ফ্রিল্যান্সিং জনপ্রিয় হওয়ার কারণ?বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় পেশার মধ্যে একটি হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং পেশা হলো স্বাধীন পেশা।
এখানে কেউ যদি মনে করে সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কোথাও না গিয়ে শুধুমাত্র ঘরে বসেই ইনকাম করবে তাহলে তার জন্য উপযুক্ত পেশা হলো ফ্রিল্যান্সিং।
এই পেশাতে কেউ যদি চায় আমার চাহিদা অনুযায়ী আমি যত চাইবো তত ইনকাম করতে পারবো কিন্তু কারো অধীনে থেকে নয়, তার জন্যই ফ্রিল্যান্সিং।
নারীদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং!
নারীদের ফ্রিল্যান্সিং পেশায় অনেক সুবিধা রয়েছে। যেমনঃ
১. নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে যাওয়ার কোনো চাপ থাকে না, ইচ্ছে মতো সময় বের করে কাজ করতে পারে।
২.ফ্রিল্যান্সিং পেশাকে শখ হিসেবে নিতে পারে। যেমনঃ ফ্রিল্যান্সিং এ আর্ট করা, কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি কাজ নারীরা করে ইনকাম করতে পারে।
৩.এখানে কাজের স্বাধীনতা অনেক। যেকোনো সময় বের করে ইচ্ছে মতো কাজ করতে পারে।
৪.নারীদের জন্য পর্দা মেইনটেইন করে কাজ করতে পারে। এই কাজের জন্য বাইরে যেতে হয় না।
ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে!
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর চাহিদা ও অনেক বেশি কারণ এখন কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ছাড়াও মোবাইল দিয়েও ফ্রিল্যান্সিং এর ৭০% কাজ করা যায়।
যেমনঃ কন্টেন্ট রাইটিং, Canva ডিজাইন, ফেইসবুক মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, Instagram মার্কেটিং, Kinemaster ভিডিও এডিটিং,টুইটার মার্কেটিং, তাছাড়াও এম এস ওয়ার্ড, এম এস পাওয়ারপয়েন্ট এবং এম এস এক্সেল এর কাজও অনায়াসে মোবাইল দিয়ে করা যায়।
কারন, বর্তমানে মোবাইলে উন্নত মানের টেকনোলজির ব্যবহারের ফলে ফ্রিল্যান্সিং রিলেটেড অনেক কাজই করা যায়।
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেটা হলো ইচ্ছাশক্তি ও ধৈর্য। তারপর হলো মোবাইল বা কম্পিউটারের যেকোনো একটি বিষয়ের উপর নিজেকে দক্ষ করার মাধ্যমে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ক্যারিয়ার করা সম্ভব।
নিজেই কাজের বস! তাছাড়া কেউ যদি মনে করে সে নিজেই নিজের কাজের বস হবে তাহলে ফ্রিল্যান্সিং কে ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়া যায়।
এই কাজে কোনো প্রতিষ্ঠানের অধীনে থেকে তাদের দেওয়া সময়ে কাজ করতে হয় না বরং নিজেই যেকোনো সময়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে।
অনেক চাকরি ক্ষেত্রে দেখা যায় কাজের চাপ অনেক বেশি কিন্তু সেই হারে বেতন খুব কম। আর ফ্রিল্যান্সিং হলো মুক্ত পেশা যেখানে নিজের ইচ্ছে চাহিদামত কাজ করে ইনকাম করা যায়।
কারণ ফ্রিল্যান্সিং হলো একটি মুক্ত পেশা, যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে পারবে।
ফ্রিল্যান্সিং কাজে কোনো শুধু মোবাইল বা পিসি আর ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে যেকোনো জায়গা থেকে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করা যায়।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজের ধরন!
ফ্রিল্যান্সিং এর উপার্জন হলো পরিবর্তনশীল।একজন ফ্রিল্যান্সার কতগুলো ক্লায়েন্ট পেলো এবং কতগুলো প্রজেক্টে শেষ করলো সেটার উপর নির্ভর করে ফ্রিল্যান্সারদের উপার্জন।
একজন ফ্রিল্যান্সার ইচ্ছে করলেই তার সময় এর উপর নির্ভর করে বেশি বা কম উপার্জন করতে পারে।
তার পরিশ্রমের উপরেই তার ইনকাম নির্ভর করে। সে যত সময় দিবে ততই তার ইনকামের পরিমাণ বাড়বে।
ফ্রিল্যান্সিং কি হালাল না হারাম?
প্রায়ই অনেকে বলে থাকে যে, ফ্রিল্যান্সিং হালাল না হারাম? এই বিষয়ের উপর অনেকেই দ্বিধায় থাকে যে এটা করা কি ঠিক হবে? এটা কি হালাল?
উত্তরে বলব যে, হ্যাঁ, মৌলিকভাবে ফ্রিল্যান্সিং হালাল। তবে দেখতে হবে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজটা করছেন।
অনেকে আছে যে বিভিন্ন মদের বা নেশাজাতীয় ডিজাইন করে ইনকাম করে, এই দিক থেকে দেখতে গেলে ফ্রিল্যান্সিং হারাম।
আর অনেকে আছে যারা বিভিন্ন পন্যের ডিজাইন যেমনঃ খাবার, মানুষের দৈনন্দিন জীবনে পন্যের ইত্যাদি ডিজাইন করে ইনকাম করে, এই দিক থেকে ফ্রিল্যান্সিং হালাল।
যে কাজগুলো ফ্রিল্যান্সিং এ হারাম!
১. যে ক্লায়েন্ট আপনাকে কাজটি দিবে তার কাজটি যদি আপনি আমানত হিসেবে করে দিতে না পারেন, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং হারাম। তাই একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে যদি আমানত স্বরুপ আপনার ক্লায়েন্টের কাজ করে দেন তখন ফ্রিল্যান্সিং হালাল।
২. ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে কোনো জালিয়াতি করা যেমনঃ অন্যজনের কন্টেন্ট অনুমতি ছাড়া কপি পেস্ট করা, ক্লায়েন্টের সাথে খারাপ ব্যবহার ইত্যাদি করলে ফ্রিল্যান্সিং হারাম। তাই একজন দায়িত্বশীল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কোনো জালিয়াতি করা যাবে না।
৩. ফ্রিল্যান্সিং এর কাজের ক্ষেত্রে টাকার লেনদেনের ব্যপারে দূর্নীতি করলে ফ্রিল্যান্সিং হারাম। তাই টাকা লেনদেনের বিষয়ে সৎ থাকতে হবে।
৪. মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করলে সেটা হারাম হবে। যেমনঃ কোনো কাজ না পারলেও ক্লায়েন্টের থেকে সেই কাজের অর্ডার নেওয়া কিন্তু পরে সেই কাজ না দিতে পারা।
৫. কারো লেখা নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া, কপি পোস্ট করা ইত্যাদি কাজ ফ্রিল্যান্সিং এ হারাম। সুতরাং কারো লেখা অনুমতি ব্যতীত পোস্ট করা যাবে বা কপি পোস্ট করা ও যাবে না।
অন্যান্যঃ
বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ ১৫- ২০ বছর পড়াশোনা করেও বেকার থাকে,কিন্তু ৪/৫ মাসের ফ্রিল্যান্সিং স্কিলের কোর্স করেও সহজেই স্বাবলম্বী হওয়া যায়।
সুতরাং পড়াশোনার পাশাপাশি একজন স্টুডেন্টকে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য তার স্কিলকে ডেভেলপ করা উচিত যাতে সে চাকরি না পেলেও ফ্রিল্যান্সিং এ ইনকাম করতে পারে।
You must be logged in to post a comment.