মোবাইল ফোন আমাদের একটি অতি প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস। প্রয়োজনের মুতূর্তে যখন মোবাইল ফোনের চার্জ শেষ হয়ে যায়, তখন খুঁজতে হয় চার্জার। চার্জ দেওয়ার জায়গাও চাই। চার্জ দেওয়ার সুবিধা যখন হাতের নাগালে থাকে না, তখনই বিপদ। এমন বিপদে হয়তো অনেকেই পড়েছেন।
আবার এক বছর আগে কেনা মোবাইল ফোনে প্রথম প্রথম যে পরিমাণ চার্জ থাকত, এক বছর পরে তার অর্ধেকও থাকে না বলে অনেকে দুঃখ করেন। এতে ব্যবহারকারীর কতটা ভুল আর ফোনটিরই বা কী সমস্যা, এ প্রশ্নও ওঠে। সমস্যার সমাধান কী? ব্যাটারির সমস্যার সমাধান নিয়ে সম্প্রতি সি এন এন প্রকাশ করেছে একটি প্রতিবেদন।
চার্জ দেব কি দেব না?
মোবাইল ফোন নিয়ে অনেকেরই জিজ্ঞাসা থাকে, পুরোপুরি চার্জ দেব, নাকি অল্প দেব? চার্জ শেষ হয়ে গেলে আবার চার্জে দেব, নাকি অল্প চার্জ বাকি থাকতেই দেব? বিশেষজ্ঞরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তরে বলেছেন, একটা সময় রিচার্জেবল ব্যাটারিগুলোতে পূর্ণ চার্জ দিলে এবং সেই চার্জ শেষ করে আবার চার্জে দিলে তা সবচেয়ে ভালো কাজ করত। গত কয়েক বছরে ব্যাটারির উপাদান ও চার্জ দেওয়ার এই নিয়মেও পরিবর্তন এসেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একনকার অধিকাংশ মোবাইল ফোনে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার দেখা যায়। এধরনের ব্যাটারিতে যখন ২০- ৮০ শতাংশ চার্জ থাকে, তখন সবচেয়ে ভালো কাজ করতে দেখা যায়। তাই সময়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনের ব্যাটারি থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে এ নিয়মটি মেনে চললে ভালো।
ব্যাটারির নীরব ঘাতক
ব্যাটারি সংক্রান্ত অধিকাংশ বিষয়ই মোবাইলের প্রসেসরের ওপর নির্ভর করে। তবে ফোনের ব্যাটারির আয়ু দীর্ঘায়ু হবে কি না, তা ফোনের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মোবাইল ফোনের মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহার ট্যাটারির আয়ু দ্রুত শেষ করে ফেলতে সক্ষম। এসব অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার না করলেও ব্যাটারি থেকে চার্জ খরচ করতে পারে।
বেশি তাপে ব্যাটারি কম টেকে
ব্যাটারির দীর্ঘায়ুর সঙ্গে তাপমাত্রার বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, বেশি তাপে ব্যাটারি কম টেকে। মোবাইল ফোনটি যদি সব স;ময় বেশি গরম হয়, তখন ফোনটির ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সমস্যা সমাধানে করণীয়
ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে, একন কী করা যায়? বিশেষজ্ঞরা বলেন, ব্যাটারি দীর্ঘায়ু করতে ঘন গন চার্জ দিন, তবে চার্জ দেওয়াটা যেন আবার অতিরিক্ত পর্যায়ে চলে না যায়। চার্জ কমে গেলে যেমন চার্জ দেবেন কিন্তু মাঝেমধ্যে আবার ব্যাটারির চার্জ সম্পূর্ণ শেষ করে ফেলবেন। আপনার ফোনের কোন অ্যাপ্লিকেশনটি চার্জ বেশি খরচ করছে, সেটা খেয়াল রাখবেন এবং সেটি বন্ধ করে রাখবেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সারধারণ কিছু অভ্যাসের মাধ্যমে ব্যাটারি চার্জ বেশি সময় ধরে রাখা যায়।
পর্দার ঔজ্জ্বল্য কমিয়ে রাখা
স্মার্টফোনের পর্দার ঔজ্জ্বল্য কমিয়ে রাখা ভালো। ফোনের সেটিংস থেকে এটি পরিবর্তন করা যায়, আবার কোনো কোনো ব্রাইটনেস পরিবর্তনের জন্য শর্টকাট কি-ও থাকে।
প্রয়োজন ছাড়া সব বেতার সংযোগ বন্ধ
জিপিআরএস/ এজ, জিপিএস, ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথের মতো বেতার সংযোগগুলো প্রয়োজনের সময় ছাড়া বন্ধ রাখা উচিত। কারণ, এই সংযোগ গুলো চাল থাকলে সেগুলো নিকটবর্তী সংযোগের উৎসটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে থাকে। আর এই সময়ে যে পরিমাণ ব্যাটারি খরচ হয়, তা সেবা ব্যবহার সময়ের চেয়েও বেশি।
পুশ নোটিফিকেশন বন্ধ রাখা
ই-মেইল, ফেসবুক, গুগল প্লাস, টুইটারসহ আর বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশনে ’পুশ নোটিফিকেশন’ নামের একটি সুবিধা থাকে। যেটি চালু থাকলে মোবাইল ফোনটি একটি নিদিষ্ট সময় পর পর সার্ভার থেকে নতুন তথ্য সংগ্রহ করে। ফলে প্রয়োজন না থাকলেও নির্দিষ্ট সময় পর পর ফোনটি নিজের মতো করে কাজ করবে, আর চার্জ খরচ হবে।
নির্দিষ্ট ধরনের অ্যাপ্লিকেশন
স্মার্টফোনে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করা যায়। এগুলোর ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন মাত্রার মেমোরি, প্রসেসিং পাওয়ার লাগে।
মোবাইল কেনার সময় সর্তক থাকা উচিত
মোবাইল ফোন কেনার সময় তাতে কী ধরনের ব্যাটারি রয়েছে তা যাচাই করে নিন। ফোন বেশি গরম হয় কি না- পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। ওয়ারেন্টি দেখে কিনুন।
কেন মোবাইলে চার্জ থাকে না এবং এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে খুব সুন্দর লেখা। ধন্যবাদ ভাই!
You must be logged in to post a comment.