বর্তমান সময় আমাদের ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার বিষয়টি অনেক জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে। আপনি আপনার হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে পারেন। আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার সেরা ৫টি উপায় সম্পর্কে আপনাকে বিস্তারিত জানাবো।
আমাদের বাংলাদেশ বর্তমানে এই ফ্রিল্যান্সিং পেশা টি অধিক জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে, এবং আমাদের দেশে বর্তমানে অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে অধিকাংশ শিক্ষিত তরুন তরুনীরা নিজের ক্যারিয়ার গঠনের জন্য ফ্রিল্যান্সিং কে বেছে নিয়েছে।
এর একটি অন্যতম কারণ হতে পারে, সেটি হল বর্তমান সময়ে আমাদের বাংলাদেশের চাকরির বাজারে এক বিশেষ মেধার প্রতিযোগিতায় সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। যেখানে ভার্সিটির অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীরা সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আর এ কারণেই অসংখ্য তরুণ তরুণীরা তাদের ক্যারিয়ার গঠনের জন্য তারা ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করাকে যথাযথ কাজ মনে করছে। সাধারণত ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি প্রচুর টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
তবে এটা সম্ভব করতে গেলে আপনার করা ফ্রিল্যান্সিং পেশার উপর আপনাকে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আমরা অনেকেই আছি যারা ফ্রিল্যান্সিং করে যথাযথভাবে কাজ সঠিক করতে না পারার কারণে, তেমন ভালো ভাবে ইনকাম করতে পারি না।
আপনি সাধারণত নানাভাবে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য বিভিন্ন সাইট ও বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে। আপনি আপনার ক্লায়েন্টকে নানা প্রকার কাজ করে দেওয়ার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন।
আর এজন্য আপনাকে অবশ্যই কম্পিউটার অথবা মোবাইলের সহায়তা নিতে হবে। আপনার হাতে থাকা মোবাইলটিকে অবশ্যই স্মার্টফোন হতে হবে, এবং এই স্মার্টফোনটি মোটামুটি মানের হলেই চলবে।
আপনার এই মোবাইলটি দিয়ে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে অবশ্যই এখানে ইন্টারনেট কানেকশন দরকার হবে। ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়া আপনি কোনোভাবেই অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন না।
আমরা এখনও অনেকেই আছি যারা এখনো জানিনা যে, মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার সেরা উপায় গুলো কি। সাধারণত মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার অনেক উপায় রয়েছে তার মধ্যে সেরা ৫টি উপায় সম্পর্কে আমরা আজকে আপনাদের কাছে তুলে ধরব।
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার ৫টি উপায় সম্পর্কে আপনাদের বলতে গেলে অবশ্যই এটি আপনাদের সঙ্গে শুরু থেকে আলোচনা করতে হবে। তাই শুরুতেই আমরা যেটি আলোচনা করব সেটি হলো ফ্রিল্যান্সিং কি। তাই আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই ফ্রিল্যান্সিং কি। নিচে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
ফ্রিল্যান্সিং কি:
আমরা আমাদের বাস্তব জীবনে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে উপার্জন করে থাকি। ঠিক একইভাবে আপনি যদি কোন কাজ অনলাইনের মাধ্যমে করে থাকেন এবং আপনি অনলাইনের মাধ্যমে যদি কাজ করে দিয়ে টাকা ইনকাম করে থাকেন।
তখন সেই কাজ করা থেকে শুরু করে টাকা ইনকাম করা পর্যন্ত যে প্রক্রিয়া গুলো আপনাকে করতে হয়, মূলত সেগুলোকেই ফ্রিল্যান্সিং বলা হয়।
বর্তমান সময়ে আমরা ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে নানা অর্থ উপার্জন করে থাকি। আর এই কে কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জন করা এই মূলত ফ্রিল্যান্সিং বলা হয়ে থাকে।
এখানে সাধারণত আপনি যে কাজটি করে আয় করবেন সেটিকেই ফ্রিল্যান্সিং কাজ বলে, আর এই কাজটি যখন আপনি আপনার ক্লায়েন্টকে সঠিকভাবে করে দেবেন, করে দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করবেন তখন আপনাকে ফ্রিল্যান্সার বলা হবে।
সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং করাকে বলা হয়ে থাকে স্বাধীন বা মুক্ত পেশা। আপনি ফ্রিল্যান্সিং করবেন আপনাকে কোন প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ করতে হবেনা, আপনি এখানে পুরোপুরি স্বাধীনভাবে মুক্তভাবে নিজের কাজ পরিচালনা করতে পারবেন।
