ইন্টারনেট স্পিড বাড়ানোর সবচেয়ে কার্যকর সফটওয়্যার

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে সাধারনত লাইন অনুযায়ী স্পিড পাওয়া যায়। যত ভালো প্যাকেজ এর লাইন নেয়া নয় স্পিডও সাধারনত তত ভালোই হয়। যেমন- ৫ mbps এর ইন্টারনেটে সর্বোচ্চ ৫ mbps = ৬৪০ KB/sec পাওয়া যায়। ফলস্বরুপ Fifa, Call of Duty-র মতো বড় কোনো গেম বা Breaking Bad-এর মতো কোনো সিরিজ ডাউনলোড করতে গেলে সমস্যার মুখে পড়তে হয়, ডাউনলোড দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়। কখনো কখনো ডাউনলোডের মাঝখানে বিদ্যুৎ চলে গেলে সেই ডাউনলোড resume করাও সম্ভব হয় না।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

আই এসপির সাথে কথা বললেও সমস্যার সমাধান হয় না। এই ধরনের  সমস্যা থেকে উত্তোরনের জন্য তিনটি ভালো সফটওয়্যার নিয়ে কথা বলবো যা ইন্টারনেটের গতির বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

১। FTP server bd tester

এই একই রকম নামে গুগল প্লে স্টোরে অনেকগুলো এপ্লিকেশন বিদ্যমান যারা একই ধরনের সহায়তা দিয়ে থাকে। এই সফটওয়্যারটির কার্যাবলি হলো ওয়াই ফাই নেটওয়ার্কে কানেক্ট থাকা অবস্থায় সেই আইএসপির জন্য এভেইলেবল সব ftp সার্ভার এর লিস্ট দেখতে পাওয়া যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অন্তত ২০-৪০টি এরকম সার্ভার থাকেই। সেখান থেকে পছন্দ অনুযায়ী কোনো সার্ভারের ওয়েবসাইট ব্যবহার করলে খুবই ভালো স্পিড বুস্ট পাওয়া যায়। কিছু ভালো সাইটের নাম হলো samOnline, elaach, ftpbd, dhakamovie,showtimebd, theintrovision, mangogamers ইত্যাদি। এদের মধ্যে samonline খুবই আপডেটেড একটা সাইট। এখান থেকে যদি আই এসপির সার্ভার ক্যাশ করা থাকে তাহলে খুবই ভালো ব্যান্ডউইথ পাওয়া সম্ভব। অনেক ক্ষেত্রে  ৮ এম্বিপিএস এর কানেকশনে dhakamovie এর সার্ভারে ৪০-৬০ মেগাবিট স্পিড পাওয়া যায়। তাই আপনিও আপনার আইএসপির সিস্টেম অনুযায়ী বেশ ভালো বুস্ট পেতে পারেন। এবং এই ধরনের সাইট ব্যবহারের কারনে আইএসপি কখনো সার্ভার ব্লক/ব্যান করবে না।

২। Internet Download Manager

এই সফটওয়্যারটি উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য সেরা একটি এপ্লিকেশন যাকে যেকোনো ব্রাউজারের সাথে সংযুক্ত করে নেয়া যায় খুব সহজেই। অতঃপর এই এপটি ব্যবহার করে ডাউনলোড করলে লাইনের সর্বোচ্চ স্পিড পাওয়া যায়। যেমন  অনেকের ক্ষেত্রে কোনো কিছু সাধারনত ফায়ারফক্স বা ক্রোম এর ডাউনলোড ম্যানেজার দিয়ে ডাউনলোড করলে যেখানে ৩ ঘন্টা লাগতো, সেখানে ১৫-৩০ মিনিট কম সময় লাগে। এই ১৫-৩০ মিনিট সময় বাচানো অনেকের জন্য অনেক বিশাল ব্যাপার।

৩। Proxifier

এটি হলো স্পিড বাড়ানোর সবচেয়ে ভালো কৌশল।  এই সফটওয়্যারটি দ্বারা proxydb এর সাইট থেকে ভাল ল্যাটেন্সির কোনো সাইটের আইপি এড্রেসে কানেক্ট করে নিলে সব ওয়েবসাইট ftp server এ রুপান্তরিত হয়। তখন যত রকম ওয়েবসাইট আছে সুবগুলোতেই স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায়। এছাড়া যারা Steam, Epic, Netflix, Hulu, GOG, Uplay -তে কম গতি পান তারা এই সফটওয়্যারটি দ্বারা ইন্টারনেট স্পিড বাড়াতে পারবেন। এক্ষেত্রে দুটি অসুবিধা রয়েছে। একটি হলো এতে সংযুক্ত থাকলে আইএসপি থেকে অনেক সময় ব্যান অথবা আইপি ব্লক করে দিতে পারে। দ্বিতীয় সমস্যা হলো এই সফটওয়্যার চালু রাখা অবস্থায় কখনোই অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার গেম খেলা যাবে না কারন তাহলে high ping এর কারনে গেমপ্লেতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে যা কোনো গেমারেরই কাম্য নয়। এছাড়া ডাউনলোড চালু হতে অনেক সময় লেগে যায় যদি ল্যাটেন্সি বেশি হয়। ল্যাটেন্সি বা ping যত কম হয় তত ভালো স্পিড পাওয়া যাবে।

