ফ্রিল্যান্সিং একটি একক একক করে কাজ করার সিস্টেম যেখানে কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে আপনি সম্পর্ক স্থাপন না করেই আপনার নিজের কাজকর্ম নিয়ে ইনকাম করতে পারেন।
এখন দেশে বিদেশে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে টাকা উপার্জনের সুযোগ আছে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে।আজ জানবো এই ফ্রিল্যান্সিং পেশা ভবিষ্যতে কি রুপ ধারন করবে?
ফ্রিল্যান্সিং একটি সাধারণ পেশা হিসাবে প্রচলিত হচ্ছে এবং এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এর ভবিষ্যতে সম্ভবত এই পেশার চাহিদা আরও বাড়বে। এখানে কয়েকটি কারণ উল্লেখযোগ্য যা ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যতে এর পথে বেড়ে চলবেঃ
প্রযুক্তি উন্নয়নঃ প্রযুক্তি সেক্টরের উন্নয়ন দেখা দেয় যে আরও কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এর পরিবেশ সবার কাছে সহজলভ্য হচ্ছে।
এতে মানুষ এখন আর একটি সংস্থার ভেতরে বসে না থাকে বরং ঘরের কক্ষে বসে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং এ বেশিরভাগ কাজই হল ইন্টারনেট ব্যবহার করে করা হয়।
স্বাধীনতাঃ ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে বড় উপকার হল এর স্বাধীনতা। ফ্রিল্যান্সার নিজের সময় নির্বাচন করে কাজ করে নিজে নিজের স্কিল উন্নয়ন করতে পারে।
যেভাবে শুরু করবেন ফ্রিল্যান্সিং
ফ্রিল্যান্সিং এ শুরু করার জন্য আপনি সম্পূর্ণরূপে যে কোন একটি কাজ বাছাই করতে পারেন, তবে আপনি সেই কাজে যে স্কিল আবশ্যক তাকে নিজে উন্নয়ন করতে হবেন।
যেমন, আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্টে আগ্রহী থাকেন, তবে আপনাকে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত প্রোগ্রামিং ভাষা, ফ্রেমওয়ার্ক, ডাটাবেস এবং ওয়েব সার্ভার এর জ্ঞান থাকতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আরেকটি উপায় হলো আপনার যদি কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকে, তবে সেক্টরের জন্য স্কিল অর্জন করতে ইন্টারনেটে উপস্থিত বিভিন্ন রিসোর্স থেকে শিখতে পারেন।
আপনি অনলাইনে ফ্রি টিউটোরিয়াল, উপদেশ, ভিডিও টিউটোরিয়াল এবং মোটিভেশনাল ব্লগস খুঁজে পেতে পারেন।
আপনি যদি আঁকা আঁকি পছন্দ করেন তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে পারেন। আপনি যদি অংকে খুবই ভালো হন তাহলে প্রোগ্রামিং শিখতে পারেন।
কাজ শেখার পর কোথায় কাজ পাবেন?
আপনি সত্যিই সহজে কাজ পাওয়ার জন্য আপনার এলাকার ফ্রিল্যান্সারদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন এবং কিছু রেফারেন্স পাওয়া যেতে পারে।
আপনি আপনার এলাকার ফেসবুক গ্রুপগুলোতে যোগ দিতে পারেন বা লিংকডইনে আপনার সম্পর্কে তথ্য দিয়ে পোস্ট করতে পারেন। এছাড়াও প্রথম কাজ পাওয়ার জন্য আপনি :
- Fiverr
- Freelancer.com
- Upwork ইত্যাদি
এই প্ল্যাটফর্ম গুলোতে আপনার প্রোফাইল ভালোভাবে তৈরি করতে পারেন এবং নিজের স্কিল এবং কাজ সংক্রান্ত তথ্য উল্লেখ করতে পারেন।
এছাড়াও আপনি এই প্ল্যাটফর্ম গুলোতে বিভিন্ন কাজের জন্য এপ্লাই করতে পারেন এবং একটি কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে কম মূল্যে কাজ করতে হতে পারে।
প্রথম কাজটি সম্পন্ন করার পর আপনি আপনার পূর্ববর্তী কাজ সম্পর্কে গ্রাহকের রিভিউ পেতে পারেন
ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কী?
ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল এবং এর সম্ভাবনা দিন দিন বেড়ে চলেছে। বিশ্ব বাজারে ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা এর সাথে সাথে বাড়ছে এবং এর প্রভাব দেশের বাজারেও বেড়ে চলছে।
ফ্রিল্যান্সিং এর একটি সুবিধা হলো এর সমস্ত কাজ ভিত্তিক হওয়া এবং কাজের জন্য অতিরিক্ত খরচ নেই। তাই ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানের উভয়ই ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে কাজ করার জন্য উদ্বোধন করছে।
দেশের আইটি মন্ত্রণালয়ের তথ্য মূলত প্রমাণ করে যে এখন ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে দিন দিন বেশি লোক আসছে এবং এটি আমাদের দেশের আইসিটি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিং এর সংখ্যা ৬ লক্ষ্য ৫০ হাজার এরও বেশি।
অন্যান্য দেশের কি অবস্থা?
২২ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার আছে ইউরোপে। ৫৯ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার আছে যুক্তরাষ্ট্রে। ১৫ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার আছে ভারতে। ২.৭ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সার আছে কানাডায়।
ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল হওয়া সত্ত্বেও, মার্কেটপ্লেস এর অবস্থা দিন দিন পরিবর্তন ও খারাপ হচ্ছে?
মার্কেটপ্লেসের সাথে ফ্রিল্যান্সারদের সম্পর্কে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। প্রথমটি হলো কম্পিটিশন এবং দ্বিতীয়টি হলো মার্কেটপ্লেসের পরিচালকদের নীতি এবং অবস্থান।
ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে প্রতিযোগিতার মাত্রা খুব বেশি। প্রতিযোগিতার মাত্রার কারণে কিছু ফ্রিল্যান্সার বেশি কাজ পায় না এবং কিছু ফ্রিল্যান্সার ভালো দামে কাজ করে থাকে।
এছাড়াও, কিছু ফ্রিল্যান্সার স্কিল উন্নয়ন করে না এবং তাদের স্কিলসেট পর্যাপ্ত নয় কারণে তারা কাজ পায় না। এছাড়াও, মার্কেটপ্লেসে অনেক ফ্রিল্যান্সার আছে যারা সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারে না বা তাদের সামগ্রী সঠিক নয়।
এই সমস্যার ফলে সম্পূর্ণ মার্কেটপ্লেস একই সমস্যায় ভোগ করে এবং কাস্টমাররা তাদের পছন্দের কাজকে সম্পূর্ণ না করে চলে যায়।
মার্কেটপ্লেস একটি স্থান যেখানে ফ্রিল্যান্সারগণ এবং ক্লায়েন্টগণ একসাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে আছে। কিছু কারণে এই মার্কেটপ্লেস খারাপ হতে পারে, যেমন:
১। প্রতিস্পর্শ মূল্য নির্ধারণ ও বিনিময় করার কঠোর নীতি না মেনে চলা।
২। মার্কেটপ্লেস এর ব্যবস্থাপনা বা মডেলে ঝামেলা থাকা।
৩। কোনো বিশেষ দক্ষতা বা পেশাগত জ্ঞান না থাকা সেটার জন্য ফ্রিল্যান্সার কখনোই সঠিক বিনিময় না করতে পারে।
৪। মার্কেটপ্লেস মার্কেটিং পরিচালনা বা বিপণন প্রক্রিয়া ঠিকমত না করতে পারে।
তাই, একটি দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থায় বিনিময় সহজ হওয়ার স্থানে প্রতিষ্ঠান দিনদিন ফ্রিল্যান্সারদের সাথে আরও সম্মতি স্থাপন করতে পারে।
You must be logged in to post a comment.