বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির। এই প্রযুক্তির ছোয়ায় পৃথিবীতে এসেছে বিরাট পরিবর্তন। একসময় যেগুলা কল্পনাও করা যেতনা এমন অনেক কাজ সম্পন্ন হয় অনলাইনে। ঠিক তেমনিভাবে আয়ের ক্ষেত্রেও এসেছে বিরাট সুযোগ। এখন আর একটি চাকরির জন্যে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়না, সরকারি চাকরির জন্যে হাপিত্যেশ করার দিন এখন ফুরিয়ে এসেছে। প্রচুর সম্ভবনাময় ইন্টারনেট মানুষকে আশা যোগাচ্ছে। আপনি নিশ্চয়ই এমন আশা নিয়েই এই নেটে সার্চ করে এই লেখাটি পড়তে বসেছেন? আপনাকে আমরা হতাশ করবো না।
অনলাইন থেকে আয় করার পদ্ধতি এবং সঠিক দিক নির্দেশনা দিতেই আজকের এই লেখা। আপনালে আগে ভাগে সতর্ক করে দিচ্ছি, লেখায় বিস্তারিত সকল বিষয় আলোচনা করা হয়েছে বিধায় লেখাটি অনেক লম্বা হবে। এই লেখাটি ভালোভাবে পড়তে এবং সব বিষয় ভালোভাবে অনুধাবন করতে হলে আপনার ১০ মিনিট ব্যয় হবে। আশা করি আপনি ধৈর্য্য সহকারে লেখাটি পড়বেন।
ইনশাআল্লাহ লেখাটি পড়ে আপনি অনেক উপকৃত হবেন এবং অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার একটা পদ্ধতি পেয়ে যাবেন। তাহলে আর দেরি কেন?
অনলাইন থেকে আয় আসলেই সম্ভব?
চাকচিক্যময় দুনিয়া অল্প টাকায় সন্তুষ্ট নয়। তারা চাকরির পাশাপাশি অনলাইন থেকে বাড়তি টাকা ইনকাম করতে চান। কিন্তু মানুষের মন সন্দেহপ্রবণ। সবাই বিশ্বাস করতে চায়না যে আসলেই অনলাইন থেকে আয় করা সম্ভব। তাই অনেকের মনেই প্রশ্ন অনলাইন থেকে কি ইনকাম করা যায়? অনলাইন থেকে আয় করার পদ্ধতি জানার আগে আমাদের এটা জানতে হবে আসলেই কি অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করা যায়? অনেকেই এটা বিশ্বাস করতে চান না। তবে বাস্তবতা হচ্ছে এটা দিবালোকের মতো সত্য।
দেখেন, একসময় আপনি টিভি দেখতেন কিংবা পত্রিকা পড়তেন। টিভি চ্যানেল বা পত্রিকা গুলো আয় করত কিভাবে? ওরা আয় করত বিজ্ঞাপন থেকে, অনুষ্ঠান দেখানোর ফাকে ফাকে ওরা বিভিন্ন পন্যের এড দিত। এবং পত্রিকার প্রতিটি পৃষ্ঠায় বিভিন্ন বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন থাকতো। এভাবেই ওরা আয় করতো।
এবার আসুন অনলাইন থেকে আয় করার ব্যাপারে। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন ইউটিউব কিংবা ফেসবুকে কোন নাটক, ফানি ভিডিও কিংবা শিক্ষামূলক কোন ভিডিও দেখার সময় টিভির মতো এড চলে আসে। অথবা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লেখা পড়লে খেয়াল করবেন একটু পর পর বিভিন্ন লিংক দেওয়া কিংবা কোন এপস ডাউনলোডের অপশন দেওয়া।
তো আগে কোম্পানিগুলা তাদের নতুন পন্য প্রচারের জন্যে টিভি কিংবা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিত। এখন লোকজন যেহেতু ইউটিউব ফেসবুকে বেশি বেশি সময় কাটায় তাই তারা এখন ইন্টারনেটে তাদের পন্যের বিজ্ঞাপন দেয়। ঠিক এইভাবে ইউটিউবার এবং ফেসবুকের ভিডিও ক্রিয়েটরেরা টাকা ইনকাম করে থাকে।
অনলাইন থেকে টাকা আয় করার উপায়
ইন্টারনেট বা অনলাইন হলো মুক্ত বিশ্ব। অনলাইনের বদৌলতে পুরো দুনিয়া এখন আপনার হাতের মুঠোয়। পৃথিবীর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সবাইকে এক জায়গায় নিয়ে এসেছে এই ইন্টারনেট। যেহেতু এখানে বিশাল লোকের আনাগোনা, তাই বলাই যায় অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার উপায় প্রচুর থাকবে।
অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার সকল পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে পোস্ট অনেক লম্বা হয়ে যাবে তবুও লেখা শেষ হবেনা। তাই আপনাদের সুবিধার্থে এই লেখায় অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার সেরা কয়েকটি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।
এই লেখা থেকে আপনারা যা জানতে পারবেনঃ
- ফেসবুক থেকে কিভাবে টাকা আয় করবেন।
- ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার উপায়
- ব্লগিং করে কিভাবে টাকা আয় করবেন
- ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার পদ্ধতি
- ছবি বিক্রি করে আয় করার পদ্ধতি
- মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার উপায়
- আর্টিকেল লিখে আয়
- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করে আয়।
অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার এগুলোই হলো সবচেয়ে সেরা উপায়। এইগুলা সম্পর্কে ভালো ধারনা রাখলে খুব সহজেই আপনি ঘরে বসে আয় করতে পারবেন। চলেন অনলাইন থেকে আয় করার উপায়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি।
অনলাইন থেকে আয় করার সেরা উপায়ঃ
