ফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করার উপায়

আসসালামুআলাইকুম, প্রিয় বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন?

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করেন ঘরে বসে টাকা ইনকাম করা যায়।সাথে ফ্রিল্যান্সিং এর গাইড লাইন।

ভূমিকা:-

গত কয়েক বছর আগে ও আমাদের কাছে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় কথাটি ছিল একটি অপরিচিত কথা।এখন ২০২১ সাল সময়ের সাথে সাথে সব কিছু পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তন হয়েছে আমাদের কর্মসংস্থানের।আমাদের নিত্যদিনের কর্মসংস্থানে পরিনত হয়েছে অনলাইন।

বর্তমানে ছোট বড় সবাই অনলাই ব্যবহার করে থাকে।  এখন ফ্রিল্যান্সিং কথাটির সাথে আমরা সবাই বেশ পরিচিত। কিন্তু বর্তমানে শুধু আমাদের দেশেই নয় পৃথিবী অনেক দেশের মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসে ইনকাম করছেন।

ঘরে বসে অনলাইনের সাহায্যে পৃথিবীর যেকোন দেশের ছোট বড় যেকোন কাজ করে ইনকাম করাই মূলত ফ্রিল্যান্সিং।

বাংলাদেশের চাকরির বাজার যেখান খুব নাজুক অবস্থায় আছে।আমাদের দেশের প্রায় ৪৭% শিক্ষিত জনগোষ্ঠী চাকরির অভাবে বেকার গুরছে।

বর্তমানে তারা তাদের বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির পথ হিসাবে সম্মানজনক পেশা হিসাবে বেচে নিচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্ত পেশাকে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শত কোটি টাকার কাজ করানো হচ্ছে বাংলাদেশের দক্ষ বেকার জনগোষ্ঠীর দ্বারা।ফ্রিল্যান্সিং খাতে বাংলাদেশ বেশ ভালো অবস্থায় আছে।বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ৫ লক্ষাদিক।

অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং হলো, যাতে কাজ গুলো ক্লায়েন্ট অনলাইনের মাধ্যমে আপনার কাছে দেবে।আপনি নিজের দক্ষতা দিয়ে যে কাজে চুক্তি বদ্ধ হয়েছেন, সেই কাজ ভালোভাবে সর্ম্পূন করে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লায়েন্টের কাছে পৌছে দিবেন।

আর ক্লায়েন্ট আপনার পেমেন্ট অনলাইনের মাধ্যমে পরিশোধ করবে।

ফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসে আয় কারার কথা চিন্তা করলে আমাদের সবাই মনে অনেক ধরনের প্রশ্ন জাগে যেমন:-

* ফ্রিল্যান্সিং কেন করব? কিভাবে করব?

* কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করব?

* কিভাবে কাজ যোগার করব?

* ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যাবে?

ইত্যাদি প্রশ্ন সব সময় আমাদের মাথায় আসে। ত আসা করছি আমার আজকের এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত ভালো ভাবে পড়লে ফ্রিল্যান্সিং সর্ম্পকে আপনার মনে যত প্রশ্ন আছে সব দুর হয়ে যাবে ইনসাআল্লাহ।

ফ্রিল্যান্সিং করে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করা গেলেও ফ্রিল্যান্সিং কাজটি কিন্তু মুটেও সহজ নয়।তবে ভয় পাবেন না। একবার নিজেকে একজন ফ্রল্যান্সার হিসাবে গড়ে তুলতে পারলে এখান থেকে আপনি প্রতি মাসে বেশ বড় অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আমাদের দেশে অনেক চাকরিজীবী মানুষ আছেন যারা তাদের চাকরির পাশাপাশি বাড়তি ইনকামের জন্য ফ্রিল্যান্সিংকে বেঁচে নিয়েছেন।আবার অনেক গৃহিনী তাদের সংসারের কাজের ফাঁকে ফ্রিল্যান্সিং করে অনেক টাকা ইনকাম করছেন।

আপনি যদি আমাকে ফ্রল্যান্সিং এর লাইফ সর্ম্পকে প্রশ্ন করে, আমি আপনাকে বলব আগে একজন সফল ফ্রিল্যান্সারে সফলতা পেছনের স্ট্রাগল সর্ম্পকে জানুন।

কারন জীবনের কোন সফলতার গল্পের পেছনে আনন্দ থাকে না যা থাকে তা হলো স্ট্রাগল। স্ট্রাগল ছাড়া জীবনের কোন কাজেই আপনি সফলতা লাভ করতে পারবে না।

একটি সফলতার গল্পের পেছনে থাকে রাতের পর রাত জেগে কাজ শেখা,ইউটিউবে কাজের টিউটোরিয়াল দেখা,কাজ গুলোর প্রাকটিস করা।, বই পড়া ধৈর্য ধরে মাসের পর মাস কাজ করা ইত্যাদি।

