মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করে স্বাবলম্বী হোন

বর্তমান প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে মানুষ ঘরে বসেই মোবাইলের মাধমে অনলাইনে ইনকাম করে স্বাবলম্বী হওয়া যায়।সে বিষয়েই এখানে আলোচনা করেছি।

বর্তমান প্রযুক্তির যুগে অনলাইনের মাধ্যমে পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন। আজ আমরা অনলাইন আয় সম্পর্কে জানব।

প্রযুক্তির উন্নায়ন:

গত শতাব্দীতে মানুষ যা ভাবতেও পারিনি কিন্তু বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর যুগে মানুষ তা করছে। একবিংশ শতাব্দিতে এসে মানুষ ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের মানুষের সাথে খুব সহজে  যোগাযোগ করছে। একে অপরের সাথে কথা বলছে এবং ছবি দেখার মাধ্যমে ভিডিও কলে কথা বলছে।

বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর যুগে মানুষ সকালে ঘুম থেকে ওঠা  থেকে রাতে ঘুমাবার আগে পর্যন্ত প্রযুক্তিনির্ভর। অনলাইনের মাধ্যমে বেকার যুবক-যুবতী ছাত্র-ছাত্রী গৃহিণী চাকরিজীবী খুব সহজে আয় করে স্বাবলম্বী হচ্ছে।

খুব সহজে আয়ের মাধ্যম:

অনলাইনে আয় করার জন্য কোন পুঁজির প্রয়োজন হয় না তাই যে কেউ ইচ্ছা করলেই জিরো মনোবল এবং ধৈর্য নিয়ে অনলাইন থেকে আয় করতে পারে। কেউ যদি ভেবে থাকে কম সময়ে কেউ আয় করবে সেটা সম্ভব নয় এর জন্য প্রয়োজন সময় ধৈর্য।

অনলাইন থেকে আয় করার জন্য প্রয়োজন স্মার্টফোন, কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এবং প্রয়োজনীয় ডিভাইস। যা দ্বারা অনলাইন থেকে ঘরে বসেই আয় করা যায়।সারা পৃথিবীতে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা অনলাইনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করে আছেন। যার মাধ্যমে খুব সহজেই ঘরে বসে বেকাররা তাদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারছে।

বেকারত্ব হ্রাস করে কর্ম সংস্থান সৃষ্টি :

বেকারত্বের অভিশাপ থেকে বের হয়ে নিজে নিজে পায়ে দাঁড়াতে পারছে। স্বাবলম্বী হচ্ছে এবং পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পারছে।অনেক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীযারা আর্থিক ভাবে অসচ্ছলতার কারণে লেখাপড়া ঠিক মত চালিয়ে যেতে পারছেনা। এমন ক্ষেত্রে এ সকল ছাত্র-ছাত্রী নিজেদের ব্যবহৃত  স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে ।যা মনকে সতেজ রাখে।এবং তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

কোন চাকরিজীবী যদি মনে করেন পাশাপাশি অন্য একটা পার্ট টাইম জব করতে চায় তাহলে তার জন্য অনলাইন জব টাই ভালো হবে কারণ এখানে অবসর সময়ে সে কাজ করতে পারবে। থেকে সে প্রতি মাসে বাড়তি আয় করতে পারবেন।

আবার যদি গৃহিণীরা চায় ঘরের কাজ সামলেপরিবারে বাড়তি উপার্জন করতে।পারছে। এবং যারা সাবলম্বী হতে পারছে যার ফলে নারীরা সমাজেনিজের একটা আলাদা পরিচয় আলাদা পরিচয় গড়ে তুলতে পারছে।সারাদিন আমরা ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার যে সময়টা কাটাই তা কোনো কাজে আসে না। এই সময়টা আমরা অযথা নষ্ট না করে যদি মোবাইলের সাহায্য অনলাইন এ আয় করি তাহলে সেটা হবে এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো। কারণ একই সাথে মোবাইদেখা হবে এবং অনলাইনে ইনকাম ও হবে।

আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা লেখালেখিতে অনেক ভালো কিন্তু সঠিক জায়গার অভাবে তাদের লেখাটা সবার অগোচরে রয়ে যায়কিন্তু  অনলাইন ব্লগিংয়ের মাধ্যমে তাদের লেখাটা সবার সামনে পৌঁছে যাচ্ছে খুব সহজে।