আর তাই সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং কাজটি করাতে আপনাকে বাইরে যেতে হবে না। আপনি ঘরে বসে আপনার হাতে থাকা মোবাইল টি দিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে যথাযথভাবে কাজটি করে আয় করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সাররা সাধারণত তাদের কাজ ঘরে বসেই পরিচালনা করতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং পেশাটা করে আপনি যে কোন প্রচলিত চাকরি থেকেও অনেক বেশি পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
মোবাইল দিয়ে কি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে পারবো:
যারা সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে নতুন হয়ে থাকে তাদের মনে এই প্রশ্নটা থাকে। তবে আপনি আসলে কোন কাজে কেমন দক্ষ সেটা সম্পূর্ণ আপনার উপরে নির্ভর করবে। অনেক ফ্রিল্যান্সিং কাজ রয়েছে যেগুলো খুব সহজ কাজ।
আবার অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো অনেক কঠিন কাজ, তবে আপনি যদি পুরোপুরি চেষ্টা করতে পারেন তাহলে, আপনার পক্ষে তা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
এমন অসংখ্য মানুষ আছে যাদের কোন কম্পিউটার ও ল্যাপটপ নেই অথচ তারা তাদের হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে থাকে। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের এমন অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো আপনি কম্পিউটার ল্যাপটপ ছাড়াই করতে পারবেন।
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার যে সমস্ত উপায়গুলো রয়েছে আমরা তাদের মধ্যে সেরা ৫টি উপায় সম্পর্কে যথাযথ ভাবে আলোচনা করব। তাই চলুন আর দেরি না করে সেই উপায় গুলো কি কি জেনে নেওয়া যাক।
১. ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ করা:
আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে চান তাহলে আপনি ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ করে দেওয়ার মাধ্যমে আয় করতে পারেন। এই কাজটি বর্তমান সময়ে অনেক জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই এই কাজটি করার মাধ্যমে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে যাচ্ছে।
সাধারণত আমরা যখন নিজের কাজকে আরও সহজভাবে করার জন্য বাস্তব জীবনে পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রাখি, ঠিক তেমনি এখন অনলাইনের মাধ্যমে এমন কিছু কাজ পাওয়া যায় যাকে বলা হয় ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট।
যে কাজটি করে আপনি বেশ ভালো পরিমাণে টাকা মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে পারবেন। আমরা আমাদের দৈনন্দিন কাজের মতন অনলাইনের মাধ্যমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করে থাকি।
এই ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজগুলো ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে অনেক বেশি পরিমাণে দেখা যায়। যে কাজগুলো আপনি মোবাইল দিয়েই করতে পারবেন। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার সেরা উপায় গুলোর মধ্যে পড়ে যায় এই ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ।
২. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের কাজ করা:
বর্তমান সময়ে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার পিছনে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার এর কাজ অনেক জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মনে করুন আপনি একটি মোবাইল কিনতে চান, আপনি তো কোন দিক বিবেচনা না করেই হুট করে একটা মোবাইল কিনে নেবে না।
তাই আপনি যে ফোনটি কিনতে চাচ্ছেন সেই ফোনটি পুরো ডিটেলস গুলো জানার জন্য আপনি তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করতে পারেন।
আপনি যে ফোনটি কিনবেন সেই ফোনটি অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে নক দিবেন এবং সাথে সাথে আপনি সমস্ত উত্তর পেয়ে যাবেন। এখন যে প্রশ্নটি থাকবে সেটি হলো যে আপনি এই উত্তরগুলো কার মাধ্যমে জানলেন নিশ্চয়ই কোন মানুষের মাধ্যমে সে আপনাকে আপনার প্রশ্নের পুরোপুরি উত্তর দিয়েছে।
আর যে ব্যক্তি এই কাজটি করছে সেই কাজটির বিনিময় সেই ফোন কোম্পানিতে কে সে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তো আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে আপনি এই কাজটি করে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেন। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করার ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার করে আয় করার বিষয়টি অনেক জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে।