আমাদের দেশের চাকরির বাজার এমনিতে ও বেশ ভালো নয়, তাই একবার ভাবুন ফ্রিল্যান্সিং এর কথা এখানে আমেরিকার একটি কোম্পানিতে দুই সপ্তাহ কাজের জন্য আপনি ১৫ থেকে ২০ ডলার পর্যন্ত পেতে পারবেন।

আমাদের অনেকে মনেই প্রশ্ন হতে পারে কেন ফ্রিল্যান্সিং করব?কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করব?  ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে কতো টাকা ইনকাম করতে পারব?ইত্যাদি।

তাই আমার আজকের এই পোষ্টে আপনাদের মনে থাকা সব ধরনের প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা করব।

* ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন:-

ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন?  কারন ফ্রিল্যান্সিং করার সবচেয় বড় সুবিধা হলো এই কাজটি আপনি ঘরে বসে করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং এর অর্থ হলো মুক্ত পেশা। যার কোন নির্দিষ্ট স্থান বা সময় থাকবে না। যার কারনে আপনি ঘরে বসে ইচ্ছে মতো সময়ে কাজটি করতে পারবেন।এটি কি ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য একটি বড় কারন নয়?

মনেকরেন,আপনি কোন অফিসে চাকরি করেন। তখন আপনাকে প্রতিদিন সময় মতো অফিসে যেতে হবে। আবার সময় মতো সব কাজ শেষ করতে হবে।কাজ শেষ করে আপনাকে বাসায় ফিরতে হবে।

কিন্তু ফ্রল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে আপনি সুবিধা পাবেন ঘরে বসে আপনার ইচ্ছে মতো কাজ করার।ফ্রিল্যান্সিং করলে আপনাকে সময় মতো আর অফিসে যাওয়ার কষ্ট করতে হবে না।আপনি ঘরে বসে কাজ করতে পারবেন।

আমার মনে হয় আপনি অফিসে গিয়ে মাসে যে বেতন পান তার দ্বিগুন টাকা আপনি ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করতে পারবেন।

ত আপনার কি মনে?  এই কারন গুলো কি যথেষ্ট না ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য

* কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন:-

ফ্রিল্যান্সিং মানে হলো মুক্ত পেশা বা ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে কাজ করে টাকা ইনকাম করা।কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন তারা জানেন না কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে হয়।তারা জানে না কিভাবে অনলাইনে কাজ করতে হয় আর কোন ধরনের কাজ করতে হয়।

তাই তারা ফ্রিল্যান্সিং করার  কথা চিন্তা করে ও আর ফ্রিল্যান্সিং তারা করে উঠতে পারে না।

আপনি যদি ভেবে থাকে সাধারন কম্পিউটার আর ইন্টারনেট সর্ম্পকে জানলেই আপনি ফ্রিল্যান্সিং করতে পারবেন। তবে আপনি ভূল ভাবছেন।

আপনি যদি ধরে থাকেন ফ্রিল্যান্সিং করা মানে ঘরে বসে শুধু কম্পিউটার টিপাটিপি করা। তাহলে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে আপনার ধারনা বদলান।

বাহিরে অফিসে চাকরি করার থেকে ঘরে বসে চাকরি করা টা সহজ হতে পারে,কিন্তু ঘরে বসে এই কাজ পাওয়াটা কিন্তু বেশ কঠিন একটি কাজ।

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য প্রথমে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং এর যেকোন কাজ শিখতে হবে।ফ্রিল্যান্সিং এ কিন্তু অনেক ধরনের কাজ আছে। আপনি যে কাজ করতে চান প্রথমে সেই কাজ শিখে নিতে হবে।কাজ গুলো শিখার জন্য আপনি কোর্স  করে নিতে পারবেন।

এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসবে কোন কাজ দিয়ে আমি শুরু করব।উত্তরে বলব আপনি অনেক ধরনের কাজ দিয়েই শুরু করতে পারবেন।কারন বর্তমান ফ্রিল্যান্সারদের অনলাইনে কাজের কোন অভাব নেই।

তবে আপনাদের জন্য আমি কয়েকটি কাজর নাম বলে দিচ্ছি যে গুলো শিখে আপনি কাজ  শুরু করতে পারবেন।

১/ ওয়েব ডিজাইন।

২/ ওয়েব ডেভেলপিং।

৩/ গ্রাফিক ডিজাইন।

৪/ ভিডিও এডিটিং।

৫/ ডিজিটাল মার্কেটিং।

এই ধরনের কাজ গুলোই অনলাইনে বেশি করা হয়। তাছাড়া ও অনলাইনে অনেক ধরনের কাজ আছে। যে গুলো শিখে আপনি কাজ শুরু করতে পারবেন।

*কিভাবে কাজ যোগার করব:-

আপনি যদি ভালোভাবে কাজ শিখে করতে পারেন, তবে কাজ যোগার করাটা আপনার জন্য কোন বেপারই না।

অলাইনে আপ ওয়ারক,ফ্রিল্যান্সার ডট কম,ফাইভার এর মতো হাজার হাজার মার্কেটপ্লেস রয়েছে, যেখানে আপনি আপনার নিজের যোগ্যতায় কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন।

মাত্র ২থেকে ৩ মিনিট সময়ে এসব মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট খুলে কাজ করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

তবে কাজ না জানলে আপনি কাজ পাবেন না। কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে ভালো ভাবে কাজ শিখে নিতে হবে।

* ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যাবে:-

ফ্রিল্যান্সিং করার প্রথমেই সবার মনে প্রশ্ন জাগে যে,আমি ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে কত টাকা ইনকাম করতে পারব।উত্তরে আমি বলব, আপনার দক্ষতা অনুযায়ী আপনি ইনকাম করতে পারবেন।

অনলাইনে কাজ করলে আপনি কোন দেশ থেকে কাজ করছেন এটি দেখার বিষয় নয়।দেখার বিষয় আপনি কতটুকু দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারেন।

মানে অফলাইন থেকে অনলাইনে আপনার কাজের দক্ষতা দেখিয়ে বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।তবে আপনি কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন সেটি সব সময় আপনার কাজের দক্ষতার উপর নির্ভশীল।

ধরেন, আপনি বাংলাদেশের কোন কোম্পানির লোগো ডিজাইন করে দিলে তবে আপনি বাংলাদেশের রেটে টাকা পাবেন। কিন্তু আপনি যদি একি কাজ অনলাইনে আমেরিকার কোন কোম্পানির লোগো ডিজাইন করে তবে সেখানে আামেরিকান রেটে টাকা পাবেন।

তাহলে বুঝতেই পারলেন অফলাইন থেকে অনলাইনে আপনার কাজের দক্ষতা দেখি বেশ ভালো অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আমি আপনাকে এটি বলব না যে ফ্রিল্যান্সিং করলেই আপনি লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।হ্যাঁ, করতে পারবেন আপনার দক্ষতা দেখিয়ে। 

তার জন্য আপনি প্রথমে কাজটি ভালো ভাবে শিখে কাজটি শুরু করেন, আসা করছি আপনি ও ইনকাম করতে পারবেন।

* ফ্রিল্যান্সিং কাদের জন্য:-

* যারা কাজ শিখার ধৈর্য রাকে।

* যাদের অতিরিক্ত ইনকামের লোভ নেই।

* যারা শটকাটে টাকা ইনকাম করতে চায় না।

* যাদের কাজ শেখার প্রবনতা আছে।

*যারা সৎ পথে টাকা ইনকাম করতে চায়।

*ফ্রিল্যান্সিং এ যারা না আসাই ভালো:-

* যারা সহজে টাকা ইনকাম করার পথ খুজছেন।

* যারা ভাবছেন কাজ শুরু করার সাথে সাথে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

* যারা ফ্রিল্যান্সিং কে সহজ কাজ মনে করেন।

* যারা কাজের চেয়ে টাকাকে মূল্যায়ন করবে বেশি।

* ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কিছু ভুল ধারনা:-

* মাত্র ২ মাসে কোর্স করেই ঘরে বসে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করা যায়।

* ফ্রিল্যান্সিং মানেই SEO।

* ক্যাপচা এন্ট্রি, পিটিসি এগুলো ফ্রিল্যান্সিং কাজ।

* কোন ট্রেনিং  সেন্টারে কোর্স করলেই সফল হওয়া যাবে।

* ফ্রিল্যান্সিং সহজ কাজ যেখানে মাত্র  ২- ৩ ঘন্টা কাজ করে হাজার টাকা ইনকাম করা যায়।

উপসংহার:-

ত বন্ধুরা এই ছিল আমাদের আজকের পোষ্টের বিষয়। আসা করছি ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আপনাদের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন যেমন, ফ্রিল্যান্সিং কেন করব, কিভাবে করব,কোন কাজ দিয়ে শুরু করব, মাসে কেমন টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

সমস্ত বিষয়ে আমি আপনাদের বেসিক ধারনা দিয়ে দিলাম।ত আসা করছি আমার আজকের পোষ্ট পড়ে আপনারা উপকৃত হতে পারবেন।

আর ফ্রিল্যান্সিং সর্ম্পকে যদি কোন প্রশ্ন থাকে বা আমার আজকে এই পোষ্ট নিয়ে যদি কিছু জানার থাকে তবে অব্যশই কমেন্ট করে আমাকে জানিয়ে দেবেন।

আমি ইনসাআল্লাহ আপনাদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

ত আজ এই পর্যন্তই বন্ধুরা।সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। নিরাপদে থাকবেন।আর আমার জন্য দোয়া করবেন।

আল্লাহ হাফেজ।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

লেখক সম্পর্কেঃ

আস্সালামু আলাইকুম, আমি জহুরা। বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অর্নাস করছি। এবং পাশাপাশি একজন কন্টেন্ট রাইটার হিসাবে কাজ করছি।