ফেসবুক থেকে আয়
একসময় আমরা ফেসবুক ব্যবহার করতাম শুধুমাত্র বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করার জন্যে এবং নিউজফিডে আমরা নিজেদের আবেগ অনুভুতির কথা লিখতাম। মাঝে মাঝে নিজেদের ছবি ফেসবুকে শেয়ার দিতাম। কিন্তু সময় এখন বদলেছে। ফেসবুক এখন শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে আটকে নেই। ফেসবুক এখন টাকা ইনকাম করার অন্যতম একটি প্লাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তো কিভাবে ফেসবুক থেকে টাকা আয় করা যায়? দাড়ান একটু সবুর করুন। ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় নিয়েই এখন বিস্তারিত লিখতে যাচ্ছি।
ভিডিও আপলোড দিয়ে ফেসবুক থেকে আয়
ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার সবচেয়ে সহজ এবং জনপ্রিয় পদ্ধতি হচ্ছে ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করা। ফেসবুকে এখন ভিডিও ক্রিয়েটরেরা রাজত্ব করছেন। ফেসবুকের ভিডিও টপিকের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে ফানি ভিডিও। ফানি ভিডিওগুলো শিশু থেকে শুরু যুবক কিংবা বৃদ্ধ, শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত সবাই দেখে থাকেন। এই টাইপ ভিডিও গুলো খুব সহজে ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া মানে আপনার ভিডিওতে বেশি ভিউ আসবে, বেশি ভিউ আসলে আপনার ইনকাম হবে বেশি।
এখন কাজের কথায় আসি। ভিডিও আপলোড করে আয় করতে হলে কি কি করতে হবে সেটা জেনে নেই। প্রথমেই আপনার একটি ফেসবুক পেজ খুলতে হবে এবং তাদের শর্ত ঠিকঠাকভাবে পূরণ করতে পারবেন। তাহলে আপনি ফেসবুক থেকে ভিডিও আপলোড করে টাকা আয় করতে পারবেন।
শর্তগুলো হলঃ
- বয়স ১৮ হতে হবে।
- পেজে ১ হাজার ফলোয়ার থাকতে হবে।
- পেজে কমপক্ষে ৫ টি ভিডিও থাকতে হবে এবং ভিডিওগুলো ৩ মিনিট লম্বা হতে হবে।
- সকল ভিডিও মিলিয়ে শেষ ৬০ দিন অর্থাৎ দুই মাসের মধ্যে ৬০০০০ মিনিট ভিউ আসতে হবে।
এই হল শর্ত। আপনাকে ফেসবুকে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করে যেতে হবে। যখন আপনার পেজে ১০ হাজার ফলোয়ার এসে যাবে এবং আপনার ভিডিওতে শেষ ৬০ দিনে ৩০ হাজার ভিউ আসবে তখন আপনি ফেসবুক মনিটাইজেশনের জন্যে উপযুক্ত হবেন। তখন আপনি ফেসবুকের কাছে মনিটাইজেশনের জন্যে আবেদন করলে তারা একটু যাচাই বাছাই করে আপনার পেজে মনিটাইজেশন দিয়ে দিবে। তখন থেকে আপনার ভিডিওর ভিউ অনুযায়ী ফেসবুক আপনাকে টাকা দিবে।
ফেসবুক পেজ থেকে পন্য বিক্রি করে আয়
ইনকাম করার সবচেয়ে সহজ এবং ভালো উপায় হলো ফেসবুক । আপনার যদি কোন ব্যবসা থাকে যেমন কাপড়ের ব্যবসা কিংবা ইলেকট্রনিক ডিভাইসের দোকান থাকে তাহলে আপনি এগুলা দিয়ে ফেসবুক থেকেও ইনকাম করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে আপনার প্রতিষ্ঠানের নাম অনুযায়ী একটা পেজ খুলতে হবে এবং আপনার পন্যগুলোর সুন্দর ছবি তুলে পেজে আপলোড দিবেন। প্রয়োজনে আপনার পন্যের এড দিবেন ফেসবুক। আপনার প্রোডাক্ট যদি আল হয় তাহলে দেখবেন আপনার পন্য প্রচুর বিক্রি হচ্ছে এবং আপনি সেখান থেকে ভাল পরিমান টাকা আয় করতে পারছেন।
ফেসবুক গ্রুপ থেকে ইনকাম
আপনার যদি ফেসবুকে অনেক সদস্যওয়ালা কোন গ্রুপ থাকে তাহলে খুব সহজে আপনি সেখান থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। কি? সিস্টেম বুঝতেছেন না? তাহলে একটু বিস্তারিত বলি।
ধরেন আপনার একটি এবং টেক রিলেটেড বড় একটি ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে এবং সেখানে মানুষ প্রতিদিন টেক বিষয়ে বিভিন্ন রকমের আলোচনা করে। তখন বড় টেক কোম্পানিগুলো আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। তারা আপনার গ্রুপে তাদের পন্য সম্পর্কে কিছু রিভিউ পোস্ট দিতে বলবে, অথবা আপনার গ্রুপের কভার ফটোতে তাদের পন্যের এড বসাতে চাইবে। এর জন্যে তারা আপনাকে ভাল অংকের টাকা প্রদান করবেন। অনেক গ্রুপের মালিক আছেন যারা এইরকম করে মাসে ৫০ হাজার কিংবা লাখ টাকার মতো আয় করেন।
ইউটিউব থেকে টাকা আয়
ইউটিউব এখন আমাদের নিত্যদিনের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুভি দেখতে , গান শুনতে, কিংবা কোন জিনিস শিখতে হলে এখন আমরা ইউটিউবে গিয়ে সার্চ দেই এবং কাঙিত ভিডিওতে ভিজিট করি। ইউটিউবে ঢুকলেই এখন প্রচুর টিউটোরিয়াল ভিডিও কিংবা গান কিংবা শর্ট ফিল্ম কিংবা মজার মজার অনেক ভিডিও দেখতে পাই।