৪। Router Setup Page

অনেক সময় একটি নির্দিষ্ট রাউটারে সংযুক্ত থাকা অবস্থায় অনেক সময় শুধু নির্দিষ্ট কোনো ইউজারকে priority low করে দেয়া যায়। যদিও সব্ব্র্যান্ডের রাউটারে এই অপশোন থাকে না। তাই চাইলে এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে চেক করে দেখা যায় যে রাউটারের অপশোনজনিত কোনো সমস্যা কিনা।

৫। VPN

অনেকে দেখা যায় বাংলাদেশে বসে ব্রাজিলের কোনো সার্ভারে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে কিংবা ওয়েবসাইট ব্যবহারের চেষ্টা করছে। সেক্ষেত্রে কখনো কখনো vpn দ্বারা ঐ দেশের আইপি এড্রেসে সংযুক্ত হয়ে নিলে কিছটা ল্যাটেন্সি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান হয়। পাশাপাশি অধিকতর ইন্টারনেট গতিও পাওয়া যায়। 

। Google Play Store

অনেকে এন্ড্রয়েডের সফটওয়্যার গুলো বিভিন্ন থার্ড পার্টি সাইট থেকে ডাউনলোড করে থাকেন। এতে প্রচুর জাংক ফাইল আসে এবং ইন্টারনেট স্পিড কম পাওয়া যায়। এজন্য সরাসরি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা উচিত। গুগল প্লে স্টোরে প্রায় সব সাইটেই এক্সট্রা স্পিড বুস্ট পাওয়া যায়। একই কথা ইউটিউবের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অনেকে অন্যান্য ভিডীও প্লাটফর্ম ব্যবহার করে থাকেন। সে তুলনায় ইউটিউবের স্পিড ভালো হয়। আর ইউটিউবে ভিডিও দেখার সময় কোয়ালিটি ৩৬০ -৪৮০ পি এর বেশি দেয়া উচিত নয়। নইলে ইন্টারনেট এর গতি কম হয়ে যেতে পারে যা কোনো ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর জন্যই কাম্য নয়। 

এগুলো ব্যবহার করলে আশা করা যায় আরো ভালো ইন্টারনেট এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া যাবে। তবে সব ক্ষেত্রেই যে বুস্ট আসবে তা নয়। এবং একেক এপ্লিকেশন সফটওয়্যার একেক রকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি করা হয়েছে। যদি এসব সফটওয়্যার ব্যবহার করলে সমস্যার সমাধান না হয় সেক্ষেত্রে আইএসপি বদলানোর সুযোগ থাকলে নতুন কোনো ইন্টারনেট প্রোভাইডারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। এছাড়া যারা shared ip user তারা সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট সমস্যার মুখে পড়েন।

তাদের জন্য সবচেয়ে উত্তম হবে যদি আইএসপির সাথে কথা বলে real ip সংযোগ নিয়ে নেয়া। তবে shared ip এর চেয়ে real ip সংযোগের প্যাকেজ মূল্য আরো বেশি হয়। যদি প্যাকেজ এর মূল্য বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাহলে ভোর ৪ টা থেকে সকাল ৭ টার মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করা উচিত। এসময় ডাউনলোড দিলে নেটওয়ার্ক ট্রাফিক তুলনামূলক কম থাকে। এছাড়া অনেক আই এসপি পিকটাইম ও নন পিক টাইম নির্দিষ্ট করে দিয়ে দৈনিক ব্যন্ডউইথের বিভাজন করে থাকেন যা আইএসপির সাথে যোগাযোগ করে জেনে নেয়া উচিত। তাহলে সে অনুযায়ী যে সময় তারা স্পিড বাড়িয়ে দেয় তখন ইন্টারনেট থেকে বড় বড় সাইজের ফাইল, গেম এবং মুভি ডাউনলোড করা যেতে পারে।

আরেকটি গুরুত্বপুর্ন বার্তা হলো অনেক সময় ইন্টারনেট স্লো হওয়ার কারন রাউটার সংক্রান্ত। হয়তোবা রাউটার অনেকক্ষন চালু থাকতে থাকতে স্লো হয়ে গিয়েছে কিংবা রাউটারের ওভার হিট হয়েছে। তাই রাউটারটা একবার অফ করে অন করাও যেতে পারে।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

লেখক সম্পর্কেঃ