অফ-লাইনের যেকোনো ইভেন্টে নির্দিষ্ট কাজ করে ইনকাম করুন। বর্তমানে অনেক স্টুডেন্টই, এই মুক্ত পেশাটি বেছে নিয়েছে লেখাপড়ার পাশাপাশি। একটা সময় ছিল, যখন কেউ ভালো করে চিনতো ফটোগ্রাফি কি?
তবে সময়ের পরিবর্তনে, এখন কম বেশি সবাই ই চিনতে কিংবা জানতে পেরেছে, ফটোগ্রাফি বা ফটোগ্রাফার জিনিসটা কি! আপনাদের আরও একটি তথ্য দিয়ে রাখি, Wikipedia এর তথ্য অনুযায়ী সর্ব প্রথম ১৮৩৯ সালে জার্মানে ফটোগ্রাফি শব্দটি উচ্চারিত হয়। তবে ফটোগ্রাফি কিন্তু ১৮৩৪ সাল থেকেই শুরু।
অন্য ফটোগ্রাফারদের প্রচার প্রচারণা চালাতে পারেন, আপনার ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবির মাধ্যমে। যেমন ধরুন আপনি ফটোগ্রাফির জগতে একদম নতুন, কিন্তু আপনার পর্যাপ্ত পরিমান ধারনা রয়েছে প্রফেশনাল ছবি তোলার। এই অবস্থায় আপনি কাজ করতে পারেন, অন্য ফটোগ্রাফারদের সাথে।
সেটা হতে পারে আপনার তোলা ছবির মধ্যে, ওই কাঙ্খিত ফটোগ্রাফারের ওয়াটার মার্ক যুক্ত করা থেকে শুরু করে এডিট পর্যন্ত।
কাজটি পেতে প্রথম অবস্থায় আপনাকে, একটু ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে। কিন্তু একবার যদি পেয়ে যান, তাহলে হয়তো আর পেছনের দিকে তাকাতে হবে না আপনাকে।
এর পাশাপাশি আপনি চাইলে, একটা পেইড কোর্স চালু করেও ইনকাম করতে পারেন। দেশের আজ অনেক বড় বড় ফটোগ্রাফি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অনেকই শিখছে, ফটোগ্রাফির Beginner থেকে Professional হওয়ার চাবিকাঠি।
আপনিও ঐ সমস্ত প্রতিষ্ঠানের মত, অনলাইনে কোর্স বিক্রি করতে পারেন। যার বিনিময়ে আপনি, বাড়তি একটি ইনকাম করার সুযোগ পাবেন ঘরে বসে। তবে এর জন্য আপনাকে একটু টাকাও খরচ করতে হবে। বিশেষ করে পাবলিসিটি করার জন্য।
আমাদের ভেতরে অনেকেই রয়েছে, যারা সব সময় অন্যদের থেকে ব্যতিক্রম ছবি তুলে, সোশ্যাল নেটওয়ার্কে আপলোড করে। আপনি আপনার নিজ জায়গায় বসে, তাদেরকে টার্গেট করে। একটা ইনকামের পথ খুলতে পারেন কিন্তু।
যেমন ধরুন, আপনার এলাকায় ভালো কোনো প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার নেই। আর এই অমূল্য সুযোগটি কাজে লাগিয়ে, আপনি হাতিয়ে নিতে পারেন হাজার হাজার টাকা। হয়তো লক্ষ্য করে দেখবেন অনেক ফটোগ্রাফার রয়েছে যাদের দ্বারা ছবি তুলতে হলে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হয়।
অর্থাৎ আমি বলছি ওই সমস্ত ফটোগ্রাফারদের জায়গায় আপনি নিজে বসে বসে পড়ুন। আমার ধারণা নিজ এলাকায় বসে ইনকামের এটি একটি অন্যতম উপায়।
এবার কথা বলা যাক, আপনি কোনটি করবেন ইউটিউবিং নাকি ফটোগ্রাফি? আমার উত্তর হবে, যদি আপনার ইউটিউবিং কিংবা ফটোগ্রাফি দুটোই ভালো লেগে থাকে। তাহলে দুটোই শুরু করুন। তবে প্রথমাবস্থায় ফটোগ্রাফি দিয়ে শুরু করুন, আপনার এই শখের পথ চলা।
কারণ, ইউটিউব চ্যানেল খোলার সাথে সাথে আপনি পাবেন না, পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিউজ,সাবস্ক্রাইবার কিংবা টাকা।
কিন্তু যদি আপনি ফটোগ্রাফি দিয়ে শুরু করেন। তাহলে আপনি যে টাকাটা প্রতিদিন ইনকাম করতে পারবেন। সেই টাকাটা হয়তো, আপনি ছয় মাসেও ইনকাম করতে পারবেন না, আপনার কাঙ্খিত ইউটিউব চ্যানেল থেকে। যদি আপনি না পেয়ে থাকেন, গুগল থেকে মনিটাইজেশন। বলে রাখা ভালো যে, ইউটিউব চ্যানেল থেকে বিভিন্ন উপায়ে আপনি ইনকাম করতে পারবেন। কিন্তু এর জন্য আপনার চ্যানেল টি পর্যাপ্ত পরিমাণ বড় হওয়া চাই।
আমি মনে করি, আপনি যদি প্রথম অবস্থায় ফটোগ্রাফি দিয়ে শুরু করেন, আপনার শখের জগত। তাহলে হয়তো আপনার দুটো স্বপ্নই বাস্তবে রূপান্তরিত হবে। আপনি যদি ফটোগ্রাফি থেকে প্রত্যেকদিন সর্বনিম্ন ৬০০০ টাকা ইনকাম করেন। তাহলে আপনার মাসিক ইনকাম দাঁড়াচ্ছে ১,৮০,০০০ হাজার টাকা। যেটা কখনোই ইনকাম করা সম্ভব নয় ইউটিউব থেকে, যদি আপনার চ্যানেল টি পর্যাপ্ত পরিমাণ বড় এর পাশাপাশি, না পেয়ে থাকেন মনিটাইজেশন।
দুর্ভাগ্যবশত: অনেক সময় দেখা যায়, আমাদের ইউটিউব চ্যানেল থেকে চলে যায় মনিটাইজেশন। আর মনিটাইজেশন চলে যাওয়া মানে, ইনকামের বড় একটি পথ হারানো। তবে আপনি যদি একটু লক্ষ্য করে থাকেন। তাহলে দেখতে পাবেন ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে, এইরকম বড় কোনো বিপদ নেই। যদি আপনি হয়ে থাকেন ইতিমধ্যে, একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। কারণ, আপনি যদি সত্যিই একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হয়ে থাকেন। তাহলে আপনাকে কখনই কাজ খুঁজতে হবে না, বরং কাজ আপনাকে নিজ জায়গা থেকে খুঁজে নিবে।
সব কথার শেষ কথা হচ্ছে: আপনি ইউটিউবিং কিংবা ফটোগ্রাফি করতে পারেন। এটা আপনার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে আপনাদের কাছে আমার একটি ছোট্ট অনুরোধ, দয়া করে এই দুই প্লাটফর্মে কাজ করার পূর্বে। অবশ্যই প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে, পর্যাপ্ত পরিমাণ ধারণা কিংবা কাজের যোগ্যতা অর্জন করুন। ধন্যবাদ সবাইকে পোষ্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য।
Thank You brother for a good ida
আমি ও ফটোগ্রাফি করতে চাচ্ছি ধন্যবাদ
thank you
good ida
Good
You must be logged in to post a comment.