ইনভেস্ট ছাড়া ব্যবসা করুন, মাসে লাখ টাকা ইনকাম করুন

আমরা অনেকেই ব্যবসা করতে চাই। কিন্তু ব্যবসা করার মূলধন না থাকার কারনে করতে পারছি না। আবার অনেকেই আছি যারা সময়োপযোগী ব্যবসা কি বা কোন ব্যবসায় মুনাফা বেশি তা খুজেঁ বের করতে পারছি না। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে ইনশাল্লাহ আপনারা ব্যবসায় সফল হবেন।

ব্যবসা তো হাজার হাজার মানুষ-ই করে। কেউ কাপড়ের ব্যবসা করে, কেউ মাছের ব্যবসা করে, কেউ তরকারির ব্যবসা করে, কেউ ফলের ব্যবসা করে, কেউ জুতার ব্যবসা করে, কেউ গ্রোসারির ব্যবসা করে, কেউ জমি ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবসা করে ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে এগুলো করতে হরহামেশাই দেখা যায়। অধিক সংখ্যক লোক একই ধরনের ব্যবসা করার ফলে এসব ব্যবসায় প্রতিযোগিতাও বেশি। ফলে লাভের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে আজকে আপনাদের যে ব্যবসাটির কথা বলবো তাতে প্রতিযোগিতা নেই বললেই চলে এবং প্রতিযোগিতা কম থাকায় লাভের পরিমানটাও অধিকতর বেশি।

ব্যবসা করার মূল কথা হলো সততা, পরিশ্রম, ধৈর্য্য, এবং নতুনত্ব। ব্যবসায় যত বেশি নতুনত্ব নিয়ে আসতে পারবেন তত বেশি ইনকাম বাড়বে। তাই যে সকল ব্যবসার কথা মানুষ কম জানে সে সমস্ত ব্যবসা নিয়ে কাজ করলে কম সময়ে অল্প পরিশ্রমে অনেক বেশি মুনাফা অর্জন করা যায়।

আজকে আপনাদের মাঝে তেমন-ই একটি নতুন ধরনের ব্যবসার কথা তুলে ধরবো। যার নাম ""ডিমের খোসার পাউডারের ব্যবসা""। কি অবাক হচ্ছেন তো?? হ্যাঁ!  অবাক হওয়ার-ই কথা। কারন এমন একটা ফেলনা জিনিস দিয়ে কি আবার ব্যবসা হয় নাকি?? তাও নাকি আবার এই ব্যবসায় মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম হবে।  তাহলে আর দেরি না করে চলে যাচ্ছি মূল আলোচনায়।

#ডিমের  খোসার পাউডারের ব্যবসা।

বাইরের দেশে এই ব্যবসার অনেক বেশি প্রসার থাকলেও আমাদের দেশে প্রায় ৯০% লোক-ই এটির ব্যাপারে জানে না। অনেক দেশের মানুষের তো এই পাউডার ছাড়া একেবারেই চলে না। অথচ আমরা ডিমের খোসা আনাচে কানাচে ফেলে দেই। তো আমরা আর কেন পিছিয়ে থাকবো? চলুন উন্নত বাংলাদেশে এক উন্নত ব্যবসার উদ্বোধন করি। বেকার মুক্ত দেশ গড়তে কিছু ভূমিকা পালন করি।

#কিভাবে বানাবো এই পাউডার??

প্রথমে খোসা গুলো একএে নিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধৌত করে পরিষ্কার করে নেই। এরপর সে গুলোকে ৫ থেকে ১০ মিনিট সিদ্ধ করে নিন। তারপর একটি কড়াইয়ে কিছুক্ষণ চুলায় বসিয়ে গরম করে নিন। তারপর কিছু সময়ের জন্য রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর খোসা গুলো ব্যালেন্ডার করে গুড়ো করে নিন। ব্যস! তৈরি হয়ে গেলো ডিমের খোসার পাউডার।

#ডিমের খোসার উপকারিতা:::

এই পাউডারের উপকারিতা বলে শেষ করা এক কথায় অসম্ভব। এতটাই গুন সম্পন্ন এই পাউডার গুলো। তার মধ্যে থেকে ৮ টি উপকারিতা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

১. গ্যাস্ট্রিক আলসার সারিয়ে তোলে।

কি অবাক হয়ে গেছেন তাইতো? না হওয়ার-ই কথা। কারন ডিমের খোসা কি কখনো আলসার সারাতে পারে? হ্যাঁ অবশ্যই পারে। এই পাউডার আলসার সারাতে খবই কার্যকরি উপায়। প্রতিদিন সকালে গরম দুধের সাথে ১ চা চামচ এই পাউডার মিশিয়ে খেলে এর উপকারিতা জানতে পারবেন। তফাৎ বুঝতে পারবেন কিছু দিনের মধ্যেই।

২. রূপচর্চায় সাহায্য করে।

কি ধাধায় পড়ে গেলেন তো? এটাই ভাবছেন তো, যে জিনিস দিয়ে আলসার নির্মূল হয় সেটা আবার রূপচর্চায় কিভাবে সাহায্য করে? হ্যাঁ! এটি রূপচর্চায়ও ভূমিকা রাখে। এই পাউডারে তৈরি ফেসপ্যাক বিভিন্ন ত্বকের সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম। সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করলেই তফাৎ চোখে পড়বে। আপনার ত্বক দেখে আপনি নিজেই প্রেমে পড়ে যাবেন।

৩. জয়েন্ট পেইন রোধ করে।

যাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বা গিড়ায় গিড়ায় ব্যথা আছে তাদের এই পেইন দূর করতে সাহায্য করে। তারা দৈনিক কিছু পরিমানে সেবন করলেই আপনারা এর উপকারিতা বুঝতে পারবেন।

৪. টুথপেষ্ট তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।

হ্যাঁ!  দর্শক শ্রোতা, আপনারা ঠিকই শুনেছেন। এই পাউডার দিয়ে তৈরি টুথপেষ্ট দাতঁ সাদা ঝকঝকে,  মাড়ি মজবুত করে এবং দাতেঁর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখে।

৫. হাড়ের মহোষৌধ।

এই পাউডার সকল হাড়ের সমস্যায় উপকারি বন্ধু হিসেবে কাজ করে। হাড়ের যে কোনো সমস্যায় এই পাউডার সেবনে ভালো ফল পাবেন।

৬. প্রাকৃতিক সার তৈরিতে ভূমিকা রাখে।

এই পাউডার দিয়ে তৈরি সার ফলনে বেশ ভালো উপকার করে। এটির সাহায্যে যে কোনো কিছুর আশানোরূপ ফল পাওয়া সম্ভব।

৭. গৃহপালিত পশুর খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

আমরা অনেকেই ঘরে পশু-পাখি পালন করি। তাদের যত্নে কত টাকাই না খরচ করি। এই পাউডার ঐ সমস্ত পশু-পাখির জন্যও ভীষণ উপকারি। এগুলো খাওয়ালে তাদের শক্তি,  রোধ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি,  মাংশ বৃদ্ধি এবং ওজন বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে।

৮. কফির তেতো ভাব দূর করতে সাহায্য করে।

কফি প্রেমীদের জন্য এটি খুবই জনপ্রিয়। এই পাউডার কফির সাথে মিশিয়ে খেলে কফির যে তেতো ভাব থাকে তা কমে যায়। তাই কফির স্বাদটা বেশ ভালো লাগে।

উপরে উল্লিখিত উপকারিতা ছাড়াও এই পাউডারের আরো অনেক গুনাগুন রয়েছে। যা বলেও শেষ করা সম্ভব হবে না

#কিভাবে এবং কোথায় বিক্রি করবো??

ডাক্তারের দোকান,,,কসমেটিকস এর দোকান,,,পার্লার এবং অনলাইন হলো আপনার বিক্রির পারফেক্ট জায়গা।

আপনারা কিছু স্যাম্পল তৈরি করে সেগুলো তাদের দেখিয়ে অর্ডার নিতে পারেন। 

এছাড়াও আপনারা ফেসপ্যাক তৈরি করে অনলাইন এবং অফলাইন,,পাইকারি এবং খুচরা বিক্রি করতে পারবেন।

#এত খোসা কোথায় পাবো??