যারা এইসব ভিডিও ইউটিউবে আপলোড দেন তারা তো আর এমনি এমনি নিজের ঘাটের পয়সা খরচ করে এমবি দিয়ে এগুলো আপলোড দেন না। অবশ্যই সেখানে তাদের অনেক লাভ আছে। হ্যা অবশ্যই তারা এইসব ভিডিও থেকে অনেক টাকা ইনকাম করে থাকেন। আমাদের দেশের বড় বড় ইউটিউবাররা মাসে ১ লাখ থেকে শুরু করে অনেক বড় অংকের টাকা উপার্জন করে থাকেন ইউটিউব থেকে। যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। তো কিভাবে এত বড় অংকের টাকা উপার্জন করা যায়? অধৈর্য্য হবেন না। ধীরে ধীরে সব বলছি । আগে জেনে নিন কিভাবে কি করতে হবে।
প্রথমে আপনাকে একটা নিশ সিলেক্ট করতে হবে। নিশ বলতে নির্দিষ্ট কোন টপিককে বুঝায়। যেমন আপনি যদি ভাল গান গাইতে পারেন এবং আপনার চ্যানেলে নিয়মিত নিজের গান আপলোড দেন তাহলে আপনার নিশ হবে মিউজিক, অথবা ধরেন আপনি ভাল ছবি আকতে পারেন, এবং আপনি আপনার চ্যানেলে নিয়মিত ছবি আকার টিউটোরিয়াল আপলোড দেন তাহলে আপনার নিশ হবে আর্ট। আশা করি নিশ ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন।
তো প্রথমে আপনি যেই বিষয়ে পারদর্শী অথবা যেই টপিক ভাল বুঝেন সেই টপিক অনুযায়ী আপনার চ্যানেলের একটা সুন্দর নাম দিতে হবে। এবং প্রতিনিয়ত ভিডিও আপলোড দিতে হবে। নিয়মিত ভিডিও না দিলে আপনার চ্যানেলের রিচ কমে যাবে এবং ভিউ বেশি আসবে না। ভিডিও কোয়ালিটি এবং সাউন্ড কোয়ালিটির দিকে খুব মনোযোগ দিতে হবে। অস্পষ্ট ভিডিও কিংবা অতিরিক্ত সাউন্ডওয়ালা ভিডিও দর্শকদের জন্যে খুব বিরক্তিকর, এবং এই জিনিসগুলা চ্যানেল রিচ করতে সাহায্য করে না।
তো এখন আপনি একটি ইউটিউব চ্যানেল খোললেন এবং নিয়মিত ভিডিও আপলোড করে গেলেন এবং আপনার ভিডিওতে ভিউ আসতে শুরু করলো চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার বাড়লো। নিশ্চয়ই এখন মাথায় প্রশ্ন আসছে, এখন তাহলে আমি কিভাবে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করব। আমি আপনার মনের প্রশ্নটি বুঝতে পেরেছি এবং ঠিক এই জিনিসটাই এখন আপনাদের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরব।
ইউটিউব থেকে অনেক পদ্ধতিতে টাকা ইনকাম করা যায়। পদ্ধতিগুলো হলোঃ
- মনিটাইজেশন করে বিজ্ঞাপন থেকে আয়
- অ্যাফেলিয়েট লিংকের মাধ্যমে আয়
- স্পনশরশিপ থেকে আয়
- নিজেদের পন্য বিক্রি করে আয়
বড় বড় ইউটিউবাররা উপরের সকল পদ্ধতিতেই টাকা ইনকাম করে থাকেন। আপনারা তো ইউটিউব থেকে আয় করার বিভিন্ন সিস্টেম জানলেন। চলেন এবার বিস্তারিত এগুলো সম্পর্কে জেনে আসি।
বিজ্ঞাপন থেকে আয়
ইউটিউব থেকে অর্থ উপার্জনের প্রধান মাধ্যম হলো ইউটিউবে পার্টনার প্রোগ্রামের অংশ হয়ে যাওয়া। অর্থাৎ আপনার চ্যানেল যদি মনিটাইজেশন হয়ে যায়, তাহলে ভিডিওর ভিউ থেকে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে আপনি টাকা পাবেন। তবে মনিটাইজেশনের মাধ্যমে টাকা পেতে হলে আপনাকে ইউটিউবের কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।
শর্তগুলো হলঃ
- আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ১০০০ হাজার সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে।
- শেষ ১২ মাসে আপনার চ্যানেলে ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ থাকতে হবে। অর্থাৎ ৩৬৫ দিনের মধ্যে আপনার চ্যানেলের ভিডিওগুলোতে ২ লক্ষ ৪০ হাজার মিনিট ভিউ থাকতে হবে।
উপরিউক্ত শর্তগুলো পূরণ করতে পারলে ইউটিউব আপনার চ্যানেলকে মনিটাইজেশনের অন্তর্ভুক্ত করে নেবে। সেখান থেকে আপনি টাকা পাবেন। ইউটিউবারদের মতে প্রতি হাজার ভিউ থেকে ইউটিউব ২ থেকে ৭ ডলার পর্যন্ত অর্থ দিয়ে থাকে।
অ্যাফেলিয়েট লিংকের মাধ্যমে আয়
বড় বড় ইউটিউবাররা বিভিন্ন কোম্পানির সাথে একটি চুক্তি করে থাকেন। তাদের নিশ অনুযায়ী তারা যেই ভিডিও বানান সেই ভিডিওর অনুষঙ্গ রিলেটেড কোম্পানি গুলো ইউটিউবারদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের শপের লিংক ভিডিওর ডেস্ক্রিপশনে দিয়ে দিতে বলে। আপনি হয়তো বিষয়টা ক্লিয়ারলি বুঝতেছেনা। দাড়ান! ব্যাপারটা আমি খোলে বলছি।
ধরেন আপনি টেক বিষয়ক বিভিন্ন পণ্যের রিভিউ ভিডিও বানান। মনে করেন আপনি আইফোন ১২ এর রিভিউ দিলেন। তখন অ্যামাজন, আলিবাবার মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর উক্ত পন্যের লিংক আপনার ভিডিওর ডেস্ক্রিপশনে দিয়ে দিলেন। সেই লিংক থেকে কেউ যদি উক্ত ওয়েবসাইটে যায় এবং ওই পণ্যেই কিনুক কিংবা অন্য কোন পণ্য কিনুক তা থেকে আপনি সেখান থেকে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা কমিশন পাবেন।
স্পনশরশিপ থেকে আয়
বর্তমান সময়ে ইউটিউবাররা স্পনশরশিপ খুব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন। এখান থেকে পাওয়া অর্থ মনিটাইজেশনের অর্থের থেকেও বেশি হয়। এবং সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো ভিডিও পাবলিশ করার আগেই আপনি স্পনশিপের টাকা পাবেন।
স্পনশরশিপ থেকে কিভাবে আয় করে?