ব্লগিং হচ্ছে অনলাইনে লেখালেখির একটি জনপ্রিয়  এবং নির্ভরযোগ্য মাধ্যম । যার মাধ্যমে লেখকরা তাদের লেখা প্রকাশ করতে পারছেন। এখানে অন্য কারোর ওয়েবপেজের লেখালেখি করা যায় এবং নিজস্ব একটি ওয়েব পেজ তৈরি করে সেখানে লেখালেখি করা যায়। এর জন্য প্রয়োজন হয় শুধুমাত্র একটি স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট কানেকশন এবং প্রয়োজনীয় ডিভাইস।

আবার অনেকে আছে যারা গানে  পারদর্শী তারা তারা গানকে গান রেকর্ড করে তারা তাদের ইউটিউব চ্যানেলে ছেড়ে দিলে ধীরে ধীরে তাদের ভিউয়ার্স বাড়ে এবং অনলাইন থেকে ইনকামকরতে পারেন।

অনেক গৃহিণীরা আছে যারা রান্নায় পারদর্শী তারা নিজেদের একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে নিজেদের রান্নার ভিডিও তৈরি করে আপলোড করতে পারে। এমন অনেক মহিলারাই আছে যারা তাদের রান্না দিয়ে নিজের আলাদা একটা পরিচয় গড়ে তুলতে পারছে। এবং ইউটিউব থেকে তারা প্রতিমাসে ভালো এমাউন্টের টাকা আয় করছে। কিন্তু এটা একদিনের প্রচেষ্টায় সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘ দীর্ঘ প্রচেষ্টা এবং প্রবাল মনের ইচ্ছা।

যারা পড়াশোনার ফাঁকে এবং চাকরির অবসর সময়  বাড়তি ইনকাম করতে চায়তাদের জন্য অনলাইন জব টাই ভালো। ধীরে ধীরে অনলাইন জব সকলের কাছে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন। 10 বছর আগে আমাদের দেশের মানুষের অনলাইন জব সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল না। কিন্তু বর্তমান সময় এসেছে সকলের অনলাইন যেমন কোন কলেজের ফরম তুলতে হলে সেখানে নিজে উপস্থিত হয়ে ফর্ম তুলতে হতো এবং পূরণ করতে হতো জব এর উপরেআগ্রহ বাড়ছে।এটা সম্ভব হয়েছে যোগাযোগ প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে।

আগেকার দিনে দেখা যেত কোন একটা কাজ করতে হলে সেখানে নিজে উপস্থিত হয়ে সেই কাজটা করতে হতো ।

যেমন কোন কলেজের ভর্তি ফরম তুলতে হলে  সেখানে নিজে উপস্থিত হয় ফর্ম তুলতে হতো এবং জমা দিতে হতো। কিন্তু প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে এখন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে বসে এই কাজগুলো করা যায়। যা মানুষের সময় এবং শ্রম দুইটাই সাশ্রয় করে।

আনলাইন প্লাটফর্ম তৈরী:

অনলাইন প্লাটফর্ম এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে কাজের কোন অভাব নেই। যে কেউ তার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে এখান থেকে খুব ভাল অঙ্কের টাকা ইনকাম করতে পারেন।  কেউ যদি নির্দিষ্ট একটি বিষয়ের উপরে ভালোভাবে দক্ষতা অর্জন করে মাঠে নামে  এবং ধৈর্য নিয়ে কাজ চালিয়ে যায় তাহলে একটা সময়ে সে অনেক  উন্নতি করতে পারো এখান থেকে। সঠিক গাইডলাইন অনুসরণ  করে সারা বিশ্বের অনেক মানুষই এখন ফ্রিল্যান্সিং করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে।অনলাইনে ইনকামের সবচেয়ে সুবিধাজনক ব্যাপার হচ্ছে এখানে  কাজের কোন অভাব নেই।

এখানে একটা কাজ খুঁজে নিতে হবে না আপনার যদি দক্ষতা থাকে এবং নিজের একটা পরিচয় তৈরি হয়ে  যায় তাহলে তা কাজ আপনাকে খুজে নেবে।আর পারিশ্রমিকের ব্যাপারটা আপনি নিজেই নির্ধারণ করতে পারবেন।

