মোবাইল আসক্তি বর্তমানে একটি বড় সমস্যা।ছোট বড় প্রায় সবাই মোবাইল ফোনে আসক্ত।এক জরিপে দেখা গেছে,প্রতি পাচজন মার্কিন মোবাইল ব্যাবহারকারীর মধ্য তিনজিন ৬০ মিনিটের বেশি সময় তাদের মোবাইল চেক না করে থাকতে পারে না।
এছাড়াও ছাত্রছাত্রীরা মোবাইলে প্রতিদিন গড়ে ১০ ঘন্টা সময় ইন্টারনেট ব্রাউজ এবং মেসেজ আদান প্রদান করে ব্যয় কর।আমেরিকার ৮২%মানুষ বিশ্বাস করে যে, তাদের মধ্য মোবাইলের আসক্তি বিদ্যমান।
বর্তমান সময়ের মোবাইল আসক্তি মানসিক অসুস্থতার একটি বিশেষ রুপ হিসেবে ধরা হচ্ছে।অনেক ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা খারাপ হওয়ার পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে মোবাইল আসক্তি।এখন কথা হচ্ছে আপনি ও কি মোবাইল ফোন আসক্তি।
নিচের কয়েকটি পরিক্ষার মাধ্যমে আপনি ও মোবাইল আসক্ত কিনা তা যাচাই করতে পারবেন।
১/ আপনি কি প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০% চেক করেন কিংবা ১০মিনিটে একবার
২/ প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ ঘন্টা সময় ব্য্য করেন মোবাইলের পিছনে।
৩/ আপনি যখন মোবাইল ব্যবহার করেন তখন আপনার সময় ব্যয় হচ্ছে এটা চিন্তা আসে না।
৪/ আপনি যখন কাউকে কল কিংবা মেসেজ কিরছেন দ্রুত সাড়া না আসলে রাগ হচ্ছেন।
৫/ সর্বদা আপনার পকেটে হাত দিচ্ছেন, মোবাইলটা আছে কিনা।
৬/ আপনার ফোন আপনার সাথে না থাকলে আপনি অস্বস্থি বোধ করছেন।
৭/ ঘুমানোর সময় বালিশের পাশে রেখে
৮/ মাঝেমধ্য আপনি কি মধ্যরাতে আপনার ফোনটি চেক করেন।
৯/ আপনি কি অন্যদের সাথে আলাপ করার চেয়ে আপনার মোবাইলে সময় ব্যয় করাকে বেশি পছন্দ করছেন?
১০/ আপনি অন্যন্য কাজ, এমনকি খাবার খাওয়ার সময়ও মোবাইল ব্যবহার করেন।
হতে পারে আপনি এই আসক্তির একজন। কিংবা আপনার আসেপাশের কেউ আসক্ত।তবে নিচের কয়েকটি উপায়ে আপনাকে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে করণীয়।
১. ফোন ব্যবহার করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় সেট করুন
আপনি যদি আপনার ফোনের ব্যবহার কমাতে চান, তবে আপনাকে নিজের সাথে একটি চুক্তি করতে হবে।নিজেকে দৃঢ়ভাবে বলুন যে, আপনি শুধুমাত্র দিনের নির্দিষ্ট সময়ে আপনার ফোনটি ব্যবহার করবেন।সেটা হতে পারে গেমিং সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি।
২. কিছু নির্দিষ্ট সময় মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে আপনি, আপনি আপনার ফোনটি কম ব্যবহার করবেন।খাবারের সময় যখন আপনি পড়ছেন, বিশ্রাম নিচ্ছেন অথবা আপনি টিভি বা বন্ধুদের সাথে মোবাইল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
৩. নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন
অধিকাংশ মানুষ ফেসবুক, টুইটার, ইনসট্রাগ্রাম, স্পটিফাই অন্যন্য নোটিফিকেশন পেতে থাকলে সেটা চেক করতে গেলে তারা তাদের সময় নষ্ট করে ফেলে।
প্রতি মিনিটে মিনিটে আসা এসব নোটিফিকেশন মোবাইলের প্রতি আরো বেশি আগ্রহী করে তোলে। তাই এসব জিনিস থেকে বিরত থাকতে হলে আপনাকে আপনার ফোনের নোটিফিকেশন অবশ্যই অফ করে রাখতে হবে।
৪. বেশি অ্যাপ বযবহার থেকে বিরত থাকুন
যত বেশি অ্যাপ ব্যবহার করবেন মোবাইলের প্রতি ততো বেশি আসক্ত হবেন।এই মোবাইলের অ্যাপগুলো আসক্ত করার জন্যই তৈরি করা হয়েছে।যাতে এর প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হয়।তাই মোবাইলের অ্যাপ ব্যবহারে সঅচেতন হন।মোবাইল ব্যবহার সীমিত করতে, অ্যাপ ব্যবহারে সীমিত হোন।
৫. কাজ শুরু করার আগে আপনার ফোনিটি কমপক্ষে ১০ ফুট দূরে রাখুন
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যপক এরিক অ্যালটম্যান আবিষ্কার করেন যে, মাত্র ২.৭ সেকেন্ডে পয়েন্টের বাধা আপনার কাজের ত্রুটির হার দ্বিগুন করে।তাই কাজ শুরুর পূর্বে আপনার ফোনটি অবশ্যই ১০ ফুট দূরে রাখবেন।এতে আপনার মনোযোগ ঠিক থাকবে।
৬. বিছানায় যাওয়ার আগে ফোনটি বন্ধ করুন
ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভুলেও মোবাইল ব্যবহার করবেন না। মেসেজ বা কল থেকে মুক্তি পেতে ফোনটি বন্ধ করে রাখুন।
৭. গ্রুপ চ্যাটগুলো মিউট করে রাখুন
মোবাইল বা সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় নষ্টের বড় মাধ্যম গ্রুপ ।তাই গ্রুপ চ্যাট মিউট করে রাখুন।
৮. অপ্রয়োজনীয় চ্যাট আর্কাইভ অথবা ডিলিট করে দেন
অতীতের মেসেজগুলো আপনাকে পুনরায় মেসেজ আদান প্রদান করতে আগ্রহী করে তুলতে পারে। তাই পুরাতন মেসেজগুলো ডিলিট অথবা আর্কাইভ করে রাখুন।
আপনাকে নিজে থেকে উদ্যেগ নিতে হবে আপনি কি করবেন।আপনি কি এসব বিষয়ে এড়িয়ে যেতে পারবেন কি না।আপনি যদি এড়িয়ে যেতে পারেন তবে অবশ্যই আপনি মোবাইক আসক্তি থেকে বের হতে পারবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
You must be logged in to post a comment.