একটু খেয়াল করে দেখবেন ইউটইউব ভিডিও চলাকালে, ইউটিউবাররা বিভিন্ন সিমের অফার, পণ্যের অফার কিংবা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস সম্পর্কে বলে এবং সেটা কেনার জন্যে তার অডিয়েন্সদেরকে উদ্বোধ করে। এটাই হচ্ছে স্পনশরশিপ। অর্থাৎ কিছু টাকার বিনিময়ে ভিভিওর মাঝখানে অথবা শেষে কোন পন্য সম্পর্কে বলা এবং সেটা কেনার জন্যে উদ্বোধ করাকেই স্পনশরশিপ বলে।
স্পনশরশিপের টাকা নির্দিষ্ট নয়। আপনার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউ এর উপর ভিত্তি করে আপনি একটি দাম হাকবেন। বিজ্ঞাপন দাতাদের পছন্দ হলে তারা আপনার সাথে চুক্তি করবে। আর আপনি ভিডিও পাবলিশ করার আগেই পেয়ে যাবেন নগদ অর্থকরি।
নিজেদের পন্য বিক্রি করে আয়
অনেক ইউটিউবার আছে যাদের ফ্যান ফলোয়ার বেশি এবং তাদের বেশ ক্রেজ আছে, তারাই এই পদ্ধতিতে ভালো ইনকাম করতে পারে। ইউটিউবাররা তাদের চ্যানেলের লোগো, অথবা জনপ্রিয় কোন স্লোগান দিয়ে টি-শার্ট, ব্যাগ, চাবির রিং বিক্রি করে থাকেন। ক্রেজি ফ্যানরা এগুলো অনলাইন স্টকে আসার সাথে সাথেই সংগ্রহ করে নেয়। এখান থেকে ইউটিউবাররা বড় অংকের টাকা লাভ করে থাকেন।
অনেকের কাছে এই পদ্ধতি কাছে বেশ জনপ্রিয় হলেও কিছু কিছু ইউটিউবার এইধরনের বিজনেস পছন্দ করেন না। ।
ব্লগিং করে আয়
অনলাইন সেক্টরে সবচেয়ে পুরাতন এবং বেশ ফলপ্রসু কাজ হচ্ছে ব্লগিং। ইংলিশে ব্লগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৭ সালে । এবং ২০০৫ সালে ‘সামহয়্যার ব্লগ’ নামে যাত্রা শুরু হয় বাংলা ব্লগের।
ইংরেজি ব্লগাররা অনেকদিন থেকে অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারলেও বাংলা ভাষাভাষি ব্লগাররা এই সুবিধা পাচ্ছে ২০১৭ সাল থেকে।
এডসেন্সের মাধ্যমে বেশ বড় অংকের টাকা উপার্জন করেন ব্লগাররা। ব্লগিং থেকে অর্থ উপার্জন করতে হলে আগে জানতে হবে ব্লগিং কি
ব্লগ শব্দটি ইংলিশ, এটা এসেছে ইংরেজি শব্দ Weblog থেকে। ব্লগ বলা হয় অনলাইন কেন্দ্রিক ব্যক্তিগত বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক পত্রিকাকে। আর যারা ব্লগে লেখালেখি করেন তাদেরকে ব্লগার বলা হয়।
ব্লগ কি সেটা আমরা জানলাম। এখন আমরা জানব ব্লগ থেকে অর্থ উপার্জন করতে হলে কি করতে হবে আমাদের।
প্রথমে যা করতে হবে, ইউটিউবের মতো একটা নিশ সিলেক্ট করতে হবে। নিশ সিলেক্ট করার পর নিশ রিলেটেড একটা নাম সিলেক্ট করতে হবে। তারপর ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে সাইট কে সাজাতে হবে। প্রথম দিকে আপনার ১ বছর মেয়াদি ১ জিবি হোস্টিং কিনলেই হয়ে যাবে। ডোমেইন এবং হোস্টিং বাবদ আপনার ২ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হবে। তারপর ভালোমানের ফ্রি থিম খোঁজে সাইটে এড করতে হবে। তারপর সময় নিয়ে ভালো মানের লেখা সাইটে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে কপি পেস্ট করা যাবে না। লেখা ইউনিক হতে হবে। কপি লেখা হলে সাইট র্যাংক করবে না, সাইট র্যাংক না করলে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন না।
আপনি খুব সুন্দর করে আপনার ব্লগ সাজালেন এবং ইউনিক লেখা ব্লগে দিলেন। এখন আপনি ব্লগ থেকে অর্থ উপার্জনের উপযুক্ত হয়ে গেলেন। এখন আপনাকে জানাব কোন কোন পদ্ধতিতে ব্লগ থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।
ব্লগ থেকে অনেক সিস্টেমে টাকা আয় করা যায়। পদ্ধতি গুলো হলোঃ
- ব্লগে বিজ্ঞাপন প্রকাশ
- এডসেন্স থেকে আয়
- অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয়
- নিজের পণ্য বিক্রি
ব্লগে বিজ্ঞাপন দিয়ে আয়
আপনার ব্লগ যদি জনপ্রিয় হয়ে যায় এবং প্রচুর পরিমানে ভিজিটর নিয়মিত আপনার সাইট ভিজিট করে । তাহলে আপনি খুব সহজেই বড় বড় কোম্পানি থেকে তাদের বিজ্ঞাপন আপনার সাইটে দেওয়ার জন্যে অফার পাবেন।
ব্লগ থেকে অন্যান্য উপায়ে আয় করা থেকে এই সিস্টেম সবচেয়ে সহজ। কোম্পানি আপনার ব্লগ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য নেবে। যেমনঃ আপনি কোন টপিকে লেখালেখি করেন, আপনার ব্লগের ভিজিটর কারা। এই সম্পর্কে ভাল করে আইডিয়া নিয়ে তারা আপনাকে অফার দিবে। কখনো তাদের বিজ্ঞাপন আপনার সাইটে মাসব্যাপী দেখাতে হতে পারে, কখনো সাপ্তাহখানেক আবার কখনো একদিনের জন্যেও বিজ্ঞাপন দিতে পারে তারা।