মূলত অনলাইনে আয় একবার শুরু করলে সেটা ধরে রাখতে পারলে একটা সময়  বেশ মোটা অংকের টাকা এখান থেকে ইনকাম করা যায়।

ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা বৃদ্ধি:

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে  বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারী ও  লকডাউন এর কারণে  অনেক মানুষ তাদের চাকরি হারাচ্ছেন এবং তারপরে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ  শুরু  করছেন। বর্তমান বিশ্বের প্রায় প্রত্যেকটি দেশের ফ্রিল্যান্সাররা  রয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ফ্রিল্যান্সার হচ্ছে ব্রাজিলে।

তারপরে ইন্ডিয়া এবং তারপরে বাংলাদেশ। বাংলাদেশেও  অনলাইনে ইনকামের বিষয়টা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে দিন দিন। দিন পাঠাচ্ছে আর মানুষ এখন স্বাবলম্বী হওয়ার উপর বেশি জোর দিচ্ছে।

একটা উদাহরণের সাহায্যে  যদি বুঝাই,আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকলে দেখা যায় ফ্রেন্ডলিস্টে অনেক ফ্রেন্ড নতুন নতুন বিজনেস শুরু করেছ অনলাইনে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই কলেজ, ভার্সিটিতে পড়া ছাত্রছাত্রী। লকডাউনে স্কুল  কলেজ বন্ধ থাকার কারণে  তারা ঘরে বসে আছে এই সময়টাকে তারা কাজে লাগাচ্ছে তাদের হাতে থাকায় স্মার্টফোন  দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করে।

ফলে তারা ঘরে বসেই মোটামুটি কিছু টাকা অনলাইনে ইনকাম করতে পারছে দিয়ে তাদের হাত খরচ চালাতে পারছেন। আপনি যদি অনলাইনে ইনকাম করতে চান আপনার জন্য অসংখ্য পথ খোলা রয়েছে।

সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু অনলাইন ইনকাম পদ্ধতিগুলো  হলো:

ডিজিটাল মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং,  ওয়েবসাইটে আর্টিকেলও ব্লগ লেখা,  ইউটিউবিং,  ভিডিও কনটেন্ট ক্রিয়েটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, এসইও মার্কেটিং  ইত্যাদি।এগুলোর মধ্যে নতুনদের জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং।

কারণ এখানে বুঝেশুনে কাজ শুরু করতে পারলে  অনেকদূর পর্যন্ত যাওয়া যায়। দেখা গেছে ডিজিটাল মার্কেটিং মার্কেটিং সেক্টরে যারা একটু বেশি দক্ষ পারদর্শিতার   সহিত কাজ করতে পারে তারা একটা সময়   মাসে  লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারে এখান থেকেই। অনলাইনে ইনকামের যে কোন সেক্টরে আপনি যদি সঠিক গাইডলাইন অবলম্বন করে এগিয়ে যেতে পারেন ধৈর্য সহকারে তাহলে আপনার সাফলতা নিশ্চিত।

একটা বিষয় দেখুন বর্তমানে চাকরি করার চেয়ে মানুষ অনলাইনে কাজ করাটাই বেশি পছন্দ করছে। আজকালকার যুগে চাকরির আশায় বসে থাকলে তো আর চলবে না। এজন্য বিকল্প পথ হিসেবে যুবসমাজ স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ দিয়েই অনলাইনে আয়ের  দিকে  ঝুঁকছে।

উপসংহার :

অনলাইনে  ইনকাম করার আগে এই জিনিসটা মাথায় রাখতে হবে এখানে কিন্তু আপনাকে ধৈর্য হারালে চলবে না। এখানে   বিশ্বস্ত ক্লায়েন্টের পাশাপাশি  অনেক  ফেইক ক্লায়েন্ট আছে। যারা আপনাকে দিয়ে কাজ করিয়ে প্রেমেন্ট না দিয়ে উধাও হয়ে যেতে পারে। এজন্য আপনাকে বুঝেশুনে কাজ করতে হবে এবং যদি সেই কোনকিছু সম্মুখীন হন তাহলে অবশ্যই   ধৈর্যধারণ করতে হবে।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles