ইউটিউব থেকে এবার টাকা আয় হবেই

আসসালামুআলাইকুম কেমন আছেন সবাই আশা করি সকলেই ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা আয় করবেন।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

 সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো আজকের এই আর্টিকেলটিতে। এটি অনেকের জন্য স্পেশাল কারণ এখানে আমি ইউটিউব থেকে কোন কোন উপায়ে টাকা আয় করা যায় তার সম্পূর্ণ বিস্তারিত বলতে চলেছি।

 ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার তেমন কোনো কঠিন ব্যাপার না। শুধু আপনাকে একটু সময় আর একটু পরিশ্রম দিতে হবে। আমরা সবাই জানি কোনো কাজ পরিশ্রম ছাড়া হয় না। একজন মানুষ পরিশ্রম করার মাধ্যমে নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। 

বর্তমান যুগের অনেকেরই চিন্তা ধারণা পরিবর্তন এসেছে। অনেকেই চাচ্ছে যে অবসর সময়ে বসে কিভাবে টাকা আয় করা যায়। তারা হয়তো অবসর সময়ে টাকা আয় করার জন্য বিভিন্ন প্রকার ভিডিও দেখেছে।

সেখানে অনেক ওয়েবসাইট বা অ্যাপস সম্পর্কে জানতেও পেরেছে। কিন্তু সকল ওয়েবসাইট বা অ্যাপস পেমেন্ট করে না তবে আপনাদের দিয়ে ঠিকই তাদের কাজ গুলো করে নেয়। আজকাল বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট বা অ্যাপস পাওয়াই যায়না। 

কিন্তু ইউটিউব সম্বন্ধে তো সবাই কম বেশি জানেন। ইউটিউব হলো অনলাইনে আয় করার বিরাট প্লাটফর্ম। 

এখানে বিভিন্ন টপিক নিয়ে ভিডিও তৈরি করা যায় এবং যদি আপনার সাবস্ক্রাইবের সংখ্যা ও ওয়াচ টাইম বেশি হলে আপনি এখান থেকে আয় করা শুরু করতে পারেন। 

বর্তমানে ইউটিউব থেকে অনেকেই প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে। চাইলে আপনিও পারবেন। ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার জন্য প্রথমেই আপনাকে ইউটিউবে একটা চ্যানেল খুলে নিতে হবে। 

আর চ্যানেল এর নামটা দিতে হবে ইউনিক একটা নাম। এবং আর একটা বিষয় বলে রাখি আপনি আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি দিয়েই ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলে নিতে পারবেন। অথবা চ্যানেল খোলার জন্য ইউটিউব এর হেল্প নিতে পারেন। 

চ্যানেল খোলার পর আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনি কি ধরনের ভিডিও বানাবেন বা আপনার ভিডিওর মূল বিষয় বা ট্রপিক কি হবে। আপনাকে অবশ্যই লোকজন যেই ভিডিওগুলো বেশি পছন্দ করে সেই ভিডিও ট্রপিক গুলো সিলেক্ট করতে হবে। 

এবং ট্রপিক নির্ধারণ করার পর আপনি ভিডিও দেওয়া শুরু করবেন। প্রতিদিন কমপক্ষে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে একটি করে ভিডিও আপলোড দিবেন। প্রথম প্রথম ইউটিউব এর ভিডিও গুলোতে ভিউ নাও আসতে পারে কিন্তু এতে ভেঙে পড়ার কিছু নেই। 

আপনি আপনার পরিশ্রম চালিয়ে যেতে থাকবেন। এমনও অনেক ইউটিউবার রয়েছে যাদের প্রথম ভিডিও গুলোতে চার থেকে পাঁচটি ভিউজ আসত কিন্তু এখন তাদের সাবস্ক্রাইবার এর সংখ্যা মিলিয়ন পেরিয়ে।

এভাবে অন্তত তিনমাস থেকে চারমাস ভিডিও দিতে থাকবেন। একপর্যায়ে দেখবেন যে আপনার চ্যানেল রেঙ্ক এ চলে এসেছে অর্থাৎ ইউটিউব চ্যানেল এর করা হবে।

ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে সে শর্তগুলো পূরণ করতে পারলেই আপনার টাকা আয় হওয়া শুরু হয়ে যাবে।

ইউটিউবে টাকা আয় করার প্রথম শর্ত হলো 1000 সাবস্ক্রাইবার। আপনার চ্যানেলে অন্ততপক্ষে 1000 সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে।

এবং ইউটিউবে ইনকাম করার দ্বিতীয় শর্তটি হলো 4000 ঘন্টা ওয়াচ টাইম অর্থাৎ আপনার ইউটিউব চ্যানেলের থাকা ভিডিওগুলোর ওয়াচ টাইম 4000 ঘন্টার বেশি হতে হবে।

তাহলেই কেবল আপনি ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। আপনার এই শর্তগুলো পূরণ হয়ে যাবার পর আপনি মনিটাইজেশন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

মনিটাইজেশন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনার ইউটিউব চ্যানেলটাকে যাচাই করা হবে। আপনার ইউটিউব চ্যানেল যাচাই হবার পর আপনি গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করা শুরু করতে পারবেন। 

মানে আপনার ইউটিউবে টাকা আয় করা যাত্রা শুরু। প্রথমত আপনার সাবস্ক্রাইবার এবং ভিউজ অনুযায়ী টাকা প্রদান করা হবে। আপনার সাবস্ক্রাইবার এবং ওয়াচ টাইম এর সংখ্যা যত বাড়বে আপনার টাকা আয় করার পরিমাণটাও বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

তবে আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে আপনার ভিডিওর গুণগতমান যেন ভালো হয়। আপনি ইউনিক ট্রপিক বাছাই করে ভিডিও গুলো করবেন। তা না হলে মানুষ আপনার ভিডিওগুলো দেখবে না বা আপনার ভিডিওতে ভিউ আসবে না। 

ইউটিউবে ভিডিও গুলোতে ভিউজ আসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যদি ভিডিওর কোয়ালিটি ভালোনা হয় তাহলে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যাও বাড়বে না।

আর সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা কম হওয়ার ফলে আপনার চ্যানেলটা আর সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে না। তাই যেই ট্রপিক সম্বন্ধে ভিডিও বানাবেন সেই সম্বন্ধে আপনার পূর্ণ ধারণা থাকতে হবে।

 এবং ধীরে ধীরে কাজ করার অভিজ্ঞতা টাও বৃদ্ধি পাবে। আপনার ইউটিউব এর ভিডিও গুলোতে বেশি ভিউজ আসার জন্য থাম্বেল গুলোকে সুন্দরভাবে সাজাতে হবে। এবং লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে এটি ইউনিক হয়। 

তাই ভিডিওর থাম্বেল  গুলোকে আকর্ষনীয় করে তুলতে হবে। যার ফলে একজন ভিউয়ার আপনার ভিডিওতে ক্লিক করে। আপনার চ্যানেলটির মনিটাইজেশন কমপ্লিট হলে আপনি বিভিন্ন স্পন্সর এর মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন। 

এখানে স্পন্সর বলতে বোঝানো হয়েছে যারা প্রডাক্ট প্রমোশন এর বিনিময়ে টাকা দিয়ে থাকে। অর্থাৎ এমন অনেক কোম্পানি আছে যারা তাদের প্রোডাক্ট গুলোর প্রমোশন দেওয়ার মাধ্যমে আপনাকে টাকা দিবে।

 ইউটিউবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ কাজগুলো দেওয়া হয়ে থাকে। প্রডাক্ট প্রমোশন বলতে বুঝানো হয়েছে যে একটা কোম্পানি আপনাকে কিছু প্রোডাক্ট দিবে এবং তাদের প্রোডাক্ট যেন বেশি বেশি বিক্রি হয় সেজন্য আপনাকে আপনার ইউটিউব চ্যানেল এ প্রচার করতে হবে। 

এর বিনিময়ে আপনাকে টাকা প্রদান করা হবে এবং আপনি আপনার বিভিন্ন ভিডিও এবং ভিডিও ডেসক্রিপশন বক্সে এই প্রোডাক্ট গুলোর লিংক দিয়ে রাখবেন। যাতে করে একজন ভিউয়ার সহজেই তা দেখতে পারে।

এভাবে ইউটিউব থেকে পেসিভলি টাকা আয় করতে পারবেন। এছাড়া ও আরো মাধ্যম রয়েছে। যেমন:- ই-কমার্স সাইট আছে, দারাজ, বিডি শপ, আজকের ডিল, রকমারি, বাগডুম এবং প্রীয়সপ ইত্যাদি সাইট এ এফিলিয়ট একাউন্ট তৈরির মাধ্যমে প্রোডাক্ট সেল করেও টাকা আয় করা যায়।

অনলাইনে আয় করার জন্য ইউটিউব এমন একটা জায়গা যেখানে একবার সাকসেসফুল হয়ে গেলে আপনাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না। 

আপনি ইউটিউব এর মাধ্যমে আপনার পুরো পরিবারটা কেউ চালাতে পারবেন। অর্থাৎ এটি হয়ে উঠবে আপনার একটা ইনকাম সোর্স। ইউটিউব কে আপনি যদি আয় করার মাধ্যম হিসেবে ধরে নিয়ে কাজ করেন তাহলে অবশ্যই সফল হবেন। 

আপনি কয়েকটি ভিডিও ছেড়ে হতাশ হয়ে পড়বেন না। ইউনিক ট্রপিক নিয়ে ভিডিও করার মাধ্যমে আপনি অবশ্যই একদিন সাকসেসফুল হবেন। এখন ইউটিউব হয়ে উঠেছে অনলাইনে আইয়ের একটা বিশাল প্লাটফর্ম। 

যেখানে হাজারো মানুষ প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে এবং আর্থিক উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে এখন আপনি ইউটিউবে অনেক বড় বড় ইউটিউবার কে পাবেন যারা প্রথমে ছোট থেকে শুরু করেছিল এখন তাদের চ্যানেলটা হয়েছে হয়ে উঠেছে বিশাল এবং জনপ্রিয়।

ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার মাধ্যম এর অভাব নেই। আপনি শুধু বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করে গেলেই হবে। তবে বলে রাখা ভালো যে ইউটিউবে কাজ করতে হলে ইউটিউবে নিয়ম নীতি বা শর্তাবলী আপনাকে মেনে চলতে হবে।

তাদের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে হবে ।ইউটিউবে কপিরাইট করা যাবেনা। হঠাৎ অন্য কারোও ভিডিও নিজের বলে চালিয়ে দেওয়া যাবেনা। তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টটি সাসপেন্ড হয়ে যেতে পারে। তাই কাজ করার পূর্বে ইউটিউবে নীতিমালাগুলো একবার পড়ে নিবেন। 

সে ক্ষেত্রে আপনার সুবিধা হবে। ইউটিউবে শুধু ওয়াচ টাইম আর সাবস্ক্রাইবার এর মাধ্যমে টাকা আয় করা যায় বিষয়টি এমন নয়। আপনি চাইলে 4000 ঘন্টা ওয়াচ টাইম ছাড়াও অন্য উপায়ে এখান থেকে আয় করতে পারেন যেমন:-

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার মাধ্যমে:-

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি তা অনেকেই জানেন না। আমি উপরের দিকে বলেছিলাম তবে এখানে আবার বলছি এফিলিয়েট মার্কেটিং মানে কোন প্রোডাক্ট বিক্রি করা করার উদ্দেশ্য প্রোডাক্ট প্রমোশনের জন্য কাজ করা। 