এডসেন্স থেকে আয়
ব্লগ থেকে টাকা উপার্জন করার সবচেয়ে জনপ্রিয় সিস্টেম হচ্ছে গুগল এডসেন্স। অধিকাংশ ব্লগাররা এডসেন্সকে টার্গেট করে তাদের ব্লগকে সাজায়, তারপর গুগলের কাছে এডসেন্সের জন্যে আবেদন করে।
এডসেন্সের জন্যে আবেদন করতে হলে কিছু নিয়ম মানতে হয়। নিয়মগুলো হলোঃ
- লেখাগুলো ইউনিক হতে হবে।
- সাইটে কমপক্ষে ১৫ টি লেখা থাকতে হবে। এবং ডোমেইন এর বয়স ১ মাস হওয়ার পর আবেদন করলে ভালো হয়। যদিও এটা রুলসে লেখা নেই, তবুও এটা মানতে হয়। অলিখিত নিয়ম এটা।
- সাইটে ১৮+ কিছু থাকতে পারবে না।
আপনার সাইট এডসেন্সের সকল শর্ত মানলে গুগল কর্তৃপক্ষ আপনার এডসেন্স এপ্রুভ করে নিবেন। পরবর্তীতে কোডের মাধ্যেমে আপনি আপনার সাইটে এড বসাবেন। আপনার সাইটের ট্রাফিক খুব বেশি থাকলে এবং ভালো সিপিসির এড আসলে খুব ভালো অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন আপনি। এডসেন্সে ১০০ ডলার জমা হয়ে গেলে গুগল আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পেমেন্ট পাঠিয়ে দিবে। তখন আপনি বাংলাদেশি যেকোন ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
গুগল এডসেন্স ছাড়াও আরও অনেক এড নেটওয়ার্ক কোম্পানি আছে। যেমনঃ
- মজ এড
অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
এটা হলো ব্লগ থেকে আয় করার আরেকটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। একসময় ব্লগাররা তাদের ব্লগকে গুগল এডসেন্স অনুযায়ী তৈরি করতেন এবং তাদের মেইন টার্গেট থাকতো এডসেন্স থেকে আয় করা। কিন্তু এখন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বড় বড় কোম্পানি অ্যামাজন, আলিবাবার মতো ই-কমার্স কোম্পানিগুলো ব্লগারদের জন্যে আশির্বাদস্বরুপ।
অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং করে কিভাবে আয় করে?
অনলাইনে অন্য কোম্পানির পণ্য বিক্রি করে কমিশন পাওয়াকে অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং বলে। বিষয়টা উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যাক। ধরেন আমার ইলেকক্ট্রিক পণ্যে বিক্রির ব্যবসা করি। আমি আপনাকে অফার দিলাম ‘আমার দোকানে এই মোবাইল টি নতুন এসেছে, দেখেনতো আপনি আপনার পরিচিত ব্যক্তিদের কাছে আমার পন্যেটি বিক্রি করে দিতে পারেন কি না, বিক্রি করতে পারলে আপনি ৫% কমিশন পাবেন।
মনে করেন আপনি ১০হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল বিক্রি করে দিলেন। তো আপনি ১০ হাজার টাকার ৫% অর্থাৎ ৫০০ টাকা কমিশন পাবেন। আশা করি বিষয়টা ক্লিয়ারলি বুঝতে পেরেছেন।
তো এখনকার ব্লগাররা কি করে, তারা অ্যামাজন কিংবা আলিবাবায় এভেইলেভল আছে এমন সব প্রোডাক্ট তাদের সাইটে রিভিউ পোস্ট করেন অর্থাৎ তারা পন্যটির গুনগান করে। এরপর তারা অ্যামাজন/আলিবাবা সাইটে গিয়ে অ্যাফেলিয়েট একাউন্ট খোলেন। তারপর তারা রিভিউ পোস্টে যে পণ্যের রিভিউ দিয়েছেন সেই পণ্যের অ্যামাজন/আলিবাবার লিংক দিয়ে দেন।
তাদের রিভিউ পড়ার পর কেউ যদি উক্ত ই-কমার্স সাইটগুলোতে ভিজিট করে এবং ২৪ ঘন্টার ভিতরে উক্ত ই-কমার্স সাইট থেকে যেকোন ধরনের পন্যে অর্ডার করেন, তাহলে সেই সাইট থেকে ব্লগাররা নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন পান। তাদের ওয়েবসাইটে যত বেশি পরিমান পণ্যের রিভিউ থাকবে তত বেশি ভিজিটর পাবেন তারা, এবং যত বেশি ভিজিটর থাকবে তত সম্ভাবনা থাকবে পন্যে বিক্রি হওয়ার। বেশি বেশি পন্যে বিক্রি হওয়া মানেই কাড়ি কাড়ি টাকা ইনকাম।
জনপ্রিয় কিছু অ্যাফেলিয়েট সাইটঃ
- Amazon Accociates
- Shopify Affiliate Program
- eBay Partners
- Rakuten Affiliate Network
- CJ Affiliate
- Awin
নিজেদের পণ্য বিক্রি
অনেক ব্লগার আছে তাদের সাইট নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে সুন্দর করে সাজায়। সাইটকে র্যাংক করানোর জন্যে সেই সাইটকে ভালো করে এসইও করে। সাইট র্যাংক করলে তারা আসল খেল দেখানো শুরু করে। এবার তারা তাদের সাইটের ক্যাটাগরি অনুযায়ী নিজেরাই পণ্য বিক্রি করতে শুরু করে। এভাবেও অনেক লাভ করা যায়।
