আমাদের বর্তমান বিশ্ব হলো তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর। আর এর সাথে একটি ট্রেন্ড চালু আছে আর সেটি হলো হলো অনলাইনে ইনকাম করা।বর্তমান সময়ে আউটসোর্সিং অনেক বেশি জনপ্রিয় একটি মাধ্যাম। আউটসোর্সিং করতে যূিও ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আপনাদের যাদের ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ নেই তাদের কি করনীয়? চিন্তার কোনো কারন নেই।
আপনার যদি একটি স্মার্টফোন আর অনলাইনে আয় করার তীব্র ইচ্ছা ও আকাঙ্খা থাকে তাহলে আপনাকে স্বাগতম। বর্তমান সময়ে আমরা মোবাইল ফোন দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করেই মাসে আমাদের হাত খরচ সহ আরো প্রয়োজনীয় অনেক চাহিদা পূরন করতে পারি।
এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করব? আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের জানাতে চলছি মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করার সেরা কিছু উপায়। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য এই আর্টিকেলটি অনেক হেল্পফুল হবে বলে আমি আশা করছি। তো চলুন জেনে নেই মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করার সেরা কয়েকটি উপায়-
১। ব্লগিং(Blogging):
বর্তমানে ব্লগিংয়ের মাধ্যমে ইনকাম করা অনেক জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। আর এই ব্লগিং যে কেউ করতে পারবে। ব্লগিং করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি স্মার্টফোন আর প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও ধৈর্য। ব্লগিং করার জন্য আপনাকে প্রথমে একটি নিজের ব্লগ তৈরি করে নিতে হবে।
আর ব্লগ তৈরি করার জন্য আপনারা www.blogger.com ওয়েবসাইট টি ব্যবহার করতে পারেন। একদম ফ্রীতে তৈরি করতে পারবেন। একটি ব্লগ থেকে বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করা যায়। ব্লগ থেকে ইনকামের যতগুলো পদ্ধতি আছে তার মধ্যে নিচের পদ্ধতিগুলো বেশি সমাদৃত যেমন-
★ব্লগে বিজ্ঞাপন দিয়ে টাকা ইনকাম।
★ব্লগে প্রোডাক্ট ব্রান্ডিং করে অর্থ আয়।
★ব্লগ দিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করা।
এখান থেকে যেকোনো একটি উপায় বাছাই করে শুরু করে দিন ব্লগিং করা। তাই দেরি না করে এখনি শুরু করে দিন।
২। ইউটিউব(Youtube):
মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করার ২য় উপায়টি হলো ইউটিউব। বর্তমান সময়ে ইউটিউব একটি জনপ্রিয় সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট। এটিকে অনেকই এখন প্রোফেশনালভাবে নিয়ে তারা মাসে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। তো আপনার যদি একটি মোবাইল ফোন থাকে এবং আপনার ভিতরে যদি বিন্দুমাত্র প্রতিভা থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি ইউটিউবিং করে সফল হতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। হ্যা মোবাইল দিয়েই একটি চ্যানেল ক্রিয়েট করে আপনি আপনার প্রতিভার ঝলক দেখিয়ে আপনিও মাসে মাসে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। ইউটিউবিং শুরু করার আগে অবশ্যই এটি সম্পর্কে অনেক জ্ঞান অর্জন করে নিবেন। তাহলে আপনার সাকসেস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ইউটিউবে বেশ কয়েকভাবে ইনকাম করা যায়।এগুলা হলো-
★গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে
★স্পন্সর এড ব্যবহার করে
★এফিলিয়েট লিংক প্রমোট করে ইত্যাদি।
ইউটিউব থেকে আপনার ভিডিও কন্টেন্টের মাধ্যমে ইনকাম করতে চাইলে আপনাকে কিছু শর্ত পূরন করতে হবে। শর্ত সমুহ হলো:
★ গত বার মাসের মধ্যে আপনার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইব সংখ্যা হতে হবে ১০০০ এবং আপনার চ্যানেলের ভিডিওর ওয়াচটাইম হতে হবে ৪০০০ ঘন্টা।
এই শর্ত পূরন করতে পারলেই আপনার ইনকাম হবে ধুমছে। এই শর্ত পূরন করা ওতটাও কঠিন নয় আপনার তীব্র ইচ্ছা আর ধৈর্য থাকে তাহলে খুব তাড়াতাড়িই পূরণ করে ফেলতে পারবেন আশা করি।
৩। বিভিন্ন ব্লগে আর্টিকেল লিখে আয়:
আপনি যখন ইন্টারনেট ব্রাউজ করেন। তখন দেখে থাকবেন বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল বা লেখা পোস্ট আপনার সামনে আসবে। আর এগুলো হলো এক একটি আর্টিকেল। কখনো কি ভেবে দেখেছেন আর্টিকেল কারা লিখে? আর্টিকেল যেকেউ লিখতে পারে। তবে যারা ব্লগিং করে তাদেরকে ওয়েবমাস্টার বলা হয়। আর যারা অন্যের জন্য আর্টিকেল লিখে এবং আর্টিকেল লিখে আয় করে, তাদেরকে বলা হয় আর্টিকেল রাইটার।
এখন অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন আর্টিকেল লিখতে আমার কি কি দরকার হতে পারে? আপনার এই প্রশ্নের উত্তর হলো আপনার যদি একটা স্মার্টফোন থাকে আর টুকটাক লেখার অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনাকে দিয়েই সম্ভব। এখন কথা হলো আপনি আর্টিকেলগুলো লিখলেন বাট এগুলো কেথায় পাবলিশ করবেন বা এগুলা কোন ব্লগিং সাইটে আপলোড করবেন?
