ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হওয়ার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইনফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজ করা অন্য কোন পেশায় কাজ করার মত নয়। এখানে আপনার প্রতিটি সেকেন্ড এর জন্য অর্থ দেয়া হয়। কাজ করতে চাইলেই কাজ করা যায় না।
তাই মূলত প্রফেশনাল হওয়া ছাড়া এই সেক্টরে কাজ করা বা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব নয়। তবে নূতন কেউ কোন কাজ না জানলেও সে যদি ভালােভাবে কাজ শিখে নেয় তবে সে এই সেক্টরে কাজ শুরু করতে পারে।
কিন্তু কি কাজ শিখলে ভালাে হবে, কোথা থেকে শিখলে ভালাে হবে, কিভাবে শিখলে ভালাে হবে তা নিয়ে অনেকের অনেক সংশয় থেকে যায়। তাই মূলত একদম নূতনদের জন্য একটি পরিপূর্ণ পথনির্দেশনা নিয়ে লেখা হলঃ
কোন কাজ প্রফেশনালি শিখার একদম প্রাথমিক পর্যায়ে যে বিষয়গুলাে ভালােভাবে জানা প্রয়ােজন।
১ । শুরুতেই প্রফেশনাল হবেন এই কথা ভাবা উচিৎ নয়।
২। শুরুতেই কোথায়/কিভাবে প্রফেশনালি শিখা যাবে তা ভাবা উচিৎ নয়।
৩। শুরুতেই অন্ধের মত প্রতিনিয়ত কাজ শেখা উচিৎ নয়।
৪। শুরুতেই প্রফেশনালি কাজ করবেন তা ভাবা উচিৎ নয়।
৫। শুরুতেই এই কাজ শিখে উপার্জন করবেন তা ভাবা উচিৎ নয়।
শুরুতেই প্রফেশনাল হবেন এই কথা ভাবা উচিৎ নয়
১। প্রথমেই কি কি কাজ করা যায় তার নাম গুলাে জানুন।
২। নিজের কিছু ধারনা থাকলে ভালাে, না থাকলে প্রতিটি কাজ সম্পর্কে গুগলে এবং ইউটিউবে খুজে দেখুন। গুগলে খুজুন এই কাজ কেন করা হয়। এবং ইউটিউবে খুজুন এই কাজ কিভাবে করা হয়।
৩। প্রথমেই শেখার জন্য পরিকল্পনা করবেন না। সাধারন ভাবে জানুন এবং দেখুন। নিজের কাছেই প্রশ্ন করুন আপনি যা দেখলেন তা আপনার ভালাে লাগে কিনা এবং আপনি বুঝতে পারছেন কিনা ভালােভাবে।
৪। সব কাজ সবার কাছে ভালাে লাগবেনা/ভালাে বুঝবেন না। তাই যে কাজ গুলাে ভালাে লাগে এবং বুঝতে পারছেন সেই কাজ গুলাের ছােট্ট একটি লিস্ট করুন।
৫। এবার চলে আসুন মার্কেটপ্লেসে। তবে কাজ করতে নয়। আসবেন কাজের ব্যাপারে প্রফেশনাল কিছু তথ্য নিতে। যার উপর ভিত্তি করে আপনি কোন কাজটি/কাজগুলাে শিখবেন তার সিদ্ধান্ত নিবেন।
৬। মার্কেটপ্লেস এ অ্যাকাউন্ট করুন। এই অবস্থায় আপনার প্রােফাইল ১০০% না করলেও চলবে।
৭। আপনি আপনার ভালাে লাগার কাজের যে ছােট্ট লিস্টটি করেছেন ওই কাজ গুলাে খুজুন। কাজের ধরন নির্দিষ্ট করে আপনি কাজ খুজতে পারবেন। তাই কাজ গুলাে খুজুন এবং এই ধরনের কাজ কতটা পাওয়া যায়/চাহিদা আছে, কাজের মূল্য কেমন, কতজন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে তা দেখুন।
একটি দুইটি নয়, বরং প্রতি ধরনের কাজের ৫০-১০০ টি জব পােস্ট দেখুন। আপনার ছােট্ট লিস্টে যে সকল কাজ গুলাে রয়েছে তার সব ধরনের কাজের জব পােস্ট গুলাে দেখুন।
৮। সব কিছু দেখার এবং বােঝার পর একটি অথবা আরাে বেশি (যদি আপনি চান) কাজ নির্ধারণ করুন যে আপনি কোন কাজটি শিখবেন।কাজ শিখতে গিয়ে যেভাবে পরিকল্পনা করবেন –শুরুতেই কোথায়/কিভাবে প্রফেশনালি শিখা যাবে তা ভাবা উচিৎ নয়?