সত্যি-ই তো এত খোসা জোগাড় করা কি মুখের কথা?? রাস্তা বা বাড়ি থেকে আর কয়টাই বা পাওয়া যাবে?? সকল প্রশ্নের সমাধানও দিয়ে দিচ্ছি। 

আমাদের এলাকায় খাবার হোটেল রয়েছে। সেসব হোটেলে দৈনিক হাজার হাজার ডিমের খোসা ঝুড়িতে ফেলে দেয়। আপনারা তাদের কাছে গিয়ে ঝুড়ি দিয়ে আসলেন এবং বলে আসলেন যে "" আপনারা তো ডিমের খোসা ফেলেই দেন সে গুলো আমার এই ঝুড়িতে রাখবেন। আমি এসে নিয়ে যাবো।"" তাহলেই তারা সে গুলো সেখানে রেখে দেবে। 

দেখলেন তো বিনা চালানে খোসা টাও পেয়ে গেলেন।

#কত টাকা আয় হতে পারে??

আপনি বেশি না শুধু ৫ টা দোকান টার্গেট করুন এবং দৈনিক ৫০০০ গ্রাম পাউডার সাপ্লাই করুন। যেহেতু এই পাউডার ১ গ্রাম ১ টাকা সুতরাং ৫০০০ গ্রাম হবে ৫০০০ টাকা। তাহলে আপনার মাসিক ইনকাম হবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যা একেবারেই বিনা চালানে।

#সর্বশেষ কথা

প্রতিনিয়তই তো আমরা ডিমের খোসা দেখছি। সে গুলোকে কাজে লাগিয়ে কিছু ইনকাম করতে তো কোনো সমস্যা নেই। এতে আমাদের যেমন লাভ হচ্ছে তেমন পরিবেশও কিছুটা দূষণ মুক্ত থাকছে।

তাহলে আর দেরি কিসের?? আজ থেকেই আমিতো বলবো এখন থেকেই শুরু করে দিন এই অভিনব ব্যবসাটি। 

এই ব্যবসাটি হয়তো আপনাদের এলাকায় কিংবা আপনাদের উপজেলায় অথবা আপনাদের জেলায় আপনি-ই প্রথম শুরু করছেন। আপনার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই এই ব্যবসার মাধ্যমে সাবলম্বি হতে পারবে। আমাদের বাংলাদেশও কিছুটা বেকার মুক্ত হতে পারবে। আপনার আমার মতো অনেকেই তো (বাইরের দেশের) এই ব্যবসাটি করে সফল হয়েছে তাহলে আমরা কম কিসে?? আমরা কেন পারবো না?? আমাদের মধ্যে কিসের কমতি আছে?? 

আপনি-ই হয়তো আগামি প্রজন্মের একজন আদর্শ হয়ে উঠবেন। এমন সুযোগ কেন পেয়ে হারাবো?? কেন এই সুবর্ন সুযোগটি লুফে নিব না?? কেন অন্য দেশ থেকে পিছিয়ে থাকবো?? কোনো টাকা তো লাগছে না। শুধু ধৈর্য্য আর শ্রম লাগবে। টাকা আয় এবং সাবলম্বি হওয়ার জন্য এটুকু তো আমরা দিতেই পারি??

বিনা চালানে যদি ১ লাখ+ টাকা ইনকাম করতে পারি তাহলে তো কোনো মহা ভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে না। তাহলে আর দেরি না করে এখন থেকেই শুরু করে দিন "" ডিমের খোসার পাউডার "" এর ব্যবসা। এটি খুবই লাভ জনক এবং লস হবে না বললেই চলে।

আজকের এই লেখাটি কত টুকু উপকারি বা অপকারি ছিল তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের ছোট একটি কমেন্ট আমাদের সামনে যাওয়ার অনুপ্রেরণা জোগায়। আজকে তাহলে এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবো ইনশাল্লাহ। সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ্য থাকুন। ভালো ভালো লেখা পড়তে অবশ্যই জে আইটি আর্নিং প্রোগ্রামের সাথেই থাকুন।

(নিজেকে অবশ্যই সাবলম্বি করে তোলার চেষ্টা করুন। আপনারা নিজের পায়ে দাড়াঁলেই আপনাদের পরিবারও সমাজের বুকে সম্মানের সাথে উঠে দাড়াঁতে পারবে। নিজের সম্মান বাড়ান সাথে পরিবারেরও সম্মান বাড়িয়ে তুলুন। করোনা মহামারিতে পরিবার কে দিন আর্থিক সাপোর্ট। সকলের সফলতা কামনা করছি। সবাই নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ার জন্য একবার হলেও চেষ্টা করুন। ইনশল্লাহ আপনার সফলতা কেউ আটকাতে পারবে না)

#আল্লাহ হাফেজ। ভালো থাকবেন সবাই।

#ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মতো বিদায় নিলাম।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles