অনলাইনে আয়ের সবচেয়ে সহজ মাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে আর্টিকেল রাইটিং,ব্লগিং,অনলাইন ট্রেডিং, রেফারিং,ডাটা এন্ট্রি,ফোটো সেলিং ও আরো অনেক উপায়। তো আজ আমরা এই উপায়গুলোর কয়েকটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
১. আর্টিকেল রাইটিং:- অনলাইনে আয়ের সবচেয়ে সহজ মাধ্যমগুলোর মধ্যে সবার উপরে থাকবে আর্টিকেল রাইটিং।
এটি এমন একটি সিস্টেম যেখানে আপনি আপনার স্মার্টফোনেও এই কাজটি করতে পারবেন। তবে আর্টিকেল লিখে আর্ন করার আগে আপনার আর্টিকেল রাইটিং সম্পর্কে কিছু বেসিক ধারণা থাকা দরকার, নাহলে আপনি প্রোফেশনাল রাইটার হতে পারবেন না।
এবং একটা কথা এখানে বলা দরকার এই যুগে এলেবেলে রাইটারদের কোনো দাম নেই। তাই প্রফেশনাল হতে পারলেই আপনার কাজের নিশ্চয়তা রয়েছে নয়তো নয়।
কিভাবে আর্টিকেল লিখবেন সেটা আমার পক্ষে এই আর্টিকেলে বলা সম্ভব নয়। কিভাবে উন্নতমানের আর্টিকেল লিখবেন সেটা জানার জন্য বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল আপনি গুগলে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন।
তো আর্টিকেল লিখে আর্ন করার কয়েকটি বিশ্বস্ত সাইট হলো: জেআইটি,অর্ডিনারি আইটি,টেকটিউনস,ইনকাম টিউনস ইটিসি!
আর্টিকেল লিখে আর্ন করার জন্য আপনার সবচেয়ে প্রয়োজনীয় স্কিলটি হলো টাইপিং স্কিল, সেটা হতে পারে বাংলা বা ইংরেজি।
তবে আপনি কি ভাষায় টাইপ করছেন সেটা ম্যাটার করে না তবে করে আপনি কতটা দক্ষতার সাথে টাইপ করছেন।
অবশ্যই বাংলা আর্টিকেলের থেকে ইংরেজি আর্টিকেলের মূল্য অনেক বেশি, তবে আমার মনে হয় আমাদের বাঙালি মানুষজন বাংলা লিখতেই বেশি অভ্যস্থ। তাই আপনি বাংলাটিই চুজ করুন।
বাংলা আর্টিকেল লিখে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করা তো সম্ভব নয় তবে আপনার খরচ চালানোর মত একটা অ্যামাউন্ট আর্ন করা খুবই সম্ভব।
এর জন্য প্রয়োজন আপনার পরিশ্রম,ধৈর্য্য,আকাঙ্খা ও আর্টিকেল লেখার দক্ষতা।
২. ব্লগিং:- ব্লগিং ও আর্টিকেল রাইটিং মূলত একই ব্যাপার। তবে দুটি জিনিসের মধ্যে একটি মৌলিক পার্থক্য হলো স্বাধীনতা ও পরাধীনতা।
আর্টিকেল লিখে আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হলো গেস্ট পোস্টিং! অর্থাৎ অন্যের হয়ে কাজ করা। এখানে আপনি অন্যের সাইটে কাজ করবেন এবং আপনাকে আপনার প্রাপ্য পারিশ্রমিক দেওয়া হবে।
অন্যথায় ব্লগিং হলো নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে নিজের পছন্দমতো এবং নিজের দক্ষতা মতো আর্টিকেল সাবমিট করা। ব্লগিং এ আয়ের সবচেয়ে মূল মাধ্যম হলো গুগল অ্যাডসেন্স। এখানে প্রথমে আপনি ব্লগার অথবা ওয়ার্ড প্রেস ব্যবহার করে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে হবে এবং সাইটের ট্রাফিক অথবা ভিউয়ার্স বাড়াতে হবে।
তারপরে আপনি অ্যাডসেন্স এর জন্য গুগলের কাছে আবেদন করতে পারবেন। আপনার আবেদন মঞ্জুর হলে গুগল আপনার সাইটে অ্যাড দেখানো শুরু করবে এবং সেখান থেকে আপনার আর্নিংও আসতে শুরু করবে।
তবে এইসব ক্ষেত্রে অ্যাডসেন্স পাওয়াটাই বড় ব্যাপার। অ্যাডসেন্স পাওয়ার জন্য আপনাকে আপনার সাইটের ট্রাফিক যতটা সম্ভব বাড়াতে হবে নয়তো গুগল আপনাকে অ্যাডসেন্স দেওয়ার যোগ্য মনে করবে না।
আর আপনি অ্যাডসেন্সও পাবেন না এবং আপনার সব পরিশ্রম যাবে বৃথা। তো ব্লগিং শুরু করার আগে আমি মনে করি আপনার গেস্ট পোস্টিং টা ভালোমতো করে আগে অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে নেওয়া উচিত, তারপর আপনি নিজের ব্লগ চালাতে পারেন।
নিজের ব্লগ খোলার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ব্লগার কিংবা ওয়ার্ড প্রেস ব্যবহার করা। এগুলো ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই নিজের ব্লগ তৈরি করে নিতে পারবেন।