৩. গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয় করা:
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে প্রচুর টাকা উপার্জন করার যে সকল উপায়ে রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি উপায় হলো গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয় করা। এই কাজটি বর্তমান অনেক জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং অনেকেই মোবাইলের মাধ্যমে গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয় করছে।
সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের যে সমস্ত কাজ রয়েছে তার মধ্যে এটি উন্নত ও জনপ্রিয় একটি কাজ।আপনি এই কাজটি বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে করতে পারবেন।
তবে এই কাজটি যদি আপনি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে করতে পারেন তাহলে আপনার কাজটি অনেক ভালো উন্নত হবে। মোবাইলে সাধারণত বেশকিছু অ্যাপ রয়েছে যে অ্যাপ গুলো ব্যবহার করে আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ খুব সহজেই করতে পারেন। অ্যাপ গুলোর নাম নিচে দেওয়া হল।
- Canva
- Adobe Spark
- Adobe Photoshop
- Adobe Sketchbook Pro
- Adobe Illustrator Draw
সাধারণত আমরা এখানে উল্লেখযোগ্য অ্যাপ গুলোর কথা আপনাদের মনে করিয়ে দিলাম। এছাড়াও মোবাইল দিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইন করার আরো নানা ধরনের অ্যাপ রয়েছে। যার মাধ্যমে আপনাকে এই গ্রাফিক ডিজাইনে কার্তিক খুব সহজ করে দেবে। আপনি খুব সহজেই এই কাজটি করতে পারবেন।
৪. কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করে আয়:
আপনি আপনার হাতে থাকা মোবাইলটি দিয়ে খুব সহজেই কনটেন্ট রাইটিং এর কাজ করে আয় করতে পারেন। বর্তমান সময়ে আমাদের ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের যত ধরনের কাজ রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে সম্মানজনক একটি পেশা হলো কনটেন্ট রাইটিং করা।
এই কাজটি করার মাধ্যমে আপনি যথাযথ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আপনাকে এই কাজটি করার ব্যাপারে কোনো রকম ঝামেলায় পড়তে হবে না। আর এই কাজটি আপনার মোবাইলে করার জন্য আপনার মোবাইলে একটি টেক্সট এডিটর অ্যাপ থাকলেই যথেষ্ট।
বর্তমান সময় অনেকেই এই অ্যাপ গুলোর মাধ্যমে কনটেন্ট রাইটিং করে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করে যাচ্ছে। কনটেন্ট রাইটিং পেশাটি ফ্রিল্যান্সিংয়ের একটি অন্যতম পেশা হয়ে থাকে।
আপনি যদি কনটেন্ট রাইটিং করতে চান তাহলে আপনি নিচে উল্লেখ করা অ্যাপ গুলো মাধ্যমে করতে পারেন। এতে আপনার মাধ্যমে কনটেন্ট রাইটিং করাকে আরো সহজ করে দেবে। সেই অ্যাপ গুলো হলো:
- Google Docs
- WPS Office
- Microsoft Office Word.
৫. ওয়েব ডিজাইনের কাজ করে আয়:
আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে আপনার জন্য একটি অন্যতম কাজ হবে ওয়েব ডিজাইনের কাজ করে আয় করা। আপনি একটু চেষ্টা করলেই খুব সহজেই এই কাজটি করে আয় করতে পারেন।
তবে এই কাজটি যেহেতু আপনি মোবাইলের দ্বারা করবে সেহেতু আপনি এর বেসিক বিষয়গুলো দাঁড়া করতে পারবেন। যেমন এইচটিএমএল সিএসএস উল্লেখযোগ্য। আর যদি আপনি প্রফেশনালি কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার একটি পিসি বা ল্যাপটপ থাকতে হবে।
আপনি মোবাইল দিয়ে ওয়েব ডিজাইনের বেসিক কাজগুলো করে আয় করতে চান তাহলে আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে বিভিন্ন কিছু অ্যাপস ডাউনলোড করে নিতে পারেন। যেমন:
- Free Code Camp
- W3 School
- Programming Hero
- Solo Learn ইত্যাদি
এসব অ্যাপ ব্যবহার করে আপনি খুব ভালো ওয়েব ডিজাইনের বেসিক কাজগুলো খুব সহজেই করতে পারবেন। এই অ্যাপ গুলোর দ্বারা কাজ করতে আপনাকে কোন রকম ঝামেলায় পড়তে হবে না।
পরিশেষে:
মোবাইল দিয়ে ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সিং করার নানা উপায় রয়েছে তবে উপরে আমাদের আলোচিত উপায়গুলো মোবাইল দিয়ে ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করার সেরা উপায় হয়ে থাকে। আপনি এই ৫টি উপায় লক্ষ্য করে, একটু চেষ্টা করলেই আপনিও খুব দ্রুত উন্নতি করতে পারবেন।
আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে দয়া করে অবশ্যই আপনি আপনার একটি সাইটে একবার শেয়ার করবেন। আপনার করে একটি শেয়ার আমাদেরকে আরো ভালো আর্টিকেল লিখতে উৎসাহিত করবেন ধন্যবাদ।
You must be logged in to post a comment.