বরং অন্য পদ্ধতি থেকে এই পদ্ধতিতে লাভ বেশি। কেননা নিজের পণ্য । আপনি যেই ধরে বিক্রি করবেন তার লাভের পুরো অংশটাই আপনি পাবেন। এখানে থার্ড পার্টির কোন ঝামেলা নেই।
ফ্রিল্যান্সিং করে আয়
বর্তমানে সবচেয়ে বেশি পরিচিত শব্দ ফ্রিল্যান্সিং। এবং এটা এখন অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার জনপ্রিয় প্লাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। চারদিকে কান পাতলেই শোনা, অমুক ফ্রিল্যান্সিং করে অনেক টাকা রোজগার ক্অরে ফেলেছে। অমুক ফ্রিল্যান্সিং করে বাড়ি গাড়ি করে ফেলেছে। আসলে এই ফ্রিল্যান্সিং জিনিসটা কি? ওরা কি করে? কিভাবে তারা এত টাকা ইনকাম করছে? চলেন বিস্তারিত জানি।
ফ্রিল্যান্সিং শব্দের অর্থ হলো মুক্তপেশা, অর্থাৎ নির্দিষ্ট কোন কোম্পানির অধীনে কাজ না করে নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন কোম্পানির সাথে কাজ করাকে ফ্রিল্যান্সিং বলে। এর কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। আপনাকে রুটিন মাফিক সকাল ১০ টায় অফিসে যেয়ে সন্ধ্যা ৫ পর্যন্ত থাকতে হবে না। ফ্রিল্যান্সিং করলে আপনি নিজেই ঠিক করে নিতে পারবেন আপনি সাপ্তাহে কতদিন কাজ করবেন, দৈনিক কত টা সময় দিবেন, তা সবই আপনার ইচ্ছামাফিক।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে কি কি কাজ থাকে
ফ্রিল্যান্সিংয়ে অনেক ধরনের কাজ আছ, তার মধ্যে জনপ্রিয় কিছু কাজ হলো
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- ডিজিটাল মার্কেটিং
উপরের তিন টি নিয়ে এখন বিস্তারিত আলোচনা করব।
গ্রাফিক্স ডিজাইন
নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে শব্দ এবং ছবি ব্যবহার করে নতুন ছবি ডিজাইন করাই হলো গ্রাফিক্স ডিজাইন । বর্তমান ডিজিটালাইজেশন এর যুগে এর চাহিদা খুব দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে। এর যেমন চাহিদা তেমন প্রচুর অর্থও আছে এর মাঝে। বর্তমান সময়ে যারা এই সেক্টরে কাজ করে তারা প্রতিমাসে ২০ হাজার থেকে শুরু করে লাখ টাকার উপরে ইনকাম করে।
এই লাইনে অনেক ক্যাটাগরি আছে। এগুলো হলোঃ
- লোগো ডিজাইন
- টি-শার্ট ডিজাইন
- ব্যানার ডিজাইন
- সোশ্যাল মিডিয়া কিট
- বিজনেস কার্ড ডিজাইন
- ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি ডিজাইনার
উপরে উল্লেখিত ক্যাটাগরি ছাড়াও আরও অনেক ক্যাটাগরি আছে । আপনাকে নির্দিষ্ট একটা জিনিস শিখতে হবে। এগুলো শিখার জন্যে আপনার নিকটস্থ ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হোন। বর্তমানে সব শহরেই ভালো মানের প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়। আপনাকে ৬ মাস কষ্ট করে নিয়মিত প্র্যাকটিস করে ডিজাইন ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে। ডিজাইন ভালোভাবে আয়ত্ত হয়ে গেলে তখন আপনাকে অনলাইন মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট খুলতে হবে। তারপর অর্ডার আসলে কাজ করবেন।
আপনার নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি অনুযায়ী কাজ পাবেন কোথায়? চিন্তিত হবেন না। আমি আপনাদেরকে গ্রাফিক্স ডিজাইনের জনপ্রিয় কয়েকটি মার্কেটপ্লেসের নাম বলে দিচ্ছি।
- fiverr.com
- freelancer.com
- 99designs.com
- upwork.com
ডিজিটাল মার্কেটিং
ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে যে ব্যবসায়িক মাধ্যম গড়ে উঠেছে তাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে।
বর্তমান সময় হল ডিজিটাল প্রযুক্তির। দুনিয়ার প্রায় সব ধরনের কাজকর্মই এখন ডিজিটালি সম্পন্ন হয়ে থাকে। ডিজিটাল মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে মানুষ নিজেদের এবং নিজেদের প্রোডাক্টকে সবার সামনে তুলে ধরছে। এই যে ডিজিটাল ভাবে কোন কিছুকে সবার সামনে তুলে ধরাটাই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং।
বর্তমান যুগ হলো ডিজিটাল যুগ, বুঝতেই পারছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব কতটুকু হতে পারে?
ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিংকে নেওয়া বুদ্ধিমানের মতো একটা কাজ হবে। কেননা এখনকার সময়ে ৮৬% কোম্পানিগুলো তাদের মার্কেটিং এর জন্যে ডিজিটাল মার্কেটিংকেই বেচে নিয়েছে।
ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে করবেন?