এবং এখান থেকে আপনি একটি ফ্রী ডোমেইন ও পেয়ে যেতে পারেন। যদিও কাস্টম ডোমেইন হোস্ট করার জন্য আপনসকে কিছু টাকা খরচ করতে হবে।
৩.অনলাইন ট্রেডিং:- বুঝতেই পারছেন এটা ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়। এখানে আপনি অনলাইনে আপনার বিভিন্ন পণ্য বিক্রির জন্য শো করতে পারেন এবং কাস্টমার মনমতো পেলে পণ্য বিক্রিও করতে পারেন।
অনলাইনে ট্রেডিং করা আজ খুবই জনপ্রিয় একটি প্রক্রিয়া, আজকাল অনেকেই এই পদ্ধতি ব্যবহার করে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যবসা করছে। চাইলে আপনিও হতে পারেন একজন সফল ব্যবসায়ী।
অনলাইনে ট্রেডিং করার সবচেয়ে বড় সংস্থা হলো আলিবাবা.কম। সারা বিশ্বে এদের শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এরা গাড়ি থেকে শুরু করে পেন্সিল পর্যন্ত সবকিছু কেনা-বেচা করে থাকে।
৪.ফোটে সেলিংঃ আমরা সবাই প্রায়ই অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে থাকি। আর লাইক পাওয়ার আশায় বসে থাকি।
আপনি কি জানেন এইসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে না দিয়ে বিভিন্ন ছবি নিয়ে ব্যবসা কারী সংস্থাকে দিয়ে টাকা আর্ন করতে পারি? আজকাল আমাদের মোবাইল ফোনেই অনেক ভালো মানের ক্যামেরা থাকে। এমনকি ৬৪ মেগাপিক্সেল এর ক্যামেরাও আজকাল ফোনে খুবই সাধারণ ব্যাপার। এইসব ক্যামেরা দিয়ে অনেক ভালো মানের ছবি তোলা সম্ভব এবং সেগুলো ভালো দামে বিক্রিও করা সম্ভব।
এইরকম বিভিন্ন বিশ্বাসযোগ্য সাইট রয়েছে যেগুলোর সন্ধান আপনি গুগলে সার্চ করলেই পাবেন। তবে এইসব ছবি অবশ্যই কপিরাইট মুক্ত হতে হবে। অন্যের ছবি কপি করে দেওয়া মোটেই ঠিক নয়। এটা করলে চুরি করা হয়। যদিও এগুলো ধরার বিভিন্ন অ্যাপস রয়েছে তবুও আপনাকেও নৈতিক হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। নয়তো আপনি আয়ের জন্য অনৈতিক পথ অবলম্বন করবেন যেটি মোটেই কাম্য নয়।
৫.ভিডিও মার্কেটিং:- ভিডিও মার্কেটিং বলতেই মাথায় আসবে ইউটিউব এর কথা। ভিডিও মার্কেটিং এর শতকরা ৯০% ব্যবসা হয় ইউটিউব এর মাধ্যমে।
তো বুঝতেই পারছেন ভিডিও মার্কেটিং এর বাজারে ইউটিউব এর ভূমিকা কতটা ব্যপক। তাই বলা যায় একজন জনপ্রিয় ইউটিউবার হওয়া মানে হাতে আকাশের চাঁদ পাওয়া।
তবে ভালো মানের ইউটিউবার হওয়া ৮০ ভাগ নির্ভর করে আপনার কন্টেন্ট এর ওপর। আপনার কন্টেন্ট ভালো হলে আপনাকে আর কোনোকিছুর চিন্তা করতে হবে না। শুধু ভিডিও আপলোড করা চালিয়ে যাবেন আর ভিউজ পেতে থাকবেন এবং আর্নিং এর চান্সও বাড়তে থাকবে।
ইউটিউব কন্টেন্ট এর মধ্যে জনপ্রিয় কন্টেন্ট হলো: ফানি কন্টেন্ট, ইডুকেশনাল কন্টেন্ট,ট্রাভেল কন্টেন্ট,ফুড কন্টেন্ট,ভ্লগিং কন্টেন্ট ইত্যাদি।
আপনি চাইলে এগুলোর যেকোনো এক সেক্টর কাজ করা শুরু করতে পারবেন। পরে আপনার পরিচিতি বাড়লে আপনা-আপনি আপনার কন্টেন্ট কোয়ালিটি আরো উন্নত হতে থাকবে।
তবে ইউটিউবিংয়ে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এখানে ভিডিও ইডিটিংশের জন্য অন্তত একটি ল্যাপটপ চাই-ই চাই। নতুবা ভিডিও ইডিট করা সম্ভব নয়।
এছাড়া ভিডিও ধারণের জন্য চাই একটি ভালো মানের ক্যামেরা। যেটি অনেক সময়ই ব্যয়-বহুল। এবং বেশিরভাগেরই সামর্থ্যের বাইরে। তাই আপনার যদি এই সীমাবদ্ধতা না থাকে তাহলে আপনি ইউটিউবিং করতেই পারেন!
৬.রিভিউ রাইটিং:- এটি অনেকটা আর্টিকেল রাইটিং এর মতই। তবে এখানে আপনাকে বিভিন্ন পণ্যের গুণাগুণ তুলে ধরতে হবে।
যে পণ্যটির ভালো ও খারাপ দিকগুলো কিকী! এটি একটি মজার কাজ। তবে এর জন্যও আপনাকে প্রচুর পণ্য সম্পর্কে জানতে হবে।
Good site
great project
খব ভালো লাগলো
You must be logged in to post a comment.