ঘরে বসে কাজ করা যায় এমন সহজ কয়েকটি উপায়, প্রয়োজনীয় দক্ষতা, ডাটা এন্ট্রি, কনটেন্ট রাইটিং , ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, লিড জেনারেশন প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
মূলঃ বাংলাদেশে জনসংখ্যার সাথে বেকারত্বের চাপ দিন দিন বাড়ছে। চাকরির কঠিন এ বাজারে কিছু দক্ষতা থাকলে যে কেউ ঘরে বসে আয় করতে পারে।
নিজের দক্ষতা, ইচ্ছে মতো সময় নিয়ে অফিসে না গিয়েই যে কেউ যে কোনো বয়সে সাবলম্বী হতে পারে।আজকে কথা বলবো অনলাইনে আয় করার সহজ কয়েকটি উপায় নিয়ে।
অনলাইনে আয় করাকে বলা হয় আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং। বাংলায় যাকে বলে মুক্তপেশা। যে কেউ তার দক্ষতা অনুযায়ী এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে পারে।বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ তরুণ -তরুণী ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে।
অনলাইন কাজ দেওয়া ও করার জন্য জনপ্রিয় কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে,যেমন ফ্রিল্যান্সার, ফিভার, ওডেক্স,আপওয়ার্ক প্রভৃতি।
অনলাইনে যেসব সহজ কাজের মাধ্যমে আয় করা যায়ঃ
১.ডাটা এন্ট্রিঃ
ডাটা এন্ট্রি অনলাইনে করা যায় এমন সবচেয়ে সহজ কাজের একটি। এমনকি মোবাইলেও কিছু কাজ করা যায়।বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি তাদের কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য ফ্রিল্যান্সার ডট কম, ওডেক্স ডট কম, ফিভার সহ বিভিন্ন সাইটে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়।
ডাটা এন্ট্রির মধ্যে রয়েছে ফর্ম পূরণ , রেজাল্ট শিট তৈরি, কাগজের লেখা টাইপ করা, কপি পেস্ট , অফিসের হিসাব লিখে দেওয়া ইত্যাদি কাজ।
যে কেউ যদি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট এক্সেল, মাইক্রোসফট এক্সেস শুধু এই ৩ টির কাজ ভালোভাবে জানে তাহলে সে ডাটা এন্ট্রিতে সহজেই ইনকাম করতে পারবে।
প্রতি ঘন্টায় ৫০০ থেকে ১৫০০ বা তারও বেশি আয় করা সম্ভব। ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে হলে ফ্রিল্যান্সার, ওডেক্স,ফিভার, আপওয়ার্ক ইত্যাদি সাইটে ভালো একটা একাউন্ট খুলে কাজে লেগে যান।
কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও অ্যাকাউন্টের অবস্থা অনেক বড় প্রভাব বিস্তার করে।
২.লিড জেনারেশনঃ
অনলাইনে করা যায় আরেকটি সহজ কাজ হচ্ছে লিড জেনারেশন। যেকোনো ব্যবসার ক্ষেত্রে কাস্টমার কারা এটা জানা, কাস্টমারদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া,পণ্য যারা নেবে তাদের কাছে তথ্য পৌঁছে দেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।এই পুরো বিষয়টাকেই বলা হয় লিড জেনারেশন।
লিড জেনারেশন করতে হলে আপনার কাজ হবে নির্দিষ্ট কোম্পানির গ্রাহক কে হতে পারে তা খুঁজে বের করা, তার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করা।
৩.কনটেন্ট রাইটিংঃ
আমাদের মধ্যে অনেকেই লেখালেখি করতে পছন্দ করে। আপনার লেখালেখি করতে ভালো লাগলে বা লেখালেখির দক্ষতা থাকলে আসতে পারেন কন্টেন্ট রাইটিং এর জগতে। ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের লেখা থাকে,ওয়েবসাইটের এসব লেখা কনটেন্ট রাইটাররা লিখে দেয়।
এছাড়া পত্রিকায় লেখা, অনলাইন নিউজ পোর্টালে লেখা, প্রোডাক্ট রিভিউ লেখা, ইউটিউব ভিডিওর জন্য স্ক্রিপ্ট লেখা এর সবই কনটেন্ট রাইটারদের কাজ।
যে কোনো বিষয়ে কন্টেন্ট হতে পারে, যেমন - সাম্প্রতিক খবর, স্বাস্থ্য , সৌন্দর্য, অর্থনৈতিক বিষয়, প্রযুক্তি,আউটডোর এমনকি পোষা প্রাণীসহ যেকোনো বিষয়ে আপনি লিখতে পারদর্শী হলে কাজ করতে পারেন।
কাজ পাওয়ার জন্য আপওয়ার্ক , ফ্রিল্যান্সার, ফিভার সহ বিভিন্ন সাইটে একাউন্ট খুলতে হবে এবং আপনার দক্ষতার সাথে মিলে গেলে নিয়মিত বিড বা কাজের জন্য এপ্লাই করতে হবে।
এছাড়া বাংলাদেশে বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপেও বাংলাদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজের বিজ্ঞাপন দেয়, সেখানে আবেদন করে পার্ট টাইম কাজ করতে পারেন।
৪.ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টঃ
বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দেয়।এক্ষেত্রে কাজ থাকে ইমেইল চেক করা, লেখা, শিডিউল বানানো, চ্যাটিং,কপি পেস্ট, লেখালেখিসহ উক্ত ব্যক্তির প্রয়োজনে যেকোনো কাজ।
আপনার এসব কাজে দক্ষতা থাকলে বিভিন্ন সাইটে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টের বিজ্ঞাপনে এপ্লাই করতে পারেন।ভারচুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হওয়ার মাধ্যমে মাসে লাখ টাকার উপরে আয় করা সম্ভব।
তবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাজ গুলো করতে চাইলে, বস্তুত ফ্রিল্যান্সিং এ ভালো ক্যারিয়ার গড়তে হতে ইংরেজিতে অবশ্য অবশ্যই দক্ষ হতে হবে। বলতে গেলে প্রথম শর্ত এটাই।আর প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকতে হবে।
আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে গৃহিণী, স্টুডেন্ট থেকে শুরু করে যে কেউ পার্ট টাইম বা ইচ্ছে মতো কাজ করতে পারে এবং মাসে একটা ভালো এমাউন্ট আয় করতে পারে।
কেউ কেউ ৩-৪ লাখ টাকাও আয় করতে পারে।তাই চাকরি না পেলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে স্বনির্ভর হয়ে যান।
You must be logged in to post a comment.