মার্কেটিং এর অনেক গুলো ক্যাটাগরি আছে। আপনাকে আপনার অথবা আপনার ক্লায়েন্টের পণ্য, পণ্যের গ্রাহক কারা, মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি এসব কিছু বিবেচনা করে আপনার পদ্ধতি ঠিক করে নিতে হবে।
ক্যাটাগরিগুলো হলঃ
- SEO Search Engine Optimization
- Social Media Marketing
- Affiliate marketing
- Email Marketing
- Content Marketing
এসইও
বর্তমানে বড় বড় সার্চ ইঞ্জিন হলো গুগল, বিং, ইয়াহু, আসক। এগুলোতে মানুষ প্রতিদিন কত কিছু লিখে সার্চ দেয়। সার্চ ইনজিনগুলোর কাজ হলো সার্চ রিলেটেড টপিক সার্চকারীর সামনে তুলা ধরা। কোম্পানিগুলো এখন সরাস্রি এড দেওয়ার চেয়ে, সার্চ ইঞ্জিনে নিজেদের সবার প্রথমে আনার চেষ্টায় আছে। যার ফলে এসইও সেক্টর অনেক বড় হচ্ছে, এবং এই সেক্টর প্রচুর সম্ভাবনাময় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এসইওর কাজ কি?
এসইওর কাজ হলো সার্চকারীর সামনে আপনার প্রোডাক্ট তুলে ধরা।
দেখেন, একা শুধু আপনি ব্যবসা করতেছেন না। আপনার মতো আরো অনেকেই সেম জিনিস নিয়ে ব্যবসা করতেছে। এবং সবাই তাদের প্রোডাক্ট খুব সুন্দর করে সাজিয়ে ওয়েবসাইটে রেখেছে। একজন ক্রেতা যখন উক্ত প্রোডাক্ট সম্পর্কে সার্চ করবে তখন এসইওর কাজ হলো সবাইকে পেছনে ফেলে আপিনার প্রোডাক্টকে সম্ভাব্য ক্রেতার সামনে তুলা ধরা।
এসইওর ডিমান্ড এখন খুব বেশি। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে এসইওর বিকল্প নেই। তাইতো সকল কোম্পানিগুলো এসইও এক্সপার্টদের হায়ার করছে। একজন এসইও এক্সপার্ট খুব সহজেই মাসে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে লক্ষাধিক টাকা ইনকাম করতে পারেন।
সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অর্থাৎ ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, পিন্টারেস্ট ব্যবহার করে যে মার্কেটিং করা হয় সেটাই হলো সোশিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং।
বর্তমান সময়ে প্রায় ৪০০ কোটি মানুষ বিভিন্ন রকম সোশিয়াল মিডিয়া ইউজ করছে। এরা সবাই তো আর আপনার ক্রেতা নয়। তো আপনার কাজ হলো সঠিকভাবে মার্কেটিং করে সম্ভাব্য ক্রেতার সামনে আপনার প্রোডাক্টকে তুলে ধরা। যদি আপনি সঠিকভাবে সোশিয়াল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারেন তাহলে আপনার কাস্টমারের অভাব হবে না এবং আপনার প্রোডাক্ট বিক্রির হার বহুগুনে বেড়ে যাবে।
ইমেইল মার্কেটিং
এখন সবার হাতে হাতেই স্মার্ট মোবাইল পৌছে গেছে। স্মার্টফোন থাকা মানেই ইমেইল একাউন্ট থাকা। বর্তমানে সবাই মোটামুটি সচেতন। এবং প্রায় সবাই ইমেইল ব্যবহার করা শিখে গেছে।
ইমেইল মার্কেটিং হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এরই একটি অংশ। এর মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি আপনার ব্যবসা সম্পর্কে অনেক মানুষকে জানাতে পারবেন।
একটি উদাহরন দিলে সহজে বুঝতে পারবেন। ধরেন, আপনি টি-শার্ট, প্যান্ট জাতীয় পোশাকের অনলাইন ব্যবসা খোলেছেন।
লোকজনকে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে জানাবেন কিভাবে? আপনার কাছে যদি অনেক মানুষের ইমেইল সংগ্রহ করা থাকে তাহলে খুব সহজেই আপনি ইমেইল পাঠিয়ে তাদেরকে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে জানিয়ে দিতে পারবেন।
তাদের এমনিতে হয়তো আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকতো না অথবা নিজ থেকে খোজ নেওয়ার সময় কিংবা সুযোগ পায় না তারা। আপনি যদি ইমেইলের মাধ্যেম আপনার পণ্যের অফারে তাদের নিকট পৌছাতে পারেন, তাহলে আপনার প্রোডাক্ট বিক্রির সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
ই-মেইল মার্কেটিং দিয়ে কয়েকটি পদ্ধতিতে আপনি ইনকাম করতে পারবেন। পদ্ধতিগুলো হলঃ
- এফিলিয়েট প্রোগ্রাম
- ই-কমার্স সার্ভিস
- ভিডিও সার্ভিস অফার
- ই-বুক সার্ভিস অফার
ছবি বিক্রি করে আয়
বর্তমান সময় কিশোর-যুবকদের মধ্যে এমন কাউকে পাওয়া যাবে না যার কাছে একটি স্মার্টফোন নেই। এখনকার মোবাইল কোম্পানিগুলো অন্যান্য জিনিসের মতো ক্যামেরায় গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে যার ফলে ডিএসএলআর ক্যামেরা ছাড়াই হাতের স্মার্টফোন দিয়েই খুব সুন্দর সুন্দর ছবি তোলা যাচ্ছে। হাতে এমন স্মার্টফোন থাকা মানেই ক্লিক ক্লিক ছবি তোলা। আর আমরা প্রতিনিয়ত অসংখ্যা মূহুর্ত বন্দী করছি মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে। কত সুন্দর সুন্দর প্রাকৃতিক তোলা যায় স্মার্টফোন দিয়ে।
আপনি চাইলে এসব ছবি দিয়ে রোজগার করতে পারবেন। অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার এটা ভাল একটা প্লাটফর্ম। অসংখ্যা সাইট আছে যেগুলাতে এসব ফটো আপলোড দিলে ডাউনলোডের উপর ভিত্তি করে আপনাকে টাকা দিবে।
এদের মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি ওয়েবসাইট হলোঃ
- SutterStock
- Envato
- 500px
আপনার ছবি গুলো ওয়েবসাইটে রাখলে বিভিন্ন দেশের ক্রেতারে নিজেদের কাজের জন্যে কিনে নিবে।
মোবাইল দিয়ে আয়
আপনার হাতে যদি স্মার্টফোন থাকে তাহলে এটা কিন্তু আপনার অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হতে পারে। চাইলে আপনি মোবাইল দিয়েও অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। কি অবাক হচ্ছেন?
