অনেকের মনে এই প্রশ্নটি রয়েছে। বিশেষ করে যারা প্রথম ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জেনেছেন। হয়তবা কারো কাছে শুনেছেন যে ঘরে বসে টাকা আয় করা যায়। কিন্তু আপনি বিশ্বাস করতে পারছেন না।
সত্যি কি আয় করা যায়? আবার আমরা অনেকে জানিনা ফ্রিল্যান্সিং কি? কিভাবে ফ্রিল্যান্সার হয়ে ঘরে বসে টাকা আয় করা যায় ইত্যাদি নানা প্রশ্ন মনের ভেতর।
আজকে আমি আপনার সাথে এটা শেয়ার করব যে ফ্রিল্যান্সিং করে কি আসলেই আয় করা যায় এই বিষয়ের উপর। তাহলে চলুন দেখে নেই ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করা যায় কিনাঃ
১। ফ্রিল্যান্সিং অন্যান্য কাজের মতই একটি কাজঃ
কাজ করে টাকা আয় করা যায় এমন যত কাজ রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং সেগুলোর মতই একটি কাজ। এখানে একটি বিষয় পরিষ্কার করা দরকার সেটা হল ফ্রিল্যান্সিং হল একটি সাধারণ বিশেষ্য। যেমন, কেউ যদি বলে সে একজন ডাক্তার তাহলে আপনি তার পরের প্রশ্নটি করবেন – আপনি কিসের ডাক্তার? উত্তরে তিনি হয়ত বলবেন যে, মেডিসিন ডাক্তার, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি।
তেমনি ফ্রিল্যান্সিং হল ফ্রিল্যান্সারদের একটি সাধারণ পরিচয়। এর মধ্যে কেউ হলেন ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ফ্রিল্যান্স ডেভেলাপার, ফ্রিল্যান্স এসইও এক্সপার্ট, ফ্রিল্যান্স ডাটা-এন্টি অপারেটর ইত্যাদি।
এবার মনে করেন আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার এবং একটি কোম্পানিতে চাকুরী নিয়েছেন মাসিক বেতনে, আপনাকে নিয়োগ কর্তার অফিসে গিয়ে কাজটি করতে হবে। এই গতানুগতিক চাকরীর সাথে আমরা সবাই পরিচিত।
এবং প্রতিমাস শেষে আমরা একটি বেতন পেয়ে থাকি। ঠিক এমন একটি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ যখন কোন একটি চুক্তিতে (ঘন্টা প্রতি টাকা বা একটি নির্দিষ্ট দরে) কেউ তার ঘরে বসে বা অন্য যেকোন জায়গায় বসে করে দেয় সেটাই হল ফ্রিল্যান্সিং। তাই অন্যান্য কাজের মতই যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং একটি কাজ তাই কাজ করলে টাকা পাবেন এটাই স্বাভাবিক।
২। ফ্রিল্যান্সিং করে যে আয় করা যায় তার প্রমানঃ
উপরের ছবিটি দেখুন, এখানে একজন ফ্রিল্যান্সার যিনি Web Design নিয়ে কাজ করেন তার ২টি কাজের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ১ম কাজটি ফ্রিল্যান্সার এর টাকা আয় করে তিনি ১৭ ঘন্টা কাজ করে আয় করেছেন ৫৬৬.৬৭ ডলার। এবং ২য় কাজটি তিনি ফিক্সড প্রাইস হিসেবে ৬০০ ডলার আয় করেছেন।
এবং ২টি কাজের বর্ননা বাম পার্শে দেয়া আছে যেমনঃ প্রজেক্টের টাইটেল, কোন সময় থেকে শুরু করে কোন সময়ে শেষ করেছেন এর তারিখ। ২টি কাজেই ক্লাইন্ট উনাকে ৫ স্টার রেটিং দিয়েছেন এবং খুব সুন্দর কমেন্ট করেছেন। এর মানে উনি ২টি কাজ খুব ভাল করে করে দিয়েছেন ক্লাইন্ট যেমন চেয়েছিল এবং যে সময়ের মধ্যে চেয়েছিল। আর এই জন্যেই ক্লাইন্ট উনাকে চমৎকার ২টি ফিডব্যাক দিয়েছেন।
আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং কি এবং আউটসোর্সিং কি?
৩। ক্লাইন্ট যে টাকা দেয় তার প্রমাণ।
আপনি যদি জানেন যে আপনি যার সাথে কাজ করতে যাচ্ছেন তিনি কেমন, টাকা দেয় কিনা ইত্যাদি তাহলে নিশ্চয় আপনার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সহজ হয়ে যাবে। আপনি নিচের ছবিটি ভাল করে দেখুনঃ
এই ছবিটির ডান দিকে নিচে তাকান তাহলে ক্লাইন্ট সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন। উল্লেখ্য এটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস Upwork থেকে নেয়া। About the client সেকশনে গেলে আপনি দেখতে পাচ্ছেন এই ক্লাইন্টের দেশ হল Norway। উনি ১১২৫টি জব পোস্ট করেছেন আপওয়ার্কে, ১০০% হায়ার রেট এবং ৪টি জব ওপেন রয়েছে। তারমানে উনি যতগুলো জব পোস্ট করেছেন সবগুলোতে কোন না কোন ফ্রিল্যান্সারকে হায়ার করেছেন।
এই পর্যন্ত আপওয়ার্কে তিনি ৫০,০০০ ডলার ব্যয় করেছেন, অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সারগন উনার কাছ থেকে কাজ করে ৫০,০০০ ডলার আয় করেছে। দেখুন উনি একটি জব পোস্ট করেছেন বাম পার্শে। কাজটির টাইটেল হল Logo Creation এবং কাজটি কি সেটা সম্পর্কে ১ লাইনে উনি একটি বর্ণনা দিয়েছেন। এই কাজে ২০-৫০টার মত বিড হয়েছে ফ্রিল্যান্সারদের কাছ থেকে।
এবং উনি ২ জন কে ইন্টারভিউ তে ডেকেছেন। তাহলে এটাও বুঝতে পেরেছি আমরা যে কাজ করলে ক্লাইন্ট টাকা দেয়।
ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় পেশা এখন। এখানে রয়েছে অনেক সুযোগ। যদি কেউ ভাল করে কাজ শিখে, দক্ষ হয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন তাহলে এখান থেকে ভাল আয় করা সম্ভব। তাই এককথায় বলা যায়, হ্যাঁ ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করা যায় এবং ভাল কাজ জানলে, অভিজ্ঞ হলে খুব ভাল আয় করা যায়।
Hi
You must be logged in to post a comment.