১। প্রথমেই কোথা থেকে কাজ শিখলে ভালাে হবে তা নিয়ে চিন্তিত হবেন না। ঘােরাঘুরি শুরু করবেন না। মূলত প্রাথমিক শিক্ষাগুলাে আপনি যে কোন জায়গা থেকে নিতে পারেন। গুগলে খুজুন। যে কোন একটি সাইট থেকে প্রাথমিক শিক্ষা নিন।
২। সাইটে কতটা ভালাে তথ্য দেয়া আছে তা নিয়ে সংশয়ে থাকার প্রয়ােজন নেই।
৩। প্রথম দিন-ই অনেক উৎসাহ নিয়ে কাজ শিখতে নেমে পড়বেন না।
৪। সর্বপ্রথম আপনি যে কাজটি করতে যাচ্ছেন, কাজের পুরাে কোর্সটি সম্পর্কে জানুন। যেখানেই কাজ শিখুন না কেন পুরাে কোর্স এর একটি সিলেবাস দেয়া থাকে।
৫। আবারাে বলছি প্রথমদিন-ই অনেক উৎসাহ নিয়ে কাজ শিখতে নেমে পড়বেন না।
৬। সিলেবাস এবং কাজের পুরাে বিষয়গুলাে সাইট থেকে একটু ঘেঁটে দেখুন যে কোন টপিকটি কত বড়, ইত্যাদি। ভিডিও হলে টেনে টেনে দেখুন প্রয়ােজনে, আর শুধু লেখা হলে পাতা লাফ দিয়ে লাফ দিয়ে দেখুন। আমি দেখতে বলেছি। শিখতে বলিনি।
৭। আপনি মােটামুটি একটি ধারনা পেয়েছেন যে কাজটি শিখতে গেলে আপনার সিলেবাস এ কি কি আছে এবং সিলেবাসের কোন বিষয়গুলাে কেমন বড় অথবা ছােট। এবার এই চিন্তা গুলাে থেকেই পুরাে সিলেবাসটিকে ভাগ করে নিন/ টপিক সিলেবাস অনুযায়ী অনুসরন করুন।
এবং একটি পরিকল্পনা করে নিন প্রতিটি ভাগের সময় এর ব্যাপারে। তবে সময় নির্ধারণ এর ক্ষেত্রে কিভাবে কাজ শেখা উচিৎ তা জেনে নেয়া ভালাে।
শুরুতেই অন্ধের মত প্রতিনিয়ত কাজ শেখা উচিৎ নয়।
১। আপনার পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি একটি ভাগ করে শুরু করুন। সর্ব প্রথম আপনি ওই ভাগের/টপিকের পুরাে ভিডিওটি দেখুন মন দিয়ে/পুরাে লেখাটি পড়ুন মন দিয়ে। সাধারনত আমরা যেভাবে মুভি দেখি/গল্প পড়ি। এর মধ্যে আপনি অনেক ধারনা পেয়ে যাবে এই ভাগের ব্যাপারে।
২। যেহেতু একবার দেখেছেন/পড়ছেন তাই আপনার মাঝে মােটামুটি একটি ধারনা রয়েছে। মূলত কাজ শেখার অধ্যায়টি আপনি নিজের অজান্তেই শেষ করেছেন। এবার আবার এই ভাগ/টপিক টি প্রথম থেকে শুরু করুন। দেখুন/পড়ুন এবং পাশাপাশি নিজে নিজে করতে চেষ্টা করুন।
৩। আপনি কোর্সটির মােটামুটি ১০% অথবা ২৫% অথবা ৫০% শিখে ফেলেছেন। পাশাপাশি নিজে নিজে চর্চা করেছেন। এখন মােটামুটি ভাল একটি ধারনা আছে। এবার টপিক অনুযায়ী আলাদা আলাদা ভাবে চর্চা করে কাজ শিখলেও এই ১০% অথবা ২৫% অথবা ৫০% এর সব কিছু দিয়ে কিছু একটি করার চেষ্টা করুন।
আমি বলছিনা পুরােপুরি একটি কাজ করতে। শুধুমাত্র যা শিখেছেন তা দিয়ে গােছান একটি কাজ যতটুকু করা যায়। এ জন্য ভালাে একটি উদাহরন হচ্ছে – ৪ কি.মি রাস্তার মধ্যে ১ কি.মি যেতে পারলে অতটুকুই যান। শুধু নিজেকে তুলে ধরুন যে আপনি যতটুকু শিখেছেন তা আলাদা আলাদা টপিক অনুযায়ী কাজ জানলেও, চাইলে আপনি তার সবকিছু মিলিয়েও কাজ করতে পারেন।
৪। এভাবে একটি নির্দিষ্ট ভাগ পর পর আগের সব কিছু মিলিয়ে মিলিয়ে কিছু একটি করার চেষ্টা করুন।
৫। পুরাে সিলেবাসটি সম্পূর্ণ হলে এবার পুরাে একটি কাজ করার চেষ্টা করুন।
শুরুতেই প্রফেশনালি কাজ করবেন তা ভাবা উচিৎ নয়?
১। কাজ শেখা শেষে যে ক্লায়েন্ট এর কাজ করতে হবে এমন চিন্তা করবেন না। এখনাে অনেক পথ বাকি।
২। আবারাে বলছি পুরাে সিলেবাসটি সম্পূর্ণ হলে এবার পুরাে একটি কাজ করার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন আপনি পুরাে সিলেবাস শেষ করেছেন কিন্তু পুরাে কাজটি শিখেননি।
৩। আপনি নিজে থেকে কিছু করতে পারেন বা এই ধরনের কাজ করে এমন ব্যক্তিকে অনুরােধ করুন যে আপনাকে কিছু একটা করতে বলা জন্য। তবে প্রফেশনালি কোন কাজ নয়।
৪। আপনি টেস্ট হিসেবে কিছু করুন। এবং দেখুন কোথায় কোথায় আপনার ঘাটতি রয়েছে। ওইগুলাে গুগল, ইউটিউব এ খুজে দেখুন। কাজ শুরু করার পূর্বে এবং শুরু করার মুহূর্তে যা করনীয় শুরুতেই এই কাজ শিখে উপার্জন করবেন তা ভাবা উচিৎ নয়?
১। শুরুতেই আপনি মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট করেছিলেন। ওই অ্যাকাউন্টটির প্রােফাইল ১০০% না করে থাকলে তা করে ফেলুন।
২। এবার আপনার কাজ সম্পর্কিত জব পােস্ট গুলাে দেখতে থাকুন। শুরুতে দেখবেন আপনার এই কাজের মধ্যে অনেক কিছুই আছে আপনার অজানা। জব পােস্ট গুলাে দেখে দেখে বের করুন আপনার আরাে কি কি জানা প্রয়ােজন। ওগুলাে গুগলে, ইউটিউবে খুজুন। করার চেষ্টা করুন।
৩। জব পােস্ট দেখার মাঝে দেখুন এমন কোন জব আছে কিনা যার সম্পূর্ণ কাজটি আপনি আসলেই করতে পারবেন। যদি এমন হয় তবে আপনি এপ্লাই করুন। চেষ্টা করুন কাজটি পাওয়ার।
৪। শুরুর দিকে অনেকটা সময় ধরে আপনার স্কিল বাড়াতে হবে ভালাে কাজে এপ্লাই করার মত নিজের অবস্থান তৈরি করতে এবং কাজ করতে। এখানে যে বিষয়গুলাে আলােচনা করা হয়েছে তা শুধুমাত্র কিভাবে শুন্য থেকে কাজ সম্পর্কিত ক্ষেত্রে নিজেকে প্রফেশনাল করে তুলবেন।
এছাড়াও যে বিষয়গুলাে আলােচনা করা হয়নি কিন্তু তা অতীব গুরুত্ব বহন করে তার মধ্যে
১। আপনার ইংলিশে মােটামুটি দক্ষতা থাকা প্রয়ােজন।
২। গুগল এবং ইউটিউবে খুজে দেখে শিখার মত ধৈর্য থাকা প্রয়ােজন।
৩। কাজ খোঁজা শুরু করার মুহূর্ত থেকে আপনার প্রােফাইলটি প্রফেশনালি সাজানাে প্রয়ােজন।
৪। কাজ খোঁজা শুরু করার মুহূর্ত থেকে আপনার কভার লেটারটি প্রফেশনালি লেখা প্রয়ােজন।
৫। কাজ খোঁজা শুরু করার মুহূর্ত থেকে ক্লায়েন্টকে বােঝা প্রয়ােজন।
৬। এবং কাজ খোঁজা শুরু করার পূর্ব বা পর থেকে কাজ নিজেকে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পরবর্তী সময়ের জন্য ভালাে একটি পরিকল্পনা থাকা প্রয়ােজন। এবং উপরে বার বার বলার পর ও সর্বশেষ একটি কথা আবারাে বলছি।
গুগল (সার্চ ইঞ্জিন) এবং ইউটিউব কে ব্যবহার করুন প্রতিনিয়ত। আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর এখানেই রয়েছে।এখানে মূলত কাজ সম্পর্কে নিজেকে প্রফেশনাল হিসেবে গড়ে তােলার কথা আলােচনা করা হয়েছে।
সুখবর
JibonBook এ শুধু মাত্র রেফার করে কোনো রকমের স্কিল ছাড়াই প্রতি মাস এ ইনকাম করুন ৩০০ ডলার পৰ্যন্ত।
এখনই রেফার করা শুরু করুন আর প্রতি মাস এ ইনকাম করুন ৩০০ ডলার।
তাছাড়া রয়েছে আর ও ভিন্ন রকমের ইনকাম এর সুযোগ। আপনি একাউন্ট করার ২০ সেকেন্ড পর থেকে পোস্ট , লাইক , কমেন্ট এবং শেয়ার করে ইনকাম করতে পারবেন।
বিস্তারিত
ওয়েবসাইট : jibonbook.com
You must be logged in to post a comment.