অর্থাৎ আপনি এমন অনেক কোম্পানি পেয়ে যাবে যারা তাদের প্রোডাক্ট সেল করার জন্য ইউটিউবে কাজ দিয়ে থাকে। আপনারা চাইলে সে কাজগুলো করে ভালো পরিমাণ আর্নিং করতে পারবেন। তাদের দেওয়া কাজগুলোর জন্য তারা আপনাকে নিজে পেমেন্ট করবে।

এক কথায় বলতে গেলে এফিলিয়েট মার্কেটিং হল পণ্য বেশি বেশি বিক্রি হওয়ার জন্য ইউটিউব ভিডিও গুলোতে প্রোডাক্ট সম্বন্ধে প্রচার করা।

বিভিন্ন প্রমোশনাল ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে টাকা আয়:-

প্রমোশনাল ভিডিও বলতে বুঝানো হয়েছে যে যেকোনো প্রডাক্ট সম্পর্কে প্রচার করা। ধরুন কেউ একটি নতুন দোকান দিলো এবং দোকান সম্পর্কে প্রচার করার জন্য বিভিন্ন প্রকার বিজ্ঞাপন দিল। 

আপনি যদি তার দোকান এর একটি ভিডিও বানিয়ে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওটির প্রমোশন দেন তাহলে তার নিকট থেকে আপনি টাকা আয় করতে পারবেন।

 বর্তমানে এটি খুবই জনপ্রিয় হয়ে গেছে এবং এভাবে অনেকেই প্রতিমাসে ভালো পরিমাণ টাকা আর্নিং করতে পারছে।

সিপিএ মার্কেটিং এর মাধ্যমে টাকা আয় করার উপায়:-

সিপিএ মার্কেটিং ইউটিউবে আয় করার অন্যতম একটি মাধ্যম। সিপিএ মার্কেটিং বলতে বোঝানো হয়েছে, এমন অনেক ইউটিউবার আছে যারা সাবস্ক্রাইবার কিনতে চায়। 

আবার এমন অনেক ওয়েব সাইটের এডমিন রয়েছে যারা তাদের ওয়েবসাইটগুলোর প্রমোশন ঘটাতে চায়। আপনি চাইলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের তাদের ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে প্রমোশনাল ভিডিও বানিয়ে টাকা আয় করতে পারেন। 

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনেক ইউটিউবাররা এই কাজগুলো দিয়ে থাকে। আপনি চাইলেই এই কাজগুলো করেও ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।

ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে টাকা আয় করার উপায়:-

ইউটিউব মার্কেটিং ইউটিউব থেকে আয় করার অন্যতম একটি উপায়। ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনারা বিভিন্ন প্রোডাক্ট সম্বন্ধে গ্রাহকদের জানাতে পারবেন। 

এটা কিছুটা বিজ্ঞাপন দেওয়ার মতোই। আপনারা হয়তো ইউটিউবে ঢোকার পর অনেক রকমের বিজ্ঞাপন পেয়ে থাকবেন যা ইউটিউবে মার্কেটিং এর কাজের জন্য দেওয়া হয়। আপনি বিভিন্ন ব্র্যান্ড বা প্রোডাক্টগুলো কি প্রমোশন দেওয়ার জন্য ছোট ছোট কিছু ভিডিও আপনার চ্যানেলে আপলোড দিতে পারেন। 

অথবা লিংক গুলো শেয়ার করার মাধ্যমে বা আপনার ডিসক্রিপশন বক্স দিয়ে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করা মাধ্যমে তৈরি করতে পারেন। আজকাল অনেকেই এই কাজগুলো বেশি পরিমাণে করছে কারণ এই কাজগুলোতে টাকার পরিমাণটাও বেশি। আপনি চাইলে এভাবেও ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারবেন।

পরিশেষে:-  আশাকরি আমার আর্টিকেল এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন যে কিভাবে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করা যায়। আপনি কাজ করে যেতে থাকুন সাফল্য একদিন না একদিন ধরা দেবেই।আমার আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে এবং শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