বর্তমান সোময়ে সবচেয়ে বেশি যেই প্রশ্ন শোনা হয় সেটি হলো মোবাইল দিয়ে কিভাবে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করা যায়?
শুনতে অদ্ভুত হলেও এটা সত্যে যে মোবাইল দিয়েও এখন কাড়ি কাড়ি টাকা ইনকাম করা যায়।
আসলেই? কিভাবে?
অধৈর্য্য হবেন না, বলছি সব।
আপনি হয়তো জানেন না আপনার হাতের মোবাইলটি অনেক কিছু করার ক্ষমতা রাখে।
আপনি চাইলে আপনার মোবাইল দিয়ে ইউটিউবিং থেকে শুরু করে ফেসবুক কন্টেন্ট ক্রিয়েটিং, ব্লগিং সব কিছুই করতে পারবেন।
একটু কষ্টকর এবং সময় সাপেক্ষ হলেও এখনকার দিনের মোবাইল দিয়ে কম্পিউটার এর মত ফটো এডিটিং এবং ভিডিও এডিটিং করা যায়।
আপনাকে একটু কষ্ট করে ইউটিউব ঘাটাঘাটি করে ফটো এডিটিং, ভিডিও এডিটিং শিখতে হবে। এগুলা শেখার জন্যে কোন কোর্স করতে হবে না। ইউটিউবে প্রচুর ভিডিও পাওয়া যায় এগুলা নিয়ে। আপনি যদি ইউটিউবে সঠিক ভাব সার্চ করতে পারেন তাহলে আপনার কাঙিত টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন এবং সেখান থেকে এগুলা শিখে নিবেন।
উপরের যে সকল টাকা আয় করার পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে সেই সকল পদ্ধতিতে আপনি মোবাইল দিয়েও আয় করতে পারবেন। মোবাইল দিয়ে যেভাবে ইনকাম করতে পাড়বেনঃ
- ফেসবুক থেকে আয় করতে পারবেন
- ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন
- ব্লগিং করে আয় করতে পারবেন।
আপনার জ্ঞাতার্থে বলে রাখি, উপরে যেইভাবে এগুলা সম্পর্কে বলেছি সেইভাবেই মোবাইল থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
ওয়েব ডিজাইন করে আয়
বর্তমান সময়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বড় এমাউন্টের টাকা ইনকাম করার উপায় হচ্ছে ওয়েব ডিজাইন বা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখা।
অনলাইনে ঢুকে যা কিছু দেখেন সবকিছু ওয়েব ডেভেলপার দ্বারা ডিজাইন করা । ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, গুগল সহ যা কিছু দেখেন না কেন সব ওই ডেভেলপারদের হাতে গড়া।
ওয়েব ডিজাইন বা ডেভেলপমেন্ট শিখতে হলে আপনাকে বিভিন্ন রকম প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতে হবে। যেমনঃ পাইথন, জাভাস্ক্রিপ্ট, পিএইচপি, এইচটিএমএল, সিএসএস ইত্যাদি।
এগুলো শিখার জন্যে অনেক সময় এবং খুব ধৈর্য্যের প্রয়োজন হয়। তবে একবার শিখে নিলে নিয়মিত প্র্যাকটিসের মাধ্যমে সহজে আয়ত্ত্বে রাখা যায়। ভালো ওয়েব ডেভেলপারদের আয় সবসময় ৬ অংকের ঘরে থাকে। অর্থাৎ তাদের মাসিক ইনকাম লাখ টাকা ।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে হলে আপনাকে ভালো কোন প্রতিষ্ঠানের শরনাপন্ন হতে হবে। ইউটিউব কিংবা ওয়েবসাইটগুলোতে প্রচুর ফ্রি কোর্স পাবেন। এগুলোর সাহায্য না নেয়াই ভালো। কেননা ফ্রি জিনিসগুলা সাধারনত পুরাতন ভার্সনের হয়ে থাকে এবং কোয়ালিটি তেমন একটা ভাল হয় না।
পরিশেষে বলি, দুনিয়া এখন আপগ্রেডেট। প্রযুক্তিময় এই দুনিয়া আমাদের স্বপ্ন এবং বাস্তবতাকে এক করে দিয়েছে। প্রযুক্তির কল্যানে সবকিছু আমাদের হাতের মুঠোয়। এই প্রযুক্তি সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। এখন ঘরে বসে সব কিছুই হচ্ছে।
ইন্টারনেট থেকে আয় এটা তো মামুলি ব্যাপার।
অনলাইন অনেক সম্ভাবনাময় একটা জায়গা। এখানে আপনার জ্ঞান বুদ্ধি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে এবং ধৈর্য্য ধরতে পারলে ভাল কিছু করতে পারবেন।
উপরের আর্টিকেলে আমি আপনাদের শুধু একটু ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। আশা করি এই ধারনাকে কাজে লাগিয়ে আপনারা অনেক কিছু করতে পারবেন। ধন্যবাদ ,
You must be logged in to post a comment.