আমরা অনেকেই অনলাইন এ ইনকাম করতে বেশ আগ্রহী।আর আমাদের এই আগ্রহের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন কমিউনিটি আমাদের ঠকিয়ে যাচ্ছে।আমরা ফেইসবুকে অনলাইন ইনকামের অনেক গ্রুপ খুজে পাব,যেখানে অনেকেই তাদের জব অফার করেন এবং ইনকামে আগ্রহী মানুষের থেকে অ্যাড ফি নামে ২০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত ও নিয়ে থাকে।
পরবর্তীতে দেখা যায় এগুলো সব ভুয়া।এভাবে অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন তাইনা?আজ আমরা আলোচনা করবো কিভাবে আর প্রতারিত হবেন না।কোন কোন জব গুলো মিথ্যা আর কোন গুলো সত্য।
প্রথমেই আসি অনলাইন জব এর সোর্স গুলো সম্পর্কেঃ
১। আর্টিকেল রাইটিংঃ
আপনার যদি কোনো ইনফরমেশন জানতে হয় তাহলে আপনি কি করেন?গুগলে সার্চ দেন রাইট?এবার ভাবুন তো গুগল আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য কিভাবে আপনাকে দেয়?নিশ্চয় কেও না কেও ঐ তথ্যগুলো তাদের ওয়েবসাইটে দিয়ে রাখে।তারপর আপনি গুগলে সার্চ দিলে সেটা পাওয়া যায়।তো আপনি যদি কোথাও দেখেন যে কেও এইভাবে বিজ্ঞাপন দিয়েছে যে 👉আমাদের ওয়েবসাইটে আর্টিকেল বা প্যারাগ্রাফ লেখার জন্য লোক লাগবে তাহলে ভাবতে পারেন এইটা রিয়েল জব।
২। মার্কেটিংঃ
রিয়েল জব গুলোর মধ্যে মার্কেটিং হলো অন্যতম একটা ট্রাস্টেড জব।বর্তমানে অনেক জিনিসের বেচাকেনা অনলাইনে হয়।আর বিক্রেতা গ্রুপ তাদের পন্যের খবর মোটামুটি সব জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনেক লোক রিসেলার হিসেবে নিয়োগ দেয়।তো আপনি যদি মার্কেটিং জবের অফার পআন রাহলে সেটা রিয়েল জব।
কিন্তু এই মার্কেটিং এর জন্য আপনাকে ট্রেনিং নিতে হয়।অনেক জায়গাতে টাকার বিনিময়ে আবার অনেক জায়গাতে ফ্রীতে ট্রেনিং দেওয়া হয়।আপনি বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নিবেন আপনার কি করা উচিত।না হলে প্রতারিত হবার সম্ভাবনা থাকবে।
৩।ফেসবুকে ইনকামঃ
ফেসবুক যেহেতু মোস্ট পোপুলার একটা যোগাযোগ মাধ্যম। তাই এইখানে ইনকাম কঅরার বেশ অনেক টা সুযোগ আছে।প্রসঙ্গত বলে রাখি ফেসবুক থেকে প্রতারিত হবার সম্ভাবনা সব চেয়ে বেশি।এবার আসি ফেসবুক থেকে রিতেল ইনকাম গুলো কি কি।এখানেও মার্কেটিং ই বেশি।বিশেষ করে মেয়েরা এই সেক্টরে বেশি সুবিধা করে নিচ্ছে লাইভ মার্কেটিং এর মাধ্যমে।
৪। ফেইসবুক পেইজ থেকে ইনকামঃ
ফেইসবুক পেইজ মনিটাইজেশন এর মাধ্যমে ১০০% ইনকামের সুযগ আছে।বিভিন্ন কন্টেন্ট ক্রিয়েট করে শর্তসাপেক্ষে একটা ভালো এমাউন্টের ইনকাম সভব।এজন্য আপনার কন্টেন্ট ক্রিয়েটিং এ দক্ষতা থাকতে হবে।টপিক নির্বাচনে সচেতন থাকতে হবে।
৫। ইউটিউব ইনকামঃ
ইউটিউব থেকেও মনিটাইজেশন এর মাধ্যমে ইনকাম সম্ভব। এক্ষেত্রেও কন্টেন্ট তৈরিতে দক্ষ হতে হবে।
বিভন্ন সাইট থেকে ইনকামঃদেশি বিদেশী অবেক সাইট থেকে ইনকাম করা যায়।তবে এক্ষেত্রে বেশিভাগ ই ইনভেস্ট বেসিস।আপনাকে কিছু টাকা ইনভেস্ট করে তারপর এটার মধ্যে ঢুকতে হবে।এখানে আপনি কিছুটা সময় দিলে ভালো একটা ইনকাম করতে পারবেন।
৬। ফ্রীল্যান্সিং ঃ
ফ্রীল্যান্সিং করে ইনকাম করা যায় সেটা সবাই জানে।কিন্তু ফ্রীল্যান্সিং কি অতটাই সহজ?ফ্রীল্যান্সিং এর জন্য যথেষ্ঠ দক্ষতার প্রয়োজন হয়।প্রথমে এটার জন্য ট্রেনিং নিতে হয়।তারপর আপনার ইন্সটাক্টর এর সাহায্যে আপনি ফ্রীল্যান্সিং বাজারে ঢুকবেন তারপর ধীরে ধীরে আপনার কাজের ভিত্তিতে ইনকাম করতে পারবেন।অনেকেই আছেন যারা ফ্রীল্যান্সিং কে অনেক ইজি মনে করেন,তারপরে কোর্স করেও ইনকাম করে উঠতে পারেন না।তাদের জন্য বলছি আগে বুঝে নিবেন এই কাজের জন্য আপনি দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন কিনা।
উপরে যে ইনকামের যে উপায়গুলো বলা হলো সেগুলো থেকেও অনেকে প্রতারিত হতে পারেন।তাই কোনো টাকা বা সময় ইনভেস্ট করার সময় মেন্টালি ফিক্সড হয়ে নিবেন।তারপর কাজ শুরু করবেন।এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ভআবে ইনকামের সুযোগ আছে।সব সময় উল্লেখ করা সম্ভব হলো না।তবে এবার আলোচনা করবো মিথ্যা কাজ কোন গুলো সেটা বুঝার উপায়ঃ
বেশিরভাগ মিথ্যা জব গুলোর প্রোমোটিং ফেসবুকেই হয়ে থাকে। আর আমরা বিশ্বাস করে প্রতারিত তো হয়ই সাথে সাথে কিছু বিপদের ও সম্মুখীন হই।
নিচে কয়েক ফেসবুকের মিথ্যা জবের ক্যাটাগরি সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
১। ড্রেস বা জুয়েলারিতে কোড বসানোঃ এই ধরনের জবের নাম অনেকেই সশুনেছেন তাইনা?এই জব গুলো ১০০% মিথ্যা।তারা আপনাদের থেকে ৪৫/৫০/৬০ টাকা করে অ্যাড ফী নিয়ে বলবে ডেইলি পেমেন্ট ইত্যাদি ইত্যাদি। এই জব গুলোতে ভুলেও ঢুকবেন না।
এগুলো ২০/২৫ দিন চলে।আপনাদের থেকে ৪০/৫০ টাকা করে অ্যাড ফি নিবে তারপর মেম্বার অ্যাড করিয়ে আরো বেশি টাকা নিয়ে তারপর তাদের ফেসবুক একাউন্ট ডিএক্টিভ করে দিবে।আর খুজেও পাবেন না তাদের।
আর যদি বলে মান্থলি ৩ হাজার / ৪ হাজার টাকা দিবে।তাহলে জেনে রাখুন এটা পুরোপুরি মিথ্যা।
২। অ্যাড দেখে টাকা ইনকামঃ কেও যদি ববলে ফ্রীতে অ্যাড দেখে ইনকাম করা যায় তাহলে ভাব্বেন সেটাও মিথ্যা।
৩। টেলিগ্রাম ইনকামঃ টেলিগ্রাম এ কিছু রিয়েল পেমেন্ট প্রুফ চ্যালেন থাকলেও বেশির ভাগ মিথ্যা।আপনাকে যদি বলে শুধু মাত্র টেলিগ্রাম রেফার করে ইনকাম করা যাবে কোনো টাকা লাগবে না তাহলে বুঝে নিবেন সেটা মিথ্যা,এখানে শুধু আপনার সময় নষ্ট হবে।
টেলিগ্রাম একাউন্ট এর জন্য নাম্বার লাগবে এমন ইনকাম সোর্স ঃ এখানে এরা আপনাকে প্রতিটা নাম্বারে একাউন্ট খোলার জন্য ৫/১৫/২০ এভাবে টাকা দিবে ঠিকই কিন্তু এখানে আপনার বিপদের সম্ভাবনা আছে।
ধরুন তারা আপনার নাম্বার দিয়ে একটা একাউন্ট খুল্লো বিনিময়ে আপনাকে টাকা ও দিল।আপনি ভাবলেন এটা রিয়েল ইবকাম সোর্স ছিলো।কিন্তু আপনার নাম্বারে খোলা ঐ টেলিগ্রাম একাউন্ট দিয়ে যদি তারা কোনো ক্রাম করে তাহলে পুলিশ আপনাকে ধরবে কারন সীম কার্ড টা আপনার বা আপনার পরিবারের কারো নামে রেজিট্রেশন করা আছে।গত ২/১ সপ্তাহ থেকে এই বিজনেস টা চালু করেছে ওরা।তাই সাবধানে থাকবেন।
৪। টিকটক বা স্ন্যাক অ্যাপ থেকে ইনকাম ঃ হ্যা এখান থেকে সত্তিই টাকা পাওয়া যায়।এখান থেকে যদি টাকা পাওয়ায় ই যায় তাহলে আমি এই পয়েন্ট টা মেনশন করছি কেন তাইতো?
এই পয়েন্ট টা শুধু মুস্লিম দের জন্য।কেও সাম্প্রদায়িক ভাবে নিবেন না ব্যাপার টাকে।
শুধু মুসলিম দের জন্য বলছি,আপনারা নিশ্চয়ই জানেন হারাম ইনকাম ইসলামে জায়েজ নেই? টিকটকের ইনকাম টা ইস্লামিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে একটা হারাম সোর্স হতে আসে। তাই শুধু টাকার জন্য যেন আপনি ভুল কিছু করে না বসেন সেটা খেয়াল রাখবেন।
এই ব্যাপারে ইস্লামিক স্কলার দের কিছু আলোচনা আছে,সিওর হবার জন্য শুনে নিতে পারেন।
এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ভুয়া ইনকাম সোর্স আছে।তাই কোনো কাজ শুরু করার আগে একটু বুঝে শুনে ডিসিশন নিবেন।এছাড়া অনলাইনে বিভিন্ন জিনিস কেনা কাটা করার সময় ও সচেতন থাকবে।বিভিন্ন লোক প্রতারনা করে।শেষে যেটা বলতে চায় তা হলো যোগ্যতা ছাড়া ইনকাম করা কঠিন। তাই আগে নিজেকে যোগ্য করে নিন।তারপর ইনকাম সাইটে ঢুকুন।আপনিও পারবেন ইন শা আল্লাহ
You must be logged in to post a comment.