বাংলাদেশে বর্তমানে এমন অনেক ব্লগিং সাইট আছে যেখানে আপনার প্রতিভার যথার্থ গুরুত্ব দিবে। সেখানে আপনার লেখা আর্টিকেল গুলো প্রকাশ করতে পারবেন।
বাংলাদেশের বিশ্বস্ত কিছু ব্লগিং সাইটের লিংক আমি নিচে দিয়েছি যেখানে আপনার লেখা আর্টিকেল পাবলিশ করলে আপনাকে তারা পেমেন্ট করবেন। প্রতি ১০০০ শব্দের জন্য আপনাকে ৫০ টাকা পেমেন্ট করবে। শব্দ সংখ্যা বাড়লে ধারাবাহিকভাবে পেমেন্টও বাড়িয়ে দিবে। ব্লগিং সাইটের ওয়েবসাইট ও এদের লিংক হলো:
★ প্রতিবর্তন ডট কম(www.pratiborton.com)
★ জে আইটি ডট কম (blog.jit.com.bd)
এই সাইটগুলোতে প্রবেশ করে রেজিষ্ট্রেশন করে আর্টিকেল লেখা জমা দিন এবং এডমিনরা নিজ দায়িত্বে আপনার লেখা পাবলিশড করবে।
৪। বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে ইনকাম:
বর্তমানে প্রায় সবার কাছেই এন্ড্রয়েড ফোন রয়েছে,এবং অনেক যুবক-যুবতী,স্টুডেন্ট আছে তারা এই ফোনের মাধ্যমে কিছু পয়সা আর্নিং করার পন্থা খুঁজছেন।তাই, সেই সব বন্ধুদের উদ্দেশ্যে আমি এমন কিছু অ্যাপস নিয়ে কথা বলব,যেখানে আপনি ভিডিও দেখে বা গেম খেলে টাইম পাস করার সঙ্গে সঙ্গে কিছু হাত খরচের পয়সাও বের করে নিতে পারবেন।
অনেক অনেক ট্রাস্টেট অ্যাপস রয়েছে যেখানে আপনি বিশ্বাস করে কাজ করতে পারবেন ১০০% পেমেন্ট পাবেন। তবে এমন ট্রাস্টেড অ্যাপসের সংখ্যা খুবই কম তবে হ্যা অ্যাপসের মাধ্যমে আপনি ইনকাাম করতে পারবেন।
আপনি যে অ্যপসেই কাজ করুন না কেন সেই অ্যাপস সম্পর্কে জানবেন,ওই অ্যাপস পেমেন্ট করে কিনা সেটা জেনে নিবেন। নয়তো ধোকা খাওয়ার সম্ভাবনাই খুব বেশি। কিছু ট্রাস্টেড অ্যাপস হলো-
★(Dreamploy)www.Dreamploy.com
★Ringid
★(starsfair25)www.starsfair25.com
৫। ফেসবুক (Facebook):
আমরা ফেসবুক শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যক হিসেবে ধরে নেই। কিন্তু আপনি জানেন যে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক কাজে লাগিয়ে মানুষ এখন অনলাইন থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে। এমনকি ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ তৈরি করে ফেসবুকের বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে ফেসবুক থেকে আয় করছে।
তাছাড়া ফেসবুক পেজে ভিডিও আপলোড করে ইউটিউবের মত ফেসবুক থেকে টাকা আয় করা সমম্ভব হচ্ছে। ইউটিউবের মতোই আমরা নিজের ফেসবুক পেইজে ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করতে পারি। কিছু দিন আগেই ফেসবুক অফিসিয়ালি চালু করেছে ভিডিও মনিটাইজেশন (Video Monitization) সার্ভিস।
ফেসবুকে আয় করার এই পদ্ধতিটিকে বলে ফেসবুক ভিডিও মনিটাইজেশন এন্ড এ্যাড ব্রেক( Facebook vidro monetization and ads break)। ফেসবুকে ইনকাম করার জন্য আপনাকে কিছু শর্ত পূরন করতে হবে
সেই শর্তগুলে হলো-
★আপনার ফেসবুক পেইজে অবশ্যই ১০০০০ ফলোয়ার্স থাকতে হবে
★গত ৬০ দিনে আপলোড হওয়া ভিডিওগুলোর সবমিলিয়ে ৩০০০০ ভিউ হতে হবে।
That's it.এই শর্ত পূরন করতে পারলেই আপনি সফল এবং ধুমছে ইনকাম করতে পারবেন।
৬। অনলাইনে টিউশন করে ইনকাম :
অনেকেই আছেন যারা কলেজ ভার্সিটিতে লেখা পড়ার পাশাপাশি ঘরে ঘরে গিয়ে ছাত্র ছাত্রীদেরকে পড়ান অর্থাৎ টিউশন করেন। এরকম টিউশন করে প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ত্রিশ থেকে ষাট হাজার টাকা পর্যন্ত হয়তো ইনকাম করা সম্ভব। কিন্তু পৃথিবী এখন প্রযুক্তির। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই অনলাইন টিউশন করে আরো অনেক বেশি ইনকাম করছেন।
আপনি জেনে হয়তো অবাক হবেন যে, বর্তমানে উন্নত বিশ্বে প্রায় ৪৮% শিক্ষক অনলাইনে টিউশন করছেন। এবং এটা দৈনন্দিন কল্পনাতীত ভাবে গ্রো হচ্ছে। আমাদের পাশের দেশ ভারতে ও অনলাইন টিউশন অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনিও যদি একজন শিক্ষক হয়ে থাকেন এবং যে কোন একটি বিষয়ে আপনার প্রচুর দক্ষতা রয়েছে, তাহলে আপনিও অনলাই টিউশন করে ভাল উপার্জন করতে পারেন।
এজন্য দরকার আপনার নিজের একটি মোবাইল ফোন এবং যে কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে আপনাকে পারদর্শী হতে হবে। যেমন ধরুন, গণিত, বিজ্ঞান, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং অথবা অন্যান্য বিষয় যেগুলো আছে সেগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি বিষযয়ে আপনাকে অবশ্যই পারদর্শী হতে হবে।
প্রথম এবং সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, আপনাকে অনলাইন টিউশনি যে সাইট গুলো আছে সেগুলো তো সব সময় ভ্রমণ করতে হবে, মানে ভিজিট করতে হবে। সে সকল সাইটে শিক্ষার্থীরা আপনার প্রোফাইলের উপরে সাইন করবে অর্থাৎ আপনার পড়াশোনা নেওয়ার জন্য বা আপনার কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়ার জন্য সাইন আপ করবে।
যখন আপনার প্রোফাইলটা একটি সমৃদ্ধ প্রোফাইল এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার লেভেলও ভালো হবে তখন আপনি টিউসন শুরু করতে পারেন।
আপনার প্রোফাইলে অনলি টিউশন করার একটি নিজস্ব শিডিউলে শিক্ষার্থীরা আপনার কাছে অনলাইন ক্লাস করতে আসবে। অনলাইন টিউশন করার জন্য বর্তমান কিছু জনপ্রিয় সাইট রয়েছে। সাইটগুলোর লিংক হলোঃ
★www.tutor.com
★ smart thinking.com
শেষ কথা:
আশাকরি যারা শিক্ষার্থী তাদের জন্য আর্টিকেলটি বেশ উপকারে আসবে। আপনার যদি অনলাইন থেকে ইনকাম করার তীব্র ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি অব্যশই সফল হবেন। আশাহত হবেন না সবসময় আত্নবিশ্বাসী হবেন।আমি বলবো আপনি লেগে থাকেন তাহলেই আপনাকে দিয়ে সম্ভব। আপনাকে কেউই ফ্রি এসে টাকা দিয়ে যাবে না অব্যশই পরিশ্রম করতে হবে।তাই দেরি না করে এখনি লেগে পড়ুন অনলাইনে ইনকাম করার প্লাটফর্মে।
You must be logged in to post a comment.