ফিল্যান্সিং ক্যারিয়ার ওয়েব ডেভেলপমেন্ট

ফিল্যান্সিং বিষয়ে জানতে পারবেন। বিশেষ করে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর বিষয়ে। কিভাবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করতে হবে,কি কি শিখতে হবে লাইন বাই জানতে পারবেন।

ওয়েব ডেভেলপমেন্টঃ

ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট এর দ্বারা কেমন করে আউটসোর্সিং করে অনলাইনে টাকা-পয়সা ইনকাম করা যায়।

এই ব্যাপারে আলোচনা করেছেন বহুদর্শী একজন ফ্রিল্যান্সার যিনি প্রায় ৬/৭ বছর ধরে সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে সিনিয়র সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন এবং বছর থেকে ফ্রিল্যান্সিং করছেন

আমার আজকের এই লিখনি তাদের জন্য যারা খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে আউটসোর্সিং/ফ্রিল্যান্সিং এই উপায় খুঁজছেন। আমি আজকে এটাই বুঝাতে চাইব যে কাজ খোজার প্রথমে নিজেকে কাজের জন্য প্রস্তুত করুন।

প্রথমেই যে জিনিসটি আপনাকে মনে রাখার জন্য হবে সেটি হচ্ছে আপনি বিশাল প্রকারের একটা প্রতিযোগিতায় নামতে যাচ্ছেন যেখানে আপনার প্রতিযোগী হবে সারা পৃথিবী থেকে আরও প্রচুর মানুষ।

ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং এ অনেক ধরনের কাজ পাওয়া যায় তবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কিত কাজ এখানে সর্বাপেক্ষা বেশি।

শুরুতে আপনাকে নির্ভুল করে নিতে হবে আপনি কোন কাজটি করবেন এরপর সেটা ভালভাবে শিখে গ্রহন করুন ও সবশেষে আউটসোর্সিং এ আসুন।

গ্রাফিক্স ডিজাইন

ডিজাইনের কাজের বেশ ডিমান্ড বিদ্যমান অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলিতে। এইজন্য আপনাকে শিখতে হবে মুলত ফটোশপ এবং ইলাস্ট্রেটর এর কাজ।

ফটোশপ দ্বারা লোগো, বাটন, ব্যানার প্রভৃতি তৈরী করতে পারতে হবে। ফটোশপ দিয়ে পিএসডি (পিএসডি) লেআউট ডিজাইনের কাজের পর্যাপ্ত চাহিদা।

 অনলাইনে প্রচুর টিউটোরিয়াল পাবেন ফটোশপ এবং ইলাস্ট্রেটরের। এদুটি জিনিসে সিদ্ধহস্ত হতে হবে।

গ্রাফিক্সের কাজ করতে সৃজনশীলতা   (ক্রিয়েটিভ ) সুবিশাল ১টি দক্ষতা। আপনার সৃজনশীলতা যত অতল হবে আপনি তত নিউ নব বুদ্ধি তৈরী করতে পারবেন।

এবং আপনার ডিজাইন হবে সবার থেকে আলাদা ফলে আপনার চাহিদাও হবে সবার হতে বেশি।

শেখা মোটামুটি সহজ, প্রতিদিন ৩/৪ ঘন্টা করে অধ্যবসায় করলে ৬ মাসের মধ্যেই প্রফেশনাল পর্যায়ের পিএসডি ডিজাইন করা সম্ভব। (মেধার উপর নির্ভরশীল)

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট

এখানে মুলত দুইটা অংশ করা যায়ঃ

ওয়েব ডিজাইন তথা এইচটিএমএল, সিএসএস, এবং জাভাস্ক্রিপ্ট ভালভাবে শেখা ডেভেলপমেন্ট তথা প্রোগ্রামিং ভালভাবে শেখা

ওয়েব ডিজাইন

এজন্য আপনাকে শিখতে হবে এইচটিএমএল, সিএসএস এবং মোটামুটি জাভাস্ক্রিপ্ট (বিশেষ করে কোন ফ্রেমওয়ার্ক যেমন জেকোয়েরি)। ফটোশপের মোটামুটি প্ল্যান থাকতে হবে। যেমন পিএসডি হতে এক্সএইচটিএমএল করতে যতকিছু লাগে ততটুকু।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট তথা প্রোগ্রামিং বিশ্বে ঢোকার প্রথম দরজা হল ওয়েব ডিজাইন। ভাল ডিজাইনার না হলে ভাল প্রোগ্রামার হতে পারবেন না। প্রোগ্রামিং এই যদি ক্যারিয়ার নাও করেন শুধু ওয়েব ডিজাইনের চাহিদাও ছাড় নয়।

এটাও শেখা সহজ, শিখতে ৬-৮ মাস লাগতে পারে যদি ডেইলি ৪/৫ ঘন্টা অধ্যবসায় করেন। মেধার উপর কেন্দ্র করে এর থেকে সময় কমবেশি লাগতে পারে।

অনলাইনের প্রচুর টিউটোরিয়াল আছে এখান হতে শিখতে পারেন। এ সাইটেও পর্যাপ্ত রিসোর্স আছে।

 ব্রাউজার কম্প্যাটিবিলিটি তথা আপনার ডিজাইন করা পেজ যেন সব ব্রাউজারে সেইম রকম দেখায় সেটা শিওর করতে হবে। বিশেষ করে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে।

বর্তমানে রেসপনসিভ ডিজাইনের যুগ। তাই রেসপনসিভ ডিজাইন করতে পারতে হবে। বিশেষ করে এটার জন্য ব্যবহৃত ফ্রেমওয়ার্কের কাজ ভাল জানতে হবে। যেমন টুইটার বুটস্ট্রাপ।

মোবাইল সহ যেকোন যন্ত্রে আপনার ডিজাইন করা পেজ যেন একই রকম দেখায়, আড়াআড়িভাবে স্ক্রলিং করতে না হয়।

প্রয়োজনীয় টুলস উদাহরণসরূপ বিভিন্ন আইডিই, আই,ই টেসটার, আই,ই  তে ব্রাউজার মোড বদলানো, ফায়ারবাগ ইত্যাদি শিখতে হবে।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বা প্রোগ্রামিং

এখানে আপনাকে প্রোগ্রামিং শিখতে হবে। এটাই মুল বিষয় ডেভেলপমেন্টে। মূলত ওয়েব প্রোগ্রামিং যেমন এএসপি.নেট, পিএসইপি, জাভা  বা ভিন্ন কোন ল্যাংগুয়েজ।

তবে পিএইচপির কাজ বর্তমানে সর্বাপেক্ষা বেশি। ওয়েব ডেভেলপমেন্টে প্রোগ্রামিং শেখার সাথে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রচুর ব্যাপার শিখতে হবে। তা অন্যথায় বহু উপরে উঠতে পারবেন না। যেমন ভালভাবে শেখা দরকার

১. যেকোন একটা প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ মুলত পিএইচপি

২. ডেটাবেস ডিজাইন যেমন মাইসিক্যুয়েল দ্বারা অন্তুত মধ্যম পর্যায়ের একটা পূর্নাঙ্গ রিলেশনাল ডেটাবেস বানাতে পারতে হবে।

৩. অত্যন্ত ভাল কোয়েরি শিখতে হবে। এস,কিউ,এল দিয়ে কঠোর কোয়েরি করতে পারতে হবে।

৪. ফেইসবুক/গুগল/টুইটার/অ্যামাজন ইত্যাদি বিখ্যাত সাইটের ওয়েব সার্ভিস/ এপিআই ব্যবহার করা জানা উচিৎ। (এক্সএমএল)

৫. হোস্টিং সমন্ধে স্বচ্ছ ধারনা বিশেষ করে সার্ভার ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে ধারনা থাকা উচিৎ।

৬. সোর্স কন্ট্রোল উদাহরণসরূপ গিট, টোরটাইস এসবিএন ইত্যাদি দিয়ে কেমনে সেইম প্রজেক্টে একের অধিক ডেভেলপার কাজ করা যায় এসব জানতে হবে।

৭. এজাক্স, জেকোয়েরি এবং ডেভেলপমেন্ট জনিত বিভিন্ন টুলস সম্পর্কে প্রচুর জানতে হবে। যেমন নেটবিনস (কোড লেখার আইন,ডিম,ই), হেইডি,সোল, মাই,এসকিউএলওয়ার্ক বেচ (ডেটাবেস ডিজাইন টুল) এসব জানতে হবে।

সর্বোপরি ওয়েব ডিজাইনের কাজে সুপার সুপার দক্ষ থেকে হবে। অর্থ্যাৎ এইচটিএমএল, সিএসএস এবং জেকোয়েরি এসবের কাজ বাম হাতেই সেরে ফেলার মত যোগ্যতা থাকতে হবে।

একজন ভাল প্রোগ্রামার থেকে হলে আগে ভাল ডিজাইনার (বরং সুপার এক্সপার্ট) থেকে হবে।

শেখা খুব কঠিন। ২-৩ বছর অধ্যবসায় করা লাগতে পারে যদি প্রতিদিন ৩/৪ ঘন্টা টাইম দেন। মেধার ওপর ভিত্তি করে টাইম কমবেশি লাগতে পারে। চাহিদা এবং আপনার গুরত্ব হবে আকাশছোয়া।

 অনলাইনে পর্যাপ্ত টিউটোরিয়াল আছে, অওরোক্স, এপরেস পাবলিকেশনের অনেক ভাল ভাল বই বিদ্যমান এখান থেকে শিখতে পারেন। এই সাইটেও পর্যাপ্ত রিসোর্স আছে।

(অ্যাডভান্সড পিএইচপি, ডেটাবেস ডিজাইন, ডেটাবেস পিএইচপি, ও,ও,পি,এসচ,পি, পিএইচপি ফ্রেমওয়ার্ক, কোডইগনাইটার, জেন্ড, জুমলা, সিও)

যে কাজই করতে চান না কি জন্য প্রথমে সেটিতে সক্ষমতা অর্জন করুন অতঃপর ফ্রিল্যান্সিং এ যান। কয়েকটি জানলেন কিংবা ভাসা ভাসা ধারনা এরুপ সক্ষমতা নিয়ে ওডেস্ক বা যেকোন মার্কেটে একাউন্ট উন্মুক্ত করা নিরাশা ব্যতীত কতিপয় দেওয়ার জন্য পারবেনা।

এছাড়া ফ্রিল্যান্সিং এ প্রবল বৃষ্টিপাত প্রথমে ভাল সফটওয়্যার ফার্মে ১.৫/২ বছর চাকুরি করে আসা উচিৎ। চাকুরি না করে আউটসোর্সিং প্রকৃতপক্ষে ভীষণ অধিক ঊর্ধ্বে জেগে ওঠা জটিল।

বেশির ভাগ লোকজন কেমনে ওডেস্কে একাউন্ট খুলতে হবে, কেমনে কাজ পাওয়া যেতে পারে এসব কৌশল শিখতে তৎপর তা সত্ত্বেও কাজ তেমন একটা শেখেনি।

মার্কেটপ্লেস গুলিতে একাউন্ট খোলা ফেইসবুকের মতই সরল এরপর কতিপয় এক্সাম দ্বারা প্রোফাইল উন্নত করতে পারেন।

যেকোন বিড করার (যেমন ওডেস্কে “এপলাই দিছ জব”) সময় কভার লেটার তথা আবেদনটি একটু আকর্ষনীয় করে লেখা উচিৎ। ভাল কভার লেটারের উদাহরণ ঐ সাইটগুলিতেই পাবেন।

এগুলি খুবই অগুরত্বপূর্ন বিষয় এবং পানির মত সহজ। এগুলি নিয়ে ভাবনা না করে আগে টেকনিকালি দক্ষ হউন।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles